দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ সর্গোক্ত ঘটনাবলীর সহিত পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনাও বীরবাহুর মৃত্যুদিবসের রাত্রিকালে সংঘটিত হইয়াছে । এই সর্গে প্রধান বর্ণনীয় বিষয়,_মেঘনাদবধে চণ্তীদেবীর সাহাধ্য-প্রাপ্তির উদ্দেশে লক্ষণ কর্তৃক দেবীর আরাধনা এবং বর-প্রাপ্তি। এই ঘটনাটির সহিত কত্তিবাী রামায়ণে উল্লিখিত রামচন্দ্র কর্তৃক দুর্গাপূজা এবং বরলাভের একটি ক্ষীণ সাদৃশ্য থাকিলেও, মূল ঘটনার অঙ্গীভূত অন্তান্ত ঘটনার সহিত বালীকি অথবা কুত্তিবাসের রামায়ণের ঘটনাবলীর কোন সম্পর্ক নাই। চণ্তিকার মন্দিরে গমনকালে বনপথে লক্ষ্মণ যে সকল বিভীষিকা ও প্রলোভনের মায়াদৃশ্ঠ দর্শন করিয়াছিলেন, তাহার বর্ণনা ট্যাসো-রচিত 'জেরুজালেমউদ্ধার কাব্যের ১৫শ ও ১৮শ সর্গ হইতে গৃহীত |
বিষয়"সংক্ষেপ £ স্বর্গে তখন গভীর রাত্রি। অন্যান্য দেবদেবীগণ সকলে স্খস্প্ত হইলেও দেবরাজ ইন্দ্রের নয়নে নিদ্রা নাই । শচী ইন্দ্রের বিমনা ভাব দেখিয়া তাহার কারণ জিজ্ঞালা করিলে ইন্দ্র বলিলেন যে, প্রভাতে লক্ষ্মণ কি উপায়ে মেঘনাদকে বধ করিবে তাহাই তাহার চিন্তার বিষয়। শচী বলিলেন যে, তাহারা! দৈবাস্ত্র লাভ করিয়াছেন এবং হুর-পার্বতীর আশীর্বাদও প্রাপ্ত হইয়াছেন। পরদিবস প্রভাতে স্বয়ং মায়াদেবী লক্ষ্মণকে মেঘনাদ-বধের উপায় বলিয়! দিবেন, স্থৃতরাং চিস্তা নিরর্থক । ইন্্র বলিলেন যে, ইহা সবই সত্য; তথাপি মেঘনাদ এরূপ প্রচণ্ড শক্তিশালী যে, মায়াদেবী যে কি কৌশলে লক্্ণকে রক্ষা করিবেন তাহা তাহার বুদ্ধির অগম্য। ইন্দ্র ও শচী অপ্মরোগণ-পরিবেষ্টিত হইয়| বিনিদ্র ও বিষগ্লভাবে অবস্থান করিতেছেন, এমন সময়ে মায়াদেবী ইন্জ্রালয়ে আসিয়! উপস্থিত হইলেন। ইন্দ্র মায়াদেবীকে প্রণাম করিয়! তাহার আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন।
মায়াদেবী বলিলেন যে, তিনি লঙ্কাপুরীতে াইতেছেন। কৌশলে লক্ষণের হস্তে মেঘনাদের বিনাশ ঘটাইয় তিনি ইন্দ্রের মনোবাসনা পূর্ণ করিব্ন। কিন্তু মেঘনাদবধের পর রাবণ যখন সেই সংবাদ শুনিবে, তখন রাম-লক্ষ্ণ ও বিভীষণ 'প্রভৃতিকে কি উপায়ে ইন্দ্র রক্ষা করিবেন তাহা পূর্বেই স্থির করিয়া রাখুন। ইন্দ্র বলিলেন যে, মেঘনাদ নিহত হইলে তিনি রাবণকে তত ভয় করেন না। দেবতার1 সকলে রামের পক্ষে যুদ্ধ করিয়া তাহাকে রক্ষা করিবেন । মীয়াদেবী বলিলেন যে, দেবগণের তাহা করাই সঙ্গত হইবে। ইহা! বলিয়া মায়া লঙ্কার উদ্দেষ্থরে যাত্রা করিলেন ।..ইজও নিশ্চিস্ত হইয়া বিশ্রাম রূরিতে গেলেন। মায় স্বর্গের দ্বারদেশে দাঁড়াইয়া স্বপ্নদেবীকে স্মরণ করিয়৷ তাহাকে বলিলেন যে, তিনি যেন স্থমিত্রার বেশে নিব্রিত লক্মণকে একাকী লঙ্কার উত্তরপ্রাস্তস্থ বনে অবস্থিত চণ্ডীর মন্দিরে যাইয়া! অবিলম্বে দেবীর পুজা করিবার প্রত্যাদেশ দেন। দেবীর আদেশান্ুসারে স্বপ্রদেবী তৎক্ষণাৎ স্ুমিত্রার রূপ ধারণ করিয়া লক্মণকে চণ্ডী-পূজার ্বপ্নাদেশ দিয়া আসিলেন। স্বপ্নে মাতা স্থমিত্রাকে দেখিয়া লক্ষ্মণ চমকিতভাবে জাগ্রত হইলেন এবং রামচন্দ্রের নিকট ঘাইয়। তাহাঁকে নিজের স্বপ্র-বৃত্তাস্ত বলিলেন। রাম বিভীষণকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলেন যে, সত্যই লঙ্কার উত্তরপ্রাস্তে ভীষণ বন-মধ্োে রাবণ-পৃজিত চণ্ডীর মন্দির আছে | মে অতি দুর্গম স্থান এবং স্বয়ং মহাদেব সে-বনের প্রহরী। লক্ষ্মণ যদি সাহস-সহকারে সেখানে যাইয়! দেবীর পূজা করিতে পারেন তবে রামচন্দ্র মনোবাসনা নিশ্চয়ই পূর্ণ হইবে। লক্ষ্মণ বলিলেন যে, তিনি রামচন্দ্রের চিরান্ুগত ভূত্য ;_ রাম আদেশ দিলে নির্ভয়ে বনে প্রবেশ করিবেন। রামচন্দ্র সম্মত হইলে লক্ষ্মণ তরবারি হস্তে লঙ্কা'র উত্তরদ্বারাভিমুখে একাকী.যাত্রা করিলেন। উত্তরদ্বার-রক্সী স্থগ্রীব বাধা দিতে আমিলে লক্ষণ নিজের পরিচয় দিয়া ছ্বারপথে নিজ্ঞাগস্ত হইলেন । ₹
কিছুদূর অগ্রসর হইয়াই লক্ষণ ভীষণমুতি মহাদেবের সম্মুখীন হইলেন। তিনি আত্মপরিচয় দিয় বলিলেন,_হয় মহাদেব দ্বার মুক্ত করুন নতুবা লক্ষণের সহিত যুদ্ধ করিতে গ্রস্তত হউন। ধর্মবলে বলীয়ান লক্ষণ নিশ্চয়ই মহাদেবকে পরাজিত করিতে সমর্থ হইবেন। লক্ষণের সাহসপূর্ণ বাক্যে সন্থষ্ট হইয়া মহাদেব পথ ছাড়িয়া ছিলেন। বনের মধ্যে প্রবেশ করামাত্র লক্ষ্মণ ঘোর পিংহনাদ শ্রবণ করিলেন। “লক্ষমণকে আক্রন্ণণ করিবার জন্য মায়াসিংহ ধাইয়া আসিল, কিন্তু লক্পণ অসি উত্তোলন করিতেই সে অধৃস্ঠ হইল। লক্ষণ আর একটু অগ্রসর হইতেই সহসা ভীষণ ঝড়, বজ্রপাত ও দাঁবানলের আবির্ভাব হইল। লক্ষণ স্থির হইয়! কিছুক্ষণ দীড়াইতেই ঝড়, বৃষ্টি ও মেঘ অনৃস্থ হইয়া আকাশ আবার তারকা-শোভিত হইল । বিশ্ময়ে অভিভূত হুইয়৷ আরও কিছুদূর অগ্রসর হইয়া লক্ষণ অতি মধুর সঙ্গীতধ্বনি শ্রবণ করিলেন। তিনি সম্মুখে পুষ্পবনের মধ্যে অবস্থিত সরোবরে জলকেলি-রত স্থন্দরীগণকে দেখিতে পাইলেন। তাহারা লক্ষমণ্ক দেখিয়া তাহাঁকে চারিদিক হইতে বেষ্টন করিয়া নিজেদের দেবকন্ত। বলিয়! পরিচয় দিল এবং ভোগবিলাসের নান! প্রলোভন দেখাইতে লাগিল। লক্ষণ তাহাদিগকে বলিলেন যে, তিনি রামের ভাতা । রামের পত্বী সীতাকে রাবণ অপহরণ করিয়া আনিম্লাছে। রাক্ষপ বধ করিয়া সীতার উদ্ধার করিষেন ইহাই তাহার প্রতিজ্ঞা । ' দেবকন্তাগথের নিকট তাহার গ্রৃতিজ্ঞাপুরণের বর প্রার্থনা করিয়া ভিনি তাহাদিগকে মাতৃ সম্বোধন করা মাত্র সেই মায়া দৃশ্ঠ মিলাইয়! গেল। বিস্মিত লক্ষণ ধীরে ধীরে অগ্রসর হইয়। চণ্ডীর দেউলে যাইয়া উপস্থিত হইলেন।
সরোবর-তীরে দেবীর ন্ব্ণময় মন্দিরে পূজার বিবিধ উপকরণ সজ্জিত রহিয়াছে । লক্মণ সরোবরে সান করিয়া নীলপদ্ম তুলিয়া সিংহবাহিনী দেবীর পৃজা করিয়া রাক্ষবধের বর প্রার্থনা করিলেন। অকম্মাৎ দৈবতেজের আবির্ভাবে সমগ্র দেশ যেন বজ্রনিনাদে পূর্ণ হইল এবং ভূমিকম্পে কীপিতে লাগিল। দেবী আবিভূ্তা হইয়। লক্মণকে বলিলেন যে, ইন্দ্র তাহাকে দেবান্ত্র প্রেরণ করিয়াছেন এবং শিবের আদেশে স্বয়ং তিনি তীহাকে সাহাধ্য করিতে আগিয়াছেন। দেবাস্ত্র গ্রহণপূর্বক বিভীষণলহ নিকুস্তিল! যক্জাগারে প্রবেশ করিয়া লক্ষণ যেন পৃজারত মেঘনাদকে অকম্মাৎ আক্রমণ করেন। তাহার বরে লক্ষ্মণ ও বিভীষণ অদৃশ্ট ভাবে ষজ্ঞগগারে প্রবেশ করিবেন ।
লক্ষ্মণ মায়াদেবীর চরণে প্রণাম করিয়। সত্বর রামের শিবিরে প্রত্যাবর্তন করিলেন । রাত্রি শেষ হইয়া আদিতেছিল। ফিরিবার পথে তিনি নিজের প্রশংসামূলক দৈববাণী শ্রবণ করিলেন ।
যেখানে স্থবর্ণমন্দিরে মেঘনাদ ও প্রমীল! নিপ্রিত ছিলেন নিশাবসানে সেখানে প্রভাতী পাখীর গান শুনিয়া মেঘনাদ জাগ্রত হুইয়৷ মধুর প্রণয়বাকো প্রমীলার নিদ্রাঙ্গ করিলেন। মেঘনাদ প্রমীলাকে বলিলেন যে, প্রথমে তাহারা মাতা মন্দোদরীর আলয়ে যাইয়! তাহার পাদবন্দন। করিবেন; পরে অগ্নিদেবের পৃজা করিয়। রামের যুদ্ধসাধ পূর্ণ করিবেন। মেঘনাদ ও প্রমীলা বেশভূষা করিয়া শিবিকারোহণে মন্দোদরীর আলয়ে উপস্থিত হইলে ব্রিজটানায়ী রাক্ষপী দ্রুত তাহাদের অভ্যর্থনা করিতে আসিল। মেঘনাদ তাহাকে বলিলেন যে, পিতার আদেশে রামের সহিত ুদ্ধাত্রার পূর্বে তিনি মাতার চরণবন্দনা করিতে আসিয়াছেন। ত্রিজট1 বলিল যে, রাক্ষস-রানী পুত্রের মঙ্গলকামনায় শিবমন্দিরে পূজা দিতে গিয়াছেন। সে মন্দোদরীকে সংবাদ দিবার জন্য দ্রুত প্রস্থান করিল। রক্ষঃপুরীর গায়িকাগণ অন্দোদরী, প্রমীলা ও মেঘনাদের প্রশস্তি গাহিতে আরম্ভ করিল।
মন্দোদরী শিবালয় হইতে বহির্গত হইলে পুত্র ও পুত্রবধূ তাহাকে প্রণাম করিলেন। মদ্দোদরী উভয়কে নিজের কোলে বদাইয় আনন্দাশ্র বর্ষণ করিতে লাগিলেন । মেঘনাদ মাতার আশীর্বাদ গ্রার্থন। করিয়। বলিলেন যে, আজ নিকুক্তিল! যজ্ঞ সমাপন করিয়া তিনি রামচন্ত্রকে যুদ্ধে বধ করিবেন, রাজজ্রোহী বিভীষণকে বন্দী করিয়া আনিবেন এবং বানর সৈম্তগণকে লক্ষ! হইতে বহিষ্কৃত করিবেম। মন্দোদরী চক্ষু মৃছিয়। নিজের মনের আশঙ্কা /্জাপন করিলেন। শক্তিমান রাম ও লক্ষণ যুদ্ধে অত্যন্ত নিগুণ, বিভীষণ সর্পের ন্যায় খল এবং স্বজনদ্রোহী ;--হৃতরাং মেঘনাদকে বিদায় দিতে তাহার মন সরিতেছে না। মেঘনাদ হাসিয়] উত্তর করিলেন যে, রাম-লক্ষ্ণকে মাতা বৃথা ভয় করিতেছেন । ইতঃপূর্বে ছই ছুইবার তিনি উভয়কে যুদ্ধে পরান্ত করিয়াছেন। মায়ের আবীবাদে তিনি যে বিশ্ববিজয়ী ইহা ত্রিভুবনে কাহারও অজ্ঞাত নহে। তুচ্ছ শক্র রামের ভয়ে মাতার ব্যাকুলতা অহেতুকী। মন্দোদরী বলিলেন,__রাম হয় মায়! জানে, নতুবা সে দৈববলে বলী। পূর্বে যখন মেঘনাদ নাগপাশে রাম-লক্ষ্রণকে বন্ধন করিয়াছিল, তখন সে বিষম বন্ধন কে খুলিয়া দিয়াছিল? দ্বিতীয়বার যখন নিশারণে সসৈন্নে তাহাদের মে বধ করিয়াছিল, তখনই বা কে তাহাদের বাচাইল? তিনি শুনিয়াছেন যে,.রামের আদেশে জলে শিল] ভাসে, অগ্নি নির্বাপিত হয় এবং বৃষ্টিপাত হুয়। এইরূপ মায়াবী . শক্রর সঙ্গে কোন প্রাণে তিনি পুত্রকে যুদ্ধ করিতে পাঠাইবেন?
মেঘনাদ মাতাকে প্রবোধ দিয়া বলিলেন, পূর্বের ঘটনা লইয়া! বিলাপ বৃথা । নগরদ্ধারে শত্রু অবস্থিত। সেই শক্র বিনাশ করিতে না পারিলে তিনি মনে শাস্তি পাইবেন না। বীর রাক্ষপবংশে তাহার জন্ম । শক্রর ভয়ে চুপ করিয়৷ বগিয়৷ থাকিয়া' মেই বংশের গৌরব লাঁঘব করিবার সুযোগ তিনি রামকে দিবেন না। তাহার কাপুরুষোচিত আচরণের কথা শুনিলে মাতামহ ময়, বীর মাতুলগণ সকলে উপহাস করিবে। প্রভাত হইয়া আসিল। ইঠদেব অগ্নির পৃজা করিয়া! তিনি অবিলঘ্ে শত্রু ধ্বংস করিয়া ফিরিয়৷ আসিয়া মাতৃপদ পূজা করিবেন। তিনি যুদ্ধার্থ পিতৃ-আজ্ঞা' পাইয়াছেন; এক্ষণে মাতার আজ্ঞা ও আশাবাদ লাভ করিলে কে তাহাকে যুদ্ধে পরাজিত করিতে পারে?
