মেঘনাদরবধ কাব্যের চতুর্থ সর্গে অশোকবনে অবরুদ্ধা সীতার সহিত সরমার' কথোপকথন-গ্রসঙ্গে সরমার নিকট সীতার পূর্বজীবনের ঘটনাবলী বিবৃত হইয়াছে ।, এই সকল ঘটন! অল্পবিস্তর রামায়ণান্থগত হইতে বাধ্য বলিয়া, সমগ্র মেঘনাদবধ কাব্যের মধ্যে কেবল এই নর্গটিতেই রামায়ণীয় কাহিনীর স্তর প্রায় অবিরুতভাবে রক্ষিত হইয়াছে। মাত্র একস্থলে বিদেশীয় কাব্যের একটি ঘটনার ছায়া! গ্রতিফলিত হইয়াছে । রাবণ মীতাকে হরণ করিয়! লইয়া যাইবার সময়ে পথে গঞ্ুডুপুত্র জটাযু কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়। রাবণ ও জটায়ু যখন ভীষণ যুদ্ধে রত, তখন সীতা পলায়নের চেষ্টা করিলেন, কিন্ত আতঙ্কে মুছিতা হইয়া ভূমিতে পতিত হুইলেন। নেই অবস্থায় সীতাজননী ধরিত্রীদেবী সীতাঁকে আশ্বা দিয়া স্বপ্নে তাহাকে ভবিষ্যৎ ঘটনাবলীর চিত্র প্রদর্শন. করিলেন । এই ঘটনাটি রামায়ণ-বহিভূ্ত এবং ভাজিল-রচিত ঈনীড, কাব্যের নায়ক” ঈনীয়স্কে তাহার পিতা আঙ্কাইপিষ্ কর্তৃক ভবিতব্য গ্রদর্শনের অন্থরূপ। রামায়ণের' সুন্দরকাণ্ডের সপ্তবিংশ সর্গে সীতার প্রতি সহান্ুভূতিপরায়ণ! ব্রিজটা নায়ী রাক্ষমীর' ্বপরবৃত্তান্ত বণিত হইয়াছে বটে; কিন্তু সে স্বপ্নে কেবল সীতারামের অত্যুদনয় এবং রাব্ণ' ও রাক্ষমগণের বিনাশ অল্প্টভাবে নিমিত্তমমূহ দ্বার! ইঙ্গিত হইয়াছে। স্তৃতরাং ধরিত্রীদেবী সীতাকে ভবিতব্যদ্বার উদঘাটন করিয়া ভবিষ্যতের যে সকল সুস্পষ্ট চিত্র প্রদর্শন করিয়াছেন তাহার মূলে ঈনীড.কাব্যোক্ত ঘটনাঁর প্রভাবই বর্তমান,_এইরূপ মনে করিবার হেতু রহিয়াছে ।
চতুর্থ সর্গের উপযোগিতা! মেঘনা দবধ কাব্য বীরবাহুবধের পরবর্তা ঘটনা হইতে আরম্ত হইয়াছে; সুতরাং ইহাতে রামচন্দ্রের দকারণ্যে অবস্থিতি, সুর্পণখার লাঞ্ছনা, সীতাহরণ প্রভৃতি পূর্ববর্তী ঘটনা বর্ণনার অবকাশ ছিল না। এই দর্গে কৰি মীতা-সরমা-সংবাদের সাহায্যে কৌশলে সেই পূর্বাহুক্রম বর্ণন করিয়াছেন। মেঘনাদবধ কাব্যে কবির রাক্ষরগণের. প্রতি মহান্ভূতি স্থবিদিত এবং স্বয়ং কবি কর্তৃকও স্বীকৃত। রামায়ণীয় আদর্শ-চরিত্র রাম-লক্্পকে নিশ্রভ ও ক্ষু্ন করিয়া। . রাবণ ও মেঘনাদ চরিআরকে উজ্দল ও সমুন্নতভাবে চিত্রিত করায় বহু সমালোচক কবির!
