shabd-logo

বিশদ টীকা টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাথ্যাদি (ষষ্ঠ সর্গ)

27 December 2023

2 Viewed 2

ষষ্ঠ সর্গের মূল ঘটনা" লক্ষ্মণকতৃকি মেঘনাদবধ-_বামায়ণ হইতে গৃহীত। স্থৃতরাং
ছিতীয় তৃতীয় ও পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনাবলীর ন্যায় ইহাঁকে রামায়ণবহিভূতি ঘটনা বলা চলে না। কিন্তু ঘটনাটি যে ভাবে নিষ্পন্ন হইয়াছে বলিয়৷ বণিত হইয়াছে, তাহার' সহিত রামীয়ণ-কাহিনীর কোন সম্বন্ধ নাই। রামচন্দের আশঙ্কা, বিভীষণের স্বপ্বৃত্াস্তকথন, রামের দৈববাণীশ্রবণ, এবং আকাশে নিমিত্দর্শন, দেবানুগ্রহে বিভীষণমহ লক্ষণের অনৃশ্ঠভাবে লঙ্কা গ্রবেশ, মায়া-লক্মী-সংবাদ,_এবং সর্বোপরি লক্ষ্মণের দুর্বলতা ও অসহায়তা৷ এবং মেঘনাদের চরিত্রের খজুতা ও দৈহিক শক্তিসামর্থ্য যেভাবে বণিত হইয়াছে তাহ! বামায়ণ-বহিভূত ও বামায়ণ-বিরোধী। এই সর্গে কবি তাহার কল্পনার এশ্বর্য উজাড় করিয়া মেঘনাদ-চরিত্রকে অলৌকিক মহিমায় মণ্ডিত করিয়াছেন এবং লক্মণ-চরিত্রকে ঠিক সেই অন্থপাতে টানিয়া নামাইয়াছেন। লক্ষণ দেবতাদের কৃপা ও সাহাষ্য লাভ করিয়াছিলেন এবং দৈববলে বলী হইয়। মেঘনাদকে বধ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন,__ ইহাতে তাহার কোন অগৌরব নাই। রামায়ণেও রাম, গরড়, ইন্্ প্রভৃতির সাহাধ্য পাইয়াছিলেন। কিন্তু এই সর্গে কবি মেঘনাদের প্রতি গ্রীতিপক্ষপাত দেখাইতে যাইয়া লক্ষ্মণকে একেবারে “অমানুষ করিয়া ফেলিযাছেন। মেঘনাদ লক্ষণের পরিচয় পাইয়! যখন বীরের ন্যায় তাহাকে সম্ভাষণ করিয়৷ অস্ত্সজ্জিত হুইবার জন্য সময় চাহিলেন, তখন লক্ষণের উক্ভি--

“আনায়-মাঝারে বাধে পাইলে কি কভু
ছাড়ে রে কিরাত তারে ? বধিব এখনি
অবোধ, তেমতি তোরে ? জন্ম রক্ষঃকুলে
তোর; ক্ষত্রধর্ম, পাঁপি, কি হেতু পালিব

তোর সঙ্গে? মারি অরি পারি যে কৌশলে !” তীহার চরিত্রকে জঘন্তরূপে কলঙ্কিত করিয়াছে । রামায়ণ লক্ষণ কপট-সমরী নহেন; কপট-সমরী মায়াবী মেঘনাদ । লক্ণ সেখানে .নিজের অতুলনীয় শৌর্বীর্ধের জন্য মহিমময় হইয়া উঠিয়াছেন। একমাত্র চতুর্থ সর্গে সীতাচবিত্র ব্যতীত মধুস্থদন রামায়ণীয় চরিত্রাদর্শ এই কাব্যে কোথাও পুরাপুরি অন্ুরণ করেন নাই বটে,_কিন্ ষষ্ঠ সর্গে লক্ষণের চরিত্রে এই ব্যতিক্রম একেবারে বৈপরীত্যে আপিয়! দাড়াইয়াছে।

বিষয়-সংক্ষেপ £_ পঞ্চম সর্গে বর্ণিত হইয়াছে যে, লক্কার বন-মধ্যস্থ চণ্তীর দেউলে উপস্থিত হইয়া লক্ষণ দেবীর পুজা! করিয়! তাহার নিকট মেঘনাদ-বধের বর লাভ করিয়াছেন। বরলাভের পর লক্ষণ সেই বন হইতে ভ্রতবেগে রামচন্দ্রের শিবিরে আগিয়! তাঁহাকে বলিলেন যে, তিনি দেবীর কৃপালাভে সমর্থ হইয়াছেন। বনের মধ্যে তিনি প্রথমে বনরক্ষক মহাদেবের সম্মুখীন হন। রামচন্দ্রের আশীবাদে তিনি বিনাধুদ্ধেই পথ ছাড়িয়া দিলেন। তাহার পর লক্ষ্মণ একে একে মায়া-সিংহ, মায়া-ঝটিকা, মায়-হন্দরীগণ প্রভৃতি বিভীষিকা ও প্রলোভনের সম্ুখীন হইলেন। এই সকল বিদ্ন অতিক্রম করিয়া! তিনি দেবীর মন্দিরে উপস্থিত হইলেন এবং লরোবরে নান করিয়া! নীলোতপল তুলিয়! দেবীর অর্চনা করিলেন। দেবী বলিয়াছেন যে, দেবতার! সকলে লক্ষণের প্রতি প্রসন্ন । ইন্দ্র তাহাকে দৈবাস্্ব প্রেরণ করিয়াছেন এবং স্বয়ং দেবী তাহাকে সাহাষ্য করিতে আসিয়াছেন। দৈবাস্ত্সমূহ লইয়! দেবী লক্ষ্ণকে বিভীষণের সহিত নিকুস্তিল! যজ্ঞালয়ে প্রবেশ করিয়। মেঘনাদকে বধ করিতে আদেশ করিয়াছেন। দেবীর কৃপায় তাহার! অনৃশ্ঠভাবে যজ্ঞশালায় প্রবেশ করিতে পারিবেন। এই বৃত্বাস্ত বলিয়! লক্ষ্মণ রামচন্দ্রের অনুমতি প্রার্থনা করিলেন ।

রামচন্দ্র বলিলেন যে, যে ভীষণ শত্রুর ভয়ে দেব নর সকলেই অস্থির, কি করিয়! তিনি লক্ষ্ণকে তাহার সহিত যুদ্ধ করিতে পাঁঠাইবেন। সীতার উদ্ধারের জন্য আর বুথ চেষ্টা করিয়া লাভ নাই। বৃথাই তিনি সমুদ্রবন্ধন করিয়! হুগ্রীবা্দির সহিত,সৈন্ে লঙ্কায় আসিয়। যুদ্ধে অসংখ্য রাক্ষল সৈন্য বধ করিয়াছেন। তিনি রাজ্য, ধন, পিতা, মাতা, বন্ধুবান্ধব সকলই হারাইয়াছেন,_বাকি ছিলেন কেবল লীতা। তাহাকেও রাবণ হরণ করিয়া আনিয়াছে। এ পৃথিবীতে লক্ষ্মণ ব্যতীত এখন রামের আপন বলিতে কেহই নাই। ঈ্গা আর যুদ্ধে কাঁজ নাই; তাহার! আবার বনবাীই হইবেন।