মন্দোদরী চক্ষু মুছিয়! বলিলেন যে, মেঘনাদ ষদি একান্তই যুদ্ধে যায়, তবে মহাদেব, যেন তাহাকে রক্ষা করেন। অনন্তর প্রমীলার দিকে চাহিয়া! বলিলেন যে, পুত্রবধূ যেন: তাহার নিকটে থাকিয়া পুত্রের অভাব কিছুট! দুর করে।
মাতাকে প্রণাম করিয়া মেঘনাদ পদব্রজ্জে বনপথে একাকী যজ্ঞশালা ভিমুখে চলিলেন। মন্দৌদরী ও গ্রীল! অস্তঃপুরে গ্রবেশ করিলেন। কিছুদূর অগ্রসর হইয়াই মেঘনাদ পশ্চাতে অতিপরিচিত নৃপুরধ্বনি শুনিয়া! সহাস্যবদনে ফিরিয়া গ্রমীলাঁকে আলিঙ্গন করিলেন। প্রমীলা! আক্ষেপ করিয়া বলিলেন যে, তিনিও পতির সহিত যজ্ঞাগারে যাইবেন ভাবিয়াছিলেন, কিন্তু শীশুড়ীর আদেশে তাহাকে গৃহে থাকিতে হইল। মেঘনাদ প্রমীলাকে সান্তনা দিয়া বলিলেন ষে, তিনি এখনই শক্রবধ করিয়া ফিরিয়া আপসিবেন। সঙ্গামন্দময়ী গ্রমীলার নয়নে অশ্রু শোভা গায় না। বেলা ক্রমেই বাড়িতেছে। প্রমীলা অনুমতি দিলে তিনি যজ্াগারে যাইতে পারেন। কামদেব ঘেরূপ কুক্ষণে রতিকে ছাড়িয়া! হরধ্যান ভঙ্গ করিতে গিয়াছিলেন, মেঘনাদও সেইরূপ কুক্ষণে প্রমীলাকে ছাড়িয়! যজ্ঞশালার দিকে চলিলেন। প্রমীলা স্বামীর অতুলনীয় রূপ ও গুণের কথা স্মরণ করিয়া স্বামীর কল্যাণার্থ পার্বতীর নিকট যুক্তকরে কাতর প্রার্থন৷ জানাইলেন। প্রমীলার প্রার্থনা আকাশপথে দেবীর নিকটে যাইবার সময়ে ইন্দ্র মনে মনে সন্ত্রস্ত হইলেন। পবনদেব অমনি সে প্রার্থনাধ্বনিকে দূরে উড়াইয়! দিলেন। চক্ষু মার্জন! করিয়! শূন্তমনে প্রমীলা ফিরিয়া 'আসিয়! গৃহে প্রবেশ করিলেন । হাসে নিশ! তারাময়ী ত্রিদশ-আলয়ে-ন্বর্গে তারকা-দীপ্ধ উজ্জল রজনীকাল। দ্বিতীয় সর্গে পাই £__ | “উততরিলা শশিপ্রিয়া ব্রিদশ-আলয়ে ।” (১৪) তৃতীয় সর্গে “উতরিল! নিশাদেবী প্রমোদ-উদ্ভবনে ।৮ (১৭) চতুর্থ নর্গে ৪*-৯০০-০০৯৯৭৭ জাগে লঙ্কা! আজি “নিশীথে, ফিরেন নিজ ছুয়ারে দুয়ারে, কেহ নাহি সাধে তারে পশিতে আলয়ে, বিরাম-বর-প্রার্থনে |” (৩৩-৩৬)
এই চারি সর্গোক্ত ঘটনা প্রায় তুল্যকালীন একই রাত্রিতে সংঘটিত । পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনা একই রাত্রিতে সর্বশেষে ঘটিয়াছে।
ব্রিদশ-আলয়-_দেবনিবাস স্বর্গভূমি। বাল্য, ঠকশোর ও যৌবন এই তিনটি মাত্র দশ। ঘটে বলিয়। দেবতাঁগণের নাম ত্রিদশ ।বৈজয়ন্ত- ইন্দ্রের প্রানাদ।
ভ্রিপিব-পতি-ন্বর্গপতি ইন্্র। ব্রহ্ষা-বিষণ-মহেষ্বর,_এই তিন প্রধান দেবতার আনন্দপূর্ণ বাসস্থান বণিয়া স্বর্গের অন্ত নাম ত্রিদিব । 'ভ্রয়ে৷ দিব্যস্তি অত্র" এই অর্থে ত্রিদিব।
কিন্তু চিন্তাকুল এবে_-রাত্রি প্রভাত হইলে মেঘনাদের সহিত লক্ষণের যুদ্ধ হইবে। লেই যুদ্ধে প্রবল পরাক্রমশালী মেঘনাদের আক্রমণে লক্ষণ রুক্ষ! পাইবেন কিনা এই চিন্তায় ইন্দ্র ব্যাকুল।
অভিমানে--শচীকে উপেক্ষ। করিয়৷ বিনিদ্রভাবে চিস্তামগ্ন থাকার জন্য ।
স্বরীশ্বরী-ন্বর্গের অধীশ্বরী শচী; স্বর (স্বর্গবাচক অবায় )+ঈশ্বরী ।
সুরেশ -দেবরাজ।