ধর্মাস্তরগ্রহণ ও তজ্জনিত বিজীভীয় মনোভাবের বিষয় কারণুন্বরূপ উল্লেখ করিয়াছেন। এইরূপ উক্তি যে কতদূর ভ্রান্ত তাহা তৃতীয় সর্গোক্ত ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ-প্রসঙে দেখাইবার চেষ্টা করা হুইয়াছে। চতুর্থ সর্গে চিত্রিত লীতার অনবদ্য চিত্র এইরূপ উক্তির বিরুদ্ধে অন্য একটি স্থম্পষ্ট প্রমাণ। গ্রীক সাহিত্যের নির্মম অনৃষ্টব।দকে কাব্যে প্রমূর্ত করিয়া তুলিবার উদ্দেশ্যেই যে কবি রামায়ণীয় চরিত্রসমূহকে একটু স্বতন্্রভাবে নৃতন বর্ণে চিত্রিত করিয়াছেন, এবং বিজাতীয় মনোভাব-প্রন্থত অশ্রদ্ধাবশতঃ যে তিনি রামলক্ষমণের আদর্শ চরিত্রকে ক্ষু্ করেন নাই,_ চতুর্থ মর্গে মীতার চরিত্র পূর্ণ সহানুভূতি ও অদ্ধার সহিত চিত্রিত করিয়া তিনি তাহা সপ্রমাণ করিয়াছেন । বস্ততঃ মরলতায়, পবিভ্রতায়, মনের ওদার্যে এবং "চরি্রমাধুর্ষে কবিকল্পিত সীতাচরিত্র বহস্থলে বান্মীকিকল্পসিত সীতাঁচরিত্র হইতেও মধুরতর ও উজ্জলতর হইয়া উঠিয়াছে। ঘটনা-নংস্থানে, কবিত্বশক্তির বিকাশে, অলঙ্কর-বৈচিত্রো,এবং সর্বোপরি সীতা ও সরম! চবিক্রদ্য়ের মাধুর্ষে”_সমগ্র কাব্যের মধ্যে এই সর্গটিই শেষটস্থান অধিকার করিয়াছে ।
মহাকাব্যের অন্যতম প্রধান লক্ষণ ইহার বিস্তৃতি। কিন্তু মেঘনাদবধ কাব্য রামায়ণের স্ুবিস্তৃত ঘটনাবলীর মধ্যে একটি সংকীর্ণ ঘটনাকে (বীরবাহুর মৃত্যুর পর হইতে গ্েঘনাদের অস্ত্যেষটিক্রিয়। পর্বস্ত ) অবলম্বন করিয়া রচিত বলিয়া ইহাতে মহাকাব্যোচিত বিস্তৃতির বিশেষ অভাব ছিল। এই সর্গে পীতার পূর্বীবনের কাহিনী বর্ণনীয় কবি অতীতের বৃত্বীস্ত যেমন ংক্ষেপে পরিবেশন করিতে সমর্থ হইয়াছেন--তেমনই আবার সীতার স্বপ্রদর্শনের সাহাষ্যে যেঘনাদবধের পরবর্ত রাবণবধ এবং সীতার উদ্ধার কাহিনীও সংক্ষেপে ব্যক্ত করিয়াছেন || ইহা ছাড়া এই সর্গের আরও একটি বিশেষ উপযোগিতা রহিয়াছে । শীতার শোকাত বিষাদময় করুণ মৃত্তিটি আমাদের সম্মুখে উপস্থাপিত করিয়া কবি রাঁধণচরিত্রের অন্যায় ও অধর্মের দিকটিকে পরিস্ফুট করিতে চাহিয়াছেন বলিয়া যনে হয়। মহাবীর রাবণ দৈবগপীড়িত হইলেও কেবল দৈববশেই তাহার পতন ঘটে নাই; সীতার প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করিয়া রাবণ নীতিধর্মবিরোধী যে কাজ করিয়াছেন,--তাহাঁও যে তাহার পতনের অন্যতম মুখ কারণ-ইহা বুঝাইবার জন্য সীতার ছুঃখের চিত্রটি অঙ্কন করার প্রয়োজন ছিল না |
বিষয়-সংক্ষেপ পাশ্চাত্য কবিগণের অনুসরণে কবি আদিকরি বান্দীকির 'আবাহন করিয়া সর্গটর সুচনা করিয়াছেন। চতুর্থ সর্গোজ ঘটনা দ্বিতীয় ও তৃতীয় নর্গোক্ত। ঘটনাবলীর সমকালীন । মেঘনাঁদ সেনাপতিপদে বৃ হইয়াছেন। পরদিন প্রভাতে তিনি রাম-লক্ষণকে যুদ্ধে পরাজিত করিয়! লঙ্কার ছুর্ঘশীমোচন করিবেন এই আশায় লঙ্কাপুরীর আবালবৃদ্ধবনিতা আনন্দোৎসবে মত্ত । সীতার রক্ষাকাধে নিষুক্তা চেড়ীগণও সীতাকে ত্যাগ করিয়। আনন্দোৎসবে মত্ব হইয়াছে । শোকাকুলা সীতা একাকিনী অশোঁকবনে বসিয়া আছেন, এমন সময়ে বিভীষণপত্বী নরম! আমিয়] সীতাঁকে সাধব্যের চিহ্ন সিন্দুরবিন্দু পরাইয় দিলেন এবং তাহার নিরাভরণ দেহদর্শনে অলঙ্কারসমূহ অপহরণের জন্য রাবণকে ধিক্কার দিলেন। অলঙ্কারহরণের জন্য সরম। বাঁবণের নিন্দা করিলে, সীতা, পরম শত্রু হইলেও;__রাবণের এই অপবাদের প্রতিবাদ করিয়া বলিলেন যে, রাবণ তাহাকে হরণ করিয়! আনিবার সময়ে অভিজ্ঞানন্ব্ূপ অলস্কারসমূহ তিনি নিজে পথে ফেলিতে ফেলিতে আপিয়াছেন। অনন্তর সরমা সীতাকে তাহার পুর্বজীবনের বৃত্তীস্তসমূহ বলিতে অনুরোধ করিলে নীতা বলিতে লাগিলেন £- তাহার! পূর্বে স্থন্বর পঞ্চবটীবনে মনের আনন্দে বান করিতেন। লম্্রণ সর্বদা সীতারামের পরিচর্যা করিতেন। তাহাদের কোন বস্তরই অভাব ছিল না। পঞ্চবটীবনের প্রাকৃতিক সৌন্দঘ ও প্রাচুখের মধ্যে সীতা রাঁজপুরীর স্থখৈশ্বধ ভুলিতে পার্য়াছিলেন। চিরবসন্তপূর্ণ পঞ্চবটীবনে কত বিচিত্র ফুল ফুটিত; প্রভাতে কোকিলের মধুর স্বরে তাহার নিদ্রাভঙ্গ হইত; তাহার কুটারপার্থে ময়ুর-মমুবী আসিয়া নৃত্য করিত; বলিভূক কত পশুপক্ষী প্রত্যহ সীতার নিকট আহারান্বেষণে আসিত)--সরোবরের স্বচ্ছ জল ছিল তাহার আরশি;_কতদিন পদ্মফুল তৃপিয়| তিনি কবরীতে ধারণ করিতেন এবং ফুলসাজে সজ্জিত হইতেন। রামচন্দ্র তাহাকে কৌতুকচ্ছলে বনদেবী বলিয়! সম্ভাষণ করিতেন। হাঁয়, রামের মেই পাদপন্নদ্বয় কি তিনি জীবনে আর দর্শন করিতে পারিবেন। সীতা রামের বিরহে কাদিয়া ফেপিলেন এবং সহান্নভূৃতিতে সরমাও কাদিতে লাগিলেন। কতক্ষণ পরে শোকাবেগ একটু কমিলে সরমা বলিলেন ঘষে, পূর্বকথাম্মরণে যদি সীতা দুঃখ পান তবে উহা ম্মরণ করিয়া কাজ নাই। প্রত্যুত্তরে শীতা৷ বলিলেন, তাহার ন্যায় ভাগ্যহীন] কা্দিবে না ত কে কাদিবে? মীতার প্রতি সরমার ন্যায় সহানুভূতিসম্পনা আর কেহই এই শক্রপুরীতে নাই। ছুঃখী ব্যক্তি তাহার দুঃখের কাহিনী সমব্যথীকে বলিয়। কিছু শাস্তি পায়। হ্ৃতরাং নরমাকে তিনি পূর্বের কাহিনী বলিতেছেন।
সীতা বলিলেন, “পঞ্চবটীবনে আমরা পরম সুখে ছিলাম। সেই সুন্দর বনের শোভা বর্ণনা কর! অসম্ভব। আমি নিদ্রার মধ্যেও বনদেবীর বীণাধ্বনির স্থায় বনের নান! বিচিত্র মধুর শব শ্রবণ করিতাঁম। কখনও বা সরোধরের তীরে বসিয়া প্রন্ুটিত পদ্মের শোভা দেখিতাম। কোনদিন হয় ত নিকটস্থ তপোবন হইতে খবিবধূর! সাক্ষাৎ করিতে আগিতেন; আমি তীহাদদিগকে সাদরে অভ্যর্থনা করিতাম। অন্ত সঙ্গিনী না পাইলে নিজের ছায়াকেই সখী-সম্ভাষণ করিয়। বৃক্ষতলে উপবেশন করিতাম। আমি হুরিণীগণের সহিত আনন্দে ছুটাছুটি করিতাম $ কোকিলধবনির অনুকরণ করিতাম; লতার সহিত বৃক্ষের বিবাহ দিতাম; লতায় ফুল ফুটিলে সেই ফুলগুলিকে নাতিনী বলিয়া! সন্নেহে চুম্বন করিতাম এবং ফুলের নিকটে ভ্রমরেরা আসিয়া গ্রপ্তন করিলে তাহাদিগকে নাতিনী-জামাই বলিয়। পরিহাস করিতাঁম। কখনও বা স্বামীর সহিত নদীতীরে ভ্রমণকালে স্বচ্ছ মলিলে আকাশ-চন্দ্র-তারক! প্রতিফলিত হইয়াছে দেখিতাম। আবার কখনও ব1 পর্বতচুড়ায় উঠিয়া রামের চরণতলে বসিয়৷ নান! কাহিনী শ্রবণ করিতাম। এখনও এই অশোকবনে আপিয়৷ আমি যেন রামের সেই মধুর কথম্বর শুনিতেছি বলিয়া বোধ হয়] হায়, আমার অদৃষ্টে সেই মধুর কণ্ঠস্বর শুনিবার সৌভাগ্য কি আর হইবে!” ইহ। বলিয়৷ সীতা বিষাদে স্তৰ হইলেন। সরম] বলিলেন, “দেবি, তোমার মুখে তোমার পঞ্চবটাবনে অবস্থানের আনন্দপূর্ণ কাহিনী শুনিলে তুচ্ছ রাজভোগে ঘ্বণা জন্মে) মনে হয়, তোমার মত বনবাপিনী হইয়] সেই মধুর জীবন যাপন করি। এখন তুমি বল যে, কি কৌশলে রাবণ তোমাকে হরণ করিযাছিল। তোমার মধুর কে তোমার পূর্বকাহিনী শুনিবার জন্য আমি একান্ত উৎস্থুক হইয়া আছি।"
