ঘুষঘুষে স্বব ছিল। পুত্তমুক বাশি।
তার ওপর গলা দিয়ে উঠন দুফোটা বত্ত।
আবও টা লমণ দরব'র হস ব্যাপার বুঝতে এব পরেও এই মনুষ খানিকটা হয়তো মেশানো আশাও করতে পাবে যে ধ্রুব কাশি জ্ঞার বক্ত ওঠাটা সে রকম এয়ানর কিছু নয়, নাও হতে পাবে।
এতটুকু বক্ত। একটু আড়। কাটলে এর চেয়ে এত বেশি বক্ত পান্ডে। হাবাণ ক্তিবদৃষ্টিতে চেয়ে খাকে মৃত্যুর এই সংক্ষিপ্ত লাল পরোয়ানার দিরে।
বলে, আর ভাবনা নেই। এবার সব ফিনিসে।
চাইবর্ণ হয়ে গেছে গতাব মুখ। শুধু হাত পা নয়, ভেতরটাও তার থরথর করে কাঁপছে। সেই সাদা দুলছে ৩. দি পৃথিবী। কিন্তু তবু আশা সে ছাড়বে না। মনে হচ্ছে দুঃখ দুর্দশা ভবা স৯৪ অতীত জীবনটা যেন গভীন কালো এতশার রূপ নিয়ে অন্ধকার করে দিয়েছে ভবিষ্যৎ, তারও অব বাঁড়ার জন্য পড়াই করার মানে থাকল না।
না না, হয়তো কিছুই নয়। ডাক্তার না দেখিয়ে কিছু বলা যায় পর্ব'ক্ষা না করিয়ে ডাক্তাব অবশ্য দেখাবো। এক্স বে ফটোও তোলা হবে। কিন্তু সেটা প্রমাণের অন্য নয়। বৎদুব এগিয়েছে বোগটা, কী অবস্থা, বুঝবার জন্য
মৃত্যু যেন এখনই ঘনিয়ে আসছে এমনি হতাশা হাবাণের চেখে।
ফ্লতা একবার চোখ বোডে। জোব চাই বুকে বল চাই। এভাবে কাপলে, সবাঙ্গ অবশ হয়ে এলে চারে কেন সেও যদি হাল ছেড়ে দেয়, সবনাশ ঠেকাবারও য়ে হবে ন'
চোখ মেলে সে কথা বলে। নিজের কথাগুলি নিজের কানে তার লা' অন্য ২ও কপাল মতো যদিই বা হয়ে থাকে, চিকিৎসা করলে সেরে যাবে। আজকাল কত ভালো চিকিৎসা বেবিয়েছে, বেশির ভাগ সেবে যায়। নন্দবাবুব ছেলেটা সেবে ওঠেনি? হাবাণ আর কিছু বলে না।
এ বোগ সা'বিয়ে এই পৃথিটীতে বেঁচে থাকার আশা সে ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু লতাকে কাবু করে লাভ নেই।
লভিওলা নন্দবাবুব ছেলে। মাছ, মাংস দুধ, ঘি, সন্দেশ খেযে আর অজস্র বিশ্রামের সুযোগ ভোগ করেও তাব এ বোগ হয়েন্সি কেন কে জানে বোধ হয় ন''কৃত থেঘালে শরীরটাকে কাবু কবেছিল বলে। মৃত্যুব পরোয়ানা পাওযামাত্র ভড়কে গিয়ে আত্মসমর্পণ কবে লে নন্দবাবুব অজস্র পয়সা খরচ করা ওষুধ পথ্য আলো বাতাস বিশ্রামেব চকিৎসায।
ছ-মাসে সে শুধু সেবেই ওঠেনি, দিব্যি নাদুসনুদুস চেহাবা বাগিয়েছে। স্বাস্থ্য যেন পুষ্টিবসে বসস্থ হয়ে উথলে পড়েছে তাব সর্বাঙ্গে।