রামের খেদোক্তি' শুনিয়া লগ্ণ বীরদর্পে বলিলেন যে, রামচন্দ্রের এইরূপ ভীত হওয়া অন্ুচিত। দেবতারা রামচন্দ্রের সহায়। রামের আদেশ পাইলে তিনি রাক্ষলপুরীতে প্রবেশ করিয়! নিশ্চয়ই যেঘনাদকে বধ করিতে সমর্থ হইবেন। দেবতাগণের ইচ্ছার বিরোধিতা কর! বিজ্ঞ ও ধর্মাত্মা রামচন্দ্র পক্ষে একান্ত অনুচিত। তখন বিভীষণও বলিলেন যে, মেঘনাদ জগতে এতদিন পর্যপ্ত অজেয় হইলেও আজ আর তাহাকে ভয় করিবার প্রয়োজন নাই। পূর্বরাত্রে তিনি স্বপ্ন দেখিয়াছেন যে, রক্ষঃকুললক্ষমী তাহার শিয়রে আসিয়! তাহাকে বক্ষোরাজরূপে বরণ করিয়াছেন । দেবী বলিয়াছেন যে, লক্ষ্মণ পরদিবস প্রভাতে মেঘনাদকে বধ করিবেন ।-বিভীষণ যেন লক্ষ্মণের সহায় হন। স্থুতরাং রামচন্দ্র অনুমতি দিলে তিনি লক্ষ্ণকে লইয়া মেঘনাদের যজ্ঞশালায় গমন করিবেন। দেবাদেশ পালন করিলে নিশ্চয়ই রামের মনোবাসনা পূর্ণ হইবে।

কিন্তু বিভীষণের আশ্বীসেও রামের মন স্থির হইল না। তিনি বলিলেন যে, লক্ষণ এ পর্যন্ত তাঁহার জন্য যে কণ্টম্বীকার ও ছুঃখবরণ করিয়াছেন, তাহাতে তাহাকে নিশ্চিত বিনাশের মুখে ঠেলিয় দিতে তাহার প্রাণ সরিতেছে না। রামের জন্যই লক্ষ্মণ রাজ্যন্থথ, মাতা ও স্ত্রী পর্যস্ত ত্যাগ করিয়া বনে রামের অন্ুগম্ন করিয়াছেন। বনে আগমনকালে মাতা স্থমিত্রা লক্ষ্ণকে রামের হাতেই পিয়া দিয়াছেন। স্থৃতরাং লক্ষণের জীবন বিপন্ন করিয়া সীতার উদ্ধারের চেষ্টায় কাঁজ নাই ;_তীহারা আবার বনেই ফিরিয়া যাইবেন। স্থুগ্রীব, হনৃমান, অঙ্গদ, নল, নীল, কেশরী প্রভৃতি বীরগণের সমবেত সাহায্যে যে দুর্ধর্ষ মেঘনাদকে পরাজিত করা যাঁয় না, _লক্ষ্ণ একাকী কিভাবে তাহার সহিত যুদ্ধ করিবে?

সহসা! রামচন্দ্র দৈববাণী শুনিলেন যে, তাহার দেবতাঁদের আদেশ অবহেলা করা উচিত নয় ;-_-তিনি আকাশের দিকে চাহিয়া দেখুন । ঠদববাণী শুনিয়া রাম আকাশের দিকে চাহিয়৷ দেখিলেন, তথায় সর্পে ও ময়ুরে এক ভীষণ যুদ্ধ বাধিয়াছে। কিছুক্ষণ যুদ্ধের পর ময়ূর মুত হইয়৷ মাটিতে পতিত হইল এবং বিজয়ী সর্প গর্জন করিতে লাগিল।

বিভীষণ এই মায়া-দৃশ্তের ব্যাখ্যা করিয়া! বলিলেন যে, সর্পের নিকট সর্পভক্ষক ময়ুরের পরাজয়-দৃষ্ঠ অর্থহীন নহে। লক্ষণের হস্তেই যে মেঘনাঁদের মৃত্যু হইবে, দেবতারা এই ঘটনার দ্বারা তাহারই স্চন! করিয়াছেন।

তখন রামচন্ত্র আশ্বন্ত লইয়া লক্মণকে দৈবাস্ত্সমূহের দ্বারা, সজ্জিত করিলেন এবং বিভীষণের সহিত লক্ষণ জ্রুতপ্দে শিবির হইতে বহির্গত হইলেন। চারিদিকে পুষ্পবৃদ্ি হইতে লাগিল? আকাশে মঙ্গলবাগ্যধ্বনি শ্রুত হুইল এবং ত্রিতুবন জয়ধ্বনিতে পূর্ণ হইল। রামচন্্র আকাশের দিকে চাহিয়া দুর্গাদেবীর নিকট লক্ষণের মলের জন্য টার করিলেন“; এবং পবনদেব অন্গকুল হইয়া রামের প্রার্থন] আকাশপথে
দিকে চালনা করিলেন। দেবীও রামচন্দ্রের প্রীর্থন! শুনিয়া তাহার কামনা
টা হউরু বলিয়া! আশীর্বাদ করিবেন ক্রমে প্রভাত হইয়া আসিল। রামচন্দ্র লক্জ্রণের নিরাপত্তার দিকে বিভীষণকে সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে বলিলেন এবং বিভীষণও তাহাকে আশবাম দিলেন। রামচন্ত্রকে প্রণাম করিয়! লক্ষণ বিভীষণের সহিত দেবকৃপায় অদৃশ্যভাবে যাত্রা করিলেন।

এদিকে মায়াদেবী আসিয়া রক্ষঃকুলরাজলম্্ীর মন্দিরে উপস্থিত হইলেন। তিনি লক্ষমীদেবীকে তাহার তেজঃ স্বরণ করিতে অনুরোধ করিলেন; কারণ তাহা! না হইলে লক্ষণের পক্ষে শক্রভাবে লঙ্কায় প্রবেশ কর! অসম্ভব হইবে। লক্ষমীদেবী বলিলেম যে, মায়াদেবীর আদেশে তিনি তেজঃ সন্বরণ করিবেন। রাবণ ও মন্দোদরী তাহাকে পরম ভক্তির সহিত সেবা করেন বলিয়া ভক্তের আমন্ন বিপদে তাহার মন ব্যাকুল। কিন্তু অদুষ্ট অপ্রতিরোধনীয়।, তিনি লক্ষমণকে নির্ভয়ে লঙ্কায় গ্রবেশ করিবার কথা বলিতে মাঁয়াদেবীকে অন্রোধ করিলেন। অনন্তর মায়াদেবীর সঙ্গে লক্দ্ীদেবী স্বমন্দির ত্যাগ করিয়া লঙ্কার পাশ্চম দ্বারের দিকে অগ্রসর হইলেন। সঙ্গে সঙ্গে লঙ্কাপুরীর সরস কদলী বৃক্ষগুলি পর্যন্ত শুকাইয়া যাইতে লাগিল; মঙ্গলঘট বিচুর্ণ হইল; লক্কার সকল শোভা-সম্পদের দীপ্তি আসিয়! দেবীর চরণে মিশিল 7 লঙ্কা মৃহূর্তে শ্রী হইল এবং চারিদিকে নানারূপ তুর্ক্ষণ দেখ! দিল। মায়াদেবী ও লক্ষমীদেবী লঙ্কার প্রাচীরে আরোহণ করিয়া দেবরুপায় অদৃশ্যভাবে অগ্রসর লক্ষ্মণকে বিভীষণসহ অদূরে দেখিতে পাইলেন। মায়াদেবীকে বিদায় দিয়! লক্ষ্মীদেবী স্বমন্দিরে ফিরিয়া ভক্তের আসন্ন বিপদে রোদন করিতে লাগিলেন ।

