shabd-logo

বিশদ টীকা-টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাথ্যাদি (সপ্তম সর্গ)

28 December 2023

4 Viewed 4

সপ্তম সর্গে বধিত মূল ঘটনাটি হইতেছে,_মেঘনাদের মৃত্যুসংবাদ শ্রবণে রাবণের' ক্রোধ, এবং প্রতিহিংমাপরায়ণ রাবণের সহিত যুদ্ধে শক্তিশেলাহত হইয়া! লক্ষণের পতন। এই মূল ঘটনাটি রামায়ণ হইতে গৃহীত। কিন্তু রাঁবণের শোকে মহাদেবের সমবেদন1) বীরভদ্রকে দূতরূপে লঙ্কায় প্রেরণ এবং রাবণকে রুদ্রতেজ দান; রাবণের দৈশ্তলজ্জা দর্শনে উদ্দিগ্া। লক্্মীদেবীর স্বর্গে গমন এবং ইন্ত্রকে রামচন্দ্রের সাহায্যের জন্য অনুরোধ দেবতাগণের, রাক্ষলগণের ও রামচন্দত্রের সৈন্যসজ্জ দর্শনে ভীতা পৃথিবীর বৈকুণে গমন এবং তীহার প্রার্থনায় বিষ্ুর দেবতেজঃ হরণের জন্য গরুড়কে মত্যে প্রেরণ? দেবগণের সহিত রাবণের সম্মুখ মমর এবং রাব্ণ-হস্তে সকলের পরাজয়,-এই সকল ঘটনাই রামায়ণ-বহিভূতি এবং কবির স্বকপোল-কল্পিত। এই নর্গের আর একটি বৈশিষ্ট্য এই ষে, অন্ঠান্ত সর্গের মত এই সর্গে পাশ্চাত্য কাব্যের প্রভাবও খুব বেশি পরিমাণে প্রতিফলিত হয় নাই।

কাব্যে বিত কালের বিচার-_মেঘনাদবধকাব্যের ষ্ঠ ও সথুম সর্গে বণিত ঘটনা বীরবাহুর মৃত্যুর পরদিবদে সংঘটিত হুইয়াছে। মায়াদেবীর কৃপায় নিকুস্তিকণ' যজ্ঞশালায় বিভীষণের হিত অনৃষ্ঠভাবে» উপস্থিত হইয়া লক্ষ্মণ মেঘনাদকে নিরন্তর অবস্থায় বধ করিয়! রামচন্দ্রের শিবিরে প্রত্যাবর্তন করার পর হৃর্যোদয় হইল। পঞ্চম , অর্গেব শেষে বল! হইয়াছে যে, অতি গ্রত্যুষে মেঘনাঁদকে প্রমীলা যজ্শালার পথে বিদায়' দিয়া মন্দোদরীর প্রাসাদে ফিরিয়া আমিলেন। এই স্বল্প অবকাশটুকুর মধ্যেই এই কাঁব্যে বণিত ঘটনার চরম পরিণতি ঘটিয়াছে, লক্ষণের হস্তে মেঘনাদ নিহত হইয়াছেন । পঞ্চম সর্গে বধিত শেষরাত্রে লক্ষণের স্বপ্রদর্শনের পর হইতে ৬ষ্ঠ সর্গের' পরিসমাপ্তি পর্বস্ত ঘটনাপ্রবাহ অতিদ্রতবেগে বহিয়! চলিয়াছে। লক্ষণের স্বপ্নদর্শন' হইতে মেঘনাদবধের পর লক্ষণের রামশিবিরে প্রত্যাবর্তন পর্যস্ত সমগ্র ঘটনাবলীর বিস্তৃতিকাল ছুই তিন ঘণ্টার অধিক হইতে পারে না।

বিষয়-সংক্ষেপ 2" মেঘনাদ নিহত হইবার পর স্র্ধোদয় হইল। প্রমীলা গ্রাতঃনান করিয়া বেশভূষা ধারণ করিতে যাইয়া মান! ছুনিমিত্ত দর্শনে তাহার সখী বাসস্তীকে জিজ্ঞাসা করিলেন যে, অলঙ্কার ধারণ করিতে যাইয়া তিনি আজ দেহে ব্যথা অন্ভব, করিতেছেন কেন; কেনই বা তিনি লক্কাপুরে অদৃশ্ঠ ক্রন্দন শব শুনিতেছেন? তাহার দক্ষিণ-চন্ছু স্পন্দিত হইতেছে এবং মন ব্যাকুল হুইয়া উঠিতেছে। তিনি বামস্তীকে অন্রোধ করিলেন, মে যেন যজ্ঞশালায় যাইয়! তাহার দোহাই দিয়া আজ মেঘনাদকে যুদ্ধে যাইতে নিষেধ করিয়া আসে।

বাসস্তীও ক্রন্দনধ্বনি শুনিতে পাইয়া বলিল যে, লঙ্ক।বাসিগণের ক্রন্দনের কারণ কি তাহ! তাহার অজ্ঞাত। শিবালয়ে মন্দোদরী যেখানে শিবপৃজায় রত সেইস্থানে যাইবার প্রস্তাব সে করিল; কারণ রাজপথ তখন রণমত্ত সেনাদল দ্বারা পূর্ণ হওয়ায়, একাকিনী তাহাঁর পক্ষে দূরস্থিত যজ্ঞশাল[য় যাওয়া লম্তবপর নহে। তখন উভয়ে মন্দোদরীর নিকটে যাত্রা করিলেন।

এদিকে কৈল(সে শিব বিষাদে দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যগ করিয়া দেবীকে বলিলেন ষে, দেবীর মনোরম পূর্ণ হইয়াছে * মায়ার সহায়তায় লক্ষণ যজ্রশালায় মেঘনাদকে নিহত করিয়াছে । ভক্ত রাবণের দুঃখে তিনি অত্যন্ত ছুঃখিত। তিনি রুদ্রতেজঃ দান ন] করিলে পুত্রশোকের প্রচণ্ড আঘাত রাঁবণ সহা করিতে পারিবে না । দেবীর অনুরোধে তিনি ইন্দ্রের প্রতি অন্টগ্রহ করিয়। মেঘনাদবধের ব্যবস্থা করিয়াছেন,_-এক্ষণে তিনি ভক্ত রাবণকে কিছু অনুগ্রহ করিতে চান। প্রত্যাত্তরে দেবী বলিলেন যে, শিব যাহ ইচ্ছ। হয় করিতে পারেন; কেবল এইটুকু ষেন তিনি স্মরণ রাখেন যে, রামও দেবীর ভক্ত। রামের যেন কোন অকল্যাণ না ঘটে।

শিব তখন তাঁহার অন্থচর বীরভদ্রকে ডাকিয়া! বলিলেন যে, যজ্ঞশালায় মেঘনাদ নিহত হইয়াছে, এই সংবাদ কেহ রাবণকে দিতে সাহস করিতেছে না। মেঘনাদ যে কি ভাবে নিহত হইল তাহাও রাক্ষমেরা কেহ জানে না। বীরভদ্র ষেন রাক্ষস-দূতের বেশে রাবণের সভায় উপস্থিত হইয়া! তাহাকে রুদ্রতেজে পূর্ণ করিয়া এই সংবাদ জানাইয়া আদেন।