কিন্তু কম খেয়ে বেশি ঘেটে সে বাঁধিয়েছে বোগ-নিজে বাঁচার জন্য আব আপনজনকে বাঁচানোর জন্য শবীবকে পুষ্টি না দিয়ে ক্ষয়, একটানা ক্ষয় কবে এসেছে শক্তি আব স্বাস্তা। কী দিয়ে এখন সে লড়বে এ বোগের সঙ্গে সুস্থ দেহ নিয়ে যা ঠেকানো যায়নি, এসে চেপে ধবে কাবু করাব পব অসুস্থ দেহ নিয়ে সেটাকে দুর করাব বাঙতি ক্ষমতা সে।কাথায় পাবে।
আর হয় না। এবার শুধু দিন গোনা।
শচীনের সব জানাশোনা আছে। তাকে বলতে সে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেয়। সেই সঙ্গে তাদের সাবধান করে দেয় যে বাড়ির অন্য ভাড়াটেরা যেন কিছু জানতে না পায়।
বুক পরীক্ষার ফল জানা যায়। চিকিৎসার বিস্তারিত বিধানও পাওয়া যায়।
ডাক্তারের কাছ থেকে লতা নিজে সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নেয়। শুধু কী করতে হবে জেনে নেওয়া নয়, যতটা পারে বুঝেও নেয়, কীসে কী হয় আর কেন হয়, কোন ব্যবস্থার গুরুত্ব কতখানি।
না খাটলে যার পেট চলে না তার কী রাজসিক রোগ!
দামি ওষুধ চাই, দামি পথ্য চাই, সূর্যের আলো চাই, মুক্তবায়ু চাই, আরামে বিশ্রাম চাই, আর চাই আনন্দ, আশ্বাস ও আত্মবিশ্বাস।
ঘিঞ্জি পাড়ায় গলির মধ্যে পুরানো বাড়ির আধা-অন্ধকার স্যাতসেঁতে একখানা ঘর, দুবেলা নিজেদের এবং আরও অনেকের উনানের ধোঁয়া ঘর ছেড়ে যেন যেতে চায় না। এই ঘরে যাদের বাস, দুটি বাচ্চার জন্য যাদের শুধু একপোয়া দুধ বরাদ্দ, মাসের গোড়ার দিকে মোট দুটো-চারটে দিন যারা মাছের স্বাদ পায়, অভাব ও দুর্ভাবনায় জ্বরজুর হয়ে যাদের মাস কাবার হয়, তাদের আজ এত সব
বাড়তি ব্যবস্থা দরকার। একটা অদ্ভুত হাসি মুখে ফুটিয়ে হারাণ বলে, বাদ দাও। এত ব্যবস্থাও হয়েছে, আমার রোগও সেরেছে। অনর্থক কতগুলি টাকা নষ্ট হবে।
কোমরে আঁচল জড়িয়ে ক্ষীণাঙ্গী লতা সোজা হয়ে দাঁড়ায়, ধমক দিয়ে বলে, দ্যাখো তুমি রোগী মানুষ, তোমার অত বাহাদুবি কেন? তুমি চুপ করে থাকো। আমাকেও তুমি ভড়কে দিচ্ছ !
তুমি আর কী করবে বলো ?
চেষ্টা তো করব?
না। মিছে চেষ্টা করে লাভ নেই। যেটুকু সম্বল আছে তাতে এ বোগ সারে না। এ'সেন্টিমেন্টের ব্যাপার নয় লতা, জেনেশুনে সম্বলটুকু খুইয়ে তুমি পথে বসতে পাবে না। সামান্য একটু চান্স থাকলেও বরং কথা ছিল।
লতা আবার ধমক দেয়, চুপ করবে তুমি? কে বললে তোমার চান্স নেই? রোগ বাধিয়ে এখন কর্তালি করতে এসো না। আমায় বুঝেশুনে ব্যবস্থা করতে দাও। মাথা ঠান্ডা রেখে আমায় সব করতে হবে, আমার মাথা গুলিয়ে দিয়ো না।
মাথা উঁচু করে সে আবার বলে, তেমন মেয়ে পেয়েছ নাকি আমায়, চেষ্টা না করেই হাল ছেড়ে দেব?