মায়ার বলে শক্তিমান বীরদ্ধয় লঙ্কায় প্রবেশ করিলেন। লক্ষণের ম্পর্শমাত্রেই সিংহদ্বার ভীষণ শবে উন্মুক্ত হইল বটে, কিন্তু মায়ার কৌশলে সে শব কেহই শুনিল না এবং লক্ষ্মণ ও বিভীষণকেও কেহ দেখিতে পাইল না। লঙ্কায় প্রবেশ করিয়া লক্ষণ সবিশ্ময়ে অসংখ্য বীর সৈন্যের সমাবেশ এবং নগরীর অপরিমেয় এশ্বরধ দর্শন করিতে করিতে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। তিনি বিভীষণকে বলিলেন যে এইরূপ স্থৈশ্বর্ষের অধিকারী রাবণ সত্যই পরম ভাগ্যবান। বিভীষণ উত্তর করিলেন যে, রাবণ সত্য সত্যই ভাগ্যবান; কিন্তু এ জগতে ভাগ্য কাহারও চিরদিন সমান থাকে না। উভয়ে অদৃশ্যভাবে রাজপথ দিয়! অগ্রপর হইবার সময়ে বেল! বাঁড়িবার সঙ্গে সঙ্গে নানাগ্রকার নরনারীর সমাগম দেখিতৈ দেখিতে চলিলেন, এবং অবশেষে নিকু্ভিলা যজ্রশালায় আপিয়া পৌছাইলেন। রুদ্ধদ্বার ষজ্জশালায় মেঘনাদ নির্জমে একাকী বিবিধ পুজার উপকরণ-বেটিত হইয়া! ধ্যানে রত। এমন সময়ে মায়ার রূপায় লক্ষণ দ্রুত মন্দিয়ে গ্রবেশ করিলেন। তাহার অস্সা্দির শবে এবং গবিত পদক্ষেপে মেঘনাদের ধ্যান ভঙ্গ হইল। মেঘনাদের দৃঢ় বিশ্বাস হইল যে, ইঠ্দেবতা অগ্রিদেবই তাহার সন্তষ্ট হইয়। দর্শন দিয়াছেন। তিনি ভক্তিভরে প্রণাম করিয়া তাহার পরম শক্র লক্ষণের রূপ ধারণ করিয়! অগ্নিদেবের আবির্ভাবের কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। লক্ষণ বীরদর্পে উত্তর দিলেন যে, তিনি অগ্নিদেব নহেন, তিনি লক্ষ্ণ। মেঘনার্দকে বধ করিবার জন্যই তাহার তথায় আগমন। লক্ষণের কথ! শুনিয়! নির্ভয় মেঘনাদের মন জীবনে এই প্রথম ত্রাদে পূর্ণ হইল। তিনি সবিন্ময়ে বলিলেন যে, সত্যই যদি তিনি লম্ণ হন, তবে কিরূপে তিনি শত শত সতর্ক প্রহরীর দৃষ্টি অতিক্রম করিয়া লঙ্কায় প্রবেশ করিলেন এবং রুদ্ধদ্বার যক্ঞশালাতেই বা কিরূপে আমিলেন। লক্ষণ ত আর নিরাকার পুরুষ নহেন--হুতরাং তিনি নিশ্চয়ই তাহার ইষ্টদেব এবং ভক্তের সহিত পরিহাস করিতেছেন । মেঘনাদ ইষ্টদেবজ্ঞানে লক্ষণের নিকট শক্রজয়ের বর প্রার্থনা, রুরিলেন।

সণ উত্তর করিলেন-_-তিনি মেঘনাদের যম। কাল পূর্ণ হইলে সম্পূর্ণরূপে অপ্রত্যাশিত ভাবে মৃত্যু আপিয়া উপস্থিত হয়। মেঘনাদ অগ্নিদেবের কৃপায় শক্তিমান হইয়া দেবগণকেও তুচ্ছজ্ঞান করে। তিনি আজ দেবাদেশে মেঘনাদকে বধ করিতে আনিয়াছেন। ইহা বলিয়া লক্ষণ দৈব অলি কৌষমুক্ত করিয়া মেঘনাদকে আক্রমণ করিতে উদ্যত হইলে মেঘনাদ বলিলেন,_-সত্যই লক্ষ্মণই যদি যজ্ঞশীলায় আসিয়া থাকেন ত তাহার যুদ্ধের সাধ তিনি অধিলম্বে পূর্ণ করিবেন। কিন্তু মেঘনাদ নিরস্ত্র, তাঁহাকে আক্রমণ করা বীরধর্ম নয় ইহা লক্ষণ নিশ্চয়ই জানেন। তাহাকে অন্ত্র-সজ্জিত হইবার সথযোগ দিয়া ততক্ষণ লক্ষণ তাহার আতিথ্য গ্রহণ করুন। লক্ষ্মণ বলিলেন, রাঁক্ষদ মেঘনাদের সহিত যুদ্ধে তিনি ক্ষাত্রধর্ম পালন করিতে অস্বীকৃত ;-_শক্রকে যে-কোন উপায়ে বধ করাই তাহার একমাত্র উদ্দেশ্য । লক্ষণের উক্তি শুনিয়। মেঘনাদ তাহাকে তীব্র ভত্্না করিলেন এবং অন্য কোর্ন অস্ত্র না পাইয়া পৃজার কোষা তুলিয়া! প্রচণ্ড শক্তিতে লক্ষণের মন্তকে আঘাত করিলেন। লক্ষণ মৃছিত হইয়! ভূপতিত হইলে, মেঘনাদ লক্ষণের দেহস্থিত দৈবাস্ত্রসমূহ একে একে কাড়িয়া লইবার চেষ্টা করিলেন, কিন্ত কোন অন্থই নাড়িতে পারিলেন না। ইহা দৈব যড়যন্্ বুঝিতে পারিয়া ক্ষুভাবে স্বারের ্রিকে চাহিতেই শুলধারী বিভীষণকে তিনি দ্বারদেশে দেখিতে পাইলেন । মেঘনাদ বিষগ্নভাবে বলিলেন, এতক্ষণে তিনি লক্ষণের পুরগ্রবেশের রহস্য বুঝিতে পারিলেন। শ্রেষ্ঠ রাক্ষমবংশে জন্মগ্রহণ করিয়া এবং রাবণ কুস্তকর্ণগির ন্যায় বীরের ভ্রাতা হইয়াও, শক্রকে বিভীষণ নিজ পুরীর মধ্যে পথ দেখাইয়া আনিয়াছেন। পিতৃতুল্য গুরুজন বিভীষণকে তিনি নিন্দা করিতে চান ন]। তিনি কেবল ছার মুক্ত করিয়! দিতে তীহাকে অঙ্গুরোধ করিতেছে,__যেন অস্ত্রাগারে
যাইয়া অস্ত্র আনিয়া তিনি লক্ণকে বধ করিয়া লঙ্কার কলঙ্ক ঘুচাইতে পারেন । বিভীষণ উত্তর দিলেন যে, তিনি রামচন্দ্রের দাস? সুতরাং তীহার বিরুদ্ধে কোন: কার্য করিতে অক্ষম। মেঘনাদ বিভীষণের বামচন্ত্রের আনুগত্যের কথা শুনিয়া) ধিক্কার দিয়া বলিলেন যে, এইকপ গ্লানিজনক উক্তি শ্রেষ্ঠ রক্ষোবংশে জন্মিয়া৷ বিভীষণের মুখে শোভা পায় না। রাম-লক্ণ যে কত হীন ও কাপুরুষ তাহা লক্ষণের অক্ষব্রিয়োচিত আচরণেই প্রকাশ পাইয়াছে। তিনি পুনরায় বিভীষণকে দ্বার ছাড়িয়া দিতে অন্ননয় করিয়া বলিলেন যে, ভ্রাতৃক্পুত্র মেঘনাদের বিক্রম তাহার অজ্ঞাত নহে। তুচ্ছ শক্র দক্তভরে লঙ্কায় প্রবেশ করিয়াছে; বিভীষণ আদেশ করিলে তিনি তাহাকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করিতে পারেন। এই অপমান সহ্য কর! তাহার পক্ষে অমন্তব; বাক্ষপবীর হুইয়া বিভীষণই ব কি প্রকারে ইহা সহা করিতেছেন? বিভীষণ লক্জাবনতমুখে উত্তর দিলেন,_তীহাকে ভৎপনা করা বৃথা। রাবণ নিজের পাপকার্ধের জন্য বংশে ধ্বংম হইতে চলিয়ছেন। রাঁবণের পক্ষে থাকিয়া তিনি নিজের বিনাশ কেন ঘটাইবেন? বিভীষণের কথা শুনিয়া মেঘনাদ অত্যন্ত ভ্রুদ্ধ হইয়া তাহাকে গ্লেষবাক্যে বিলেন যে, ধামিক বিভীষণ কোন্‌ ধর্ম অনুসরণ করিয়া জাতিত্, ্রাতৃত্ব, জাতি পর্যন্ত বিসর্জন দিয়াছেন? হীন সংসর্গে থাকার জন্তাই তাহার চরিত্রের এই অধঃপতন ঘটিয়াছে।