সীতা বলিলেন, “এইরূপে স্থখে পঞ্চবটীবনে বহুকাল বাদ করিবার পর অবশেষে তোমার ননদ ুর্পনথ| আসিঘা৷ আমাঁদের জীবনের স্ৃথশাস্তি নষ্ট করিল। অতি নির্লজ্জভাবে মে আমাকে বধ করিয়! রামকে বরণ করিতে চাহিলে, লক্ষ্মণ তাহাকে লাঞ্চিত করিয়া বিতাড়িত করিলেন । ফলে রাক্ষদগণেষ সহিত রাম-লক্মণের তুমুল যুদ্ধ বাধিল। আমি ভীত হুইয়৷ কুটারে প্রবেশ করিয়া রাম-লক্ষমণকে রক্ষা করার জন্য দেবতাগণের নিকট প্রার্থনা করিতে লাগিলাম। যুদ্ধের ভীষণ হুঙ্কারে শেষে মৃহিত হইয়া পড়িলাম।*
“কতক্ষণ মৃহিত ছিলাম জানি না। অবশেষে রামচন্দ্র সাদর সম্ভাষণে জাগিয়া উঠিলাম। হায়, রামচন্দ্রের সেই মধুর প্রণয়-সম্ভাষণ আর কি শুনিতে পাইব!» এই বলিয়া সীতা ছুঃখে সত্যই মৃদ্ছিতা হইলেন। নরম! তাহাকে সাবধানে ধরিয়া! ফেলিলেন। মৃছ্িতা সীতা বাণাহতা বিহঙ্গীর ন্যায় পরমার ক্রোড়ে পতিতা হইলেন।
কিছুক্ষণ পরে সীতার চৈতন্য হইলে রমা কাতরকণ্ে ক্ষমা প্রার্থনা করিয়। বলিলেন যে, ন! বুঝিয়! সীতার পূর্ববৃত্বান্ত শ্রবণ করিতে যাইয়া তিনি আজ ত্তাহাকে এত কষ্ট দিলেন ।
সীতা সরমীকে বলিলেন, “সখি। তোমার কোন অপরাধ, হয় নাই । আমার হরণকাহিনী )ঝলিতেছি .শোন। ..য়ত সুর্পরখার নিকট নায়ামবগের . কপধারী মারীচে কাহিনী শ্রনিয়াছ। ্বর্ণমূগ দর্শনে লুব্ধ হইয়া আমি কুক্ষণে রামের নিকট মৃগটি প্রার্থন। করিলাম। লক্্ণকে প্রহরী রাখিয়। রাম ধনুরবাণ হস্তে বাহির হইলেন । বিদ্যুতের নায় উজ্জল মায়াম্থগ বনের মধ্যে অদৃশ্য হইল। রামচন্দ্র ভ্রুতবেগে তাহার পশ্চাদ্ধীবন করিয়া চিরদিনের মত আমার দৃষ্টি হইতে অন্তহিত হইলেন । অকন্মাৎ দূরে আর্তনাদ শুনিলাঁম, “কোথায় লক্ষ্মণ! আমার প্রাণ ষাঁয়!? আমার ন্যায় লক্ষ্মণ৪ চহ্কিত হইলেন । লক্ষ্রণকে অন্তুনয় করিয়া হাত ধরিয়া বলিলাম, “আমার প্রাণ কেমন করিতেছে, বুঝি বিপদে পড়িয়া রাম তোমাকে ভাকিতেছেন। তুমি শদ্্ যাও।, লক্ষ্মণ বলিলেন, “€তোমাব আদেশ কেমন কবিয় পালন করিব? এই মায়াপূর্ণ বনে কত রাক্ষপ রহিয়াছে । তোমাকে এক] ফেলিয়া যাইব কি করিয়া? তোমার ভয় অমুলক। পরশুরাম-বিজষী বামচন্দ্রকে কেহই বিপদে ফেলিতে পারে না।” এই সময় আবার সেই আঙনাদ শুশিলাম। ধৈর্ধ হারাইয়া আমি লক্ষ্ষণকে কঠোর ভাষায় তিরস্কার করিয়া বলিলাম যে, তুমি না যাও ত আঁমি গিজে যাইয়া দেখিব রাম কি বিপদে পতিত হ্ইয়।ছেন। আমার তিরস্কারে বিচলিত হইয়া লক্ষণ আমাকে থাকিতে বলিয়া অরণ্যে প্রবেশ করিলেন ।”