ক্ষণেক যুদিছে, ইত্যাদি__দেবরাজ স্বয়ং বিনিদ্র থাকায় তাঁহার চিত্তরবিনোদনের জন্ত আগতা৷ মেনকাদি অপ্দরারাও বিশ্রামের জন্য প্রস্থান করিতে পারিতেছে না। অথচ তন্ত্রাচ্ছন্ন হইয়া ঢুলিয়। পড়িয়া পরমুহূর্তেই ইন্দের ভয়ে চক্ষরুত্মীলন করিতেছে । তরাসে -ত্রানে- ইন্দ্রের অসন্তষ্টির ভয়ে। স্পান্দহীন যেন-_তন্্রাচ্ছন্নতাহেতু নিশ্চল। চিত্র-পুত্তলিক-সম চিত্রলেখা-__চিত্রলেখা নামী অগ্গরা চিত্রে অঙ্কিত মৃতির ্যায় স্থির। আর কারে ভয় ঠার- ইন্দ্রের নিদ্রায় অনিচ্ছা বুঝিয়৷ নি্রাদেবী ভয়ে তাহার কাছে যাইতেছেন না। ইন্ত্র ব্যতীত অপর কাহারও ইচ্ছা-অনিচ্ছা তিনি গ্রাহথ করেন না। দৈত্যদল আসি ইত্যাি_ইন্্রকে গভীর চিন্তায় মগ্ন দেখিয়া শটী পরিহাস করিয়৷ বলিতেছেন যে, প্রবল পরাক্রান্ত দৈত্যগণ কি পের মত স্বর্গ অবরোধ করিয়া বসিয়া আছে? রাবণি-_রাবণপুত্র মেঘনাদ। পাইয়াছ অস্ত্র, কান্ত ইত্যাদি__দ্বিতীয় সর্গে পাবতীর আহ্বকৃল্যে ইন্দ্র মেঘনাদের নিধনকার্ধে সমর্থ দৈবান্ত্র মায়াদেবীর নিকট প্রাপ্ত হইয়] তৎক্ষণাৎ চিত্ররথ নামক গ্ধার্বের সাহায্যে তাহা রামচন্দ্রের নিকট প্রেরণ করেন,_-এইরূপ বণিত হইয়াছে । পৌলোমী- পুলোমা (পুলোমন্) ন।মক দানবের কন্যা শচী। ইন্দ্র গুলোমাকে নিহত করিয়! তাহার কন্যাকে বিবাহ করেন। অনন্ত-যৌবনা _ কারণ দেবদেবীগণের যৌবনের পর অন্য দশ! নাই। যানে বধিল! তারকে ইত্যাদি--ছ্বিতীয় সর্গে মায়দেবী দৈবাস্ত্রের পরিচয় দিবার সময়ে ইন্্রকে বলিয়াছে_ “দুরস্ত তারকান্থর, হৃরকুলপতি, কাড়ি নিল স্বর্গ যবে তোমায় বিমুখি সমরে। কৃত্তিকাকুল-বল্লত সেনা মী, পার্বতীর, গর্ভে জন্ম লভিল৷ ততৎ্কালে। বধিতে দানবরাজে সাঁজাইল। বীরে আপনি বুষভধ্বজ হুজি রুদ্রতেজে অস্দ্রে।?
দাসীর সাধনে-_শচীর প্রার্থনায় । দ্বিতীয় সর্গে উল্লিখিত হইয়াছে যে, শচীও পার্বতীকে মেঘনাদবধের ব্যবস্থা করিবার অন্থরোধ করিতে ইন্দ্রের সহিত কৈলাসে গিয়াছিলেন।
সাধবী--সতীশ্রেষ্ঠা।
কালি_ রাত্রি প্রভাত হইলে।
মায়! দেবীশ্বরী--ছিতীয় সর্গে মায়! ও পার্বতী স্বতন্ত্র দেবী। শিব পার্বতীকে বলিয়াছেন £-- "পাঠাও কামেরে, উমা, দেবেন্দ্র সমীপে ।
সত্বরে যাইতে তারে আদেশ, মহেশি, মায়াদেবী-নিকেতন ।” ( ৪৩৫-৩৭ পংক্তি )
কিন্তু এই সর্গে চণ্তীর দেউলে দেবীর আবির্ভাব বর্ণনায় দেবী ও মায় অভিন্ন বলিয়া বণিত হইয়াছেন । ৩৪৪-৩৫৮ পংক্তি দ্রষ্টব্য । ভারতীয় পুরাণের দেবদেবী-চরিত্রের সহিত গ্রীক পুরাণোক্ত দেবদেবী-চরিত্রের সংমিশ্রণ ঘটাইবার ফলেই এরূপ অসামপ্রস্ত দেখা গিয়াছে ।
বধের বিধান- মেঘনীদবধের উপায় ।
দস্তী- হস্তী।
আটে মৃগরীজে__পশুরাজ সিংহের সমকক্ষ হয়।
জানি আমি... আটে মৃগরাজে ?-_-এস্লে লক্ষণ শক্তিমান হইলেও মেঘনাদের সমকক্ষ নহেন। এই উক্তিটি পরবর্তী দৃষটান্তের দ্বার! পরিস্ফৃটিত হওয়ায় ৃষ্টাত্ত অলঙ্কার হইয়াছে ।
দত্তোলি-নিধধোষ-__বজ্র-গর্জন |
ইরম্মাদ-_বজাগ্রি। যধুস্দন কর্তৃক বহুল ব্যবহৃত শব ।
বিমান- ইন্দ্রের আকাশ-যাঁন। “ব্যোমধানং বিমাঁনোইস্ত্রীঃ” (অমরকোষ )।
চাপে-ধন্গকে।
মহেত্াস- মহাধসুর্ঘর। ইষুর (বাণের ) আস (আসন )-ইঘাস-ধনুক; মহৎ ইঘাস যাহার--মহেঘাস।
এঁরাবত-_সমুদ্রোভভুত ইন্দ্রের হস্তী। “এরাবতাভ্রমাতলৈরাবণীভমু-বল্পভাঃ”-(অমরকোধ) এরাবত, অন্রমাতঙ্গ, রাবণ এবং অভ্রমূ-বল্লভ এই চারিটি এরাবতবাচক শব ।