শিবের আদেশে বীরভদ্র আকাশ-পথে যাত্রা করিলেন। লঙ্কায় উপস্থিত হইয়া প্রথমে তিনি নিকুত্তিলা ঘজ্ঞশালায় যাইয়৷ নিহত মেঘনাদের দেহ দর্শন করিলেন। তার পর তিনি রাবণের রাজসভায় রাক্ষস দূতের বেশে প্রবেশ করিয়া, মনে মনে রাবণকে আশীর্বাদ করিয়া অশ্রপূর্ণ নেত্রে দণ্ডায়মান হইলেন। দূতের শোকার্তভাব দর্শনে বিস্মিত হইয়। রাবণ তাঁহাকে. বিদ্রপ' করিয়া বলিলেন যে, সে ত আর বামের ভৃত্য নহে; তবে আজ তাহার মুখ ম্লান কেন? আজ মেঘনাদ যখন যুদ্ধে গমন করিয়াছে, তখন কোন অমঙ্গলবার্তী শ্রবণ অসম্ভব। ইতিমধ্যেই মেঘনাদের হস্তে যদি রামের মৃত্যু ঘটিয়! থাকে, তবে সে শ্ুভসংবাদ পাইলে তিনি দূতকে উপযুক্ত পুরস্কার দিবেন। ছদ্মবেশী বীরভদ্র উত্তর করিলেন যে,তিনি অমঙ্গলবার্ভতাই আনিয়াছেন। সংবাদ বলিবার পূর্বে তিপ্নি রাবণের নিকট অভয় প্রার্থনা করিতেছেন। রাবণ বলিলেন যে, জগতে শুভাশুভ ভগবানের ইচ্ছায় সংঘটিত হয়; তিনি অভয় দিতেছেন,__দূত তাহার সংবাদ নিবেদন করুক। ছদ্মবেশী বীরভদ্র তখন দংবাদ দিলেন যে, মেঘনাদ যুদ্ধে নিহত হইয়ছে।

এই ভীষণ মংবাদ শুনিয়া রাবণ সিংহাসন হইতে মৃছিত হইয়া ভূতলে পতিত হইলেন। মন্ত্রিগণ হাহাকার শবে রাবণকে ঝেষ্টন করিলেন। ইত্যব্রে বীরভদ্্র রাঁবণের মধ্যে রদ্রতেজঃ সথশরিত করিয়া দিলে, রাবণ সহদা! চেতন] ফিরিয়া পাইয়। উঠিয়! বসিয়া, কে ইন্দ্রজিৎকে বধ করিয়াছে তাহা জানিতে চাহিলেন।

ছদ্মবেশী বীরভদ্র বলিলেন যে, ছন্মবেশে যজ্ঞশালায় প্রবেশ করিয়া অন্যায় যুদ্ধে পাপিষ্ঠ লক্ষ্মণ মেঘনাদকে বধ করিয়াছে । তাহার দেহ যজ্ঞশালায় পতিত রহিয়াছে। ষে পাপিষ্ঠ পুত্রকে বধ করিয়াছে, তাহাকে যুদ্ধে নিহত করিয়া! রাবণ যেন লঙ্কীবাসীর শোক দূর করেন। এই কথা বলিয়াই বীরভদ্ স্বরূপ ধারণপূর্বক অনৃশ্ঠ হইলেন। দেবদূতের আবির্ভাবহেতু সভ! দিব্যগন্ধে পূর্ণ হইল। 'দবারপথে নিষ্রান্ত বীরভদ্রের ৃষ্ঠবিলম্বী দীর্ঘ জট! এবং ত্রিশূলের ছায়] দেখিতে পাইয়৷ রাবণ ক্ষুব্বকণ্ঠে বলিলেন ষে, এতদিনে কি শিব ভক্তের কথা মনে করিয়াছেন? কিন্তু এখন সর্বাগ্রে তিনি শিবের আদেশ পালন করিবেন,_-পবে তীহ্ার সকল দুঃখের কথা তাহার চরণে নিবেদন করিবেন ।

রুদ্রুতৈজে পূর্ণ রাব্ণ তখনই সৈম্তগণকে যুদ্ধ-সঙ্জা করিতে আদেশ দিলেন। সভাস্থলে রণদামাম] বাঞজিয়। উঠিল? বাঁক্ষসবাহিনী তৎক্ষণাৎ চতুরঙ্গ বলে সজ্জিত হইয়া দূলে দলে বহিরগত হইল। তাহাদের পদভরে পৃথিবী কম্পিত হইল, সমুদ্র উচ্ছৃদিত হইয়া উঠিল এবং তাহাঁদের ভীষণ রণ-হঙ্কার পর্বতসমূহে প্রতিধ্বনিত হইতে লাগিল।

চারিদিকে হঠাৎ প্রচণ্ড আলোড়নে রাম চমকিত হুইয়! বিভীষণকে এই অকালপ্রলয়ের কারণ জিজ্ঞাসা করিলে, বিভীষণ ভয়ে বিবর্ণমুখে বলিলেন যে, এগুলি প্রলয়ের চিহ্ন নহে, রাবণ পুত্রশোকে আকুল হইয়া যুদ্ধের উদ্যোগ করায় পৃথিবী এইরূপ অস্থির হইয়া উঠিয়াছে। রাম এক্ষণে লক্ষ্মণকে এবং অন্তান্ত বীর সেনাঁনীকে কিভাবে রক্ষা করিবেন তাহার চিন্তা করুন। রাম তখন সেনাপতিগণকে আহ্বান করার জন্য বিভীষণকে অন্থরোধ করিলেন ।

বিভীষণ শূঙ্গধবনি করিলে স্থগ্রীব, অঙ্গদ, নল, নীল, হনুমান, জন্ববান, শরভ, গবাক্ষ, রক্তাক্ষ প্রভৃতি রামের সেনানায়কগণ আসিয়া উপস্থিত হুইলেন। রাম তাহাদিগকে. যধোপযুক্ত সম্ভাষণ জানাইয়৷ রাঁবণের যুদ্ধোগ্যমের সংবাদ বলিলেন এবং তাহাদের সকলকে অবিলঙ্গে যুদ্ধ-নজ্জ! করিয়] লক্কার হুতাবশিষ্ট একমাত্র বীর রাবণকে বধ করিয়! সীতার উদ্ধার করিবার জন্য কাতর অন্থরোধ জানটইলেন। লেীনীগণের প্রতিনিধিরূপে স্থগ্রীব রামচন্ত্রকে প্রতিশ্রুতি দিলেন যে,তাহারা প্রাণপণে রাবণের সহিত যুদ্ধ করিবেন। স্থগ্রীবের বীরবাক্যশ্রবণে রামসৈন্য “জয় রাম" রবে গর্জন করিয়া উঠিল এবং লঙ্কার রাক্ষমসৈম্ত তাহ! শুনিয়। প্রতিগর্জন করিল।

যেখানে লক্ষ্মীদেবী স্বমন্দিরে অবস্থান করিতেছিলেন, সেখানে এই গর্জন-ধ্বনি প্রবেশ করিলে তিনি চমকিত হইয়া বাহিরে আসিয়া দেখিলেন যে, দলে দলে রাক্ষসসৈন্ত যুদ্ধার্থ সজ্জিত হইতেছে । লক্মীদেবী তখনই স্বর্গধামে যাত্রা করিলেন।