“আমি বপিয়া কত অমঙ্গলের কথা ভাবিতে লাঁগিলাঁম। ক্রমে বেল! বাড়িতে লাগিল। যে সকল পশু-পক্ষী আহার প্রাপ্তির নিমিত্ত নিত্য আমার নিকট আসিত, তাহার! আপিয়। জুটিল। তাহাদের মদ্যে তেজঃপুগ্জ দেহধারী এক তপস্বীকে দেখিয়! নতশিরে প্রণাম করিলাম । হায় সখি, তখন যদি বুঝিতাম যে, এই আমার সকল দুঃখের মূল রাবণ, তাহা হইলে কি তাহাকে ভক্তিভরে প্রণাম করিতাম? মায়াবী তপস্বী ভিক্ষ1 চাহিলে আমি বলিলাম, “প্রভু, বিশ্রাম গ্রহণ করুন; অবিলম্বে গৃহস্বামী রাম ভ্রাতা লক্ষণের সহিত ফিরিয়। আদিবেন |, সে ছদ্মরোষে বলিল যে, পে ক্ষুধার্ত অতিথি এবং অবিলম্বে ভিক্ষ। চাহে । ভিক্ষা] না পাইলে সে অন্ত স্থানে ভিক্ষা! করিতে যাইবে । রঘুবংশের বধ্ হইয়া আমি কি অতিথিকে বিমুখ করিব? ভিক্ষা না পাইলে সে 'ছুরস্ত রাঁক্ষল রাঁষের শত্রু হউক'__এই শাপ দিবে। ্রক্মশাপের ভয়ে আমি ভিক্ষা লইয়। কুটারেরু, বাহিরে আসামাত্র, ব্যান যেভাবে হরিণীকে ধরে, সেইভাবে রাবণ আমকে ধরিয়া! ফেলিল! আমি বুথাই বিলাপ করিয়া কানন পূর্ণ করিলাম? রাবণের লৌহবৎ কঠিন হৃদয় তাহাতে বিচলিত হইল ন1। ছদ্মবেশী রাবণের ছদ্মাবেশ দুর হইল ; রক্ষঃপতি বেশে দে আমাকে রথে তুলিয়া! রথ চালাইয়া দিল। সর্প-কধলিত ভেকের যায় আমি আর্তনাদ করিতে লাগিলাম; কিন্তু রথচক্র-নির্ধোষে আমার আত্মা 'ডুবিস্বা গেল। তখন বিপন্ন হইয়া আমি আমার অঙের সকল অলঙ্কার খুলিয়া পথে ছড়াইতে লাগিলাম। সেইজন্যই দেহ আমার আভরণশূন্ত ।* আমার অলঙ্কারহীনতার জন্য রাবণ দোষী নহে।”
সরমা সীতাহরণের পর রাবণ কি করিল জানিতে চাহিলে্ সীক্তা৷ বলিলেন, “রাবণ আমাকে রথে তুলিয়া! লইয়া! যাইবার সময়ে আমি আর্কাশ, বাযু, মেঘ, ভ্রমর, কোকিল, __মকলকে ডাকিয়া বলিলাম,_-তোমরা আমার কথা প্রভু রামচন্জরকে বলিও; কিন্ত কেহই আমার বিলপে কর্ণপাত করিল না। রাবণের পুষ্পক রথ শূন্যপথে পর্বত, বন, ন্দনদী উত্তীর্ণ হইয়া চলিল। মা
“অকম্মাৎ সম্মুথে ভীষণ গর্জনধ্বনি শুনিতে পাইলাম। রথের অশ্বসমূহ ভীত ও কম্পিত হওয়ায় রথ অপমগতিতে চালতে লাগিল । মন্মুখে পর্বতশিখরে একজন বিরাটাকৃতি বীরকে দেখিতে পাইলাম । তিনি রাবণকে তিরস্কার করিয়া বলিলেন যে, তিনি রাবণকে চিনিতে পারিয়াছেন। পরস্ত্রী-হুরণ রাবণের নিত্যকর্ম। রাবণকে বধ করিয়া তিনি বীরগণের কলঙ্ক ঘুচাইবেন। তাহার ভীষণ গর্জনে আমি অচেতন হইয়। রথে পতিত হইলাম ।
“জ্ঞান হইলে দেখিলাম, আমি ভূমিতে রহিয়াছি এবং আকাঁশে সেই বীরের সহিত রাঁবণের ভীষণ যুদ্ধ চলিতেছে । সেই বীরকে যুদ্ধে জয়ী করিবার জন্য দেবতাগণের নিকট প্রার্থনা জানাইলাম। বনের মধ্যে পলায়ন করিবার জন্য উঠিয়া ঈীড়াইলাম, কিন্ত আছাড় খাইয়া আবার মাটিতে পড়িয়া গেলাম। মাটিতে গড়িয়। জননী পৃথিবীকে ধিধা হইয়া আমাকে বক্ষে গ্রহণ করিতে 'বলিলাম )__নতুব! রাবণ অবিলম্বে ফিরিয়া আলিয়া আমাঁকে পুনরায় ধরিবে। আঁকাশে তুমুল যুদ্ধ চলিতে লাগিল । যুদ্ধের ভীষণ গর্জনে আবার মৃছিত হইয়! পড়িলাম। |
“এই মুছিত অবস্থায় আমি এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখিলাম। মাতা ধবিতীদেবী আপিয়া আমীকে কোলে লইয়া বলিলেন যে, বিধাঁতার বিধানে রাবণ সবংশে ধ্বংস হইবে ব্লিয়াই আমাকে হরণ 'করিতেছে। রাবণের পাপের ভাবে মাতা ধরিত্রী অতিষ্ঠ হয়া উঠিয়াছেন। আমাকে যে মুহূর্তে রাবণ স্পর্শ করিয়াছে সেই মুহূর্তেই রাবণের বিনাশের ও ধরিত্রীর পাপভার-লাঘবের ব্যবস্থাঞ্হইয়াছে। তিনি আমাকে ভবিতব্যঘবার উদ্ঘাটন করিয়া দেখাইলেন। .
