সোমবার দুপুর ১.৩০ থেকে সন্ধে ৭.৩০টা। এই ছ’ঘণ্টা শহর চলে গেল ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের দখলে। বিমানবন্দর থেকে ক্লাবে আসতে বাসের সময় লাগল ৩ ঘণ্টা। সোমবার লাল-হলুদ রংয়ে মাতল শহর।
সোমবার সময় তখন দুপুর ১.৩০টাও বাজেনি। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে আনাগোনা শুরু হল তখন থেকেই। কেউ হেঁটে, কেউ বাইকে চেপে, কেউ গাড়িতে— এক এক করে সমর্থকেরা জড়ো হতে থাকলেন কলকাতা বিমানবন্দরের ১এ এবং ১বি গেটের সামনে। তার পরের চার ঘণ্টায় যা হল, তা দেখার জন্যই এত দিন হাপিত্যেশ করে বসেছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা। কার্যত গোটা শহরই চলে গেল লাল-হলুদ সমর্থকদের দখলে। সুপার কাপ জেতার পর সোমবারের বিকালের রং তাই আক্ষরিক অর্থেই লাল-হলুদ।
ইস্টবেঙ্গলের তরফে রবিবার রাতেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে সোমবার বিকাল ৩.৩০টেয় ভুবনেশ্বর থেকে বিমান মাটি ছোঁবে। সমাজমাধ্যমে দাবানলের মতো সে কথা ছড়িয়েও গিয়েছিল। কিন্তু ১২ বছর পর জাতীয় পর্যায়ের ট্রফি জেতা লাল-হলুদ জনতার উচ্ছ্বাস বাঁধ মানলে তো! বিমান নামার তিন ঘণ্টা আগে থেকেই বিমানবন্দরে লোক জড়ো হওয়া শুরু। যত সময় এগোল, তত সমর্থকদের সংখ্যা বাড়ল। সঙ্গে নাচ, গান, ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’ চিৎকার তো রয়েছেই।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বুঝে দেরি করেননি বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা। গেটের সামনে সিআরপিএফ বাহিনী এসে আগেই ব্যারিকেড করে দিল। তাতে কোনও রাগ, অভিমান নেই। খুশি মনেই ইস্টবেঙ্গল জনতা ‘পিছু’ হটলেন। নির্ধারিত জায়গায় আবার শুরু হয়ে গেল গান, নাচ। ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক দল ‘আলট্রাস’ হঠাৎই হাজির ঢোল, কাঁসর নিয়ে। ঢোল বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলল নাচ। বিমানবন্দরের যাত্রীরাও দাঁড়িয়ে পড়ে ছবি তুলতে লাগলেন। তার মধ্যে ছিলেন অনেক বিদেশিও। এক জন এসেছিলেন ফ্রান্স থেকে। বিমানবন্দরে লাল-হলুদ জার্সি এবং পতাকা হাতে এত সমর্থকের ভিড় দেখে কী চলছে বুঝতে পারছিলেন না। আনন্দবাজার অনলাইনের সংবাদদাতার কাছ থেকে কারণ শুনে অস্ফূটে বলে ফেললেন, ‘হোয়াট ম্যাডনেস’। ফ্রান্সেও যে ফুটবল ক্লাবগুলিকে ঘিরে উন্মাদনা হয়, সেটাই হয়তো মনে পড়ে গিয়েছিল তাঁর।