shabd-logo

নেড়ী

27 December 2023

2 Viewed 2

দুর্ভিক্ষের প্রথম চোটটা লাগল তারার মাথায়। তারার ছিল চুলের বাহার, মাথা ভরা চিকন কালো একরাশি চুল। মাঝে মাঝে কোনো কোনো মেয়ের এ রকম হয়-চাষাভুসোর ঘরেও। গোড়ায় তেল জুটত, বাপের বাড়িতে থাকবার সময় আর শ্বশুরবাড়ি এসে কয়েক বছর, ছেলেমেয়েগুলি জন্মাবার আগে পর্যন্ত। তারপর তেলের অভাবে চুল আবার রুক্ষ হয়ে গেছে। ফুলে ফেঁপে থাকে, ঝাঁকড়া জঙ্গলের মতো দেখায়। চুল বড়ো বেড়ে গেছে মনে হয়। সার না দিলে গগন মাইতির খেতে ভালো ফসল হয় না, দশটি ছেলেমেয়ে বিয়োবার পরেও তারার মাথায় অযত্নে চুলের ফসল ফলে থাকে অদ্ভুত, সামলাতে তার প্রাণান্ত।

তারপর এল প্রাণান্তকর অভাবের দিন। ছারেখারে যাবার দিন। দু দিনে দু ফোঁটা তেল যা জুটত তারার মাথায় দেবার, তাও গেল বন্ধ হয়ে। মাথায় জট বাঁধে, হুহু করে উকুনের বংশ বাড়ে আর পাগলের মতো মাথা চুলকে চুল ছিঁড়ে তারা বকতে থাকে, মলাম রে বাবা, মলাম। মার ভুতো, কাটারি দিয়ে কোপ মার দিকি একটা, চুকেবুকে যাক।

ভীত সন্ত্রস্ত ক্ষুধার্ত গগন বিবর্ণমুখে পরামর্শ করতে আসে, বাঁচন-মরণের কথাতেও তারা মন দিতে পারে না। দু দণ্ডের বেশি স্থির হয়ে বসতে পারলে তো স্থির করতে পারবে মন। কাতরভাবে সে তাই বলে, কী জানি বাবা, যা যুক্তি কর। চাল বাড়ন্ত ঘরে, বুঝেসুঝে যা যুক্তি কর। দাও, বেচেই দাও। পেটের জ্বালায় বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলি কাঁদে, তারা তাদের খাপড়ে দেয়। কান্না ভেসে আসে শূন্যে এদিক ওদিক থেকে, আতঙ্কে বুকটা মুচড়ে যায় তারার, একটু সময় নড়নচড়ন বন্ধ করে নিথর হয়ে বসে থাকে। তারপর আবার হাত উঠে যায় মাথায়, জট ছাড়াতে, চুলকোতে আর উকুন মারতে। চুলের অরণ্য থেকে উকুন খুঁজে এনে দুই বুড়ো আঙুলের নখে টিপে পুট করে মারবার মুহূর্তটিতে বিশ্ব-সংসার তুচ্ছ হয়ে যায় তারার কাছে। শরীর বেশ খানিকটা শুকিয়েছে, নোলায় জল কম। তব জিভে দিব্যি আওয়াজ হয় উস্-উকুন মারাব পুট শব্দের সঙ্গে।

প্রথম মড়া কান্নাটা কিন্তু তার বড়োই জমজমাট হল এই চুলের জন্য। পাঁচনিখে থেকে মেয়ে মনা এল বিধবা হয়ে, ছেলে হারিয়ে কচি মেয়েটাকে বুকে নিয়ে ধুকতে খুঁকতে। তার স্বামী মরবার পর শ্বাশুড়ি আর এক ছেলেকে নিয়ে তাকে ফেলে পালিয়ে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে তারা চুল ছিঁড়তে লাগল এলোপাথাড়ি চুলেরই যন্ত্রণায়, কিন্তু তার শোকের প্রচণ্ডতা দেখে সবাই হয়ে গেল হতভম্ব। এমন শোকার্ত হবার ক্ষমতা তাদের ছিল না। অনুভূতি ভোঁতা হয়ে এসেছিল খানিকটা, দেহে শক্তিও ছিল না অতখানি।