ত্বর্গে ইন্দ্রসভায় তখন আনন্দের লহরী খেলিতেছে। লক্ষমীদেবীকে উপস্থিত দেখিয়া ইন্্র তাহাকে প্রণাম করিয়া বলিলেন যে, প্রধানতঃ তাহার চেষ্টাতেই আজ মেঘনাদের মৃত্যু হওয়ায় ইন্দ্র এখন নিঃশঙ্ক। লক্ষমীদেবী উত্তর করিলেন যে, মেঘনাদ নিহত হইয়াছে বটে, কিন্তু পুত্রহত্যার প্রতিশোধ গ্রহণার্থ রাবণ যুদ্ধের আয়েশজন করিতেছে । লক্ষণ মেঘনাদকে বধ করিয়৷ ইন্দ্রের মহৌপকাঁর করিয়াছে । এখন লক্ষণকে রক্ষা করার ব্যবস্থা ইন্দ্রের করা উচিত। ইন্দ্র ত্ব্গের উত্তর প্রান্তে রণসজ্জায় সজ্জিত দেবসৈন্য দেখাইয়া লক্ষ্মীকে বলিলেন যে, মেঘনাদ নিহত হওয়ার এখন আর তিনি রাবণকে ভগ্ন করেন না,_রাবণ যুদ্ধ করিতে বাহির হইলে দেবতারা রাবণের সঙ্গে যুদ্ধ করিবেন। লক্ষ্ীর্দেবী তখন যতদুর দৃষ্টি চলে ততদূর পর্ধস্ত, কাতারে কা'তারে অনংখ্য দেবসৈন্তের সমাবেশ দেখিলেন। কিন্তু সৈন্তদলের মধ্যে বায়ুর্দেব প্রভৃতি দিকৃপালকে না দেখিতে পাইয়া তাহাদের অনুপস্থিতির কারণ জিজ্ঞাসা করায় ইন্দ্র বলিলেন যে, আনন্ন যুদ্ধের ভীষণতার কথা মনে করিয়৷ তিনি দিকৃপাঁলগণকে স্ব ন্ব রাজা রক্ষা করিতে পাঠাইয়াছেন। ইন্দ্রের রণসজ্জা দর্শনে সন্তুষ্ট হইয়া লক্্মীদেবী : 'লঙ্কায় স্বমন্দিরে ফিরিয়া! রাক্ষলগণের ছুঃখে বিষ্নবদনে অবস্থান করিতে লাগিলেন।

রাবণ যুদ্ধযাত্রার জন্য উদ্যোগ করিতেছেন, এমন লময়ে রাণী মন্দোদরবী আপিয়া রাবণের পদতলে শোকার্তভাবে লুন্তিত হইলেন। রাবণ সযত্বে মহিষীকে তুলিয়া বলিলেন যে, এখন তাহাদের উভয়ের প্রতি ভগবান বিরূপ। এখনও যে তিনি বাচিয়া রহিয়াছেন সে কেবল পুত্রহত্যার প্রতিশোধ লইবার জন্ত। যুদ্ক্ষেত্রে যাত্রাকালে *শোকাশ্র বারা মন্দোদরী যেন তাহার ক্রৌধাগ্নিকে নির্বাপিত না করেন। শক্র বধ করিয়া ফিরিয়। আপিয়! তাঁহার] সার] জীবন ধরিয়। পুত্রের কথা স্মরণ করিয়া বিলাপ করিবেন।

সখীগণ রাণীকে ধরাধরি করিয়! অস্তঃপুরে লইয়া গেল। রাবণ ক্রোধভরে বাহিরে 'আগিক্া! সৈশ্তগণকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন যে, এতকাল পর্যন্ত যাহার পরাক্রমে রাক্ষলপৈর্ সর্বত্র জয়লাভ করিয়াছে, সেই বীরশ্রেষ্ঠ মেঘনাদকে লক্ষ্মণ চোরের স্তায় যজ্ঞশালায় গ্রবেশ করিয়! নিরম্ত্র অবস্থায় বধ করিয়াছে । তিনি এতকাল পুত্রনিবিশেষে প্রজাগণকে পালন করিয়া আপিয়াছেন। তাহার বীরত্বেই রাক্ষলবংশ জগতে এখন সর্বশ্রেষ্ঠ হইয়াছে । কিন্তু তাহার এতদিনের সকল চেষ্টাই বৃথা হইল। তিনি এখন আর বিলাঁপ করিবেন না। আজ তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে কপটনমরী লক্ষণকে বধ করিবেন এবং তাহ করিতে না! পারেন ত আর লঙ্কায় প্রত্যাবর্তন করিবেন না; এই তাহার স্থির প্রতিজ্ঞা। তিনি মেঘনাদের কথা স্মরণ করিয়৷ সৈন্থগণকে রণস্থলে ধাবিত হইতে আদেশ করিলেন। রাবণের বাক্য শুনিয়া রাক্ষসসৈম্ত ক্রোধে ক্ষোভে গর্জন করিয় উঠিল। রাক্ষপসৈন্যের গর্জন শুনিয়া রামসৈন্তও বিকট গর্জন করিল এবং স্বর্গে ইন্দ্রও ক্রোধে রণনৃস্কার ছাড়িলেন। রাম-লক্ষণ ও স্তুগ্রীবাদি ক্রোধে যুদ্ধার্থগ্রস্তত হুইলেন। দেব-নর-রাক্ষল, তিনটি সৈন্যদলের হস্কারে ও রণোন্নাদনায় পৃথিবীতে প্রলয় আমন্ন হইল।

আসন্ন প্রলয়ের ভয়ে ভীত। পৃথ্থী বৈকৃে বিষুর নিকটে উপস্থিত হইয়া! পূর্ব পূর্ব বারের ন্যায় এবারও তাহাকে উদ্ধার করিবার জন্য কাঁতর প্রার্থনা জানাইলেন। বিষু তাহাকে উপস্থিত বিপদ কি জিজ্ঞাসা করিলে তিনি বলিলেন যে, লঙ্কায় রাবণ, রাম এবং ইন্দ্র একসঙ্গে যুদ্ধের আয়োজন করিতেছেন, সর্বজ্ঞ বিষু ইহা নিশ্চয়ই জানেন। যুধ্যমান এই তিন বীর অবিলদ্বে খন কাল যুদ্ধ আরম্ভ করিবেন, তখন তাহার ভীষণ বেগ তিনি সহ করিতে পারিবেন না। বিষণ লঙ্কার দিকে চাহিয়! দেখিলেন যে, সত্যই রাঁবণসৈন্য, রঘুসৈন্ত এবং দেবসৈন্ত যুদ্ধের জন্য সমবেত হইতেছে এবং তাহাদের ভীষণ গর্জনে সমস্ত জগৎ সম্বস্ত। তিনি ঈষৎ চিন্তা করিয়া বলিলেন যে, নত্যই পৃথীদেবীর বিপদ উপস্থিত, কারণ শিব রাবণকে রুদ্রতেজে পূর্ণ করিয়াছেন। এক্ষেত্রে বিষুর কিছু করিবার নাই,_তিনি পৃথ্বীকে শিবের নিকটে যাইতে উপদেশ দিলেন। পৃথ্থী বলিলেন, যে রুদ্রের কার্ই হইতেছে জগতের ধ্বংসসাধন। বিষু তাহার রক্ষার ব্যবস্থা না করিলে আর কে করিবে? বিষ তখন ঈষৎ হাসিয়া! বলিলেন যে, দেববীর্ধ হরণ করিয়া তিনি সংগ্রামের ভীষণতা কমাইয়া পৃর্থীর ভার লাঘব করিবেন) রাবণ রুদ্রতেজে বলবান বলিয়। ইন্দ্র কিছুতেই লক্ষ্ণকে রক্ষা করিতে পারিবেন না।

