অযোধ্যার হাতে আর সময় নেই। সোমবার প্রধানমন্ত্রী আসবেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তো ‘ডেলি প্যাসেঞ্জার’ হয়ে গিয়েছেন। সোমে যত ভিভিআইপি আসবেন তাতে ইতিহাস তৈরি হবে। তাই অযোধ্যাবাসীও তৈরি নিয়ম মানার জন্য।
শুক্রবার সকাল থেকেই অযোধ্যা শহরে ঘোরাফেরা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শহরের এ-মাথা থেকে ও-মাথা ঘুরেছেন। নিরাপত্তার খুঁটিনাটি সরেজমিনে দেখে গিয়েছেন। শনিবারও আসছেন তিনি। তার আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মন্দির এলাকার রাস্তাঘাটে ঘুরতে গেলে দেখাতে হবে নির্দিষ্ট ‘পাস’। ছাড় শুধু উৎসব আয়োজকদের। সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের জন্য বিশেষ পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণ অযোধ্যাবাসীকে শনিবার দিনের মধ্যেই বাজারহাট সেরে ফেলতে হবে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকেই বিশেষ আমন্ত্রিতেরা অযোধ্যায় আসতে শুরু করবেন। রবিবার থেকেই আসতে শুরু করবেন ভিভিআইপি আমন্ত্রিতেরা। তবে গোটা দেশের যে সব করসেবক ১৯৯০ বা ১৯৯২ সালে পুলিশের আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তাঁরা শনিবার থেকেই আসছেন অযোধ্যায়। তাঁদের স্বাগত জানাতে অযোধ্যা ধাম স্টেশনে তৈরি হয়েছে পরিষদের শিবির।
অযোধ্যায় অন্যতম পর্যটনের জায়গা রাম কি পৌরি। সরযূ নদীর জল এখানে একটি খাল কেটে ঢুকেছে প্রাচীন রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে। দু’দিকটাই বাঁধানো। সুন্দর সিঁড়ি। সেখানে আলাদা আলাদা ঘাট। কৌশল্যা, কৈকেয়ী, রাম, লক্ষ্মণ, ভরত— সকলের আলাদা আলাদা ঘাট। একেবারে শেষেরটা সুমিত্রা ঘাট। এই ঘাট চত্বরে এমনিতে সারা বছর রামকথা চলে। দেব দীপাবলিতে এই ঘাটই প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়। তবে উদ্বোধনের এই পরবে নদী আর দশরথ পরিবারের মাঝের জায়গা সংবাদমাধ্যমের দখলে। শুক্রবার থেকেই তৈরি হয়ে গিয়েছে সারি সারি নিউজ স্টুডিয়ো।
এখানেই ব্যবস্থাপনা দেখার দায়িত্বে রয়েছেন পুলিশ অফিসার সুকুমার দ্বিবেদী। স্থানমাহাত্ম্য এমনই যে, পুলিশের মুখেও রামনাম। সঙ্গে ইতিহাস। শনিবার সকালে কয়েক মুহূর্তে নিজে থেকেই ‘গাইড’ হয়ে গেলেন। বললেন, ‘‘অযোধ্যা মানে যাকে যুদ্ধে হারানো যায় না, অজেয়।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘এই শহর জিততে জানে। সুতরাং সোমবার গোটা পৃথিবী দেখবে ভারতের জয়।’’ এ তো হিন্দুদের জয়! শুনে সুকুমার বললেন, ‘‘এই নগরীর আর এক নাম সাকেত। এখানেই শাক্যবংশের রাজধানী ছিল। তাই সাকেত। হিউয়েন সাঙের ভ্রমণবৃত্তান্তে সাকেতের কথা পাবেন, অযোধ্যা নয়। গৌতম বুদ্ধও দীর্ঘ সময় এই শহরে বাস করেছিলেন। শুধু হিন্দু নয়। বৌদ্ধ, জৈন সম্প্রদায়েরও তীর্থস্থান এই অযোধ্যা। ছ’জন তীর্থঙ্করের জন্ম এখানে। বৈষ্ণবদেরও অনেক মঠ আছে।’’