তারার কোলের ছেলেটাও ছোটো। মনা তার মেয়েটাকে মার কোলে তুলে দিয়ে বলে, একটু মাই দে মা ওকে। মোর দুধ শুকিয়ে গেছে। তারার যেন বাকি আছে বুকের দুধ শুকিয়ে যেতে। চালের হাঁড়ি ঝেড়ে সে একটু ধুলো-মেশানো গুঁড়ো বার করে, তাই ফুটিয়ে খাইয়ে দেয় নাতনিকে, শুকনো পাতার আগুন জ্বেলে।

তিনদিন পরে একটা ছেলে আর একটা মেয়ের জন্য তারার কান্নাটা হয় অনেক নিস্তেজ। ছেলেমেয়ে দুটো অসুখে ভুগছিল। ওষুধের অভাবে যে তারা মরল ঠিক তা নয়, আসলে মরল খেতে না পেয়ে রোগটাকে উপলক্ষ করে। থেমে থেমে তারা সুর করে কাঁদল সারাদিন।

আধপোড়া ভাইবোন দুটিকে খালে ভাসিয়ে দেবার পর সকলের সঙ্গে ভূতো বাড়ি ফিরছে। হৃদয় পণ্ডিতের বাড়ির সামনাসামনি সে পেছিয়ে পড়ল। সকলের খানিক পরেই সেও বাড়ি ফিরল, এইটুকু একটা মরা ছাগল ছানাকে গামছায় জড়িয়ে। ছানাটা গাঁয়ের প্রাথমিক স্কুলের মাস্টার হৃদয় পণ্ডিতের ছাগলের। স্কুল উঠে যাওয়ায় হৃদয় এখন জোতদার পূর্ণ ঘোষালের ধানের হিসেব লিখছে।

ছাগল ছানার মাংসটা মনাই রেঁধে দিল নুন হলুদ দিয়ে, বিনা তেলে। বিধবা হয়ে বাপের বাড়ি এসে হবিধ্যিও জুটছিল না বলে ও সব রীতিনীতির কথা ভুলে গিয়ে রাঁধতে রাঁধতেই মনা খানিকটা কচি মাংস খেয়ে নিল। এই নিয়ে হাতাহাতি কামড়াকামড়িও হয়ে গেল ভূতোর সঙ্গে তার। আঠারো বছরের মনা আর বিশ বছরের ভূতোর মধ্যে।

পরদিন এস হৃদয় পণ্ডিত। সদর দাওয়ায় শুয়ে ছাগল তার মাই দেয় ছানাকটাকে, আর গলা টিপে ভুতো কিনা চুরি করে আনে সেই ছানা।

দাম দে ভালো চাস তো গগন। ছেলেকে তোর পুলিশে দেব নইলে।

দাম কোথা পাব পণ্ডিতমশাই?

মনাকে দেখে হৃদয় পণ্ডিত যেন একটু আশ্চর্য হয়েই বলল, তুই কবে এলি রে মনা? স্বামী মরল কবে? ছমাস পূর্ণ ঘোষালের সঙ্গে থেকে হৃদয় পণ্ডিতের চেহারা, তাকানি, কথার ভঙ্গি সব অদ্ভুত রকম বদলে গেছে। স্কুলটা না উঠে গেলে কী হত বলা যায় না। চিরকাল যে মহান দারিদ্র্যের আদরি শোষণে খেতো এবং ভোঁতা হয়ে নির্বিরোধ ভালো মানুষ সেজে ছিল, তাই হয়তো সে থাকত শেষ পর্যন্ত। পূর্ণ ঘোষালের সঙ্গে মিশে ঝড়তি পড়তি উপায়ে টাকা কুড়োতে শিখে হঠাৎ সে মানুষ হয়ে উঠল 'ভালো'টুকুর খোলস ছেড়ে।

