মৃত্যুর সাড়ে তিন দশক পরেও কাশ্মীরের বদগাম জেলায় ইরানের শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় নেতা আয়াতোল্লা খোমেইনি-র বড় বড় হোর্ডিং দেখা গিয়েছে। বদগামের জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ শিয়া মুসলিম।
নির্বাচনের আগে বার বারই ঘরোয়া রাজনীতিতে লাভ তুলতে বিদেশনীতিকে অস্ত্র করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এমনটাই মনে করে রাজধানীর সংশ্লিষ্ট মহল। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সদ্যসমাপ্ত ইরান সফরের পরে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, আসন্ন লোকসভা ভোটে লখনউ, মুর্শিদাবাদ, ভোপাল, হায়দরাবাদের মতো এলাকায় আরও বেশি করে শিয়া তাস খেলার কথা ভাবছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। শুধু ইরানই নয়, সম্প্রতি ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ অনুষ্ঠানে আমদাবাদের রাস্তায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন জ়ায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে মোদীর রোড শোয়ের বিষয়টিও এই কৌশলেরই অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে।
জয়শঙ্করের ইরান সফর সেরে দিল্লি ফেরার পরদিনই তেহরান ক্ষেপণাস্ত্র হানার মাধ্যমে পাকিস্তানের জঙ্গি শিবির উড়িয়ে দেয়। এই বিষয়টিও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দ্রুত ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে বিদেশ মন্ত্রক। পাকিস্তানের প্রত্যাঘাতের পরে যদি বিষয়টি এই অঞ্চলে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধপরিস্থিতির আকার না-নেয়, তা হলে নয়াদিল্লির তরফ থেকে চেষ্টা থাকবে ইরান কূটনীতিকে লোকসভার আগে আরও সক্রিয় করার।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মৃত্যুর সাড়ে তিন দশক পরেও কাশ্মীরের বদগাম জেলায় ইরানের শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় নেতা আয়াতোল্লা খোমেইনি-র বড় বড় হোর্ডিং দেখা গিয়েছে। বদগামের জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ শিয়া মুসলিম। যে অংশটি উনিশের লোকসভা ভোটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফারুক আবদুল্লার শ্রীনগর লোকসভা আসন (বদগাম যার অন্তর্ভুক্ত) থেকে জয়ের পিছনে শিয়া সম্প্রদায়ের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, আগামী ভোটের আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইব্রাহিম রইসি-র করমর্দনের পোস্টার কাশ্মীরের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। একই ভাবে মুর্শিদাবাদ, লখনউ, হায়দরাবাদেও ইরান তাস খেলবে বিজেপি, এমনটাই জানাচ্ছে সূত্র। বিশেষত লখনউয়ে, যেখানে শিয়ারা হাত উপুড় করে ভোট দিয়ে লোকসভায় পাঁচ বার জিতিয়েছেন অটলবিহারী বাজপেয়ীকে, গত দু’বার রাজনাথ সিংহকে।