ইত্যবসরে মায়ার যত্বে চেতন] পাইয়া লক্ষণ উঠিয়া মেঘনাদকে তীক্ষ তীরে বিদ্ধ করিতে লাগিলেন। যেঘনাদের দেহ হইতে নির্গত রুধিরআ্োতে তাহার পরিধেয় বন্ত্াদি সিক্ত হইয়া তূমিতল রঞ্রিত হইল। বেদনায় অস্থির হইয়। নিরন্্ মেঘনাদ পূজার পাত্রা্দি যাহা হাতের কাছে পাইলেন তাহাই লক্ষণের গ্রতি নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন; কিন্তু মায়ার কৃপায় তাহ! লক্ষণের দেহ স্পর্শ করিল না। তখন ভীষণ গর্জন করিয়া মেঘনাদ লক্ষণের গ্রতি ধাবিত হইলেন; কিন্ত মায়ার চক্রান্তে চারিদিকে যম, শিব, বিষ এবং অন্যান্য দেবতাগণ্কে দেখিতে পাইয়া হতাশ হইয়া! স্থিরভাবে দাড়াইলেন। এই অবসরে লক্ষণ দৈব-অমি নিফ্ষৌধিত করিয়া মেঘনাদকে আঘাত করিলে তিনি ভূপতিত হইলেন। মেঘনাদের পতনে পৃথিবী কাপিয়! উঠিল সমুদ্র উদ্বেলিত হইল এবং উৈরবরবে বিশ পূর্ণ হইল। রাঁবণের রাজসভায় তাঁহার মস্তক হইতে স্বর্মুকুট খসিয়া পড়িল; প্রমীলা মনের তুলে হঠাৎ ললাটের মিন্দুরলেখা মুছিয়া ফেলিলেন; মন্দোদরী বিনাকারণে অকম্মাৎ মৃছিত হইয়া পড়িরেন ; এবং বাক্ষসশিশুগণ মাতৃক্োড়ে ছুংসবপ্ন দেখিয়া কাদিয়া উঠিল।

অন্থায় যুদ্ধে পতিত হইয়া মেঘনাদ পরুযবাক্যে লক্ণকে বলিলেন যে, তিনি বীর, স্বতরাং মৃত্যুকে ভয় করেন না; তবে দেবরাজ ইন্দ্রকেও পরাস্ত ক্ষরিয়া শেষে লক্ষণের মৃত কাপুরুষের হস্তে নিহত হইলেন,_-এই তীহার দুঃখ । কিন্তু পুত্রশোকার্ত রাবণ যখন এই অন্যায় যুদ্ধের কথা শুনিবেন তখন লক্ষণ যেখানেই পলায়ন করুক না কেন, দেব, দৈত্য, মানব, কেহই তাহাকে রক্ষা করিতে পারিবে না, এবং তাহার অপযশও কেহ কোনকালে ঘুচাইতে পারিবে না। মৃত্যুর পূর্বে মেঘনাদ মাতা-পিতার কথা স্মরণ করিলেন। প্রমীলার কথা মনে হইতে তীাহার চক্ষু হইতে অজন্র অশ্রু বষিত হইতে লাগিল। অবশেষে তাহার মৃত্যু হইল; কাগপ্তিহীন দেহে তিনি ভূতলে পড়িয়া রহিলেন।

মেঘনাদের প্রাণবিয়োগ হইলে বিভীষণ শোকে কাতর হইয়া পড়িলেন। তিনি বিলাপ করিয়া বলিলেন যে, মেঘনাদের মত ব্যক্তির কি ভূমিশষ্যা শোভা পায়? রাবণ, মন্দোদরী, প্রমীল। ও তাহার অন্ুচরীগণ এবং বৃদ্ধা পিতামহী শিকষা তাহাকে এভাবে ভূতলে শায়িত দেখিলে কি বলিবেন? পিতৃব্য তিনি, তাহাকে গাত্রোখান করিতে অনুরোধ করিতেছেন এবং এখনই তাহাকে দ্বার মুক্ত করিয়! দিবেন ;সে যেন অস্ত্রসঙ্জিত হইয়া আসিয়া শত্র দমন করিয়া লঙ্কার কলঙ্ক দূর করে। মেঘনাদের জন্য মৈন্তা-সামস্ত যুদ্ধার্থ সঙ্জিত হুইয়৷ অপেক্ষা করিতেছে । সে উঠিয়। যুদ্ধযাত্রা করুক এবং রাক্ষঘবংশের বিপুল কুলগৌরব রক্ষা করুক।

লক্ষ্মণ বিভীষণকে লান্বনা দিয়া বলিলেন যে, মেঘনীদবধ ব্যাপারে বিভীষণের কোন হাত নাই। বিধির বিধানাস্থ্যায়ীই মেঘনাদ তাহার হস্তে নিহত হইয়াছে। তাহাদের উভয়ের এখন অবিলম্বে শিবিরে প্রত্যাবর্তন করিয়া রামচন্দ্র উৎকণ দুর করা কর্তব্য। তখন উভয়ে রাবণের ভয়ে দ্রতগতি রামচক্জ্ের শিবিরের দিকে যাত্রা করিলেন । ৃ লক্ষ্মণ আসিয়া রামচন্দ্রকে মেঘনাদবধের শুভ নংবাদ জানাইলে রাম লক্ষ্মণকে আদর করিয়া ও সাধুবাদ দিয়া সকল শুভকর্মের নিয়্তা দেবতাগণের পুজা করিতে বলিলেন। বাম বিভীষণকেও অজন্স সাধুবাদ দিযা তাহার প্রতি নিজের অসীম কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিলেন। অনন্তর তিনি শুভস্করী শঙ্করীর পূজার প্রস্তাব করিলেন। আকাশে দেবতারা পুষ্পবৃষ্টি করিতে লাগিলেন। রাম-সৈন্য বিজয়োল্লামে “জয় সীতাপতি জয়” রবে গর্জন করিয়া উঠিল এবং সেই গর্জন শ্রবণে আতঙ্কিত হইয়! লঙ্কাপুরীর অধিবাপিগণ নিদ্র। হইতে জাগ্রত হইল। ত্যজি সে উদ্ভান ইত্যা্দি__লঙ্কাপুবীর যে উদ্ভামে চিগ্ীর দেউল' অবস্থিত, দেবীর নিকট বরলাভের পর বীরশ্রেষ্ঠ লক্ষণ সেই উদ্যান ত্যাগ করিয়া রামচন্দ্রের শিবিরাভিমুখে অগ্রসর হইলেন।
অতি দ্রেতে চলিল। জুমতি--কারণ রাত্রি প্রভাত হইয়া আসিতেছিল। প্রভাতে মেঘনাদের ঘজ্ঞদমাণ্ডির পূর্বেই নিকুস্তিলায় উপস্থিত হইয়! তাহাকে বধ করিতে হইবে বলিয়! লক্ষণের দ্রুত গতি ।
হেরি ম্বগরাজে বনে ইত্যাদি--বনের মধ্যে সিংহকে দেখিতে পাইলে ব্যাধ তাহাকে বধ করিবার জন্য প্রাণঘাতী তীক্ষ অস্ত্র-শত্্র আনিবাঁর উদ্দেশ্টে ষেরূপ দ্রুতগতিতে অন্ধ রক্ষা করিবার স্থানের দিকে ধাবিত হয়।
প্রহরণ নশ্বর সংগ্রামে- “নশ্বর শবকে প্রহরণ” অথবা "সংগ্রামে উভয় শবের বিশেষণ রূপেই গ্রহণ করা যায়। 'থুদ্ধে প্রাণবিনাশক অস্ত্র” অথবা (প্রাণঘাতী যুদ্ধের অস্ত্র_-উভয়ক্ষেত্রেই “নশ্বর শব্ষে অবাচকতা। দোষ । নশ্বর শবের অর্থ 'নাশশীল? ; কিন্ত কৰি এস্থলে এবং অন্ত্রও নশ্বর শব্দটি “বিনাশক' অর্থে ব্যবহার করিয়াছেন । তুলনীয়,__ “মরে কালফণি-নশ্বর-দংশনে”। যবে ঘোর বনে নিষাদ বিধিলে