ছাগল ছানার জন্য আর বেশি হাঙ্গামা সে করল না। ধমক দিয়ে আর ভবিষ্যতের জনা সাবধান করেই ক্ষান্ত হল। কাঁঠাল কাঠের পিঁড়িতে জেঁকে বসল গগনের জন্য একটা কিছু ব্যবস্থা

করে দিতে। ভিটে ছাড়া কিছুই আর নেই গগনের।

বাঁধা রাখ। রেখে চলে যা বাপ বেটা রোজগার করতে। দুটো জোয়ান মানুষ ঘরে বসে না খেয়ে মরছিস, লজ্জা করে না?

যাবার আগে হৃদয় পণ্ডিত মনাকে বলে গেল, তুইও দেখছি চুল পেয়েছিস মায়ের মতো।

মনা বলল, উঠেই গেল সব চুল।

অনেকে গিয়েছে গাঁ ছেড়ে, অনেকে যাই যাই করছে, কেউ আপনজনদের ফেলে একা, কেউ সপরিবারে। ফিরেও এসেছে দু একজন-আপনজনদের খুইয়ে। এদের কাছে শোনা গেছে, যাবার ঠাঁই নেই কোথাও। যেখানে যাও সেখানেই এই একই অবস্থা।

দিনভর পরামর্শ চলল। ভিটে বেচবে না বাঁধা দেবে, গগন আর ভূতো দুই জনেই যাবে না একজন যাবে, অথবা বাড়িসুদ্ধ যাবে সকলেই। এবং গেলে কোথায় যাবে।

উকুনের কামড় তারা আর তেমন অনুভব করে না, বোধশক্তি আরও ভোঁতা হয়ে গিয়েছে।

কিন্তু সেই সঙ্গে বুদ্ধিটাও ভোঁতা হয়ে যাওয়ায় কোনো পরামর্শই সে দিতে পারে না।

ভূতোকে আর দেখতে পাওয়া যায় না পরদিন। হৃদয় পণ্ডিতের কাছে পথের সন্ধান পেয়ে সে একাই সরে পড়েছে।

গগন বলে, একা তোমাদের নিয়ে যাই কোথা? নিজে গিয়ে দেখি যদি কিছু হয়। বাড়ি বাঁধা রেখে পনেরো বিশদিনের খোরাক দিয়ে গগন চলে যায়। ফিরে না আসুক পনেরো বিশদিনের মধ্যে খবর একটা পাঠাবে আর রোজগারের কিছু অংশ।

দুটি দুটি খেতে পেয়ে তারার আবার চুলের যন্ত্রণা অনুভবের শক্তি বেড়ে যায়। তার ভরা বাড়ি কীরকম খালি হয়ে গেছে আবার বুঝতে পেরে মাঝখানের নিঝুম দিনগুলির পর আবার বিনিয়ে বিনিয়ে কাঁদতে থাকে, মনাও গলা মেলায় মার সঙ্গে। মনার মাথাতেও জট বেঁধে উকুন হয়েছে। মা ও মেয়ে বসে কাঁদে আর পরস্পরের মাথার জট ছাড়িয়ে উকুন বাছে। খোরাক ফুরিয়ে যায়। সময় কাটে একটা মাস। গগনের কোনো সংবাদ মেলে না। শোক দুঃখ ও দৈহিক যন্ত্রণাবোধ আবার ঝিমিয়ে আসে দুজনের। মনার মেয়েটা মরে যায় দুধের অভাবে, কাঁড়া