“আমি চাহিয়। দেখিলাম, এক উচ্চ পর্বতের উপর ছুঃখভারাক্রাস্ত পাঁচজন বীরপুরুষ উপবিষ্ট। এমন সময়ে সেখানে লক্ষণের সহিত রামচন্দ্র উপস্থিত হইলেন। পঞ্চবীর বামের ও লক্ষণের পূজা করিলেন এবং সকলে একটি হুন্দর নগরে প্রবেশ করিলেন । । দেই, নুগরের রাজাকে বধ করিয়া পঞ্চ বীরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে রামচন্ নিংহাসনেধ বসাইলেন। চারিদিকে দৃতগণ ছুটিয়া চলিল এবং বীরপদভরে পৃথিবী কম্পিত হইল। আমি স্বপ্পের মধ্যে ভয়ে চক্ষু মুদিত করিলাম । মাতা ধরিত্রী হামিয়৷ বলিলেন ষে, আমার ভয় অনাবশ্তক। রাম-মিত্র স্থগ্রীব আমার উদ্ধারের জন্য চেষ্টিত হইতেছেন। রামচন্দ্র যাহাকে বধ করিলেন তাহার নাম বালি এবং নগরের নাম কিছ্বিন্ধ্যা। আমি আবার চাহিয়! দেখিলাম,__দলে দলে বীর সৈন্য. বন, নদী লঙ্ঘন করিয়া, গর্জনে জগৎ পূর্ণ করিয়া! বহির্গত হইতেছে ।/ তাহারা ক্রমে সমুদ্রতীরে আসিয়া! উপস্থিত হইল। জলে শিলা ভামিল। শত শত শিল্পী মিলিয়৷ অপূর্ব মেতৃ রচনা! করিল) কনকলঙ্কা শত্রপদভরে টলমল করিতে লাগিল এবং আমি 'জয় রঘুপতি” ধ্বনি শুনিতে পাইলাম। রাৰণের রাজসভায় দেখিলাম ধামিক এক বীরপুরুষ আমাকে রামচন্দরের হস্তে গ্রত্যর্পণের জন্য রাবণকে অঙ্করোধ করিতেছেন। /রাবণ তাহাকে পদাঁঘাত করিয়া! তিরস্কার করিলে, অভিমানে পেই ধায়িক পুরুষ আমার স্বামীর নিকটে চলিয়া গেলেন ।”
* এই কথা শুনিয়া সরমা বলিলেন যে, তাহার স্বামী বিভীষণ ও তিনি সীতার ছুঃখে অত্যন্ত ছুঃখিত এবং উভয়ে সীতার জন্ত গোপনে কত অশ্রমোচন করিয়াছেন। সীতা বলিলেন যে, তিনি তাহা উত্তমরূপেই জানেন। সীতা সরমার স্সেহে ও সহান্ুভূতিতেই এখনও বাঁচিয়া আছেন। অত:পর সীতা তাহার স্বপবৃত্ান্ত বলিতে লাগিলেন,__“আমি দেখিলাম,__রাক্ষস সৈন্য দলে দলে যুদ্ধার্থ সঙ্জিত হইল। ভষণ যুদ্ধ চলিতে লাগিল এবং লঙ্কা ভীষণ গর্জনে পূর্ণ হইল। রাবণকে আবার রাজসভায় আসীন দেখিলাম, কিন্তু এবার তাহার আর সে দন্ত নাই। সেভাগ্যকে দোষ দিয়া ভ্রাত৷ কুন্তকর্ণকে জাগ্রত করিতে বলিল। . কুস্তকর্ণ জাগিয়া যুদ্ধে যাইয়! রামচন্দ্রের হস্তে প্রাণ দিল। আবার অর রাম' ৪ 'শ্ুনিলাম। আবার রাবণকে শোকাকুল দেখিলাম।”
“এই অবস্থায় মাঁতা ধরিত্রীকে লিলা, “মা, এরি দুঃখ আর" সহা করিতে পারিতেছি না| মা বলিলেন যে, ভবিষ্যতে সত্যই 'যাহ। ঘর্টিবে তাহাই আমি. দেখিতেছি। লঙ্কা লণ্ডভণ্ড করিয়া রাম বাঁবণকে দণ্ড দিবেন। তারপর দেখিলাম, দেবকন্তাগণ নানা বেশ-ভূষা লইয়া *আমাকে সাজাইতে আপমিয়াছেন। তাহারা আমাকে বলিলেন যে, স্বয়ং দেবেন্ত্রাণী শচী আজ আমাকে রামচন্দ্রের হস্তে অর্পণ করিবেন। আমি কাঙ্গালিনী বেশেই পতি-সকাশে যাইতে চাহিলে তাঁছার৷ আমার কথা না শুনিয়া আমাকে সযত্বে সাজাইলেন। অদৃরে রামচন্দ্রকে দেখিয়া যেমন তাহার পাঁদপন্ম ধারণ করিবার জন্য ছুটিতে চাঁহিলাম, অমনি আমার স্বপ্ন টুটিয়! গেল। হায়, আমি তখনই মরিলাম না কেন!” লরম! সীতাঁকে আশ্বস্ত করিয়া! বলিলেন যে, শীঘ্রই মীতা৷ রাঁমচন্দ্রকে লাভ করিবেন ইহাতে সন্দেহ নাই। কারণ সীতার স্বপ্দৃষ্ট অন্ত সকল ঘটনাই ঘটিয়া গিয়াছে। অতঃপর সীতা কি দেখিলেন, সর্মা সীতাকে তাহা বলিতে অন্থরে।