বিষুর আশ্বাসে পৃথিবী সন্বষ্টচিত্তে স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন। বিষ্ণু গরুড়কে ডাকিয়া রণক্ষেত্রে উড্জীন হুইয়। দেবতেজঃ হরণ করিতে আদেশ দিলেন।
এদিকে লঙ্কার চারি দ্বার দিয়া দলে দলে রাক্ষলসৈন্ত ভীষণ গন করিতে করিতে বহির্গত হইল। রঘু-সৈন্ত তাহাদের দেখিয়া প্রতিগর্জন করিয়৷ উঠিল।' ইন্্রাদি দেবগণও স্ব ন্ব বাহনে রণক্ষেত্রে আগমন করিলেন। রাম্নচন্দ্র ইন্দ্রকে প্রণাম করিয়া কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিয়া! বলিলেন ষে, পূর্বজন্মাজিত পুণ্যফলে তিনি এই বিপদের সময়ে দেবরাজের আশ্রম লাভ করিয়াছেন। ইন্দ্র রামকে বলিলেন যে, রাম চিরকালই দেবকুলপ্রিয়। দেবদত্ব রথে আরোহণ করিয়া তিনি পাপিষ্ঠ রাবণকে বধ করুন। দেবগণ সীতাকে উদ্ধার করিয়া আজ রামচন্জরেরে হস্তে অর্পণ করিবেন। অনস্তর দেবত1 ও মানবের সম্মিলিত শক্তির সহিত রাক্ষলগণের তুমুল যুদ্ধ আরম্ত হইল। শঙ্খ ও ধন্তকের নির্ঘোষে করু-বধির হইল; আকাশ তীরজালে আচ্ছন্ন হইল; অসংখ্য রাক্ষল ও মানুষ সৈন্য, হস্তী ও অশ্ব রণক্ষেত্রে পতিত হইল । যুদ্ধক্ষেত্র ভীষণ কোলাহলে পূর্ণ হইল। চাঁমরের সহিত চিত্ররথের, উদগ্রের সহিত স্থগ্রীবের, বাস্কলের সহিত অঙ্গদের, অসিলোমার সহিত শরভের, বিড়ালাক্ষের সহিত হনৃমানের গ্রাম আরম্ভ হইল। রাম ও লক্ষণ দ্বিতীয় ইন্দ্র ও কান্িকের ন্যায় রণক্ষেত্র আবিভূ্তি হইলেন । ইন্দ্র অপূর্ব ব্যুহ রচনা করিলেন। রাবণ পুষ্পকরথে রণক্ষেত্রে উপস্থিত হইয়া! সারথিকে সম্বোধন করিয়! বলিলেন ষে, মান্য আজ আর একা যুদ্ধ করিতেছে না? দেবদৈন্য রামসৈন্যের সহিত মিলিত হইয়াছে । আজ ইন্দ্রজিৎ নিহত শুনিয়৷ ইন্দ্র লঙ্কায় আগমন করিয়াছে! তিনি সারথিকে ইন্দ্রের অভিমুখে রথচালন1 করিতে বলিলেন । রাবণকে আদিতে দেখিয়। রঘুসৈ্য উধ্বশ্বানে চতুদিকে পলায়ন করিতে লাগিল।- রাবণ অনায়াসে ইন্দ্রের রচিত ব্যুহ ভেদ করিলে কাণ্তিক আসিয়া তাহাকে বাধা দিলেন। রাবণ তাহাকে বলিলেন, যে, শঙ্কর-শঙ্করীর ভক্ত রাঁবণের শত্রদলের মধ্যে তিনি কেন রহিয়াছেন? নরাধম রামকে তিনি কেন সাহাধ্য করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছেন? অন্ায় যুদ্ধে লক্ষ্মণ মেঘনাঁদকে 'ব্ধ করিয়াছে ৮_-তিনি কপট যোদ্ধা! লক্ণকে বধ করিবেন; কাত্তিক তাহাকে পথ ছাড়িয়। দিন। কাঞ্িক উত্তর দিলেন ষে, দেবরাজের আদেশে তিনি লক্ষণকে রক্ষা করিবেন ; রাবণ বাহুবলে কাতিককে পরান্ত না করিয়! নিজের অভিলাষ পূর্ণ করিতে চ/পারিবেন না। রুদ্রতেজে পূর্ণ রাব্ণ সক্রোধে কাণ্তিককে তীক্ষ শরজালে বিদ্ধ করিতে থাকিলে, কৈলাসে দেবী বিজয়াঁকে ডাকিয়! বলিলেন, যে, রাবণ নির্দয়ভাবে কার্তিককে শরবিদ্ধ করিতেছে । এদিকে রাবণ রুদ্রতেজে পূর্ণ, অন্যদিকে গরুড় অলক্ষিতভাবে দেবতেজঃ হরণ করিতেছে । কাণ্তিককে রণক্ষেত্র ত্যাগ করিবার কথা বলিবার জন্ত তিনি বিজয়াকে রণক্ষেত্রে পাঠাইলেন। বিজয়া অনৃশ্ঠভাবে কার্তিককে মাতার আদেশ জানাইলে, কার্তিক যুদ্ধকষেত্র ত্যাগ করিলেন। . তখন রাবণ বিনা বাধায় ইন্জের দিকে ধাবিত হইলেন। গন্ধর্ব ও নরসৈন্ত রাবণকে বাঁধা পিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু রাবণের ভীষণ হস্কারে ভীত হইয়া নকলে পলায়ন করিল। রাবণ তীব্র বিদ্রপ করিয়া ইন্ত্রকে বলিলেন, "যার ভয়ে এতকাল তুমি কম্পমান ছিলে, সে আজ তোমারই চত্রাস্তে অন্তায় যুদ্ধে নিহত হইয়াছে শুনিয়! তুমি লঙ্কায় আসিয়াছ! তুমি অমর; নতুবা আজ তোমাকে বধ করিয়া মনের খেদ মিটাইতাম। কিন্তু আজ তুমি কিছুতেই লক্ষ্মণকে বাচাইতে পারিবে না।” ইহা বলিয়া রাব্ণ গদাহন্তে রথ হইতে ভূমিতে অবতরণ করিলেন। ইন্দ্র বজ্ত ধারণ করিলেন বটে, কিন্তু গরুড় দেবতেজ: হরণ করাঁয় তিনি বজ্ত উত্তোলন করিতে অপমর্থ হইলেন । রাবণের ভীষণ গদাঘাতে এরাবত হাটু গাড়িয়। বমিয়া পড়িল। মাতলি মৃহূর্তের মধ্যে নৃতন রথ জোগাইলেন বটে, কিন্ত অভিমানে ইন্ত্র যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করিলেন। তখন রামচন্দ্র যুদ্ধ করিতে আমিলেন। রাবণ তাঁহাকে বলিলেন যে, আজ তিনি রামকে চাহেন না; তিনি চাহেন কপটসমরী লক্মণকে। দুরে রাক্ষদ-সৈন্য-মথনকারী লক্ষ্ণকে দেখিয়! রাবণ ক্রোখে গর্জন করিয়া তাহার দিকে রথ চালনা করিলেন । দেব ও নর সৈন্য লক্ষমণকে রক্ষা করিবার জন্য ছুটিয়া আলিল। বিড়ালাক্ষকে পরান্ত করিয়! প্রথমে হনুমান লক্মণকে রক্ষ৷ করিতে আমিল। রাবণের প্রচণ্ড শরাঘাতে অস্থির হুইয়৷ হনুমান পিতা পবনদেবকে স্মরণ করিলে পবনদেব নিজের শক্তি হনূমানের মধ্যে সঞ্চার করিলেন বটে,_কিন্তু কুদ্রবলে বলীয়ান রাবণের সহিত যুদ্ধে হনূমান অবশেষে পৃষ্ট প্রদর্শন করিতে বাধ্য হুইল। হনুমানের পর উদ্দগ্রকে পরাজিত করিয়া আসিলেন স্থগ্রীব। বিধবা ভ্রাতৃবধূ তারাকে বিবাহ করায়, রাবণ তাহাঁকে শ্লেষ বাক্যে বিদ্ধ করিয়া বলিলেন ষে, কিক্বিদ্বাা-রাজ্য ত্যাগ করিয়া কুক্ষণে স্ুগ্রীব লঙ্কায় আসিয়াছেন্‌। স্থগ্রীব গ্রত্যুত্তরে রাবণকে বলিলেন থে, তাহার ন্যায় পাপিষ্ঠ কেহ নাই। পরস্ত্রীলোভে সে সবংশে ধ্বংস হইল। তাহাকে ব্ধ করিয়। তিনি আজ সীতাকে উদ্ধার করিবেন। সথগ্রীব ও রাবণের ঘোর যুদ্ধ বাঁধিল; অবশেষে রাবণের তীক্ষ অন্ত্রাধাতে স্থুগ্রীবও পলায়ন করিলেন। দেবসৈন্য ও রঘুসৈন্য রাবণের বিক্রমে দলে দলে পলায়ন করিতে লাগিল। রাবণ অবশেষে লক্ষণের সম্মুখীন হুইয়া ভীষণ আক্রোশে ব্িলেন, “এতক্ষণে তোকে যুদ্ধক্ষেত্রে দেখিতে পাইলাম! তোর রক্ষাকর্তা ইন্দ্র, কান্তিক, রাম, সুগ্রীব ইহারা কোথায় গেল? আনন্নকালে তুই মাত ও পত্বীর কথা স্মরণ কর। তোকে বধ করিয়া তোর মাংস মাংসাশী প্রাণিগণকে দান করিব এবং তোর বক্তশ্োত মাটিতে শোধিত হইবে। চোরের মত রক্ষঃপুরে প্রবেশ করিয়া তুই রাক্ষগণের সর্বতেষ্ঠ রত্ব হরণ করিয়াছি ।* লক্ষণ উত্তর করিলেন, “ক্ষত্রিয় আমি, যমকেও ভয় করি না, তোমাকে ভয় কেন করিব? তোমার সাধ্যমত যুদ্ধ কর । তোমাকে পুত্রের নিকট প্রেরণ করিয়া তোমার শোক এখনই নিবারণ করিব।”