চাল খাওয়া পেটের অসুখে। তারার কোলের ছেলেটাও মরে একই ভাবে। তারপর একে একে, এবেলা একজন আর ওবেলা একজন করে, আরও একটা ছেলে ও মেয়ে মারা যায় তারার। থাকে দুটি মরো-মরো অবস্থায়। দশটির মধ্যে তারার চারটি সন্তান মরেছিল-এ দেশে ও রকম মরতে হয় খুব স্বাভাবিক নিয়মে আর চারটি মরে দুর্ভিক্ষে।

হৃদয় পণ্ডিত আসে যায়, পরামর্শ দেয়, উপকার করতে চায় কিন্তু চাল দেয় না। পেটে জ্বালা না থাকলে মানুষ কথা শুনবে কেন। বলে, চাল পাব কোথায়, চাল? যা বলি শোন। সদরে চলো তোমরা; খাওয়া পরার ব্যবস্থা করে দেব। গগন যদি ফিরে আসে, তোমরাও ফিরে আসবে।

তারা বলে, আপনি বাপ, যা ভালো বোঝেন করেন।

দু জনে রাজি হলে হৃদয় মনে মনে একটু হিসেব কষে দেখে। মনেও আসে চেষ্টাং কৃতের সংস্কৃত শ্লোকটা। তাই মনাকে আড়ালে বলে, যা করছি সব তোরই ভালোর জন্যে মনা। কিন্তু চারজনের ব্যবস্থা কি করতে পারব? খটকা লাগছে। মা না গেলে তুই যদি না যাস-গেলে কিন্তু সুখে থাকতিস। মাছ দুধ খাবি, শাড়ি গয়না পাবি-

বলেছি যাব না?

বলিসনি? বলিসনি তো? বেশ বেশ।

তারার অজান্তেই মনাকে, শাড়ি গয়না পরিয়ে মাছ দুধ খাইয়ে সুখে রাখবার জন্য শহরে পাঠিয়ে নিজের মাছ দুধ খাবার আর স্ত্রীকে শাড়ি গয়না দেবার ব্যবস্থাটা হৃদয় পণ্ডিত করতে পারল।

মাঝরাত থেকে শুরু করে পরের সমস্ত দিনটা মেয়ের জন্যে অপেক্ষা করে দুই ছেলেকে নিয়ে তারা গেল হৃদয় পণ্ডিতের বাড়ি।

মেয়েটা পালিয়েছে পণ্ডিতমশায়। তাই নাকি? সত্যি? ছিছি।

মোকে দিন পাঠায়ে সদরে। কী হবে আর ঘর আগলে থেকে?

খানিক চুপ করে থেকে হৃদয়পণ্ডিত বলে, ওতে একটু গোলমাল হয়েছে ভুতোর মা। যেখানে পাঠাব বলেছিলাম না, সেখানে আর লোক নেবে না খবর পেয়েছি।

দুই ছেলেকে আগলে তারা ঠায় বসে থাকে দাওয়ায়। মাথায় তার কিলবিল করে ঘুরে বেড়ায় অজস্র উকুন। সাঁঝ বরণের অন্ধকার চাঁদ উঠে আসায় ফিকে হয়ে আসে। তারা বুঝতে পারে, তার ছেলে দুটো হৃদয় পণ্ডিতের দাওয়ার মাটিতেই ঘুমিয়ে পড়েছে। তাদের সেইখানে রেখে তারা চুপিচুপি রাস্তায় নেমে যায়। হাঁটতে আরম্ভ করে সদরের দিকে।

তারপর অনেক কাণ্ড ঘটে তারার জীবনে। মাসখানেক পরে এক হাসপাতালে আয়নায় নিজের মুখ দেখে তারা প্রশ্ন করে, ও কে গো?