জিদিব-দেবা_ত্রিদিববাসিনী অর্থাৎ স্বর্গবাসিনী দেৰী। মধ্যপদলোগী কর্মধারয় ।
পরদে- লরোবরে ৷ সরঃ (সরস্) শবের উত্তর অধিকরণে 'এ' বিভ্তি।
সরনে যেমতি ইত্যাদি_--সরোবরে রাত্বিকালে নিমীলিত শ্রান পদ্মের চাঁরিপাশে জ্যোতস্ারাশিকে যেমন দেখায়, আসন্ন বিপদের আশঙ্কায় বিষগ্নবদনে উপবিষ্ট ইন্দ্রশটীর চারিপাশে অবস্থিত মেনকাদি সন্দরীগণকেও তেমন দেখাইতেছিল। উপমেয় টন্দ্রশসী ও মেনকাদি এবং উপমান মুদ্রিত পদ্ম ও স্থধাকর-কররাশি। ইহার্দের সাধারণ ধর্ম (ক্রিয়াগত ) প্রথম বাক্যে 'দীড়াইল। চারিদিকে এবং পরবাক্যে বেড়ে? বিভিন্ন হইলেও একই অর্থ প্রকাশ করিতেছে বলয় বস্ত-প্রতিবস্তুভাব-বিশিষ্ট উপম। অলঙ্কার ।
কিন্ব। দীপা বলী ইত্যাদি--অথবা! শারদীয়! দুর্গাপূজাকালে ছুর্গাদেবীর বেদীর শিয়ে প্রদীপসমূহের দীপ্তির সহিত ইন্দ্র-শচীর সিংহাসনের নিম্নে অবস্থিত মেনকাদির দেহকান্তির তুলনা করা চলে। একই উপমেয়ের সহিত একাধিক উপমানের তুলনাহেতু মালোপম। অলঙ্কার ।
চির-বাঞ্থ।__সর্বকালীন কামনার ধন। “মায়েরে শঝের বিশেষণ।
মৌনভাবে -চিন্তাকুলতা হেতু ।
পল্পতী_স্বামিত্্ী। জায়া ও পতি শব ছন্দ সমাঁসে জায়াপতী, জম্পতী ও দপতী হএ, দ্বিব্১নান্ত শব্ধ বপিয়। “ঈ'-কারান্ত।
উত্তরিল।€অব+ত্ অবতীর্ণ হইলেন , উপস্থিত হইলেন।
দেবালয়ে-দেবধাম স্বর্গে। ( অপ্রচলিত )
রতন-সন্ভব। বিভ। দ্বিগুণ বাড়িল ইত্যাদি--তেজব্ষিনী মায়াদেবী ইন্দ্রালয়ে আপিযা উপস্থিত হইলে তাহার অত্যজ্জল দেহপ্রভা রত্রসমূহের উপর প্রতিফলিত *$ এখায় নন্দনকননে প্রস্ফুটিত স্বভাবতঃ উজ্জল মন্দীরপুষ্প হুর্যকিরণম্পর্শে যেরূপ উজ্জল তর হইয়া উঠে, মেইরূপ রত্রপমূহ হইতে নির্গত জ্যোতিও উজ্জলতর হইয়া উঠিল।
সসন্ত্রমে প্রণমিল। ইত্যাদি মায়াদেবী ইন্দ্রাদি হইতে মহত্বর। বলিয়া শচী:ও ইন্ত্র ব্স্তলমন্ত হইয়া তাহার চরণ বন্দনা! করিয়। তাহাকে অভ্যর্থনা করিলেন।
স্থৃধিল। ( শুধিল! )__জিজ্ঞাসা করিলেন।
আদিতেয় - অদিতির পুত্র দেবতা ) এস্কলে ইন্দ্র ।
মনোরথ .তামার পুরিব- তোমার পরমশক্র মেঘনাদের বধের ব্যবস্থা করিয়া তোমার মনোবাসনা পূর্ণ করিব।
রক্ষঃকুস-চুড়ামণি চুর্ণিব কৌশলে-_শক্তিদ্বার৷ না পাঁরিলেও দৈবী মায়ার সাহায্যে রাক্ষমবংশের শ্রেষটরত্বশ্বরূপ মেঘনাদের বিনাশ ঘটাইব। জূপক অলঙ্কা পোহাইছে- প্রভাত হইতেছে। গ্র+ভান১পোহানো ।
ভবানল্দময়ী_-বিশ্বের আনন্দদায়িনী ।
লঙ্কার পন্কজরবি- মেঘনাদের বিশেষণরূপে বহুল ব্যবহৃত শব্দ। লঙ্কারূপ পঙ্কজের পক্ষে হুর্য-স্বরূপ মেঘনাদ । শব্দটিকে সমাসের নিয়মানুসারে সার্থক প্রয়োগ বল! চলে না। প্রথমে লঙ্কারূপ পঙ্কজ এই রূপক কর্মধারয় সমান গঠন না করিয়া রবির সহিত সমাসবন্ধন করা যায় না। 'লঙ্কা-পক্কজিনী-রবি' অথবা 'লঙ্কা-পক্কজের রবি" সার্থকতর প্রয়োগ হইত। মধুসুদ্ন চতুর্দশশপদী কবিতা “কমলে কামিমী”তে “কবিতা-পঙ্কজ-রবি, শ্রীকবিকঙ্কণ” এই সার্থক প্রয়োগও করিয়াছেন। সংস্কৃত ব্যাকরণেও এই জাতীয় মমাস-বৈলক্ষণ্য দৃষ্ট হয়'এবং “নাপেক্ষত্বেইপি গমকত্বাৎ সমানঃ” ( অর্থাৎ পদমমূহের পরম্পর সাপেক্ষত্ব নত্বেও স্ম্পষ্ট অর্থবোধহেতু সমাস) এই বচন দ্বার! সমান স্বীকৃত হয়।
