গত বছর বড়দিনের উৎসব ঘিরে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এ বছর যাতে না হয়, সে কথা ভেবেই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে বলে দাবি লালবাজারের।
গত বছরের বড়দিনের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজাতে তৎপর লালবাজারের ট্র্যাফিক পুলিশকর্তারা। তাই নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি যানবাহন সচল রাখায় জোর দিয়ে এ বার পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।
গত বছর বড়দিনের উৎসব ঘিরে তৈরি হওয়া বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এ বছর যাতে না হয়, সে কথা ভেবেই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে বলে দাবি লালবাজারের। তাই বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্ক স্ট্রিটে বড়দিন উৎসবের উদ্বোধন করার পরে শুক্রবার থেকে ভিড় বাড়ার আশঙ্কা করে ওই এলাকায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
তবে, ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা থাকছে। বড়দিনের আগের দিন, অর্থাৎ, ২৪ তারিখ শহর জুড়ে মোতায়েন করা হচ্ছে ২২৮৬ জন পুলিশকর্মীকে। বিভিন্ন গির্জা-সহ গোটা শহরের নিরাপত্তায় থাকছেন তিন জন উপ নগরপাল, ১০ জন সহকারী নগরপাল, ৫০ জন ইনস্পেক্টর, সাব-ইনস্পেক্টর ও পুলিশ সার্জেন্ট ২৩৯ জন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর ৩০০ জন এবং হোমগার্ড ১৪৭২ জন। ২০০ জন মতো মহিলা পুলিশকর্মীও থাকছেন ওই দিন।
অন্য দিকে, বড়দিনে পথে নামা বিপুল জনস্রোতের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শহরে থাকছেন অতিরিক্ত ৩১৮৯ জন পুলিশকর্মী। পার্ক স্ট্রিটের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হচ্ছে ন’জন উপ নগরপালকে। তাঁদের সঙ্গে থাকছেন ২৫ জন সহকারী নগরপাল, ৭৫ জন ইনস্পেক্টর, ৩০৪ জন সাব-ইনস্পেক্টর ও পুলিশ সার্জেন্ট। হোমগার্ড ও মহিলা পুলিশকর্মী থাকছেন ২০৬৪ এবং ৩০০ জন।
শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকছে কুইক রেসপন্স টিম। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দিতে থাকছে এইচআরএফএস বাহিনী। পার্ক স্ট্রিটের পাশাপাশি এ জে সি বসু রোড, মৌলালি থেকে মল্লিক বাজার, ইএম বাইপাসেও থাকছে অতিরিক্ত বাহিনী। বেলুড় এবং দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে থাকবেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। পাশাপাশি, গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে চালানো হবে নজরদারি।
লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর বিকেল চারটে থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত ময়দান এবং পার্ক স্ট্রিট চত্বর দিয়ে মালবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই দু’দিন অন্যান্য গাড়ির জন্যও পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন একাধিক রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা থাকছে। পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি, ক্যাথিড্রাল রোড, রাসেল স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট-সহ সংলগ্ন রাস্তায়
গাড়ি চলাচল দু’দিন নিয়ন্ত্রিত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই সঙ্গে রফি আহমেদ কিদোয়াই রোড, ইলিয়ট রোডে ট্রাম চলবে না। ওই সময়ে বেআইনি পার্কিং বন্ধ করতেও একাধিক পরিকল্পনা করেছে লালবাজার। পার্ক স্ট্রিট হয়ে জওহরলাল নেহরু রোড, হো চি মিন সরণি, ক্যামাক স্ট্রিট, লিটল রাসেল স্ট্রিট, ইলিয়ট রোড ও সংলগ্ন রাস্তার পার্কিং সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
বড়দিনের উৎসবে ১০ লক্ষের মতো মানুষের ভিড় হবে ধরে নিয়ে এই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে লালবাজার। ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সচল রাখার পরিকল্পনায় ও নিরাপত্তায় যাতে কোনও ঢিলেমি না থাকে, তা দেখছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, দশটির বেশি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করে এলাকায় নজরদারি চলবে। কুইক রেসপন্স টিম, উইনার্স বাহিনীকে মোতায়েন করা হবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বেশি সংখ্যক সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে। থাকছে পুলিশি সহায়তা কেন্দ্রও। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই কয়েক বার পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভিড় সামলাতে সেই মতো পরিকল্পনা হয়েছে আমাদের তরফে।’’