' মৃগেন্দ্রে নর শরে, রঃ “আর যোধ যত হত এ নশ্বর রণে।”
উত্রিল--অব+তূঅবতর১ ওতর-উততর১উর, উর--অবতীর্ণ হইল? উপস্থিত হইল।
পদযুগে নমি-বামচন্ছ্রের চরণে প্রণাম করিয়া ।
নমক্কারি-:অভিবাদন করিয়া । লোকব্যবহারে বাঙ্গাল! প্রণাম ও নমস্কার শবদয়ের মধ্যে পার্থক্য আছে।
চামুণ্ডে চামুণ্ডা অর্থাৎ চণ্ডিক! দেবীকে । মার্কণ্ডেয় পুরাঁণে চণ্তিকা ও চামুণ্ডা স্বতন্ত্র দেবী। চগ্মুও্বধের সময়ে কুদ্ধা চণ্তিকার ললাটদেশ হইতে শিরোমালাধারিণী ভয়ঙ্করী কালীর উৎপত্তি হয়। তিনি চণ্ডকে ও মুণ্ডকে বধ করিয়াছিলেন বলিয়! চ্ডিক! তাহার চামুণ্ডা নামকরণ করেন। চক্দ্রচুড়ে- মন্তকে চন্দ্রকলাশোভিত মহাদেবকে | ছাড়িল। পথ বিন। রণে তিনি ইত্যাদি _ যেমন সর্পদমনকারী উগ্র উধধ প্রয়োগে ভীষণ দর্প নিবার্যভাবে দূরে চলিয়া! যায়, সেইরূপ বনরক্ষক মহাদেব তোমার পুণ্যবলেই বিনা যুদ্ধে আমাকে পথ ছাড়িয়া দিয়া প্রস্থান করিলেন। কালাগ্নি_প্রলয়কালীন দ্বাদশ সর্ষের যুগপৎ আবির্ভাবজনিত ভীষণ অগ্নি। দ্াবাগ্রি--দাবে (অরণ্যে ) প্রজলিত অগ্নি; ( মধ্যপদলোপী সমাঁ )। বাযুসখা--অগ্রি) বায়ু সখা যাহার; ( বহুত্রীহি সমাস) বষঠা-তৎপুরুষ সমাস (বায়ুর সখা) হইলে সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়মানুযায়ী 'বামুনখ” রূপ হইত। এবে-এখন। মায়াসিংহ ও মায়াঝটিকা দর্শনের পরে। বিদাইন্ু-_বিদায় করিলাম) “বিদায়িঙ* হওয়। উচিত ছিল। কবি 'বিদায়” শব্দ হইতে নামধাতুরূপে উভয় রূপই যথেচ্ছ ব্যবহার করিয়াছেন। সরসে€নরং লরোবরে। সরস্+৭মীতে এ) অবগাছি দেহ-দেহ নিমজ্জনপূর্বক স্নান করিয়া । অবগাহন শব্দের অর্থই দেহ 'নিমজ্জনপূর্বক স্নান । হুতরাং “অবগাহি দেহ' কথাটিতে অধিকপদত। দোষ । কবি অন্ত্রও এইরূপ প্রয়োগ করিয়াছেন "কৌমুদিনী পুনঃ অবগাহে দেহ...” (২৬২৫) “অবগাহ দেহ, দেবি, স্থুবাসিত জলে,” (৪1৫৬২)
নীলোৎপলাঞ্জলি দিয় পুজিনুমায়েরে- লক্ষণ কর্তৃক নীলপন্ন দ্বার! দেবীর অর্চনা বিষয়টি কৃত্তিবামী রামায়ণে উল্লিখিত রামচন্দ্র কর্তৃক নীলপন্মরাশি দ্বারা অকালে “দুর্গাপূজা ঘটনাটি হইতে পরিকর্িত। |
আবির্ভাবি.বর দিল! মায়া-হিন্দু পুরাণে মায়া, মহামায়া, চত্ডিকা, দুর্গ প্রভৃতি এক আগ্ঘাশক্তিরই বিভিন্ন নাম। এস্বলেও মধুস্থদন মায়াদেবী ও চণ্ডীদেবীকে এক ও অভিন্ন বলিয়। কল্পনা করিয়াছেন । , কিন্তু দ্বিতীয় নর্গে দেবীর প্রতি শিবের উক্তি
“পাঠাও কামেরে, উমী) দেবেন্দ্র-সমীপে। নত্বরে যাইতে তারে আদেশ, মহেশি, মায়াদেবী-নিকেতনে |” 10 ৪৩৫-৪৩৭ )
হইতে মায়া ও শিবানীকে স্বতন্ত্র দেবী বলিয়া! গ্রহণ করিতে হয়। ধ্বিতীয় সর্গেবক্ দেব-দেবী-চরিত্রের পরিকল্পনায় গ্রীক পুরাণোক্ত দেব-দেবীগণের প্রভাব অতিরিক্ত মাত্রায় আসিয়! পড়াতেই এইরূপ অসামঞ্জন্য ঘটিয়াছে ।
নুপ্রসম্সম আজি, ইত্যাদি--দ্বিতীয় সর্গে উল্লিখিত হইয়াছে যে, মেঘনাঁদ বধের ব্যবস্থা করার জন্য লক্ষ্মীদেবী, ইন্দ্র, শচী, পার্বতী, কায, রতি, মহাদেব, মায়াদেবী প্রভৃতি সকলেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ঠ হইয়াছিলেন।
দেব-অন্ত্-_ছিতীয় সর্গে উল্লিখিত, ইন্দ্র কর্তৃক রাম-শিবিরে প্রেরিত অস্ত্রাদি।
বলি (সম্বোধনে )_হে শক্তিমান!
শারদু'লাক্রমে-ব্যান্রের ন্যায় হঠাৎ আক্রমণ করিয়া।
পিধানে যথ৷ অসি- কোষে অবস্থিত তরবারির ন্যায়; অপি+ধ1+ন- পিধান। ভাঁগুরির মতে “অব” এবং 'অপি' উপমর্গদ্ধয়ের আছ “অ' লুপ্ত হয়। থা, পিধান, পিনদ্ধ পিহিত, বগাহন ইত্যাদি ।
পোহায়-প্রভাত--গ্রভাত হয়।
বিলম্ব ন। সহে-_কারণ অধিক বিলম্বহেতু মেঘনাদ ষজ্ঞমমাপ্তির স্থযোগ পাইলে সকল চেষ্ট। ব্যর্থ হইবে।
যে কৃতান্ত-দুতে দুরে হেরি_যমদূত স্বরূপ বিষধর কালদর্পের যে ন্যায় মেঘনাদকে দূর হইতে দেখিয়া ।
দেব-নর ভম্ম যার বিষে_ যাহার প্রচণ্ড শক্তিতে দেবতা হইতে মানুষ পর্যস্ত ' সকলেই পধুদদস্ত। মেঘনাদকে কালসর্প হইতে অভিন্ন কল্পনা করায় সঙ্গতিবক্ষার্থ পরাক্রমকে বিষ বলা হইয়াছে ।
সে সর্পবিবরে-_মেই ভীষণ কালসপরন্বরূপ মেঘনাদের নিবাসস্থলে। উপমেয় মেঘনাদের সহিত উপমান সর্পের অভেদত্ব কল্পনায় পক অলঙ্কার ।. .
নাহি কাজ সীতায় উদ্ধারি-__কারণ সীতাকে উদ্ধার করিতে হইলে রাঁবণবধ এবং রাবণবধের পূর্বে তাহার প্রধান সহায় মেঘনাদ বধ প্রয়োজন। আবার মেঘনাদ এরূপ পরাক্রমশাণী যে, প্রাণপ্রিয় ভ্রাতা -লম্্ণকে তাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে প্রেরণ করিলে ভ্রাতার জীবনের আশ! ত্যাগ করিতে হয়। হ্ৃতরাং রাম খেদ করিয়া বলিতেছেন ঘে, লক্ষপকে নিশ্চিত বিনাশের মুখে ঠেলিয়। দিয়া তিনি সীতাকে উদ্ধার করিবার চেষ্টা করিবেন না। লক্ষণের প্রতি রামচন্দ্র অত্যধিক গ্রীতিহেতু রামায়ণেও রামচন্দ্রকে লক্ষণের জন্য বিলাপমুখর দেখিতে পাওয় যায়।