নিকুক্ভিল।__-রামায়ণে লঙ্কার একটি পর্বতগুহার নাম। মেঘনাদবধ কাব্যে মেঘনাদের ষজ্ঞগৃহরূপে কল্পিত।
তন্থর।রি-_হে অস্থর-রিপু ইন্ত্র।
নিরঙ্ত্র। হুর্বল বলী-_বলবান হইলেও নিরস্ত্র অবস্থায় শক্তিহীন মেঘনাদ ।
আনায়-মাঝারে--জাল বা ফাদের মধ্যে আবদ্ধ।
বারতা -বার্তা- সংবাদ ।
রখুমিত্র বিভীষণের বিশেষণ।
দেবেজ্ৰ-_( সম্বোধনে ) হে দেবরাজ ইন্দ্র ।
কৃতান্ত সদশ_যমস্বরূপ ভয়গ্কর। রুত অন্তষাহা দ্বারা-কৃতীন্ত-যম।
নঘুচিসূপন_নমুচি নামক দৈত্যের ব্ধকর্তা ইন্্ু।
কবু'রকুলের গর্ব-_রাক্ষদ-বংশের দর্প-ম্বরূপ মেথনাদকে।
সমরিবে-(নামধাতু ) সমর বা যুদ্ধ করিবে।
বঞ্জি-হে বজ্রধারি ইন্দ্র।
পিরীতি এগ্রীতি_সম্তোষ, আনন্ব।
শ্তীশ্বরী__মহাশক্তি মায়াদেবী।
দেবেজ্দঞের পদে নিদ্রা ইত্যাদি-_মায়াদেবীর সুস্পষ্ট আশ্বাসবাক্যে নিশিস্ত হওয়ায় ইন্দ্র নিত্রিত হইলেন। অচেতন নিদ্রায় চেতনা-বিশিষ্ট মানবের সমান কার্য প্রণাম করা আরোপহেতু সমাসোক্তি অলঙঞ্কার ।
/মহা-ইজ্দ্র-যহেন্দ্র শবটিকে ছন্দের অনুরোধে অনংহিত রাখা হইয়াছে।
কিদ্িণী_নৃপুর, মেখল! ইত্যাদিতে সংলগ্ন ক্ষত ক্ষুদ্র ঘর্টিক! বা ঘুঙুর |
কাচলি-কঞ্চলিকা__স্ত্রীলোকের বক্ষ-আবরক বন্বন্ধন।
সৌরকররাশিরূপিণী সুরনুন্দরী_ সর্ষের কিরণমালার ন্তায় সমুজ্জল-দেহা মেনকাদি দেবপুবীর স্থন্দরীগণ।
পরিমলময় বায়ু-হুগন্ধি বায়ুপ্রবাহ। পরিমল শব্ের আভিধানিক অর্থ হইতেছে চন্দন প্রভৃতি মদ্দিত বা পিষ্ট বন্ত হইতে উৎপন্ন স্থুগন্ধ। প্বিমর্দোখে পরিমলো গন্ধে জনমনোহরে |” (অমর )। বাঙ্গালায় সাধারণতঃ স্থবান অর্থেই ব্যবহৃত।
অলক-- কপাল ও গণস্থলে সংসপিত চুর্ণ-কুস্তল বা! ক্ষুত্র ক্ষুদ্র কেশগ্রচ্ছ।
প্রফুল্লিত এপ্রফুল্প__বিকশিত, প্রন্ক/টত। ব্যাকরণছুষ্ট প্রয়োগ ।
বিমোহিনী- বিশ্বের বিভ্রম উৎপাদনকারিণী মায়! ।
স্বপন-দেবীরে-্বপ্ন বা নিদ্রার দেবতা) গ্রীক-পুরাণের “সম্নাসের' অঙগকরণে কল্পিত। ইলিয়ড, কাব্যেও দেবরাজ জুপিটার কক গ্রীক সেনাপতি আগামেম্ননের নিকট আশ্বামবাণী-বহনকারী নেস্টর-রূপধারী সম্নাস্কে প্রেরণের কাহিনী আছে। তুলনীয়,_ |
"Canst thou with all a monarch's cares oppress'd
Oh Atreus' son! Canst thou indulge thy rest?" (Canto II)
দেউল দেবকুল_ দেবমন্দির |
দেখ, পোহাইছে রাতি, বিলম্ব ন| সহে-_মায়াদেবীর অধীরতার কারণ এই যে, রাত্রি প্রভাত হইলে লক্ষণের পক্ষে অপরের অজ্ঞাতসারে চণ্ডীর দেউলে যাইয়। দেবীর পৃজা করা অসম্ভব হইবে এবং অন্যদিকে মেঘনাদ যজ্ঞ সমাপন করিয়া শক্তিলাভের স্থধঘোগ পাইবে।
উব্রি এউতরি-অব+ত্_অবতীর্ণ হইয়া, আবিভূতি হইয়া ।
কুহুকিনী-_কুহুক বা মায়া স্থষ্টি করিতে সমর্থাস্বপ্নদেবী |
যবে আমি বিদায় হইন্ু ইত্যাদি--লক্ণের অধোধা| ত্যাগকালে নুমিত্রা নিশ্চয়ই পুত্রবিরহে আকুল হইয়াছিলেন। কিন্তু এ স্থলে কবির উক্তির মধ্যে তাহার ্সাস্তরগ্রহণ এবং স্সেহ্ময়ী মাতার সহিত চিরবিচ্ছেদের ছুঃংখই ষেন ধ্বনিত হইয়া