দেখো তো চিনতে পার কিনা। ও হল সাতাইখুনির গগনের বউ তারার মুখ। তারা হেসেই বাঁচে না। দূর। তারার মাথা ন্যাড়া হবে কেন গো? কত চুল তারার মাথায়। 

16
Articles
আজ কাল পোরশুর
0.0
এটি মানিক বন্দোপাধ্যায়ের লেখা একটি ছোটগল্প
1

আজ কাল পরশুর গল্প

19 December 2023
1
0
0

মানসুকিয়ার আকাশ বেয়ে সূর্য উঠেছে মাঝামাঝি। নিজের রাঁধা ভাত আর শোল মাছের ঝাল খেতে বসেছে রামপদ ভাঙা ঘরের দাওয়ায়। চালার খড় পুরোনো পচাটে আর দেয়াল শুধু মাটির। চালা আর দেয়াল তাই টিকে আছে, ছ মাসের সুযোগেও কে

2

দুঃশাসনীয়

20 December 2023
1
0
0

আগে, কিছুকাল আগে, বেশিদিনের কথা নয়, গভীর রাতেও হাতিপুর গ্রামে এলে লোকালয়ের বাস্তব অনুভূতিতে স্বস্তি মিলত। মানুষের দেখা না মিলুক, মাঠ, খেত, ডোবাপুকুর, ঝোপঝাড়, জলা অপরিসীম রহস্যে ভরাট হয়ে থাক, হুতোম প্য

3

নমুনা

21 December 2023
1
0
0

কেবল কেশবের নয়, এ রকম অবস্থা আরও অনেকের হয়েছে। অন্ন নেই কিন্তু অন্ন পাওয়ার একটা উপায় পাওয়া গিয়েছে মেয়ের বিনিময়ে। কয়েক বস্তা অন্ন, মেয়েটির দেহের ওজনের দু-তিন গুণ। সেই সঙ্গে কিছু নগদ টাকাও, যা দিয়ে দানক

4

বুড়ি

22 December 2023
0
0
0

বুড়ির বড়ো পুতি আজ যাবে বিয়ে করতে। ছেলের ছেলে তার ছেলে, বড়ো সহজ কথা নয়। বুড়িকে বাদ দিয়েই বাড়িতে চলেছে আপনজনে-ভরাট বাড়ির ছেলে বিয়ে করতে গেলে যত কিছু কাণ্ডকারখানা হয়-রোজ সংসারের সাধারণ হইচইও যেন ওকে বাদ

5

গোপাল শাসমল

22 December 2023
0
0
0

সাতপাকিয়ার গগন শাসমলের ছেলে গোপাল গিয়েছিল জেলে। একদিন ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল। জেলে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ছিল মন পঁচিশেক ধান, দুটো বলদ, একটা গোবু, পুঁইমাচা লাউ- মাচা আর তিনটে সজনে গাছ। বাড়ি ফিরে দেখল, ধান

6

মঙ্গলা

22 December 2023
1
0
0

শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে মঙ্গলা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ডোবা থেকে উঠে আসে। পুলিশ হঠাৎ গাঁয়ে হানা দিয়েছিল মাঝরাতে। সেই থেকে এই সকাল পর্যন্ত সে ডোবার জলকাদায় আগাছার মধ্যে গা ঢাকা দিয়ে কাটিয়েছে। হাঙ্গামার পর

7

নেশা

23 December 2023
1
0
0

পুলকেশের সিনেমা দেখার নেশা একেবারে ছিল না। যতীনেরও তাই। সত্যিকারের কোনো ভালো ছবির খবর পেলে, রুচি, রসবোধ আর বিচারশক্তি আছে বলে তারা বিশ্বাস করে এমন কোনো বিশ্বাসী লোকের কাছে খবর পেলে হয়তো কখনও নিজেরা শখ

8

বেড়া

23 December 2023
1
0
0

বাড়ির ঠিক মাঝখানে উঁচু চাঁচের বেড়া। খুব লম্বা মানুষের মাথা ছাড়িয়েও হাতখানেক উঁচু হবে। বেড়া ডিঙিয়ে কারও নজর চলবে না, অবশ্য যদি উঁচু কিছুর উপর দাঁড়িয়ে নজর চালানো না হয়। নজর দেধার অন্য উপায় আছে ফুটোতে চো

9

তারপর?