তুলনীয়__ “দেশে দেশে কলত্রাণি দেশে দেশে চ বান্ধবাঃ। তং তু দেশং ন পশ্ঠামি ঘত্র ভ্রাতা সহোদরঃ ॥ (লঙ্কাকাও্, ১০২।১৪) এবং “রাজ্াযধনে কার্য নাহি চাহি শীতে ।” (কৃত্তিবাস- লঙ্কাকাণড)

কিন্তু সেস্থলে লক্ষণ শক্তিশেলাহত হওয়ায় রামের বিলাপের কারণ ছিল। আলোচ্য ংশে রামচন্দ্রের দৈব আন্গকল্যপ্রাপ্থিসত্বেও অহেতৃক বিলাপ কেবল মেঘনাদের দুর্ধ্বত্

জ্বাপনের জন্তই কল্পিত হইয়াছে । ইহাতে রামচবিত্র যে পরিমাণে ক্ষুপ্ন হইয়াছে, মেঘনাদের বীধবত্ত| ঠিক সেই পরিমাণে দেদীপ্যমান হইয়া উঠিয়াছে।

রাক্ষসগ্রাম__রাক্ষসসমূহ; “গ্রাম” সমৃহার্থক শব্দ ।

আনিনু রাজেকন্দ্রদলে এ কনকপুরে-_রামায়ণে রামচন্দ্রের পক্ষে রাঁজপদবীবাচ্য ছিলেন কেবল কিক্িদ্ব্যারাজ স্থগ্রীব। তবে 'রাজেন্দ্রদলে কথাটির সার্থকতা কি ? মেঘনাদবধ কাব্য যে মূলতঃ “হেকটুর বধ” বা ইলিয়ড কাব্যের আওতায় রচিত হইয়াছে, উদ্ধৃত বাক্যটি তাহার অন্যতম প্রমাণ। গ্রীকৃ পক্ষে বহুসংখ্যক রাজ! টয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবার জন্য আগামেম্ননের নেতৃত্বে সম্মিলিত হইয়াছিলেন বলিয়। ইলিয়ড. কাব্যে উল্লিখিত হইয়াছে । উক্ত কাব্যের প্রভাবে পতিত কবির অসতর্ক লেখনী হইতে 'রাজেন্দ্রনলে? শব্দটি নির্গত হইয়াছে ।
আন্ত্রিল মহীরে - পৃথিবীকে আর্দ্র বা পিক্ত করিল ।

অন্ধকার ঘরে দীপ মৈথিলী--অন্য সর্ববিষয়ে দুর্ভাগ্য রামের অন্ধকারময় গৃহন্বূপ নিরানন্দ জীবনে দীপবতিকাঁর ন্যায় আনন্দদায়িনী সীতা | উপমান-উপমেয়ে অভেদ কল্পনাহেতু রূপক অলঙ্কার । তুলনীয়-_ "কার ঘর আধারিলি নিবাইয়া এবে
প্রেমদীপ ৮৮ (৪15২১-২২)

কুক্ষণে, ভুলি আশার ছলসনে ইত্যাদি_রামের এই হতাশাব্যগ্রক বিলাপের সাহাযো গৌণভাবে মেঘনাদ-চরিত্রের গৌরব বৃদ্ধি করা হইয়াছে।
উত্তরিল! বীরদর্পে সৌমিত্রি কেশরী-মেঘনাদের সহিত তুলনায় খর্ব করিলেও, কবি এই কাব্যে লক্ষণকে রামচন্দ্রের চেয়ে অনেক বেশি পৌরুষ-সম্পন্ন করিয়া অঙ্কন করিয়াছেন। 

More Books by মাইকেল মধুসূদন দত্ত

30
Articles
মেঘনাদবধ কাব্য
0.0
মেঘনাদবধ কাব্য ১৯-শতকীয় বাঙালি কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কর্তৃক রচিত মহাকাব্য।[১] 'মেঘনাদবধ কাব্য' মধুসূদনের অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা দ্বিতীয় কাব্য । কাব্যটি কবির সর্বশ্রেষ্ঠ কবিকীর্তি। এই অমর মহাকাব্য প্রকাশের সঙ্গে আমরা কবির প্রতিভার পূর্ণ বিকাশকালে উপস্থিত হয়। [২] ১৮৬১ সালে কাব্যটির দুইখণ্ডে প্রকাশ হয় । প্রথম খণ্ড(১–৫ সর্গ) ১৮৬১ সালের জানুয়ারী মাসে, এবং দ্বিতীয় খণ্ড (৬—৯ সর্গ) ঐ বৎসরের প্রথমার্ধে প্রকাশিত হয়। কাব্যটি মোট নয়টি সর্গে বিভক্ত। মেঘনাদবধ কাব্য হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ অবলম্বনে রচিত[৩], যদিও এর মধ্যে নানা বিদেশী মহাকাব্যের ছাপও সুস্পষ্ট।
1

ভূমিকা মহাকাব্যের প্রকৃতি

14 December 2023
1
0
0

ইহাতে নাটকের সমস্ত সন্ধিগুলি থাকিবে, কাহিনীটি ঐতিহাসিক ঘটনা হইতে উন্নত হইবে অথব। কোন সজ্জনকে আশ্রয করিবে। ইহার ফল হইবে চতুর্বর্গপ্রাপ্তি অথবা চতুর্বর্গের যে কোন একটিও হইতে পারে। আরম্ভে নমস্কার, আশীর্ব

2

বিস্তৃতিবোধ-বিশাল রস

14 December 2023
0
0
0

আমাদের দেশের অলঙ্কারশাস্ত্র মানবহৃদয়ের প্রবৃত্তিগুলিকে প্রধানতঃ আট বা নয়টি স্থায়ীভাবে বিভক্ত করিযা আট বা নয়টি রসের পরিকল্পনা করিয়াছে। এইরূপ সাহিত্যবিচারের কতকগুলি অসুবিধা আছে। যদি স্থায়ী ভাবগুলিকে বাঁ

