উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিমানের সঙ্গে যাত্রিবাহী বিমানের ধাক্কা। তাতে আগুন জ্বলে যায় যাত্রিবাহী বিমানটিতে। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সওয়ার ৩৬৭ জন যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে।
সুনামির পর আবার বিপর্যয় জাপানে। রানওয়েতে মঙ্গলবার উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিমানের সঙ্গে যাত্রিবাহী বিমানের ধাক্কা। তাতে আগুন জ্বলে যায় যাত্রিবাহী বিমানটিতে। দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে সেটি। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সওয়ার ৩৬৭ জন যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে। জাপানের টোকিয়ো-হানেডা বিমানবন্দরের ঘটনা। জাপানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছেন, উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিমানে ছ’জন ছিলেন। এক জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় জাপানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রানওয়েতে যাত্রিবাহী বিমানটি অবতরণ করছিল। তখন এয়ারবাস এ৩৫০ বিমানটির গতি খুব বেশি ছিল। সে কারণে উপকূলরক্ষী বাহিনীর বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে তাতে দাউদাউ করে আগুন ধরে যায়। যাত্রিবাহী বিমানটি জাপান এয়ারলাইন্সের। যে ভাবে যাত্রীদের নিরাপদে বার করে আনা হয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে ‘মিরাকল’ বলেই বর্ণনা করেছেন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, বিমানের জানলার কাচ ভেঙে বেরিয়ে আসছে আগুনের ফুলকি, ধোঁয়া। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে দমকলবাহিনী। ৭০টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে আপৎকালীন কন্ট্রোলরুম খুলেছেন। সেখানে বসে উদ্ধারের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
সংবাদমাধ্যমকে জাপান এয়ারলাইন্স বিমান সংস্থা জানিয়েছে, হোক্কাইডোর নিউ চিটোস বিমানবন্দর থেকে উড়ে টোকিয়োর হানেডা বিমানবন্দরে অবতরণ করছিল বিমানটি। উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাদের বিমানটি সুনামি বিধ্বস্ত নিগাতার উদ্দেশে ত্রাণ নিয়ে উড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, ঠিক কী ঘটেছে, সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে। তাদের বিমানের সঙ্গে ধাক্কা লেগেই আগুন জ্বলেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তাদের বিমানও কোনও না কোনও ভাবে ‘জড়িত’, সে বিষয়ে নিশ্চিত বলেই জানিয়েছেন এক আধিকারিক। ঘটনার পরেই হানেডা বিমানবন্দরের রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীতে ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলির মধ্যে অন্যতম হল টোকিয়োর হানেডা বিমানবন্দর। গত কয়েক দশকে সেখানে তেমন কোনও দুর্ঘটনা হয়নি। সেখানে মঙ্গলবার কী ভাবে এই কাণ্ড হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কার তরফে গাফিলতি, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। দেশের বিভিন্ন উপকূলে সুনামি আছড়ে পড়েছে, তার মধ্যে এই দুর্ঘটনায় আরও বিপাকে সরকার।
বছরের প্রথম দিন, সোমবার জাপানের বেশ কয়েকটি উপকূলে সুনামি আছড়ে পড়েছে। ভূমিকম্পের জেরে ফুঁসে উঠেছে সমুদ্র। কম্পনের মাত্রা ৭.৬। তার জেরে বিপর্যস্ত জাপান। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৪৮ জন। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা। সে দেশের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মৃদু এবং মাঝারি মাত্রার কম্পনে ১৫৫ বার কেঁপে উঠেছে জাপান। এগুলির মধ্যে রিখটার স্কেলে কম্পনের সর্বোচ্চ যে মাত্রা ধরা পড়েছে, তা হল ৭.৬। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কম্পনের মাত্রা ৬। অন্য কম্পনগুলির অধিকাংশেরই মাত্রা ৩ বা তারও কম। তবে এগুলি কম্পন না কি ভূকম্প পরবর্তী কম্পন (আফটারশক), তা নিয়ে ভিন্ন মতামত রয়েছে।