তুমুল যুদ্ধ বাধিল। দেবতা ও মান্ুষ সে যুদ্ধে উভয়ের বীরত্ব দেখিয়! বিস্মিত হইল। রাবণ লক্ষণের বীরত্ব দশশনে তাহার প্রশংস। করিয়! বলিলেন (য, কার্তিকের চেয়েও লক্ষ্মণ অধিকতর শক্তিমান হইলেও রাঁবণের হাতে তাহার রক্ষা নাই। ইহা বলিয়৷ রাবণ বিরাট শক্তি অস্ত্র তুলিয়! লক্ষণের প্রতি নিক্ষেপ করিলে লক্ষণ আহত হইয়া ভূতলে পতিত হুইলেন। রাবণ রথ হইতে নামিয়! লক্ষণের দেহ গ্রহণ করিতে গেলে, চারিদিক হইতে হাহাকার ধ্বনিতে দেবসৈন্য ও রঘুসৈন্য ছুটিয়া৷ আপিল ।

কৈলাসে শঙ্করী শঙ্করকে বলিলেন যে, রাবণ লক্ষমণকে বধ করিয়াছে । ভক্ত রাবণের জন্য শিব ইন্দ্রের বীরত্বগর্বও ক্ষুপ্ন করিয়াছেন; কিন্তু এক্ষণে দেবী শিবের নিকটে লক্ষণের দেহটি ভিক্ষা চাহিতেছেন। শিব তখন বীরভদ্রকে ডাকিয়া রাবণকে নিরস্ত করিতে বলিলেন। বীরভদ্র অদৃশ্তভাবে রাঁবণের কানে কানে বলিলেন যে, শত্রু নিহত হইয়াছে, আর যুদ্ধে প্রয়োজন নাই ; বাঁবণ লঙ্বণগ্ প্রত্যাবর্তন করুন।
বীরভদ্রের আদেশে রাবণ রথে আরোহণ করিয়! বিজয়ী সেম্যসহ লঙ্কায় প্রবেশ করিলেন। বন্দনাকারিগণ রাক্ষস সৈন্যের বিজয়গীতি গাহিতে লাগিল।
এদিকে রাবণের নিকট পরাজিত হুইয়। দেবসৈন্যসহ ইন্দ্র মহা অভিমানে রণক্ষেত্র হইতে স্বর্গে প্রস্থান করিলেন ।
উদ্দিল। আদিত্য এবে উদয় অচলে- মেঘনাদকে বধ করিয়া লক্ষণ শিবিরে গ্রত্যাগমন করিবার,.পর সুর্যোদয় হইল ।
পল্মপর্ণে__ পদ্মদলে, পদ্মের পাপড়ির উপর । পর্ণ শবের অর্থ পত্র; কিন্তু মধুস্দূন এই কাব্যে সর্বত্রই পদ্মুদল অর্থে পদ্মপর্ণ শব ব্যবহার করিয়াছেন ।
তুলনীয়,_ “নিশার শিশিরে পূর্ণ পদ্মপর্ণ ষেন” (১৩৩১) “কে ছেড়ে পদ্মের পর্ণ?” (৪1৮১) “পন্নগর্ণবর্ণ বিভারাশি” (৮৬৪০ )
পল্মযোনি--কারণদলিলে শায়িত বিষুর নাভিপন্ম হইতে উদ্ভুত ব্রহ্ধা।
পল্মপর্ণে দ্বপ্ত দেব ইত্যাদি--অরুণরাগে রঞ্জিত পূর্ব দিকৃচক্রবালে লোহিত্তবর্ণ সূর্য উদ্দিত হইলে মনে হইল, ফেন ঈষৎ রক্তিম পদ্মদলের উপর শায়িত রক বর্ণ ব্রহ্ধা আবিভূত হইয়! প্রসন্নভাবে পৃথিবীর প্রতি দৃষ্টিপাত কিলেন। উপমেয় হুর্ং ও উপমান -ব্রদ্ধার/মধ্োসাদৃশ্তহেতু সংশয় প্রকাশ পাওয়ায় উৎপ্রেক্ষ। অলঙ্কার । উল্লাসে হাসিল। কুম্ুমকুস্তল। মহী-হৃষ্টিকর্া ব্রহ্ধার প্রসন্ন দৃষ্টি লাভের জন্যই ষেন পুষ্পসস্ভারে সঙ্জিত অন্ধকারমুক্ত পৃথিবী আলোকে ঝলমল করিয়া উঠিল।
মুক্তামাল! গলে- _রাত্রিকালে পতিত মুক্তাশ্রেণীবং শিশিরের মালা কে ধারণ করিয়া। উপমেয় শিশিরের আদৌ উল্লেখ না করিয়া উপমান মুক্তমালাকেই শিশিরবিনুসমূহের শ্রেণী বলিয়া গ্রহণ করায় অতিশয়োক্তি অলঙ্কার ।
উঞ্চলল-_প্লাবিত করিল। উতৎ4-স্থল শব্ধ হইতে উৎপন্ন ।
উথলিল ন্ম্বরলহুরী নিকুর্জে_ প্রভাতের আগমনে বনে বনে পাখী মধুরম্বরে ডাকিয়া! উঠিল।
স্থলে অমপ্রেমাকাঙক্ষী হেম স্ুর্যমুখী-_হুর্যোদয়ের লঙ্গে সঙ্গে সরোবরে যেমন পন্মসমূহ বিকশিত হুইয়া উঠিল, তেমনই উদ্যানেও পদ্মের মত সুর্যের প্রেমাকাজ্জী সূর্যমুখী ফুল প্রস্ফুটিত হইল। পদ্মের মত স্্ধমুখী ফুলও দিনের বেলায় প্রস্ফুটিত ও রাত্রিকালে মুদিত হয় এবং সর্বদা সর্ষের অভিমুখীন থাকে বলিয়া, উভয়কে ত্থ্যের সমান প্রেমাম্পদ বলা হইয়াছে।
অবগাছে দেহ- দেহ নিমজ্জন করিয়া স্নান করে। অবগাহন শবের অর্থ ই দেহ নিমজ্জনপূর্বক স্নান স্থৃতরাং দেহ শবের প্রয়োগ অনাবশ্তক। অধিকপদতা দোষ ।
বিনানিল।-_ব্ণৌরচনা কবিল। চিকণ১চিন্কণ-_ উজ্জল, সুন্দর ।
চক্দ্রমার রেখ। যথ! ঘনাবলী মাঝে শরদে--প্রমীলার ঘনকুষ্ণ কেশদামের মধ্যে মুক্তানিমিত উজ্জল সীথি কৃষ্ণবর্ণ মেঘের প্রান্তে প্রতিফলিত শুত্র শারদ জ্যোত্সার ন্যায় মনোহর দেখাইতেছিল। ' শরদে--শর্ৎকালে। 'শরতে' সাধারণ প্রয়োগ ।
বেদনিল-_-বেদনা বা ব্যথ! দিল; ( নামধাতু নিষ্পন্ন রূপ )।