।উঠিয়াছে। বীরকু্জর-_বীরশ্রেষ্ঠ। বীর কুণরের (হন্তীর ) মত) উপমিত সমাস।
কুঞ্জর-গমনে- হস্তীর ন্যায় স্থির ও দৃঢ় পদবিক্ষেপে। রক্ষঃপুরে রাঘব-রক্ষণ তুমি বিদিত জগতে-_রাক্ষদগণের সহিত যুদ্ধে রামচন্দ্র যে বিভীষণের উপর একান্ত নির্ভরশীল তাহ] রামচন্দ্র পুন:পুনঃ ব্যক্ত করিয়াছেন। কবির ব্যক্তিগত ধারণাঁও যে এইরূপ ছিল তাহা "He (Meghanad) was a noble fellow, and but for that scoundrel Vibhisana, would have kioked the monkey army into the sea."-এই উক্তি হইতে বুঝিতে পাঁর। যায়। “শুতক্ষণে, রক্ষোবর, পাইন তোমারে আমি! তোমা বিনা, মিত্র, কে আর রাখিবে এ দুর্বল বলে, কহ এ বিপত্তি কালে?” (৩য়। ৩০০-৩০২) “নীলকঠ ষথা ( নিস্তারিণী-মনোহর ) নিস্তারিল! ভবে, নিস্তার এ বলে, মখে, তোমারি রক্ষিত।” ( ৩য়। ৪৪২-৪৪৪ ) “নাহি কাজ বৃথ। বাক্যব্যয়ে-_ জীবন, মরণ মম আজি তব হাতে ।” (৬ষ্ঠ। ২৩৫-২৩৬) “শুতক্ষণে, সখে, পাইন তোমায় আমি এ রাক্ষমপুরে। রাঘবকুল-মঙ্গল তুমি রক্ষোবেশে ! কিনিলে রাঘবকুলে আজি নিজ গুণে, গুণমণি! গ্রহরাজ দিননাথ যথা, মিত্র-কুলরাজ তুমি, কহিন্থ তোমারে ।” (৬ষ্ঠ। ৭৩২-৭৩৭ ) মেঘনাদবধ-কাব্যে বিভীষণ সম্বন্ধে রামচন্দ্রের উল্লিখিত উদ্ধৃতিগুলি কবির নিজস্ব ধারণাঁরই প্রতিফলন মাত্র। আপনি রাক্ষমনাথ পুজেন সতীরে-_কৃত্তিবামী রামায়ণেও রাব্ণকতৃক দেবীপূজার উদ্েখ আছে। আয়াদিতে-( নাম ধাতু ) আয়াম বা ক্রেশ দিতে । আয়দী-সদবশ--লৌহময় বরমস্বরপ। অয়ঃ (লৌহ) গঠিত-_আয়স; স্লিঙ্গ আয়দী।
বীতিহোত্র-রূপী-_ অগ্নির স্তায় তেজস্বী। বীতি (ভোঞ্জন ) হোত (হোম) যাহার ; অথবা বীতি (দীপ্তি) হোত্বে ( হোমকার্ধে) যাহার) সমানাধিকরণ বা ব্যধিকরণ বহুবীহি সমাস।
দীপিছে ললাটে ইত্যাদি_মহাসর্পের মন্তকে উজ্জল মণির ন্যায় ল্ষ-দৃষ্ট ভীষণদর্শন মূত্র কপালে চন্দ্রকল। দীপ্তি বিকাশ করিতেছিল।
জটাজুট শিরে,তাহার মাঝারে[ইত্যাদি__সেই ভীষণ মৃত্তির মন্তকস্থিত পিক্গল জটারাশির মধ্যে গঙ্গার শুত্র জলোচ্ছাস দেখিয়া মনে হইতেছিল যেন শরৎকালের রাত্রিতে মেঘের মধ্যে শুত্র জ্যোৎস! প্রতিফলিত হইতেছে। “ষেন' শৰের প্রয়োগ ছার৷ উপমাঁনকেই উপমেয়রূপে প্রবল সংশয় প্রকাশ করায় এস্থলে উৎপ্রেক্ষা অলঙ্কার হইয়াছে।
রজোরেখ|-রজতরেখা-রৌপ্যবৎ শুত্র বিকাশ । রজত অর্থে মধুক্থদন বহস্থলে রজঃ শবের প্রয়োগ করিয়াছেন। অবাচকতা দোষ।
বিভূতি-ভুষিত অঙ্গ_ দেহখানি ভন্মলিপ্ত।
চিলিল! সৌমিত্রি ভূতনাথে-_বিশাল ও ভীষণ আকৃতি, ললাটস্থ চন্দ্রকলা, জটাজালের মধ্যে গঙ্গাধারা, ভম্মলিপ্ত দেহ এবং হস্তস্থিত ত্রিশূল দর্শনে লক্ষণ উদ্যানরক্ষী মহাদেবকে চিনিতে পারিলেন।
নিক্ষোষিয়।_ কোষমুক্ত করিয়া।
তেজস্কর-_প্রদীপ্ত, উজ্জ্বল ।
রঘুজ-অজ-তঙ্গজজ-_রঘুর পুত্র অজ, তাহার ওরসজাত দশরথ |
বিলম্ব না! সন্থে-কারণ অধিক বিলম্বে রাত্রি প্রভাত হইয়া গেলে কার্ধসিদ্ধির ব্যাঘাত ঘটিবে।
যথা শুনি বজ্জনাদ, ইত্যাি__ব্রধ্বনি পর্বতে যেরূগ গম্ভীরশবে গ্রতিধবনিত হয় সেইরূপ গম্ভীর কন্যে।
বৃষধ্বজ- মহাদেব; বৃষ ছারা উপলক্ষিত দেবতা! ।