মলদ্বীপের নেতা মন্ত্রীদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, ভারতকে চটিয়ে চরম বোকামি করেছে মলদ্বীপ। কারণ, ভারত শুধু পর্যটনের জোগান দেয় তা-ই নয়, যে কোনও প্রয়োজনেও মলদ্বীপ সবার আগে পাশেও পেয়েছে ভারতকেই।
বছর খানেক আগেও ভারতীয় তারকাদের উইকেন্ড ডেস্টিনেশন ছিল বাড়ির কাছের ‘বিদেশ’ মলদ্বীপ। সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তো বটেই, ক্রিকেট তারকারাও পরিবার, স্ত্রী কিংবা প্রেমিক-প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে সময় কাটাতে চলে আসতেন মলদ্বীপের সাদা বালি আর নীলজলের চোখ জুড়নো সৈকতে।
তারকাদের দেখাদেখি ভক্তদের ভিড়ও বাড়ত। ফুলে ফেঁপে উঠত ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতি। তৈরি হত হাজারো কর্মসংস্থান। কিন্তু সম্প্রতি মলদ্বীপ সেই সোনার ডিম দেওয়া হাঁসটিকেই ‘জবাই’ করেছে! অন্তত তেমনই মনে করছেন দ্বীপরাষ্ট্রের নেতা-মন্ত্রীরা। মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক বৈরিতার জন্য তাঁরা দায়ী করছেন দেশের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়ুকে। তাঁকে অবিলম্বে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছেন ওই দেশেরই এক সাংসদ আলি আজিম।
মলদ্বীপের প্রধান বিরোধী দল এমডিপিকে তিনি অনুরোধ করেছেন অবিলম্বে মুইজুকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণের জন্য অনাস্থা প্রস্তাব আনতে। উল্লেখ্য, মলদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মুইজ়ু হলেন পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের (পিএনসি) সদস্য। নভেম্বরেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। হারিয়ে দিয়েছেন দেশের পূর্বতন ক্ষমতাসীন দল মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এমডিপি)-র ইব্রাহিম মোহম্মদ সোলিনকে। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এমডিপি হারলেও দেশের পার্লামেন্টে এখনও তাদেরই সংখ্যাধিক্য। মালদ্বীপের পার্লামেন্টারি নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৪ সালেই।
এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট মুইজ়ুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলে তাতে প্রেসিডেন্ট বিরোধী ভোট পড়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে কি ভারতের সঙ্গে ‘শত্রুতা’ই কাল হল মলদ্বীপের প্রেসিডেন্টের?মলদ্বীপের নেতা মন্ত্রীদের একটা বড় অংশ অন্তত তেমনই মনে করছেন। তাঁরা বলছেন, ভারতকে চটিয়ে চরম বোকামি করেছে মলদ্বীপ। কারণ, ভারত শুধু মলদ্বীপে পর্যটনের জোগান দেয় তা-ই নয়, মলদ্বীপের নেতামন্ত্রীরা বলেছেন, ‘‘ভারত হল মলদ্বীপের আপৎকালীন হেল্পলাইন নম্বর।’’ যে কোনও প্রয়োজনেও যে দেশকে মলদ্বীপ সবার আগে পাশে পায় সে হল ভারত।
ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের পুরনো সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সে দেশের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি বলেছেন, ‘‘মলদ্বীপের বরাবরের নীতি ছিল, ‘সবার আগে ভারত’। সেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে অত্যন্ত নির্বুদ্ধিতা এবং অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে মলদ্বীপের বর্তমান সরকার।’’