কোমলকণ্ছে স্বর্ণকণ্ঠমাল। ব্যথিল !_“বন্থমতী ও 'লাহিত্য পরিষ? সংস্করণে “কোমলকঠে স্বর্ণকমালা ব্যথিত কোঁমলকঞ্ঠে 1” পাঠ উদ্ধৃত হইয়াছে। এই অর্থহীন পাঠ মুদ্রাকর-প্রমাদজনিত বলিয়। মনে হয়। পূর্ববর্তী বাক্যে “বেদনিল বাহু,..*.-কঙ্কণ!” বল! হইয়াছে) উহার সহিত সামগ্রন্ত রক্ষা করিয়া “কোমলকণে ্বর্ণকঠমাল! ব্যথিল!” এই পাঠই সঙ্গত মনে করি। নতুবা বাক্যটি অর্থহীন হইয়া পড়ে এবং দ্বিতীয় “কোমলকণ্ে” শবের সহিত অন্বয় হয় ন|।
ব্যথিল-_-বন্থমতি' ও 'দাহিত্য পরিষদ” সংস্করণে "কোমলকে স্বর্ণকঠযালা ব্যথিত কোমলকণ্ে !*"***” পাঠ আছে। এই অর্থহীন পাঠ মুদ্রাকর প্রমাদ বলিয়। মমে হয়। পুর্ব বাকো. কম্ধণ 'বেদনিল বাছ' বলা হইয়াছে। উহার লহিত সামধস্ত বাখিয়াবর্ণকমাল। ব্যথিল 1. এইক্সপ পাঠই সঙ্গত মনে করি। সম্ভাবি বিল্ময়ে-_কারণ ইতিপূর্বে অলঙ্কার ধারণ করিব্টর সময়ে কখনও ব্যথা পান নাই।
বামেতর--বাম হইতে ভিন্ন, অর্থাৎ দক্ষিণ। অ্ত্রীলৌকের দক্ষিণ চক্ষুর স্পন্দন অমঙ্গলহচক।
এ কুদিনে-_নানারূপ অমঙ্গলের সুচনাকারী আঞজিকার এই বিশেষ দিনটিতে ।
কহিও জীবেশে ইত্যাদি__-রণপ্রিয় বীর মেঘনাঁদ পাছে অন্থরোধ -রক্ষা না করেন, এই আশঙ্কায় প্রমীলা মেঘনাদকে বলিয়া পাঠাইতেছেন যে, ইহা তাহার সনির্বন্ধ কাতর অন্থরোধ ।
বীণাবাণী-_ মধুর-ভাষিণী ; বীণাধ্বনির ম্যায় বাণী যাহার ( বন্থতরীহি সমাস )
দেবের মন্দিরে যথ। ইত্যাদি--পঞ্চম সর্গের শেষাঁংশে মেঘনাদ যখন অতি প্রত্যুষে মাতার নিকট বিদায় গ্রহণ করিতে আপিয়াছিলেন, তখনও মন্দোদরী পুত্রের মঙ্গল কামনায় মন্দিরে শিবপূজ1 করিতেছিলেন। মেঘনাদ ষজ্ঞশালায় গমন করিলে তিনি অসমাগ পূজা! সম্পন্ন করার জন্য পুনরায় দেবালয়ে গিয়াছিলেন।
বৃথা_কারণ ইতিপূর্বেই মেঘনাদ নিহত হইয়াছে ।
বিরসবদন এবে কৈলাসসদনে গিরিশ- শিবের বিষপ্রবদনে অবস্থানের কারণ কেবল পরমভক্ত রাবণের চরম বিপদই নহে; ইন্দ্রের স্বার্থরক্ষার জন্য পার্বতীর অন্রোধে তিনিই ষে ভক্তের বিপদ ঘটিতে সাহাধ্য করিয়াছেন,_-এই চিস্তাও তাহাকে গীড়িত করিতেছিল।
ূর্জটি__মহাদেব। ধৃর (সংসারভার) বহন করেন বলিয়া, অথবা ধূনবর্ণ জটাজাল ধারণ করেন বলিয়া এই নাম। ধ্র+জট+ই।
ছৈমবতী-_হিমালয়-কন্তা! পার্বতী, উমা। হিমবৎ+( অপত্যার্থে) ষ৫+ঈ (স্ত্রীলিঙ্গে )।
পুর্ণ মনোরথ তব-__দ্বিতীয় স্গে দেবী মেঘনাদবধের অন্ুরোৌধ করিতে শিবের নিকটে গিয়াছিলেন। দেবীর অভিপ্রায় ছিল মেঘনাদের মৃত্যু-সংঘটন; সে অভিপ্রায় পূর্ণ হইয়াছে।
চিরস্থায়ী হায়, দে বেদনা, ইত্যাদি পুরশোকের বেদনা লোকের মনে চিরকাল সমভাবে বর্তমান থাকে । কালবশে সকল বদ্তরই বিলোপ ঘটে বটে, কিন্ত এ বেদনার উপশম হয় না।
তুষি্তু বাসবে সাধিব, ভব অনুরোধে দেবীর অস্থরোধে ইঞ্জের বাসনা পূর্ণ করিবার:জন্ত শিব মেঘনাদের অকানমৃত্যুর ব্যবস্থা করিয়াছে ইচ্ছাই মেঘনাদ কাব্যের সকল ঘটনার নিয়ামক।

More Books by মাইকেল মধুসূদন দত্ত

30
Articles
মেঘনাদবধ কাব্য
0.0
মেঘনাদবধ কাব্য ১৯-শতকীয় বাঙালি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কর্তৃক রচিত মহাকাব্য।[১] 'মেঘনাদবধ কাব্য' মধুসূদনের অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা দ্বিতীয় কাব্য । কাব্যটি কবির সর্বশ্রেষ্ঠ কবিকীর্তি। এই অমর মহাকাব্য প্রকাশের সঙ্গে আমরা কবির প্রতিভার পূর্ণ বিকাশকালে উপস্থিত হয়। [২] ১৮৬১ সালে কাব্যটির দুইখণ্ডে প্রকাশ হয় । প্রথম খণ্ড(১–৫ সর্গ) ১৮৬১ সালের জানুয়ারী মাসে, এবং দ্বিতীয় খণ্ড (৬—৯ সর্গ) ঐ বৎসরের প্রথমার্ধে প্রকাশিত হয়। কাব্যটি মোট নয়টি সর্গে বিভক্ত। মেঘনাদবধ কাব্য হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ অবলম্বনে রচিত[৩], যদিও এর মধ্যে নানা বিদেশী মহাকাব্যের ছাপও সুস্পষ্ট।
1

ভূমিকা মহাকাব্যের প্রকৃতি

14 December 2023
1
0
0

ইহাতে নাটকের সমস্ত সন্ধিগুলি থাকিবে, কাহিনীটি ঐতিহাসিক ঘটনা হইতে উন্নত হইবে অথব। কোন সজ্জনকে আশ্রয করিবে। ইহার ফল হইবে চতুর্বর্গপ্রাপ্তি অথবা চতুর্বর্গের যে কোন একটিও হইতে পারে। আরম্ভে নমস্কার, আশীর্ব