মুখে যাই বলুক হারাণ, মৃতদেহে সে যেন একটু প্রাণ পায়।
সতা বলে, আপিস থেকে লোন-টোন যে বাবদে যতটা পারো ব্যবস্থা করবে। লম্বা ছুটির দরখাস্ত করবে।
ছুটি? ছুটি নিলে মাইনে পার না।
জানি। সে ভাবনা তোমার নয়। আপিসেও খাটবে, অসুখও সারবে, না?
আপে চাই টাকা, তারপর অন্য কথা। যেখানে যেভাবে যতটুকু পাওয়া সম্ভব, লতা টাকা কুড়োতে আরম্ভ করে। বাপ গরিব, টাকা দেবার সাধ্য নেই, লতা বাচ্চা দুটিকে মার কাছে রেখে আসে। ওদের খরচটা বাঁচবে, ওরাও ছোঁয়াচ থেকে বাঁচবে, সে নির্ঝঞ্ঝাটে লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে রোগটার বিরুদ্ধে।
গয়না থেকে শুরু করে যা কিছু বেচা সম্ভব সব সে বেচে দেয়। আত্মীয়স্বজন যার কাছে যতটুকু সাহায্য বা ঋণ পাওয়া সম্ভব আদায় করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়।
কন্দাকাটা করা থেকে হাতে পায়ে ধবা, একেবাবে নাছোডবাদিব মতো এঁটে থেকে জীবন অতিষ্ঠ কবে তোলা ইত্যাদি যত বকম উপায় আছে আত্মীযবন্ধুব কাছে সাহায্য আদায়েব, তাব কোনোটাই সে বাদ দেয় না। মান অপমানের বোনটা একেবাবে ছাঁটাই কবে সে যেন চার্বিদিকে আক্রমণ চালায়।
শচীন বলে দিয়েছিল, অন্য ভাডাটেবা যেন হাবাণের অসুখ টেব না পায়। কিন্তু সর্বস্বপণ করে চিকিৎসা আবম্ভ কবে দেবার পবেও কী আব এই মহাবোগ গোপন করা যায।
লতা টের পায়, বাডিব অন্য বাসিন্দারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছে। একবাডিতে থেকেও যতদূর সম্ভব দূবত্ব বজায় বেগে চলাব প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
পাশেব ঘবে থাকে হেমেন। তাব স্ত্রী বমাব সঙ্গে এতদিন খুব ভাব ছিল লতাব।
সেদিন তাব ঘবে গিয়ে দাঁড়াতেই বমা মুখ কালো কবে বলে, উনি বলছিলেন, তোমার কাবও দবে না যাওযাই উচিত।
আমি খুব সাবধান থাকি। ওষুধ দিয়ে হাত ধোয়া, কাপড় ছাড়া তবু বলা তো যায় না।
লতা নাববে খানিকক্ষণ তাল মুখের দিকে চেয়ে থেকে বলে, বেশ, এ জন্মে আব ঢুকবো না তোমার ঘবে।
অন্য ভাড়াটেবা গিয়ে চাপ দেব বাডিওলা নন্দকে। এন্ড এসে বলে, দেখুন, আপনাদেব অন্য কোথাও চলে যাওয়া উচিত। আপনাবা না গেলে অন্য সবাই চলে যাবেন বলেছেন। লতা বলে, আমবা চলে যেতেই চাচ্ছি। একটু আলো বাতাসওলা ঘব খুঁজছি-পেলেই উঠে যাব। আপনাবা দিন না খোঁজ কবে?
