shabd-logo

গোপাল শাসমল

22 December 2023

2 Viewed 2

সাতপাকিয়ার গগন শাসমলের ছেলে গোপাল গিয়েছিল জেলে। একদিন ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল। জেলে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ছিল মন পঁচিশেক ধান, দুটো বলদ, একটা গোবু, পুঁইমাচা লাউ- মাচা আর তিনটে সজনে গাছ। বাড়ি ফিরে দেখল, ধান মোটেই নেই, একটা বলদ নেই, গোরুটা নেই, পুঁইমাচায় নেই পুঁই, আর লাউমাচায় নেই লাউ। সজনে গাছ তিনটে আছে। সজনে গাছ তিনটির বয়স প্রায় গোপালের সমান। পাছগুলির অনেক ডাঁটা আর আঠা গোপাল খেয়েছে। জেলে যাওয়ার সময় পর্যন্ত ডাঁটার চচ্চড়ি এবং ছেলেমানুষ থাকার বয়সটা পার হওয়া পর্যন্ত আঠা। আধপেটা ভাত খেয়ে এই ত্রিশ বছর সে জমাট বাঁধা সজনে আঠা সংগ্রহ করে করে চিউয়িং গামের মতো চিবোতে চিবোতে অনেকক্ষণ ধরে কেবল এই কথাটাই ভাবল যে স্কেল-ফেরত ছেলেকে আধপেটা ভাত দিতে মা উপোস দিয়েছে আর বোনকে না খাইয়ে রেখেছে, এ তো ভাল কথা নয়। এর চেয়ে জেলে থাকাই যে ভালো ছিল।

তারপর গাঁ ঘুরে আসতে বেরিয়ে ক্ষণে ক্ষণে তার সাধ হতে লাগল, পথের ধুলায় কিম্বা কাঁটা বনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে!

গাঁ প্রায় উজাড় হয়ে গিয়েছে তার অনুপস্থিতির সময়টুকুর মধ্যে। বেঁচে যারা আছে তারাও জীবস্থ নয়। খুব বেশি জীবন্ত কোনোদিনই ছিল না, কিন্তু যেটুকু ছিল তাতেই দলাদলি ঝগড়াঝাটি পূজাপার্বণে উৎসব এমন কী সময় সময় মারামারি কাটাকাটিও করেছে গাঁয়ের লোক। আজ সকলে ধীব স্থির শাস্ত সুবোধ মানুষচোখে হতাশার পর্দা, চলনে হতাশার ভঙ্গি, কথায় হতাশার লম্বা টান, প্রতিটি মানুষ যেন-আর কেন, কী আর হবে, সব মায়া, মরা ভালো ইত্যাদির ক্ষীণ প্রাণবন্ত প্রতীক। ঘরে ঘরে ম্যালেরিয়া আর প্যাঁচড়া। এত ব্যাপক না হলেও অন্য রোগেরও ছড়াছড়ি। এমন প্যাঁচড়া গোপাল জীবনে কখনও দ্যাখেনি। যাকে ভালো করে ধরেছে তার হাড়ে লাগানো মাংসটুকু পর্যন্ত যেন গসে থাসে পড়ছে। গফুর আর বনমালীকে দেখে প্রথমে সে ভেবেছিল এ বুঝি কুষ্ঠ বা ওই ধরনের কোনো ব্যারাম। ভূষণের কাছে সে রোগের নামটা শুনল। ভূষণের হাতে ও পায়ে প্যাঁচড়া হয়েছে।

ভূষণ গোপালের মামা। বয়স পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছে কিন্তু আরও বুড়ো দেখায়। একটি ছেলে আর তিনটি মেয়ে। সামান্য কিছু লেখাপড়া শিখেছিল। জোতদার কানায়ের কাছে বিশ বাইশ বছর কাজ করার অবসরে সব আবার ভুলে গেছে।

কাজ? না, কাজ নেই। অসুখে ভুগলাম দু মাস, তারপর হাতে পায়ে হল এই প্যাঁচড়া। ভাগিয়ে দিয়েছে।

আজ শুধু বুড়ো নয়, ভূষণকে কেমন অদ্ভুত দেখায়। মাটির দেয়ালে ঠেস দিয়ে পা ছড়িয়ে দু হাতের থাবা উঁচু করে তার বসার ভঙ্গিটা পাছা-পেতে বসা বুড়ো ভালুকের মতো। থ্যাবড়া মুখটা এমন লম্বাটে হয়ে গেছে, দুপাশ থেকে যেন পিষে দিয়েছে কোনো জোরালো পেষণ যন্ত্র!