2

বিস্তৃতিবোধ-বিশাল রস

14 December 2023
0
0
0

আমাদের দেশের অলঙ্কারশাস্ত্র মানবহৃদয়ের প্রবৃত্তিগুলিকে প্রধানতঃ আট বা নয়টি স্থায়ীভাবে বিভক্ত করিযা আট বা নয়টি রসের পরিকল্পনা করিয়াছে। এইরূপ সাহিত্যবিচারের কতকগুলি অসুবিধা আছে। যদি স্থায়ী ভাবগুলিকে বাঁ

3

মেঘনাদবধ কাব্যে'র বৈশিষ্ট্য-পরিকল্পনা

14 December 2023
0
0
0

কিন্তু বিষয়টি গভীরভাবে বিচার করিলে মাইকেলের এই বিক্বতি সাহিত্যের দিক্ দিয়া তেমন দোষাবহ নাও হইতে পারে। সমস্ত প্রাচীন কাহিনীই কালক্রমে বিবর্তনের মধ্য দিয়া গড়িয়া উঠে এবং তাহাদের অল্পবিস্তর পরিবর্তন হইয়া

4

মেঘনাদবধ কাব্য

14 December 2023
0
0
0

হায়, নাথ, নিজ কর্মফলে মজালে রাক্ষসকুলে, মজিলে আপনি। রাবণের শক্তির মূলে ছিল দেবশ্রেষ্ঠ মহেশ্বরের রূপা। তাই স্বয়ং উমা যখন মহেশ্বরকে বশীভূত করিতে গেলেন তখন তিনি কন্দর্পের সাহায্য গ্রহণ করিলেন যাহাতে তপ

5

চরিত্রসৃষ্টি-দেবদেবী

14 December 2023
0
0
0

শুধু মৌলিক পরিকল্পনায় নহে, চরিত্রস্বষ্টিতেও 'মেঘনাদবধ কাব্য' মহাকাব্যের লক্ষণাক্রান্ত। প্রথমেই দেবদেবীদের কথা ধরা যাইতে পারে। ইলিয়াডে দেবদেবীগণ মানব-মানবীর স্থায়। মানব-মানবীর সব দোষগুণই তাঁহাদের আছে,

6

রাম-লক্ষ্মণ-রাবণ-মেঘনাদ

14 December 2023
0
0
0

এই পরিপ্রেক্ষিতে রাম ও লক্ষ্মণের এবং তাঁহাদের সহযোগীদের চরিত্র বিচার করিতে হইবে। 'মেঘনাদবধ কাব্যে'র রাম ও লক্ষ্মণ মাইকেলের প্রতিভার অপূর্ণতার পরিচায়ক এইরূপ মত বহু লোকে প্রকাশ করিয়াছেন এবং এই মন্তের আং

7

প্রমীলা

15 December 2023
0
0
0

মেঘনাদের জীবনের এশ্বব ও মৃতার মহিমা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করিবাব জন্য কৰি প্রমীলার চরিত্রের অবতারণা করিযাহেন , মেঘনাদ শুধু বাসববিলধী বীব নহেন, তিনি যোগ্য পিতামাতার ঘোগ্য পুন্র? তছুপরি তিনি বীধবতী সাধ্বী

8

সীতা

15 December 2023
0
0
0

মেঘনাদ ও প্রমীলার দ্রাম্পত্যজীবনের যে চিত্র এই গ্রন্থে দেওয়া! হইয়াছে তাহা মাইকেলের পরিকল্পনার স্বকীয়তা প্রমাণ করে। ইহা! পরোক্ষভাবে গ্রন্থের মৌলিক পরিকল্পনার উপরেও আলোকসম্পাত করে । মেঘনাদ ও প্রমীলার

9

মেঘনাদবধ কাব্যের ভাব

15 December 2023
0
0
0

“মেধনাদবধ কাব্যের মহাকাঁব্যোচিত পরিকল্পনা ও চওিত্রস্্টির মহিমার উল্লেখের পর উহার বর্ণনার গজন্বিতার কথা বলা প্রয়োজন | . ভাঘ। ভাব্রেই বহন মাত্র এবং ভাষা ছড়া কপির ভ।ব৪ অভিব্যক্ত হইতে পালে ন।। মাইকেলের

10

উপমা

15 December 2023
0
0
0

মহাদেবের যে বর্ণনা উল্লিখিত হইয়াছে তাহার উপমা-সমৃদ্ধি লক্ষণীয় । হোমারের অন্ততম প্রধান গুণ উপমার বৈশিষ্ট্য । হোমার অধিকাংশ বিষয়কে উপমাঁর সাহায্যে বর্ণনা করিয়ীছেন। সাধারণতঃ তাহার উপমাগুলি উপমান ও উপ

11

বর্ণনা

15 December 2023
0
0
0

'মেঘনাদবধ কাব্যে বহু স্দীর্ঘ বর্ণনা আছে এবং সেই সব বর্ণনার বৈচিত্র্য ও মাধুর্য মাইকেলের প্রতিভার স্বকীয়তার সাক্ষ্য দেয়। এই প্রতিভার বৈশিষ্ট্য-_এশ্বর্বোধ। কাব্যের প্রারন্তেই দেখি রাবণ এক অপূর্ব সভায়

12

দোষ

15 December 2023
1
0
0

বহগুণসম্বন্বিত হইলেও মেঘনাদবধ কাব্য ক্রটিশূন্ত নহে এবং সেই প্রসঙ্গের আলোচনা! আবশ্যক । প্রথমেই বল যাইতে পারে যে এই গ্রন্থের পরিধি অতিশয় সঙ্কীর্ণ। সপ্তকাণ্ড রামায়ণের একটি কাণ্ডের একটি খণ্ডাংশ লইয়া ইহ

13

অমিত্রচ্ছন্দ

18 December 2023
1
0
0

মীইকেল মধুস্ছদনের অন্যতম প্রধান কীতি বঙ্গলাহিতো অমিত্রাক্ষরের প্রবর্তন; বাংলার প্রচলিত ছন্দ ছিল পয়ার, তাহ] মিত্রন্ন্দ অর্থাৎ তাহার মধো অন্ত অক্ষরের মিল আছে। তাহার আর একটি লক্ষণ এই যে তাঁহার মধ্যে প্র

14

মেঘনাদবধ কাব্য- দ্বিতীয় সর্গ

19 December 2023
0
0
0

অস্তে গেলা দিনমণি; আইলা গোধূলি, একটি রতন ভালে। ফুটিলা কুমুদী। মুদিল। সরসে আঁখি বিরসবদনা নলিনী; কৃজনি পাথী পশিল কুলায়ে; গোষ্ঠ-গৃহে গাভী-বৃন্দ ধাব হঙ্গা রবে। আইলা শুচারু-তারা শশী সহ হাসি, শর্বরী, সুগন্ধ

15

মেঘনাদবধ কাব্য- তৃতীয় সর্গ

19 December 2023
1
0
0

প্রমোদ-উদ্যানে কাঁদে দানব-নন্দিনী প্রমীলা, পতি-বিরহে কাতরা যুবতী। অশ্রুজপি বিধুমুখী ভ্রমে ফুলবনে কহু, ব্রজ-কুঞ্জ-বনে, হায় রে, যেমনি ব্রজবালা, নাহি হেরি কদম্বের মূলে পীতধড়া পীতাম্বরে, অধরে মুরলী। কহু ব

16

মেঘনাদবধ কাব্য- চতুর্থ সর্গ

20 December 2023
1
0
0

নমি আমি, কবি-গুরু, তব পদাম্বুজে, বাল্মীকি! হে ভারতের শিরঃচূড়ামণি, তব অনুগামী দাস, রাজেন্দ্র-সঙ্গমে দীন যথা যায় দূর তীর্থ-দরশনে তব পদ-চিহ্ন ধ্যান করি দিবা নিশি, পশিয়াছে কত যাত্রী যশের মন্দিরে, দমনিয়া ভ