ধ করিলে সীতা বলিলেন,_“জাগিয়া দেখিলাম, রাবণের সহিত যুদ্ধরত মেই বীর পরাঁজিত ও ভূতলে পতিত এবং বাব্ণ আমার সন্মুখে দণ্ডায়মান। সে আমাকে বলিল যে, তাহার পরাক্রমে গরুড়পুত্র জটামু মৃত প্রায় অবস্থায় পতিত। জটাু ক্ষীণকণে বলিলেন, তিনি বীরধর্ম পালন করিয়! ব্বর্গে যাইতেছেন, কিন্তু পরিশেষে রাঁবণের দণ্ড অনিবার্ধ। রাবণ পুনরায় আমাকে রথে তুলিলে আমি জটাযুকে বলিলাম, “আমার নম সীতা, আমি রঘুপতির দাপী। যদি আমার স্বামীর সহিত দেখা হয় তবে বলিবেন যে, শূন্য গৃহ হইতে রাবণ আমাকে হর্ণ করিয়াছে । বাবণের রথ গগনপথে চলিল। অকন্মাৎ 4 সম্মুখে গর্জন শুনিয়। দেখিলাম নিয়ে নীল সমুদ্র বিস্তৃত। জলে ঝাঁপ দিতে গেলে রাবণ আমাকে বাঁধা দিল। শীঘ্রই সমুদ্রবক্ষে মনোরম লঙ্কাভূমি দেখিতে পাইলায়। কিন্তু আমার পক্ষে কারাগারম্বরূপ লঙ্কা শোৌভা-সৌন্মধ আমার নিকটে বৃথা । সখি, আমার দুরদৃষ্টবশতঃ আমি রাজকন্যা ও রাজবধূ হইয়াও আজ কারাগারে বন্দিনী।” , এই বলিয়। পীতা৷ ক্রন্দন করিতে লাগিলেন । সরম। সীতাঁকে প্রবৌধ দিয়! বলিলেন যে, বিখিপিপি কেহ খণ্ডন করিতে পারে না। কিন্তু ধরিত্রী মাতা যাহা যাহা দেখাইয়াছেন তাহা সকলই ঘটিয়াছে এবং ঘটিবে। এই বীরপুরী আজ বীরশূন্ত। শীঘ্রই দেবকন্াগণ আপিয়া সীতাঁকে রামচন্দ্রের হস্তে সমর্পণ করিবেন। সীতা যেন, নরমাকে হ্সময়ে ভুলিয়। না যান। নরম] আজীবন সীতার মূতি নিজের হৃদয়মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করিয়া তাহার পুজা করিবেন। সীতা প্রত্যুত্তরে বলিলেন যে, এই ছুঃখময়,” পাপময় লঙ্কাগুরীতে সরমাই সীতার একমাত্র অবলম্বন /_তাহার কথা বিস্বৃত হওয়া! সীতার পক্ষে অসম্ভব
অতঃপর সরম! অনিচ্ছাঁপক্কেও পাছে কেহ সীতার সহিত তাহার বানা দেখিয়। ফেলে এই ভয়ে বিদায় গ্রহণ করিতে চাহিলেন। সীতাও দুরে পদশব শুনিয়া চেড়ীগণ ফিরি! আগিতেছে ভাবিয়া সরমাঁকে মত্বর চলিয়! যাইতে বলিলেন।
সরমা ভয়ে ত্রস্তপদে দ্রুতগতি সেই স্থান ত্যাগ করিলেন। বিজন বনের মধ্যে ্রন্ষুটিত একটি মাত্র কুহ্মের ন্যায় সীতা অশোকবনে একাকিনী অবস্থান করিতে লাগিলেন।কবিগুরু-আদি কবি বাল্পীকি। ভারতীয় সাহিত্যে বাল্সীকিরচিত রামায়ণ প্রথম কাব্য এবং ক্রৌঞ্চনিধনকারী ব্যাধের প্রতি তাহার অভিশাপ-বাণী_"ম] নিযাদ গ্রতিষ্ঠাং তম অগমঃ শাশ্বতীঃ সমাঃ। যৎ ক্রৌঞ্চ-মিথুনাদ্ একম্ অবধীঃ কাম-মোহিতম্ ॥ প্রথম লৌকিক কবিতা বা শ্লেক বলিয়! প্রপিদ্ধ। শির£চুড়ামণি__মস্তকের ভূষণ; “শিরোমণি বা “চুড়ামণি' হইলেই সার্থক প্রয়োগ হইত। অধিকপদতা দোষ। ছন্দের অন্ঘরোধে এবং ছুঃশাব্যতা দোষ দূর করিবার জন্ক সন্ধি পরিত্যক্ত । তুলণীয়, “হীরচুড়াশিবঃ দেবগৃহ”-_১ম সর্গ, ২১২ পংক্তি। তব অনুগামী দাস-_এই কাব্যের চতুর্থ সর্গে বাল্মীকির নিকট খণম্বীকার এবং বশংবদতা৷ প্রকাশ কবির পক্ষে অত্যন্ত মমীচীন ও স্বাভাবিক হইয়াছে । কাব্যখানি
রচনার প্রারস্তে কবি পিখিয়।ছিলেন,- “It is my ambition to engraft the exquisite graces of the Greek Mythology on our own; in the present poem, I mean to give free scope to my inventing Powers (such as they are) and to borrow as little as I can from Valmiki.” বাস্তবিকই
মেঘনাঁদবধ কাব্যের ২য়, ওয়, ৫ম, ৮ম ও ৯ম সর্গোক্ত ঘটনাব্লীর সহিত বামায়ণের কোন সধ্ধন্ধ নাই। ১ম, ৬ ও ৭ম সর্গে রামায়ণীয় কাহিনীর শীণ সুত্রটুক আশ্রয় . করিয়া কবি নৃতন মাল্য রচনা করিয়াছেন। কেবল এই চতুর্থ সর্গটিতেই কবি বালীকির প্রকৃত অনুগামী হইয়াছেন দেখিতে পাওয়া যায়।
র[জেক্দ্র-সঙমে- শ্রেষ্ঠ রাজার সাহচর্য ।