নগা কিছু করছে না?

খানি টানছে। তুই যা অ্যাদ্দিন করে এলি। আমায় ছাড়িয়ে দেওয়ায় কানায়ের ওপর চটে ছিল। সীতু, রাখাল, বদ্যি আর কটা ছোঁড়াকে নিয়ে কেনালে কানায়ের চালের নৌকো ধরিয়ে দিতে গেছল বাহাদুরি করে। ফাটা মাথা নিয়ে ডাকাতির চার্জে জেলে গেছে। ব্যাটা কুপুত্র চন্ডাল। দু বেলা খেতে পাবার মতলব ছিল ব্যাটার। 'ভূষণের মেয়ে রতন এসেছিল একখানা তাঁতের কাপড় পরে।

কী যা-তা বলছ বাবা। দাদা গেল তোমার জন্যে শোধ নিতে, তুমি বলছ তার মতলব ছিল।

খেতে পাবার জন্যে কেউ জেলে যায়?

বলে সে হাঁটু বাঁকাবার যন্ত্রণায় মুখ বাঁকিয়ে গোপালের পায়ে ঢিপ করে প্রণাম করল।

গোপাল এসে মামাকে প্রণাম করেনি। যাবার সময় ভূষণের পায়ের পাতার অধ হাত তফাতে

মাটি ছুঁয়ে সে প্রণাম সারল।

পথে নেমে জোতদার কানায়ের বাড়ির দিকে হাঁটকে হাঁটতে গোপাল ভাবে, পৃথিবীতে যা সব ঘটছে তা তার বোধগম্য হবে না। বিশ বছরের বেশি যে কাজ করে এসেছে সে দু মাস অসুখে ভুগে অশক্ত হয়ে পড়ায় কানাই তাকে ভাগিয়ে দিল! কেবল তাও তো নয়। দু এক যোজন দূরের হোক, কানায়ের সঙ্গে একটা সম্পর্কও যে আছে তার ভুষণমামার। যে সম্পর্কের জোরে তারও অধিকার আছে কানাইকে বড়োমামা বলার।

জোতদার কানায়ের বাড়ির কাছে এসে কান্নার আওয়াজ শুনে গোপাল থমকে দাঁড়িয়ে গেল। গাঁয়ে পা দেবার পর এই কান্নার শব্দে যেন তার নিজস্ব একটা অদ্ভুত স্তব্ধতার আবেষ্টনী ভেঙে পড়ল এতক্ষণে, বেলা যখন খতম হয়ে এসেছে। এখন তাব খেয়াল হল, গাঁয়ের এতগুলি নারীপুরুষের বুকভরা শোক কান্নায় রূপ পায়নি, কান্না সে শোনেনি গাঁয়ে এসে। মৃত্যুপুরীর নীরবতাকে এতক্ষণ সে অনুভব করেছে কিন্তু কতগুলি জীবস্তু কঙ্কাল চোখে পড়ায় সে অনুভূতিকে বুঝতে পারেনি। অথচ এ অনুভূতি তার কত চেনা। কতবার জনহীন শ্মশানে তার হৃদয় মন এ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

দাওয়ায় বসে কানাই আকাশ বাতাসকে শুনিয়ে অদৃষ্টকে শাপ দিচ্ছিল। গোপাল প্রণাম না করায়

চটে গেলেও শ্রোতা পাওয়ায় সে খুশি হল। তার ছেলের আজ ফিট হয়েছে। দু বছরে তেবো হাজার টাকা উপায় করেছে এমন সোনার চাঁদ ছেলে। কোনো বিশেষ অপদেবতা বা অপদেবী নজর দিয়েছে সন্দেহ নেই কিন্তু কেন এই নজর দেওয়া, এত ধম্মো কম্মো পূজা অর্চনা করার পর!

দু বচ্ছর চব্বিশ ঘণ্টা ভয়ে ভাবনায় দিন কাটাবার জন্যে হবে বা? শণী একটু ভয় কাতুরে বাটি তো।

কীসের ভয় ভাবনা? সবিস্ময়ে কানাই শুধোয়।

এই ধরা টরা পড়ে জেলে যাবার ভয়। চোরাই কারবারে ভয় তো আছে।

কচু আছে। হাজার হাজার লোক করেছে না ও কারবার? তুই বাঁদর, জেল খাটিস। ওর জেলের ভয়টা কীসের? থেমে গিয়ে কানাই থুতনিটা ঘন ঘন এ পাশ ও পাশ নাড়ে আর লোমবহুল বুকে বাঁ হাতের তালু ঘষে-অম্বলের জ্বালায় জ্বলে যাচ্ছে বুকটা।

সুধাময়ী এসেছে আজ।

বটে নাকি? বেশ।

এয়েছে মানে আমি আনাইনি-এয়েছে। এনে ফেলে দিয়ে গেছে আমার বাড়ি। বেয়াই বেটা, জানিস গোপাল, বজ্জাতের ধাড়ি।

গোপাল খবরটা শুনেছিল। কানাইয়ের মেয়ে সুধার বিয়ে হয়েছিল গত বছর আশ্বিন মাসে। এ বছর কার্তিকের গোড়ায় সে প্রসব হতে এসেছে বাপের বাড়ি। জামাই এসে রেখে গেছে।

হুঁকো এসেছিল। কানাই হুঁকো টেনে কাশে আর বলে, পেটে তিনবার লাথি মেরেছে। নক্তে ভেসে যাচ্ছে পিথিমি। তাই ফেলে রেখে গেল হারামজাদার দল। এখন আমি ডাকব ডাকতার কোবরেজ, টাকা খসাব মুঠো মুঠো মরবে জানি, তবুও সব করা চাই। কেন বাবা? তিলে তিলে দন্ধে মারা কেন বাপু? মরণ সংবাদ দিলেই হত একবারে।

ডাকতার এনেছেন কাকে।

মধুকে দিয়ে ঝাড়ফুঁক করিয়েছি। ওর গাছগাছড়া অব্যখ্য। ভীমের মাকেও আনেয়েছি। ও বড়ো ভাল দাই। একাজ করে করে চুল পেকে গেছে।

গোপাল শোনে আর ভাবে, কানায়ের বাড়ি কেন এসেছিল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে হঠাৎ উঠে সে বিদায় নেয়।

কানায়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জীবনে প্রথম নিজের বিরুদ্ধে নালিশ করে গোপাল নিজেকে ধিক্কার দেয়, ভূষণের বাড়ির কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত। সুধলর রক্তে পৃথিবী ভেসে যাচ্ছে। ভীমের সত্তর বছরের বুড়ি মা, যে কানে কম শোনে, চোখে কম দ্যাখে, সে সুধাময়ীকে মারছে। এই রোমাঞ্চকর দৃশ্য মনে তার কেটে কেটে বসে গিয়েছে অথচ দুঃখ বেদনার বদলে সে অনুভব করছে সন্তোষ। যা হওয়া উচিত এ যেন তাই হয়েছে। নিয়ম রক্ষা-নীতির সম্মান বজায় থেকেছে। কানাই কষ্ট পাক, তাতে পরম তৃপ্তি বোধ হোক, ততখানি হিংসুটে ছোটোলোক হতে জেলখাটা গোপালের আপত্তি নেই। কিন্তু কানাইকে শাস্তি দেবার জন্য সুধাময়ীর রক্তে পৃথিবী ভাসিয়ে দেওয়ার মতো অমানুষ হওয়া কি তার উচিত?

গাঁয়ের অনেকের বাড়ি ঘুরেও কার কজন আপনজন না খেয়ে মরেছে শুনেও, ভূষণমামার সঙ্গে আলাপ করে সুধাময়ীর জন্য ব্যথা বোধের অক্ষমতার গোপাল কাবু হয়ে রইল। ভূষণের বাড়ির কাছে যখন সে পৌঁছাল, সন্ধ্যা উএরে গেছে। চাঁদ বুঝি উঠবে মাঝরাতের কাছাকাছি, আকাশের কুয়াশায় তারাগুলি স্নান, অন্ধকার ঘন হয়ে এসেছে। ভূষণের মেয়ে রতন সেই অন্ধকারের ভেতর থেকে এসে গোপালের হাত ধরল।

চাল এনেছ তো? আজ আগে চাল দেবে, তবে ছুঁতে দেব। মাইরি বলছি কানাইবাবু-হুস করে একটা শ্বাস টানার শব্দ হল। কে? কে তুমি? প্রশ্ন না করেই রতন তাকে ছেড়ে দিয়ে মিলিয়ে গেল অন্ধকারে।

তখন আবার গোপাল টের পেল পথ নির্জন। সন্ধ্যার খানিক পরেই এত বড়ো গাঁয়ের মৃত জনহীনতায় একা সে জীবস্ত মানুষ দাঁড়িয়ে আছে দায়িক হয়ে। সুধাময়ীর কথা সে ভুলে গেল। রতনকে সে বড়ো স্নেহ করত।

16
Articles
আজ কাল পোরশুর
0.0
এটি মানিক বন্দোপাধ্যায়ের লেখা একটি ছোটগল্প
1

আজ কাল পরশুর গল্প

19 December 2023
1
0
0

মানসুকিয়ার আকাশ বেয়ে সূর্য উঠেছে মাঝামাঝি। নিজের রাঁধা ভাত আর শোল মাছের ঝাল খেতে বসেছে রামপদ ভাঙা ঘরের দাওয়ায়। চালার খড় পুরোনো পচাটে আর দেয়াল শুধু মাটির। চালা আর দেয়াল তাই টিকে আছে, ছ মাসের সুযোগেও কে

2

দুঃশাসনীয়

20 December 2023
1
0
0

আগে, কিছুকাল আগে, বেশিদিনের কথা নয়, গভীর রাতেও হাতিপুর গ্রামে এলে লোকালয়ের বাস্তব অনুভূতিতে স্বস্তি মিলত। মানুষের দেখা না মিলুক, মাঠ, খেত, ডোবাপুকুর, ঝোপঝাড়, জলা অপরিসীম রহস্যে ভরাট হয়ে থাক, হুতোম প্য

3

নমুনা

21 December 2023
1
0
0

কেবল কেশবের নয়, এ রকম অবস্থা আরও অনেকের হয়েছে। অন্ন নেই কিন্তু অন্ন পাওয়ার একটা উপায় পাওয়া গিয়েছে মেয়ের বিনিময়ে। কয়েক বস্তা অন্ন, মেয়েটির দেহের ওজনের দু-তিন গুণ। সেই সঙ্গে কিছু নগদ টাকাও, যা দিয়ে দানক

4

বুড়ি

22 December 2023
0
0
0

বুড়ির বড়ো পুতি আজ যাবে বিয়ে করতে। ছেলের ছেলে তার ছেলে, বড়ো সহজ কথা নয়। বুড়িকে বাদ দিয়েই বাড়িতে চলেছে আপনজনে-ভরাট বাড়ির ছেলে বিয়ে করতে গেলে যত কিছু কাণ্ডকারখানা হয়-রোজ সংসারের সাধারণ হইচইও যেন ওকে বাদ

5

গোপাল শাসমল

22 December 2023
0
0
0

সাতপাকিয়ার গগন শাসমলের ছেলে গোপাল গিয়েছিল জেলে। একদিন ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল। জেলে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ছিল মন পঁচিশেক ধান, দুটো বলদ, একটা গোবু, পুঁইমাচা লাউ- মাচা আর তিনটে সজনে গাছ। বাড়ি ফিরে দেখল, ধান

6

মঙ্গলা

22 December 2023
1
0
0

শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে মঙ্গলা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ডোবা থেকে উঠে আসে। পুলিশ হঠাৎ গাঁয়ে হানা দিয়েছিল মাঝরাতে। সেই থেকে এই সকাল পর্যন্ত সে ডোবার জলকাদায় আগাছার মধ্যে গা ঢাকা দিয়ে কাটিয়েছে। হাঙ্গামার পর

7

নেশা

23 December 2023
1
0
0

পুলকেশের সিনেমা দেখার নেশা একেবারে ছিল না। যতীনেরও তাই। সত্যিকারের কোনো ভালো ছবির খবর পেলে, রুচি, রসবোধ আর বিচারশক্তি আছে বলে তারা বিশ্বাস করে এমন কোনো বিশ্বাসী লোকের কাছে খবর পেলে হয়তো কখনও নিজেরা শখ

8

বেড়া

23 December 2023
1
0
0

বাড়ির ঠিক মাঝখানে উঁচু চাঁচের বেড়া। খুব লম্বা মানুষের মাথা ছাড়িয়েও হাতখানেক উঁচু হবে। বেড়া ডিঙিয়ে কারও নজর চলবে না, অবশ্য যদি উঁচু কিছুর উপর দাঁড়িয়ে নজর চালানো না হয়। নজর দেধার অন্য উপায় আছে ফুটোতে চো

9

তারপর?

23 December 2023
1
0
0

কাণকালি গাঁয়ের খালে একবার একটা কুমির এসেছিল। মানুষখেকো মস্ত কুমির। পরপর তিনটি বউকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল গাঁয়ের। একজন মাঝবয়সি, দুজন তরুণী। একজন রোগা ন্যাংলা, একজন বেশ মোটাসোটা, আরেকজন ছিপছিপে দোহারা গোছের

10

স্বার্থপর ও ভীরুর লড়াই

26 December 2023
1
0
0

কৈলাস বসুকে সকলে স্বার্থপর আর সংকীর্ণচেতা বলে জানে। মানুষটার চালচলন আচার বাবহার তো বটেই, চেহারাও সকলের এই ধারণাকে অনেকটা সমর্থন করে। বেঁাঁটি, আঁটোসাঁটো ধরনের মোটা, প্রায় গোলাকার মাথায় বুরুশের মতো শক্ত

11

শত্রুমিত্র

26 December 2023
1
0
0

আদালতের বাইরে আবার দেখা হয় দু জনের, পানবিড়ি চা মুড়ি মুড়কি আর উকিল মোক্তারের দোকানগুলির সামনে। দু জনে তারা পরস্পরের দিকে তাকায়। তীব্র বিদ্বেষের আগুনে যেন পুড়ে যায় দু জোড়া চোখ। দাঁতে দাঁত চেপে চাপা গলায়

12

রাঘব মালাকর

26 December 2023
1
0
0

[ পুরাণে বঙ্গে একদা নররূপী ভগবান স্নানরতা গোপিনীদের বস্ত্র অপহরণ করে নিয়ে তাদের অন্তর পরীক্ষা করেছিলেন-বহুকাল পরে আবার তিনি....এবার অদৃশ্য থেকে তাঁর প্রতিনিধিদের দিয়ে, সমগ্র বাংলাদেশের নরনারীর বস্তু অ

13

যাকে ঘুষ দিতে হয়

27 December 2023
1
0
0

মোটর চলে, আস্তে। ড্রাইভার ঘনশ্যাম মনে মনে বিরক্ত হয়, স্পিড দেবার জন্য অভ্যাস নিশপিশ করে ওঠে প্রত্যঙ্গে, কিন্তু উপায় নেই। বাবুর আস্তে চালাবার হুকুম। কাজে যাবার সময় গাড়ি জোরে চললে তার কোনো আপত্তি হয় না

14

কৃপাময় সামন্ত

27 December 2023
1
0
0

রঘুনাথ বিশ্বাসের আমবাগানের পাশ দিয়ে আসার সময় কৃপাময় সামন্তের সামনে একটা সাপ পড়ল। সংকীর্ণ মেটে পথ, পাশের কচুবন থেকে লেজটুকু ছাড়া সবটাই প্রায় বেরিয়ে এসেছে সাপটার, হাত দুই সামনে। পথ পার হয়ে ডাইনে আগাছার

15

নেড়ী

27 December 2023
1
0
0

দুর্ভিক্ষের প্রথম চোটটা লাগল তারার মাথায়। তারার ছিল চুলের বাহার, মাথা ভরা চিকন কালো একরাশি চুল। মাঝে মাঝে কোনো কোনো মেয়ের এ রকম হয়-চাষাভুসোর ঘরেও। গোড়ায় তেল জুটত, বাপের বাড়িতে থাকবার সময় আর শ্বশুরবাড়ি

16

সামঞ্জস্য

27 December 2023
1
0
0

ভিতরে এবং বাইরে শান্ত গম্ভীর হয়ে প্রমথ সেদিন বাড়ি ফেরে। অনেকদিন পরে মাজ গভীর শাস্তি অনুভব করেছে, পরম মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। ভেবেচিন্তে মন স্থির করে ফেলবার পরেই এ রকম আশ্চর্যভাবে শান্ত হয়ে গেছে মনটা। স

---