17

মেঘনাদবধ কাব্য -প্রথম সর্গ

19 December 2023
0
0
0

উড়িল কলম্বকুল অম্বর প্রদেশে শনশনে!বল্প শিক্ষা বীর বীরবাহ! কত যে মরিল অরি, কে পারে গণিতে? এইরূপে শত্রুমাকে বুঝিলা স্বদলে পুত্র তব, হে রাজন! কতক্ষণ পরে, প্রবেশিলা যুদ্ধে আসি নরেন্দ্র রাঘব। কনক-মুকুট

18

মেঘনাদবধ কাব্য- পঞ্চম সর্গ

21 December 2023
0
0
0

হাসে নিশি তারাময়ী ত্রিদশ-আলয়ে।। দাসীর সাধনে সাধ্বী কহিলা, সুসিদ্ধ কিন্তু চিন্তাকুল এবে বৈজয়ন্ত-ধামে মহেন্দ্র; কুরুম-শয্যা তাজি, মৌন-ভাবে বসেন ত্রিদিব-পতি রত্ন-সিংহাসনে;- সুবর্ণ-মন্দিরে স্বপ্ত আর দেব য

19

মেঘনাদবধ কাব্য- ষষ্ঠ সর্গ

21 December 2023
0
0
0

ত্যজি সে উদ্যান, বলী সৌমিত্রি কেশরী কুঞ্জবনবিহারিণী; ক্বতাঞ্জলি-পুটে চলিলা, শিবিরে যথা বিরাজেন প্রভু রঘু-রাজ; অতি দ্রুতে চলিলা সুমতি, হেরি মৃগরাজে বনে, ধায় ব্যাধ যথা অস্ত্রালয়ে, বাছি বাছি লইতে সত্বরে

20

মেঘনাদবধ কাব্য- সপ্তম সর্গ

22 December 2023
0
0
0

উদিলা আদিত্য এবে উদয়-অচলে, পদ্মপর্ণে স্বপ্ত দেব পদ্মযোনি যেন, উন্মীলি নয়নপদ্ম স্বপ্রসন্ন ভাবে, চাহিলা মহীর পানে! উল্লাসে হাসিলা কুহুমকুন্তলা মহী, মুক্তামালা গলে। উৎসবে মঙ্গলবাদ্য উথলে যেমতি দেবালয়ে, উ

21

মেঘনাদবধ কাব্য-অষ্টম সর্গ

23 December 2023
0
0
0

রাজকাজ সাধি যথা, বিরাম-মন্দিরে, প্রবেশি, রাজেন্দ্র খুলি রাখেন যতনে কিরীট; রাখিলা খুলি অস্তাচলচুড়ে দিনান্তে শিরের রত্ন তমোহ। মিহিরে দিনদেব; তারাদলে আইল। রজনী; আইলা রজনীকান্ত শান্ত সুধানিধি। শত শত অগ

22

বিশদ টীকা-টিপ্পনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যাদি (প্রথম সর্গ)

25 December 2023
0
0
0

বিষয়-সংক্ষেপ:- প্রাচীন বঙ্গীয় কবিগণ নানা দেবদেবীর বন্দনা ও মঙ্গলাচরণ করিয়া যেভাবে কাব্যের সূচনা করিতেন, তাহা না করিয়া মধুসুদন যুরোপীয় কবিগণের অনুকরণে বীণাপাণির এবং কল্পনার আবাহন (invocation) করিয়া

23

বিশদ টীকা-টিপ্পনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যাদি (দ্বিতীয় সর্গ)

25 December 2023
1
0
0

বিষয়-সংক্ষেপ:-বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদ রাবণের সেনাপতিপদে বৃত হইলে দিবাবসান হইল এবং রাত্রি আসিল। স্বর্গেও রাত্রির আবির্ভাব হইল। ইন্দ্র শচীসহ দেবসভায় স্বর্গসুখ উপভোগ করিতেছেন, এমন সময়ে সেখানে লক্ষ্মীদ

24

বিশদ টীকা-টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাধ্যাদি (তৃতীয় সর্গ)

27 December 2023
0
0
0

মেঘনাদবধ-কাব্যের দ্বিতীয় সর্গোক্ত ঘটনার ম্যায় তৃতীয় সর্গোক্ত ঘটনাও সম্পূর্ণরূপে বামায়ণ-বহিভূত। প্রথম দর্গের শেষ ভাগে লঙ্কাপুরীর বহির্দেশে প্রমোদোগ্ভানে মেঘনাদের ব্যসনমত্তভাবে অবস্থ।নের কথা বলা হইয

25

বিশদ টীকাটিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যা (চতুর্থ সর্গ)

27 December 2023
0
0
0

মেঘনাদরবধ কাব্যের চতুর্থ সর্গে অশোকবনে অবরুদ্ধা সীতার সহিত সরমার' কথোপকথন-গ্রসঙ্গে সরমার নিকট সীতার পূর্বজীবনের ঘটনাবলী বিবৃত হইয়াছে ।, এই সকল ঘটন! অল্পবিস্তর রামায়ণান্থগত হইতে বাধ্য বলিয়া, সমগ্র ম

26

বিশদ টীকাটিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যাদি (পঞ্চম সর্গ)

27 December 2023
1
0
0

দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ সর্গোক্ত ঘটনাবলীর সহিত পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনাও বীরবাহুর মৃত্যুদিবসের রাত্রিকালে সংঘটিত হইয়াছে । এই সর্গে প্রধান বর্ণনীয় বিষয়,_মেঘনাদবধে চণ্তীদেবীর সাহাধ্য-প্রাপ্তির উদ্দেশে ল

27

বিশদ টীকা টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাথ্যাদি (ষষ্ঠ সর্গ)

27 December 2023
1
0
0

ষষ্ঠ সর্গের মূল ঘটনা" লক্ষ্মণকতৃকি মেঘনাদবধ-_বামায়ণ হইতে গৃহীত। স্থৃতরাং ছিতীয় তৃতীয় ও পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনাবলীর ন্যায় ইহাঁকে রামায়ণবহিভূতি ঘটনা বলা চলে না। কিন্তু ঘটনাটি যে ভাবে নিষ্পন্ন হইয়াছে

28

বিশদ টীকা-টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাথ্যাদি (সপ্তম সর্গ)

28 December 2023
1
0
0

সপ্তম সর্গে বধিত মূল ঘটনাটি হইতেছে,_মেঘনাদের মৃত্যুসংবাদ শ্রবণে রাবণের' ক্রোধ, এবং প্রতিহিংমাপরায়ণ রাবণের সহিত যুদ্ধে শক্তিশেলাহত হইয়া! লক্ষণের পতন। এই মূল ঘটনাটি রামায়ণ হইতে গৃহীত। কিন্তু রাঁবণের

29

বিশদ টীকা টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যা (অষ্টম সর্গ)

28 December 2023
1
0
0

মেঘনাদবধ কাব্যের ২য়, ৩য় ও ৫ম সর্গে বগিত বিষয়সমূহের ন্ায় ৮ম সর্গে বধিত বিষয়ের সহিতও রাযায়ণের কোন সম্বন্ধ নাই। বাল্সীকির রামায়ণে উল্লিখিত হয়াছে, শক্তিশেলাহত লম্্মরণের জন্য রামচন্দ্র বিলাপ করিতে

30

বিশদ টীকা-টিগ্ননী ও ছুরহ অংশের ব্যাখ্যাদি- (নবম সর্গ)

29 December 2023
2
0
0

দৈববলে ঘে লকল কার্য সাধন করিয়াছে, তাহাতে তাহার পক্ষে অসাধ্য কোন কাধই নাই। মন্ত্রী সারণ বিনীতভাবে নিবেদন করিলেন যে, দেবানুগ্রহে ওষধি-পর্বত গন্ধমাদন স্বয়ং লঙ্কায় আসিয়। ওধধদানে লক্ষ্মণের দেহে গ্রাণসঞ

---