মীইকেল মধুস্ছদনের অন্যতম প্রধান কীতি বঙ্গলাহিতো অমিত্রাক্ষরের প্রবর্তন; বাংলার প্রচলিত ছন্দ ছিল পয়ার, তাহ] মিত্রন্ন্দ অর্থাৎ তাহার মধো অন্ত অক্ষরের মিল আছে। তাহার আর একটি লক্ষণ এই যে তাঁহার মধ্যে প্রতি ছত্রে চৌদ্দ অক্ষর বা মাত্রা থাকে এবং আট মাত্রা ও চৌদ্দ মাত্রার পর বিরাম হয়। মাইকেল যে যুগান্তকাদী পরিবর্তন আনয়ন করেন তাহাতে পয়রের চৌদ্দ অক্ষর অট্রট বহিয়াছে। কিন্তু তিনি প্রধানতঃ অন্ত্য অক্ষরের মিল বর্জন করেন। ইহাতে স্থবিধা হইল এই যে প্রত্যেক ছুই ছত্বের পরে ভাবধারা থামিয়া যায় না, ভাব আপনার গতিতে অগ্রলর হইতে পারে। তিনি আর একটি নৃতনত্বেরও প্রবর্তন করেন। সাধারণতঃ পয়ারে আট মাত্রার পরে যতি পড়ায়, কাবোর গতি একঘেয়ে হয়। কিন্ত এখানে নান! ছত্রে নানা জায়গায় বিরাম থাকায়, কাবোর গতিতে বৈচিত্র্যের প্রবর্তন হয়। এই বিস্তৃতি ও বৈচিত্র্য মহাকাব্যের পক্ষে খুবই উপযোগী'। কবি হেমচন্দ্র যে উদাহরণ দিয়াছেন, তাঁহা আংশিকভাবে উদ্ধত করিলে মাইকেল মধুস্থদনের মৌলিকতা -অন্গমিত হইবে ঃ য্থ! যবে পরন্তপ পার্থ মহারথী, যজ্জের তুরঙ্গ সঙ্গে আপি, উতরিলা . নারীদেশে ; দেবদত্ব-শঙ্খনাদে রুধি রণরঙ্কে বীরাঙ্গন সাজিল কৌতুকে এখানে প্রথম ও . চতুর্থ পংক্তিত্েে পয়ারের নিয়মাহ্ছসারে আট মাত্রার পরে প্রথম যতি পড়ে। হেমচন্দ্র মনে করেন দ্বিতীয় ছত্রে দশ মাত্রার (আসি'র ) পর 'প্রথম বিরাম হর । তৃতীয় ছত্রের বিরামস্থল চার মাত্রার ( নারীদেশে'র ) পর। এখানে মাইকেলের আর একটি কৌশল লক্ষ্য করিতে হইবে। দ্বিতীয় ছত্রে প্রথম পর্ব দশ মাত্রা এবং দ্বিতীর পর চার মীত্রাবিশিষ্ট । ইহাতে ছন্দের ভারসাম্য নষ্ট হইয়াছে বলিয়! মনে হয়। কিন্তু ভাবের গতির জন্য দ্বিতীয় ছত্রের “উত্তরিল।, তৃতীয় ছত্রের 'নারীদেশে'র সঙ্গে মিলিত হইয়াছে । ফলে ছন্দের গতি এই ভাবে প্রবাহিত হইয়াছে £
যজ্ঞের তুরঙ্গ সঙ্গে | আপি, উতরিল।__নারীদেশে |
প্রথম পর্বে থাকিবে দশ মাত্র এবং শেষের পর্বে থাকিবে আট মাত্রা । ইহাতে ভারপাম্য রঞ্ষিত হইয়াছে; এই ছত্রের মধ্যে আর একটু কৌশলও, লক্ষ্য কর] যাইতে পারে। গ্রথম পর্বে দুইটি পর্বাঙ্গ কল্পনা কর! যাইতে পারে। আট মাত্রার পর প্রথম বিবাম পড়িবে এবং দশ মাত্রার প্র পুনরায় বিরাঁম পড়িবে । এইরূপ ভাবে ছন্দের গতি অনুসরণ করিলে, এই আঠার মাত্রাকে ৮+২+(৪+৪) মাত্রায় ভাগ করা যাইতে পারে।
এই ভাবে এক ছত্রকে আর এক ছত্রের সঙ্গে যুক্ত করার ফলে ছন্দের প্রবাহ দীঘীকৃত হইয় যায় এবং কাব্যের ভাষ। বিস্ততির ব্যঞ্জনা দিতে পারে ॥ হেমচন্দ্র এই দীঘকরণকে সমর্থন করেন ন।। তিনি মনে করেন এইবপ বিরাম-যতি সংস্থাপনের ফলে পদাবলীর শ্রোতোভঙ্গ হেতু ছুঃশ্রাব্যতা দোষ হইয়াছে । হেমচন্দ্রের এই মত সবাই গ্রহণ করিতে পারিবেন কিন] সন্দেহ ॥ স্রোতের নিয়মই এই ষে সে অবিশ্রান্ত প্রবাহে অগ্রসর হইতে থাকে; সে থামিয়াও থামে না। এক ছত্র হইতে অপর ছত্রে ছন্দকে টানিয়া নিলে এই অবিশ্রীস্ত গতিবেগ আভাসিত হয়।' এই অগ্রগতি পয়ারের মধ্যে সমধিক শ্ুসমঞ্জস হয়, কারণ পয়ারের দুই অংশ সমান নয়। শেষের পর্ব (৬) প্রথম পর্ব (৮) হইতে ছোট; তাই যদি ইহার রেশ টানিয়! পরবর্তাঁ ছত্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা যায় তাহা