23 December 2023
1
0
0

কাণকালি গাঁয়ের খালে একবার একটা কুমির এসেছিল। মানুষখেকো মস্ত কুমির। পরপর তিনটি বউকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল গাঁয়ের। একজন মাঝবয়সি, দুজন তরুণী। একজন রোগা ন্যাংলা, একজন বেশ মোটাসোটা, আরেকজন ছিপছিপে দোহারা গোছের

10

স্বার্থপর ও ভীরুর লড়াই

26 December 2023
1
0
0

কৈলাস বসুকে সকলে স্বার্থপর আর সংকীর্ণচেতা বলে জানে। মানুষটার চালচলন আচার বাবহার তো বটেই, চেহারাও সকলের এই ধারণাকে অনেকটা সমর্থন করে। বেঁাঁটি, আঁটোসাঁটো ধরনের মোটা, প্রায় গোলাকার মাথায় বুরুশের মতো শক্ত

11

শত্রুমিত্র

26 December 2023
1
0
0

আদালতের বাইরে আবার দেখা হয় দু জনের, পানবিড়ি চা মুড়ি মুড়কি আর উকিল মোক্তারের দোকানগুলির সামনে। দু জনে তারা পরস্পরের দিকে তাকায়। তীব্র বিদ্বেষের আগুনে যেন পুড়ে যায় দু জোড়া চোখ। দাঁতে দাঁত চেপে চাপা গলায়

12

রাঘব মালাকর

26 December 2023
1
0
0

[ পুরাণে বঙ্গে একদা নররূপী ভগবান স্নানরতা গোপিনীদের বস্ত্র অপহরণ করে নিয়ে তাদের অন্তর পরীক্ষা করেছিলেন-বহুকাল পরে আবার তিনি....এবার অদৃশ্য থেকে তাঁর প্রতিনিধিদের দিয়ে, সমগ্র বাংলাদেশের নরনারীর বস্তু অ

13

যাকে ঘুষ দিতে হয়

27 December 2023
1
0
0

মোটর চলে, আস্তে। ড্রাইভার ঘনশ্যাম মনে মনে বিরক্ত হয়, স্পিড দেবার জন্য অভ্যাস নিশপিশ করে ওঠে প্রত্যঙ্গে, কিন্তু উপায় নেই। বাবুর আস্তে চালাবার হুকুম। কাজে যাবার সময় গাড়ি জোরে চললে তার কোনো আপত্তি হয় না

14

কৃপাময় সামন্ত

27 December 2023
1
0
0

রঘুনাথ বিশ্বাসের আমবাগানের পাশ দিয়ে আসার সময় কৃপাময় সামন্তের সামনে একটা সাপ পড়ল। সংকীর্ণ মেটে পথ, পাশের কচুবন থেকে লেজটুকু ছাড়া সবটাই প্রায় বেরিয়ে এসেছে সাপটার, হাত দুই সামনে। পথ পার হয়ে ডাইনে আগাছার

15

নেড়ী

27 December 2023
1
0
0

দুর্ভিক্ষের প্রথম চোটটা লাগল তারার মাথায়। তারার ছিল চুলের বাহার, মাথা ভরা চিকন কালো একরাশি চুল। মাঝে মাঝে কোনো কোনো মেয়ের এ রকম হয়-চাষাভুসোর ঘরেও। গোড়ায় তেল জুটত, বাপের বাড়িতে থাকবার সময় আর শ্বশুরবাড়ি

16

সামঞ্জস্য

27 December 2023
1
0
0

ভিতরে এবং বাইরে শান্ত গম্ভীর হয়ে প্রমথ সেদিন বাড়ি ফেরে। অনেকদিন পরে মাজ গভীর শাস্তি অনুভব করেছে, পরম মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। ভেবেচিন্তে মন স্থির করে ফেলবার পরেই এ রকম আশ্চর্যভাবে শান্ত হয়ে গেছে মনটা। স

---