রাজেন্দ্র-সঙ্গমে দীন যথ! ইত্যাদি-দরিদ্র ব্যক্তি অর্থাভাববশতঃ দূরদেশস্থ তীর্থস্থান দর্শন করিতে অক্ষম হইয়া যেমন কোন বিশিষ্ট ধনী ব্যক্তির অনুগামী হইয়া নিজের মনোবাসন! পূর্ণ করে, সেইরূপ কবিও ঘশের মন্দিররূপ তীর্থে উপস্থিত হুইবার আশায় বাল্ীকির অন্গদরণ করিতে ইচ্ছা করিতেছেন ।
তব পদচিন্ছ ধ্যান করি-.তোঁমার রচিত রামায়ণের কাহিনী অবলম্বন করিয়া।
পৃশিয়াছে কত যাত্রী ইত্যাদি--কত শত কবি কত উৎকৃষ্ট কাব্য রচনা করিয়া ষশন্বী ও অমর হইয়াছেন । ্
শ্রীভতৃছরি-সংস্কৃত ভট্টিকাব্য নামক রামজীবনীমূলক মহাঁকাব্যের রচয়িতা বলিয়া পরিচিত । ৰ
সূরী ভবভূতি প্রীকণ্ঠ__ভবভৃতি নামে বিখ্যাত সপপ্ডিত শরীক রামায়ণকাহিনী অবলম্বনে 'মহাবীর-চরিত' ও 'উত্তর-রামচরিত" নাটকনুয় রচনা করেন। | কাঁলিদাস-_ভারতের শ্রেষ্ঠ কবি বলিয়! স্বীকৃত 'বঘুবংশ'-রচয়িতা কালিদাস । যুরারি-মুরলী-ধ্বনি-সদশ মুরারি-__অনর্থ-রাঘব নাগ্গক সংস্কৃত নাটকের রচয়িতা মুরাবি মিশ্রু,--ধাহার রচনা শ্রীকৃষ্ণের বংশীধ্বনির স্যাষ মধুর।
কীতিবাস কীত্িবাস কবি- প্রথম বাঙ্গালা রামাষণ বচয়িতা কীত্তির আবামস্থল স্ববপ রৃত্তিবাস ওবা। কৃত্তিবাসেব নামটির বানানে মধুস্থদন সর্বত্রই প্রমাদে পড়িযাছেন। কৃত্তি (ব্যাপ্রচর্ম) বাস (পবিধান) ধাহাব-কৃত্তিবাস- মহাদেব ।
চতুর্ঘশপদী “কীতিবাল” নামক কবিতাটিতে ও পাই £“জনক-জননী তব দিল! শুভক্ষণে কীতিবাস নাম তোম1।”
্বগাঁয় দীননাথ সান্যাল মহাশয় মুসথদনপ্রযুক্ত বানানটিব সমর্থনে বপণিয়াছেন, “কতিবাসের নাম সঙ্থন্ধে মতভেদ আছে--কত্তিব।স' অথবা “কীতিধাস?। ১৮০৩ ্র্টাব্ধে মুদ্রিত বামায়ণে আছে “কীতিবাম।” মধুস্দন বাঙ্গালা বানান সম্বন্ধে একপ্রকার নিরস্কশ ছিলেন। স্ত্প্রসিদ্ধ ও স্পবিচিত “কপোতাক্ষ” নদকে তিনি কবতক্ষ' লিখিযা গিয়াছেন। স্ৃতরাং তউহাব একটি প্রমাদ সংশোধনের জন্য স্থপ্রচলিত “কত্তিবাণ” এবং, শ্রীর।মপুব মিশনের মিশনাবিগণেব তত্বাবধানে মু্রিত পুস্তকে প্রাপ্ত 'কীতিবান' বানান ল্য! বিচার বিতর্ক অনাঁবশ্ক |
চ্হ পিতঃ__তুলনীয,__বাল্মীকি সম্বন্ধে কবিব উত্ভি
সরে-সবোববে। কবি অন্যত্র সধম্যন্ত রসে শবও ব্যবহার কবিধাছেন। “মুদিল। বসে আখি” (২৩)
রাজহংস-কুলে--কবিতা-সবোববেব রাজহংস-স্ববপ শ্রেষ্ঠ কবিগণেব সহিত।
গথিব নৃতন মাল! ইত্যাদি__রামায়ণীয় কাহিনীর সুত্র অবলম্বন করিযা অভিনব কাব্য রচনা! করিব।
রত্বাকর-_রত্বসমূহেব আকব বা উৎপত্তিস্থল সমূদ্র। অন্যদিকে বাল্সীকি পূর্বজীবনে রত্বীকর নামক দহ্থ্য ছিলেন। শ্লেষ অলঙ্কার ।
অকিঞ্চনে- দরিদ্রকে, অভীজন ব্যক্তিকে । ন (নাই) কিঞ্চন (কিছুই) ষাহাব।
ভাসিছে কনকলঙ্কা ইতাদি__মেঘনাদ রামচন্দ্রকে কল্য প্রভাতে পরাজিত করিয়! লঙ্কার অবরোধ মোচন করিবে এই আশায় রত্বহার-শোভিতা বাজমহিষীর ন্যাষ স্বর্ণ-দীপশ্রেণী-শোভিতা লঙ্কানগরীর সমস্ত লোক আনন্দে আত্মহারা হইযাছে।
বাজনা--বাগ্১বজ্জস্বাজ+( স্বার্থে) না
নায়কে লয়ে কেলিছে নায়কী-_প্রণয়িনী নারীগণ স্ব স্ব প্রণয়ীর সহিত নামীরূপ আমোদগ্রমৌদে মত্ত । নায়ক শবের জ্ত্রীলিজে নায়িকা; 'নায়কী” শব্দটি ব্যাকরণ-সত নহে। শীধু ( সীবু)-মছ্য, সুরা ।
গৃহাগ্রে উড়িছে ধ্বজ-_গৃহসমূহের শীর্ষদেশে নিশান উড়িতেছে।
বাতায়ন- জানালা, বায়ুসধ্ধালনের পথ । বাত+ অয়ন (পথ )।
বাতি-বতিকা--প্রদীপ।
জাগে লঙ্কা আজি ইত্যাদি-_সমগ্র লক্কার অধিবাদিগণ আজ রাত্রিকালে অনিদ্র; কেহই বিশ্রীম গ্রহণের অভিলাষে নিদ্রীর শরণাপন্ন নহে।