3

মেঘনাদবধ কাব্যে'র বৈশিষ্ট্য-পরিকল্পনা

14 December 2023
0
0
0

কিন্তু বিষয়টি গভীরভাবে বিচার করিলে মাইকেলের এই বিক্বতি সাহিত্যের দিক্ দিয়া তেমন দোষাবহ নাও হইতে পারে। সমস্ত প্রাচীন কাহিনীই কালক্রমে বিবর্তনের মধ্য দিয়া গড়িয়া উঠে এবং তাহাদের অল্পবিস্তর পরিবর্তন হইয়া

4

মেঘনাদবধ কাব্য

14 December 2023
0
0
0

হায়, নাথ, নিজ কর্মফলে মজালে রাক্ষসকুলে, মজিলে আপনি। রাবণের শক্তির মূলে ছিল দেবশ্রেষ্ঠ মহেশ্বরের রূপা। তাই স্বয়ং উমা যখন মহেশ্বরকে বশীভূত করিতে গেলেন তখন তিনি কন্দর্পের সাহায্য গ্রহণ করিলেন যাহাতে তপ

5

চরিত্রসৃষ্টি-দেবদেবী

14 December 2023
0
0
0

শুধু মৌলিক পরিকল্পনায় নহে, চরিত্রস্বষ্টিতেও 'মেঘনাদবধ কাব্য' মহাকাব্যের লক্ষণাক্রান্ত। প্রথমেই দেবদেবীদের কথা ধরা যাইতে পারে। ইলিয়াডে দেবদেবীগণ মানব-মানবীর স্থায়। মানব-মানবীর সব দোষগুণই তাঁহাদের আছে,

6

রাম-লক্ষ্মণ-রাবণ-মেঘনাদ

14 December 2023
0
0
0

এই পরিপ্রেক্ষিতে রাম ও লক্ষ্মণের এবং তাঁহাদের সহযোগীদের চরিত্র বিচার করিতে হইবে। 'মেঘনাদবধ কাব্যে'র রাম ও লক্ষ্মণ মাইকেলের প্রতিভার অপূর্ণতার পরিচায়ক এইরূপ মত বহু লোকে প্রকাশ করিয়াছেন এবং এই মন্তের আং

7

প্রমীলা

15 December 2023
0
0
0

মেঘনাদের জীবনের এশ্বব ও মৃতার মহিমা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করিবাব জন্য কৰি প্রমীলার চরিত্রের অবতারণা করিযাহেন , মেঘনাদ শুধু বাসববিলধী বীব নহেন, তিনি যোগ্য পিতামাতার ঘোগ্য পুন্র? তছুপরি তিনি বীধবতী সাধ্বী

8

সীতা

15 December 2023
0
0
0

মেঘনাদ ও প্রমীলার দ্রাম্পত্যজীবনের যে চিত্র এই গ্রন্থে দেওয়া! হইয়াছে তাহা মাইকেলের পরিকল্পনার স্বকীয়তা প্রমাণ করে। ইহা! পরোক্ষভাবে গ্রন্থের মৌলিক পরিকল্পনার উপরেও আলোকসম্পাত করে । মেঘনাদ ও প্রমীলার

9

মেঘনাদবধ কাব্যের ভাব

15 December 2023
0
0
0

“মেধনাদবধ কাব্যের মহাকাঁব্যোচিত পরিকল্পনা ও চওিত্রস্্টির মহিমার উল্লেখের পর উহার বর্ণনার গজন্বিতার কথা বলা প্রয়োজন | . ভাঘ। ভাব্রেই বহন মাত্র এবং ভাষা ছড়া কপির ভ।ব৪ অভিব্যক্ত হইতে পালে ন।। মাইকেলের

10

উপমা

15 December 2023
0
0
0

মহাদেবের যে বর্ণনা উল্লিখিত হইয়াছে তাহার উপমা-সমৃদ্ধি লক্ষণীয় । হোমারের অন্ততম প্রধান গুণ উপমার বৈশিষ্ট্য । হোমার অধিকাংশ বিষয়কে উপমাঁর সাহায্যে বর্ণনা করিয়ীছেন। সাধারণতঃ তাহার উপমাগুলি উপমান ও উপ

11

বর্ণনা

15 December 2023
0
0
0

'মেঘনাদবধ কাব্যে বহু স্দীর্ঘ বর্ণনা আছে এবং সেই সব বর্ণনার বৈচিত্র্য ও মাধুর্য মাইকেলের প্রতিভার স্বকীয়তার সাক্ষ্য দেয়। এই প্রতিভার বৈশিষ্ট্য-_এশ্বর্বোধ। কাব্যের প্রারন্তেই দেখি রাবণ এক অপূর্ব সভায়

12

দোষ

15 December 2023
1
0
0

বহগুণসম্বন্বিত হইলেও মেঘনাদবধ কাব্য ক্রটিশূন্ত নহে এবং সেই প্রসঙ্গের আলোচনা! আবশ্যক । প্রথমেই বল যাইতে পারে যে এই গ্রন্থের পরিধি অতিশয় সঙ্কীর্ণ। সপ্তকাণ্ড রামায়ণের একটি কাণ্ডের একটি খণ্ডাংশ লইয়া ইহ

13

অমিত্রচ্ছন্দ

18 December 2023
1
0
0

মীইকেল মধুস্ছদনের অন্যতম প্রধান কীতি বঙ্গলাহিতো অমিত্রাক্ষরের প্রবর্তন; বাংলার প্রচলিত ছন্দ ছিল পয়ার, তাহ] মিত্রন্ন্দ অর্থাৎ তাহার মধো অন্ত অক্ষরের মিল আছে। তাহার আর একটি লক্ষণ এই যে তাঁহার মধ্যে প্র

14

মেঘনাদবধ কাব্য- দ্বিতীয় সর্গ

19 December 2023
0
0
0

অস্তে গেলা দিনমণি; আইলা গোধূলি, একটি রতন ভালে। ফুটিলা কুমুদী। মুদিল। সরসে আঁখি বিরসবদনা নলিনী; কৃজনি পাথী পশিল কুলায়ে; গোষ্ঠ-গৃহে গাভী-বৃন্দ ধাব হঙ্গা রবে। আইলা শুচারু-তারা শশী সহ হাসি, শর্বরী, সুগন্ধ

15

মেঘনাদবধ কাব্য- তৃতীয় সর্গ

19 December 2023
1
0
0

প্রমোদ-উদ্যানে কাঁদে দানব-নন্দিনী প্রমীলা, পতি-বিরহে কাতরা যুবতী। অশ্রুজপি বিধুমুখী ভ্রমে ফুলবনে কহু, ব্রজ-কুঞ্জ-বনে, হায় রে, যেমনি ব্রজবালা, নাহি হেরি কদম্বের মূলে পীতধড়া পীতাম্বরে, অধরে মুরলী। কহু ব

16

মেঘনাদবধ কাব্য- চতুর্থ সর্গ

20 December 2023
1
0
0

নমি আমি, কবি-গুরু, তব পদাম্বুজে, বাল্মীকি! হে ভারতের শিরঃচূড়ামণি, তব অনুগামী দাস, রাজেন্দ্র-সঙ্গমে দীন যথা যায় দূর তীর্থ-দরশনে তব পদ-চিহ্ন ধ্যান করি দিবা নিশি, পশিয়াছে কত যাত্রী যশের মন্দিরে, দমনিয়া ভ

