গত নভেম্বরে মুইজ্জু মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতায় এসেছেন। প্রথম থেকেই তিনি চিন-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। সম্প্রতি তিনি চিন সফর থেকে দেশে ফিরেছেন।
কিছু দিন আগে ঘুরে এসেছেন চিন থেকে। এ বার সেই ‘বন্ধু’র প্রশংসা করে মুখ খুললেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। জানালেন, মলদ্বীপের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে চিন। দুই দেশের সম্পর্কও তাই ঘনিষ্ঠ। মলদ্বীপ এবং চিন দুই দেশই একে অপরকে শ্রদ্ধা করে।
পাঁচ দিনের চিন সফর সেরে গত শনিবার দেশে ফিরেছেন মুইজ্জু। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৭২ সালে চিন এবং মলদ্বীপের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গঠিত হয়। সেই দিন থেকেই চিন তাঁর দেশের উন্নয়নের জন্য সাহায্য করে চলেছে।
গত নভেম্বরে মুইজ্জু মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি চিন-ঘনিষ্ঠ হিসাবে প্রথম থেকেই পরিচিত। ভোটে জেতার আগে প্রচারেও চিনের সঙ্গে মলদ্বীপের ঘনিষ্ঠতাকে বার বার তুলে ধরেছিলেন মুইজ্জু। এমনকি, প্রচারে ভারতের বিরোধিতা করতেও শোনা যায় তাঁকে। ক্ষমতায় আসার পরেই ভারতের সেনাবাহিনীকে মলদ্বীপের মাটি থেকে সরে যেতে বলেন মুইজ্জু। তার সময়ও বেঁধে দিয়েছেন। ১৫ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলেছেন তিনি। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির মাঝেই মুইজ্জুর মুখে চিনের প্রশংসার আলাদা তাৎপর্য আছে বলে অনেকে মনে করছেন।
চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর সঙ্গে আগেই যুক্ত হয়েছে মলদ্বীপ। মুইজ্জু জানান, ওই চিনা প্রকল্প তাঁর দেশকে উন্নতির দিকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। চিনের এক সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি মুইজ্জু সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, চিন এমন এক দেশ, যে কখনও মলদ্বীপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। সেই কারণেই দুই দেশের সম্পর্ক এত ভাল। আগামী দিনে এই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছেন মুইজ্জু।
শুধু চিন নয়, প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ মুইজ্জু। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, জিনপিং এমন এক নেতা, যিনি দেশের নাগরিকদের স্বার্থের কথাই সবার আগে ভাবেন। তাঁর নেতৃত্বে চিনের অর্থনীতি অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মুইজ্জু।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লক্ষদ্বীপ সফরকে কেন্দ্র করে মলদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কিছু ছবি সম্বন্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী। ভারতের সমাজমাধ্যমে তার পরেই ‘বয়কট মলদ্বীপ’ ডাক ওঠে। ভারত থেকে মলদ্বীপের বহু বুকিং বাতিল হয়ে যায় রাতারাতি। দেশটির পর্যটন শিল্প এর ফলে ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। তবে বিতর্কের আবহেই মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট শুক্রবার ভারতের ৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন।