shabd-logo

বুড়ি

22 December 2023

0 Viewed 0

বুড়ির বড়ো পুতি আজ যাবে বিয়ে করতে। ছেলের ছেলে তার ছেলে, বড়ো সহজ কথা নয়। বুড়িকে বাদ দিয়েই বাড়িতে চলেছে আপনজনে-ভরাট বাড়ির ছেলে বিয়ে করতে গেলে যত কিছু কাণ্ডকারখানা হয়-রোজ সংসারের সাধারণ হইচইও যেন ওকে বাদ দিয়ে চলে। তবু যেন বুড়ি আজও হাজির আছে সব কিছুর মধ্যে প্রত্যক্ষে আর পরোক্ষে, বাড়ির প্রতিদিনের সমবেত জীবনযাত্রাতেও যেমন থাকে। তিন কুড়ি বছরের জীবস্তু উপস্থিতির অভ্যস্ত ডালপদ্মা আব শিকড় নিয়ে আছে বড়ো ঘরের পশ্চিমের ওই মরা হাজা শুকনো গাছটার মতো, যার ডালে সারাদিন পাখি কিচিরমিচির করে আর নিশুতি রাতে ভাঙাচোরা হাওয়া আওয়াজ তোলে মরমর মরমর।

ন্যাকড়া কাঁথার কাঁড়ি আর পুঁটুলি বালিশ নিয়ে বুড়ি দাওয়ায় বসে থাকে, দাওয়ায় চালা নিচু করে নামানো। মরচে-ধরা কোমর, বাঁকা পিঠ, শণের নুড়ি চুল, লোল চামড়া, ফোকলা মুখ, তোবড়ানো- গাল, ছানিকাটা নিষ্ফাড চোখ। লাঠি ধরে গুটি গুটি চলতে ফিরতে পারে, শক্তই আছে মনে হয় দামড়া-ঢাকা হাড় আর পাঁজর ঢাকা ফুসফুস বেশ জোরে চেঁচাতে পারে। শুয়ে বসেই থাকে বেশি, বিড়বিড় করে আপন মনেই বকবক করে কাটায় বেশির ভাগ সময়। থেকে থেকে তারস্বরে সংসারের খুঁটিনাটি ব্যবস্থার সমালোচনা করে। পোড়া তামাকপাতা গুঁড়ো খায়। মাঝে মাঝে অকারণে অদ্ভুত আওয়াজে খলখলিয়ে হাসে।

মরণ! বলে বউ আর নাতবউয়েরা। কেউ জোরে, কেউ নিচু গলায়। নিচু গলায় বলে কচি বউয়েরা। বুড়িকে মানা করে নয়, বুড়ি শুনলেও কানে তোলে না, কানে তুললেও কিছু আসে যায় না। ছোটো মুখে বড়ো কথা শুনে শাশুড়ি ননদরা পাছে চটে যায়, এই ভয়।

নন্দ বাহারে চুল ছেঁটেছে নিতাই পরামানিককে দিয়ে। নগদ আটগন্ডা পয়সা আদায় করেছে নিতাই, তার ছেলে বরের সঙ্গে যাবে, কত কিছু পাবে, তবু। বাড়ির সাতজন এই নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নিতাইকে মন্দ বলেছে। এ রকম দিনে ডাকাতি এদের সয় না।

বুড়ি ডাকে পুতিকে, বলে, অ নন্দ, অ ঘাড়-ছাঁটানি ছোঁড়া, শোন, শোন ইদিকে, একটা কথা বলি। বিয়া তো করবি ছোঁড়া, মেয়াটা কুমারী বাটে তো?

নন্দর মা শুনতে পেয়ে জাকে বলে, মরণ। কথা শোনো বুড়ির। তারপর চিন্তিত হয়ে ভুরু কুঁচকে বলে, নয় বা কেন। মেয়া নাকি বাড়ো বাড়ন্ত ধাড়ি মেয়া।

ঘর ভালো।

ভালো ঘরে মন্দ বেশি। নয় ধাড়ি করে রাখে মেয়াকে?

বুড়ির কাছে উবু হয়ে বসে নন্দ বলে, কুমারী না তো কী-তোর মতো বুড়ি । পাবি মোর নাখান কুমারী পিথিমি ছুঁড়ে? ফোকলা মুখে বুড়ি গালভরা হাসি হাসে, একরাত্তির

শুয়েছি তোর দাদুর সাথে? বিয়ের রাতে ভোঁস ভোঁসিয়ে পটল তুলল না তোর দাদু সে এক কাণ্ড বটে। ভোঁসভোঁসানি শুনে আমি তো ডরিয়ে গিয়ে কান্না ধরেছি গলা ছেড়ে-হাউমাউ করে দোর খুলে বাইরে গিয়ে। বাড়িসুদ্ধ ছুটে এসে বলছে, কী কী, হয়েছে কী? আর হবে কী, মোর কপালস। বুড়োর ততখনে হয়ে গেছে গা। বুড়ি খলখলিয়ে হাসে।

পুতি কিন্তু তার হাসে না। পুতির মুখে তার দ্বিধা সংশয় সন্দেহ, অবিশ্বাসের পাতলা মেঘ। খানিক ঘাড় বাঁকিয়ে থেকে সে বলে, তাও হবে বা। মস্ত ধেড়ে মেয়ে, ও কী ঠিক আছে। বুড়ি গালে হাত দেয়। মর তুই বাঁদর। নিজে না পছন্দ করলি তুই বড়ো মেয়ে দেখে ?

তা তো করলাম-

বোকা, হাবা, বজ্জাত। কুমারী মেয়ে নষ্ট হয়? আমি নষ্ট হইছি? বিয়ার রেতে সোয়ামি মোলো, দিন দিন যেন বাড়ল সবার মোকে নষ্ট করার চেষ্টা, নষ্ট হইছি আমি? কুমারী না হই তো তোর বাপের কীরে। মেয়া বদ হয় সোয়াদ পেয়ে, কুমারী কি খারাপ হয়রে বেজন্মার পুত? মরণ তোর। ষাট, ষাট। দুগগা, দুগগা। তোর বালাই নিয়ে মরি আমি। সত্যি বলছিস? পুতি বলে তার মেঘকাটা মুখে আলো ফুটিয়ে।

না তো কী?

কাজ অকাজের ফাঁকে ফাঁকে সবাই দ্যাখে নন্দ উবু হয়ে বুড়ির সামনে বসে আছে তো বসেই আছে। কথার যেন শেষ নেই দুজনের। থেকে থেকে দুজনে আবার হেসে উঠছে খলখলিয়ে, হিছি করে।

মেনকা হাপুস নয়নে কাঁদে আর বলে, আমি কোথায় যাব? কার কাছে যাব? মোর কে আছে? নন্দর বউকে বাড়ির কারও পছন্দ হয়নি। একে ধাড়ি মেয়ে, তাতে দূর সম্পর্কের মামাবাড়িতে মানুষ, বিয়েতে পাওনাগন্ডা জোটেনি ভালোরকম, গয়না যা দেবে বলেছিল মেয়ের ধড়িবাজ মামা- তা পর্যন্ত সবগুলি মেনকা নিয়ে আসেনি। তার ওপর নন্দ নিজে পছন্দ করে বাড়ির লোকের অমতে তাকে বিয়ে করেছে-বিয়ে করে এনে বাড়ির লোকের মতামতের তোয়াক্কা না রেখে মাথায় করে রেখেছে বউকে। বিয়ে সম্পর্কে ছেলের অবাধ্যতার জ্বালা মানুষের জুড়োয় না, মন বিষাক্ত হয়ে থাকে বউয়ের ওপরেই। রোজগেরে ছেলের ওপর তো গায়ের ঝাল ঝাড়া যায় না!

তার ওপর বিয়ের এক বছরের মধ্যে নন্দ মারা গেল। বর্ষার শেষে পথঘাট উঠানের কাদা যখন শুকোতে আরম্ভ করেছে, বাড়ির লোকের সঙ্গে ঝগড়া করে নন্দ তখন বউ নিয়ে দু মাসের জন্য পশ্চিমে বেড়াতে যাবার জন্য আয়োজন করছে। এ বাড়ির কোনো বউ কোনো কালে একা স্বামীর সঙ্গে আজ পর্যন্ত কোথাও বেড়াতে যায়নি।

এমন অলুক্ষুনে বউকে কে বাড়িতে রাখবে? মেনকার মামাকে লেখা হয়েছিল তাকে নিয়ে যাবার জন্য। সে জবাবও দেয়নি, রাখালের সলো 'তাকে তাই পাঠিয়ে দেবার আয়োজন হচ্ছে। মামাবাড়ির দরজায় তাকে নামিয়ে দিয়ে রাখাল চলে আসবে, তারপর যা হবে তা বুঝবে মেনকা আর তার মামা।

মেনকা কিন্তু যেতে নারাজ। মামাবাড়িতে শুধু মারধোর আর ছ্যাঁকা দেওয়ার ভয় থাকলে কথা ছিল না, মামাবাড়িতে তাকে ঢুকতেই দেবে না সে জানে। দরজা থেকেই তাকে পথে নামতে হবে।

মেনকা তাই হাপুস নয়নে কাঁদে আর বলে, আমি কোথা যাব? কার কাছে যাব? রোয়াকে বসে বুড়ি ডাকে, এই ছুঁড়ি, শোন।

মেনকা কাছে এসে দাঁড়ায়।

কাঁদিস কেন হাপুস চোখে, জোয়ান মদ মাগি ? আমায় তাড়িয়ে দিচ্ছে গো।

তাড়িয়ে দিচ্ছে? কে তাড়িয়ে দিচ্ছে? তাড়িয়ে দিলেই তুই যাবি? তোর শ্বশুর ঘর, কে তাড়াবে তোকে?

মেনকা চুপ করে থাকে। 

মোকে পেরেছিল তাড়াতে? একরাত ঘর করিনি সোয়ামির, বিয়ের রাতে ছটফটিয়ে মোলো। সবাই বলে, দূর দূর, অলুক্ষুনে বউ! বিয়ে হল, সোয়ামি খেয়ে কুমারী রল, একি মেয়ে গা? দূর! দূর! আমি গেলুম? মাটি কামড়ে রইলাম এখানকার। পারল কেউ তাড়াতে মোকে? অ্যাদ্দিন তুই সোয়ামির সঙ্গে শুলি, বাড়ির বউ হয়ে রলি। তোকে যেতে বললে তুই যাবি? মাটি কামড়ে থাক। খুঁটি আঁকড়ে থাক।

মেনকার চোখে আশার আলো দেখা দেয়। সে সামনে উবু হয়ে বসে বুড়ির। বাড়ির সবাই তাকিয়ে দ্যাখে মেনকা আর বুড়ির মধ্যে গুজগাজ ফিসফাস কথা চলেছে তো চলেইছে, কথার যেন শেষ নেই।

16
Articles
আজ কাল পোরশুর
0.0
এটি মানিক বন্দোপাধ্যায়ের লেখা একটি ছোটগল্প
1

আজ কাল পরশুর গল্প

19 December 2023
1
0
0

মানসুকিয়ার আকাশ বেয়ে সূর্য উঠেছে মাঝামাঝি। নিজের রাঁধা ভাত আর শোল মাছের ঝাল খেতে বসেছে রামপদ ভাঙা ঘরের দাওয়ায়। চালার খড় পুরোনো পচাটে আর দেয়াল শুধু মাটির। চালা আর দেয়াল তাই টিকে আছে, ছ মাসের সুযোগেও কে

2

দুঃশাসনীয়

20 December 2023
1
0
0

আগে, কিছুকাল আগে, বেশিদিনের কথা নয়, গভীর রাতেও হাতিপুর গ্রামে এলে লোকালয়ের বাস্তব অনুভূতিতে স্বস্তি মিলত। মানুষের দেখা না মিলুক, মাঠ, খেত, ডোবাপুকুর, ঝোপঝাড়, জলা অপরিসীম রহস্যে ভরাট হয়ে থাক, হুতোম প্য

3

নমুনা

21 December 2023
1
0
0

কেবল কেশবের নয়, এ রকম অবস্থা আরও অনেকের হয়েছে। অন্ন নেই কিন্তু অন্ন পাওয়ার একটা উপায় পাওয়া গিয়েছে মেয়ের বিনিময়ে। কয়েক বস্তা অন্ন, মেয়েটির দেহের ওজনের দু-তিন গুণ। সেই সঙ্গে কিছু নগদ টাকাও, যা দিয়ে দানক

4

বুড়ি

22 December 2023
0
0
0

বুড়ির বড়ো পুতি আজ যাবে বিয়ে করতে। ছেলের ছেলে তার ছেলে, বড়ো সহজ কথা নয়। বুড়িকে বাদ দিয়েই বাড়িতে চলেছে আপনজনে-ভরাট বাড়ির ছেলে বিয়ে করতে গেলে যত কিছু কাণ্ডকারখানা হয়-রোজ সংসারের সাধারণ হইচইও যেন ওকে বাদ

5

গোপাল শাসমল

22 December 2023
0
0
0

সাতপাকিয়ার গগন শাসমলের ছেলে গোপাল গিয়েছিল জেলে। একদিন ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরল। জেলে যাওয়ার সময় তার বাড়িতে ছিল মন পঁচিশেক ধান, দুটো বলদ, একটা গোবু, পুঁইমাচা লাউ- মাচা আর তিনটে সজনে গাছ। বাড়ি ফিরে দেখল, ধান

6

মঙ্গলা

22 December 2023
1
0
0

শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে মঙ্গলা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ডোবা থেকে উঠে আসে। পুলিশ হঠাৎ গাঁয়ে হানা দিয়েছিল মাঝরাতে। সেই থেকে এই সকাল পর্যন্ত সে ডোবার জলকাদায় আগাছার মধ্যে গা ঢাকা দিয়ে কাটিয়েছে। হাঙ্গামার পর

7

নেশা

23 December 2023
1
0
0

পুলকেশের সিনেমা দেখার নেশা একেবারে ছিল না। যতীনেরও তাই। সত্যিকারের কোনো ভালো ছবির খবর পেলে, রুচি, রসবোধ আর বিচারশক্তি আছে বলে তারা বিশ্বাস করে এমন কোনো বিশ্বাসী লোকের কাছে খবর পেলে হয়তো কখনও নিজেরা শখ

8

বেড়া

23 December 2023
1
0
0

বাড়ির ঠিক মাঝখানে উঁচু চাঁচের বেড়া। খুব লম্বা মানুষের মাথা ছাড়িয়েও হাতখানেক উঁচু হবে। বেড়া ডিঙিয়ে কারও নজর চলবে না, অবশ্য যদি উঁচু কিছুর উপর দাঁড়িয়ে নজর চালানো না হয়। নজর দেধার অন্য উপায় আছে ফুটোতে চো

9

তারপর?

23 December 2023
1
0
0

কাণকালি গাঁয়ের খালে একবার একটা কুমির এসেছিল। মানুষখেকো মস্ত কুমির। পরপর তিনটি বউকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল গাঁয়ের। একজন মাঝবয়সি, দুজন তরুণী। একজন রোগা ন্যাংলা, একজন বেশ মোটাসোটা, আরেকজন ছিপছিপে দোহারা গোছের

10

স্বার্থপর ও ভীরুর লড়াই

26 December 2023
1
0
0

কৈলাস বসুকে সকলে স্বার্থপর আর সংকীর্ণচেতা বলে জানে। মানুষটার চালচলন আচার বাবহার তো বটেই, চেহারাও সকলের এই ধারণাকে অনেকটা সমর্থন করে। বেঁাঁটি, আঁটোসাঁটো ধরনের মোটা, প্রায় গোলাকার মাথায় বুরুশের মতো শক্ত

11

শত্রুমিত্র

26 December 2023
1
0
0

আদালতের বাইরে আবার দেখা হয় দু জনের, পানবিড়ি চা মুড়ি মুড়কি আর উকিল মোক্তারের দোকানগুলির সামনে। দু জনে তারা পরস্পরের দিকে তাকায়। তীব্র বিদ্বেষের আগুনে যেন পুড়ে যায় দু জোড়া চোখ। দাঁতে দাঁত চেপে চাপা গলায়

12

রাঘব মালাকর

26 December 2023
1
0
0

[ পুরাণে বঙ্গে একদা নররূপী ভগবান স্নানরতা গোপিনীদের বস্ত্র অপহরণ করে নিয়ে তাদের অন্তর পরীক্ষা করেছিলেন-বহুকাল পরে আবার তিনি....এবার অদৃশ্য থেকে তাঁর প্রতিনিধিদের দিয়ে, সমগ্র বাংলাদেশের নরনারীর বস্তু অ

13

যাকে ঘুষ দিতে হয়

27 December 2023
1
0
0

মোটর চলে, আস্তে। ড্রাইভার ঘনশ্যাম মনে মনে বিরক্ত হয়, স্পিড দেবার জন্য অভ্যাস নিশপিশ করে ওঠে প্রত্যঙ্গে, কিন্তু উপায় নেই। বাবুর আস্তে চালাবার হুকুম। কাজে যাবার সময় গাড়ি জোরে চললে তার কোনো আপত্তি হয় না

14

কৃপাময় সামন্ত

27 December 2023
1
0
0

রঘুনাথ বিশ্বাসের আমবাগানের পাশ দিয়ে আসার সময় কৃপাময় সামন্তের সামনে একটা সাপ পড়ল। সংকীর্ণ মেটে পথ, পাশের কচুবন থেকে লেজটুকু ছাড়া সবটাই প্রায় বেরিয়ে এসেছে সাপটার, হাত দুই সামনে। পথ পার হয়ে ডাইনে আগাছার

15

নেড়ী

27 December 2023
1
0
0

দুর্ভিক্ষের প্রথম চোটটা লাগল তারার মাথায়। তারার ছিল চুলের বাহার, মাথা ভরা চিকন কালো একরাশি চুল। মাঝে মাঝে কোনো কোনো মেয়ের এ রকম হয়-চাষাভুসোর ঘরেও। গোড়ায় তেল জুটত, বাপের বাড়িতে থাকবার সময় আর শ্বশুরবাড়ি

16

সামঞ্জস্য

27 December 2023
1
0
0

ভিতরে এবং বাইরে শান্ত গম্ভীর হয়ে প্রমথ সেদিন বাড়ি ফেরে। অনেকদিন পরে মাজ গভীর শাস্তি অনুভব করেছে, পরম মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। ভেবেচিন্তে মন স্থির করে ফেলবার পরেই এ রকম আশ্চর্যভাবে শান্ত হয়ে গেছে মনটা। স

---