17

মেঘনাদবধ কাব্য -প্রথম সর্গ

19 December 2023
0
0
0

উড়িল কলম্বকুল অম্বর প্রদেশে শনশনে!বল্প শিক্ষা বীর বীরবাহ! কত যে মরিল অরি, কে পারে গণিতে? এইরূপে শত্রুমাকে বুঝিলা স্বদলে পুত্র তব, হে রাজন! কতক্ষণ পরে, প্রবেশিলা যুদ্ধে আসি নরেন্দ্র রাঘব। কনক-মুকুট

18

মেঘনাদবধ কাব্য- পঞ্চম সর্গ

21 December 2023
0
0
0

হাসে নিশি তারাময়ী ত্রিদশ-আলয়ে।। দাসীর সাধনে সাধ্বী কহিলা, সুসিদ্ধ কিন্তু চিন্তাকুল এবে বৈজয়ন্ত-ধামে মহেন্দ্র; কুরুম-শয্যা তাজি, মৌন-ভাবে বসেন ত্রিদিব-পতি রত্ন-সিংহাসনে;- সুবর্ণ-মন্দিরে স্বপ্ত আর দেব য

19

মেঘনাদবধ কাব্য- ষষ্ঠ সর্গ

21 December 2023
0
0
0

ত্যজি সে উদ্যান, বলী সৌমিত্রি কেশরী কুঞ্জবনবিহারিণী; ক্বতাঞ্জলি-পুটে চলিলা, শিবিরে যথা বিরাজেন প্রভু রঘু-রাজ; অতি দ্রুতে চলিলা সুমতি, হেরি মৃগরাজে বনে, ধায় ব্যাধ যথা অস্ত্রালয়ে, বাছি বাছি লইতে সত্বরে

20

মেঘনাদবধ কাব্য- সপ্তম সর্গ

22 December 2023
0
0
0

উদিলা আদিত্য এবে উদয়-অচলে, পদ্মপর্ণে স্বপ্ত দেব পদ্মযোনি যেন, উন্মীলি নয়নপদ্ম স্বপ্রসন্ন ভাবে, চাহিলা মহীর পানে! উল্লাসে হাসিলা কুহুমকুন্তলা মহী, মুক্তামালা গলে। উৎসবে মঙ্গলবাদ্য উথলে যেমতি দেবালয়ে, উ

21

মেঘনাদবধ কাব্য-অষ্টম সর্গ

23 December 2023
0
0
0

রাজকাজ সাধি যথা, বিরাম-মন্দিরে, প্রবেশি, রাজেন্দ্র খুলি রাখেন যতনে কিরীট; রাখিলা খুলি অস্তাচলচুড়ে দিনান্তে শিরের রত্ন তমোহ। মিহিরে দিনদেব; তারাদলে আইল। রজনী; আইলা রজনীকান্ত শান্ত সুধানিধি। শত শত অগ

22

বিশদ টীকা-টিপ্পনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যাদি (প্রথম সর্গ)

25 December 2023
0
0
0

বিষয়-সংক্ষেপ:- প্রাচীন বঙ্গীয় কবিগণ নানা দেবদেবীর বন্দনা ও মঙ্গলাচরণ করিয়া যেভাবে কাব্যের সূচনা করিতেন, তাহা না করিয়া মধুসুদন যুরোপীয় কবিগণের অনুকরণে বীণাপাণির এবং কল্পনার আবাহন (invocation) করিয়া

23

বিশদ টীকা-টিপ্পনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যাদি (দ্বিতীয় সর্গ)

25 December 2023
1
0
0

বিষয়-সংক্ষেপ:-বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদ রাবণের সেনাপতিপদে বৃত হইলে দিবাবসান হইল এবং রাত্রি আসিল। স্বর্গেও রাত্রির আবির্ভাব হইল। ইন্দ্র শচীসহ দেবসভায় স্বর্গসুখ উপভোগ করিতেছেন, এমন সময়ে সেখানে লক্ষ্মীদ

24

বিশদ টীকা-টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাধ্যাদি (তৃতীয় সর্গ)

27 December 2023
0
0
0

মেঘনাদবধ-কাব্যের দ্বিতীয় সর্গোক্ত ঘটনার ম্যায় তৃতীয় সর্গোক্ত ঘটনাও সম্পূর্ণরূপে বামায়ণ-বহিভূত। প্রথম দর্গের শেষ ভাগে লঙ্কাপুরীর বহির্দেশে প্রমোদোগ্ভানে মেঘনাদের ব্যসনমত্তভাবে অবস্থ।নের কথা বলা হইয

25

বিশদ টীকাটিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যা (চতুর্থ সর্গ)

27 December 2023
0
0
0

মেঘনাদরবধ কাব্যের চতুর্থ সর্গে অশোকবনে অবরুদ্ধা সীতার সহিত সরমার' কথোপকথন-গ্রসঙ্গে সরমার নিকট সীতার পূর্বজীবনের ঘটনাবলী বিবৃত হইয়াছে ।, এই সকল ঘটন! অল্পবিস্তর রামায়ণান্থগত হইতে বাধ্য বলিয়া, সমগ্র ম

26

বিশদ টীকাটিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যাদি (পঞ্চম সর্গ)

27 December 2023
1
0
0

দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ সর্গোক্ত ঘটনাবলীর সহিত পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনাও বীরবাহুর মৃত্যুদিবসের রাত্রিকালে সংঘটিত হইয়াছে । এই সর্গে প্রধান বর্ণনীয় বিষয়,_মেঘনাদবধে চণ্তীদেবীর সাহাধ্য-প্রাপ্তির উদ্দেশে ল

27

বিশদ টীকা টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাথ্যাদি (ষষ্ঠ সর্গ)

27 December 2023
1
0
0

ষষ্ঠ সর্গের মূল ঘটনা" লক্ষ্মণকতৃকি মেঘনাদবধ-_বামায়ণ হইতে গৃহীত। স্থৃতরাং ছিতীয় তৃতীয় ও পঞ্চম সর্গোক্ত ঘটনাবলীর ন্যায় ইহাঁকে রামায়ণবহিভূতি ঘটনা বলা চলে না। কিন্তু ঘটনাটি যে ভাবে নিষ্পন্ন হইয়াছে

28

বিশদ টীকা-টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাথ্যাদি (সপ্তম সর্গ)

28 December 2023
1
0
0

সপ্তম সর্গে বধিত মূল ঘটনাটি হইতেছে,_মেঘনাদের মৃত্যুসংবাদ শ্রবণে রাবণের' ক্রোধ, এবং প্রতিহিংমাপরায়ণ রাবণের সহিত যুদ্ধে শক্তিশেলাহত হইয়া! লক্ষণের পতন। এই মূল ঘটনাটি রামায়ণ হইতে গৃহীত। কিন্তু রাঁবণের

29

বিশদ টীকা টিগ্লনী ও দুরূহ অংশের ব্যাখ্যা (অষ্টম সর্গ)

28 December 2023
1
0
0

মেঘনাদবধ কাব্যের ২য়, ৩য় ও ৫ম সর্গে বগিত বিষয়সমূহের ন্ায় ৮ম সর্গে বধিত বিষয়ের সহিতও রাযায়ণের কোন সম্বন্ধ নাই। বাল্সীকির রামায়ণে উল্লিখিত হয়াছে, শক্তিশেলাহত লম্্মরণের জন্য রামচন্দ্র বিলাপ করিতে

30

বিশদ টীকা-টিগ্ননী ও ছুরহ অংশের ব্যাখ্যাদি- (নবম সর্গ)

29 December 2023
2
0
0

দৈববলে ঘে লকল কার্য সাধন করিয়াছে, তাহাতে তাহার পক্ষে অসাধ্য কোন কাধই নাই। মন্ত্রী সারণ বিনীতভাবে নিবেদন করিলেন যে, দেবানুগ্রহে ওষধি-পর্বত গন্ধমাদন স্বয়ং লঙ্কায় আসিয়। ওধধদানে লক্ষ্মণের দেহে গ্রাণসঞ

---