নন্দ বলে, এ কী একটা কথা হল লোকের অসুবিধা করবেন দু চারটা দিন মনের মতো ঘব না পেলে আপনাবা যাবেন না, এতগুলি দেখে আমি কিন্তু বাধ্য হযে-বাধ্য হয়ে সে যে কী করবে না বললেও বোঝা গণ। অন্য সব টেবা তাব পক্ষে, কাজেই তাব জোব বেডেছে।
লতা ভয় পায় সত্যই কিন্তু বাইবে তেজ দেখিয়ে বলে, সে আপনি যা পাবেন করবেন। খব না পেলে বোগা মানুষটাকে নিয়ে আমি বাস্তায় নামব নাকি নিয়মমতো ভাড়া গুনছি না।
শচীন একটা মীমাংসা কবে দেয়। বলে, দেখুন, বাবাকে বলে ছাদে আমি একটা শেড তুলে দিচ্ছি। যতদিন ঘব না পান ওইখানেই আপনাবা থাকুন? তাছাড়া, অন্য বাড়িতে ঘবভাড়া নিলেও এই ব্যাপার ঘটবে। একেবাবে সেপাবেট একখানা ঘব পাওয়া মুশকিসে কথা।
লতা চোখ তুলে তাকায়। শচীন তাব দিকেই চেয়ে আছে। চোখেব লোভটুকু বোধ হয় নিছক অভ্যাস। কাবণ তাব সহানুভূতি যে খাঁটি তাতে সন্দেহ নেই।
সে বলে, তাই দিন। আমার আলো বাতাসেব "মস্যাও মিটবে।
ভাডাটেবা এ ব্যবস্থা মেনে নেয়। কাবণ শচীন বলেছে যে ছাদে জলেব ব্যবস্থাও সে কবে দেবে, লতাকে জলেব জন্য নীচে এসে সকলকে ছোঁয়াছুঁয়ি করতে হবে না। সকলেব কাছ থেকে প্রায পৃথক হয়েই থাকবে লতাবা।
লতাব জলেব সৌভাগ্যে কাবও কাবও মনে বেশ ঈর্ষাও জাগে। কয়েক দিন পবে জিনিসপত্র নিয়ে হাবাণ ও লতা খোলা ছাদে টিনের চালেব অস্থায়ী ঘবখানাষ উঠে যায।
হেমেন শচীনকে জিজ্ঞাসা করে, সারবে?
শচীন বলে, সব নির্ভর করছে চিকিৎসা চালিয়ে যাবার ওপর। অনেকদিন টানতে হবে। বিষম খরচ।
হেমেন বলে, তা হচ্ছে। ভদ্রলোক সত্যি ভাগ্যবান-এমন চালাক চতুর স্ত্রী পেয়েছিলেন। রমা বলে, আগে মোটেই এ রকম ছিল না। হারাণবাবুর অসুখটা ধরা পড়বার পর কেমন অদ্ভুত রকম পালটে গেছে।
রীতিমতো বিস্ময়ের সঙ্গেই সকলে এটা লক্ষ করেছিল। সমস্ত দায়িত্ব লতা একা নিয়েছে, একা সব পালন করে চলেছে। বাইরে গিয়ে ওষুধ-পথা কিনে আনা থেকে হারাণের সেবাশুশ্রুষা সব কিছু দায়িত্ব। চিকিৎসা আর আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাগুলি যে সত্যই কী বাজসিক ব্যাপাব সেটা কারও অজানা নেই। মেয়েরা কৌতূহলের বশে একে একে সকলেই লতাব কাছ থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নিয়েছে কী দিয়ে কী হয় এবং কীসে কী লাগে।
লতা কিছুই গোপন করেনি।
বরং যারা গোড়ায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বাড়ি থেকে তাদের তাড়াতে ব্যাকুল হয়েছিল, জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে তাদের যে সমবেদনা প্রকাশ পায় তাতে সে খুশিই হয।
কিন্তু লোকের মনে প্রশ্ন জাগে, কতদিন এভাবে চালাবে প্রতা?
কী করে চালাবে?
তার অবস্থাও তো কারও অজানা নয়।
তাই মাস দুই পরে লতার মুখে দুশ্চিন্তার কালচে ছায়া পড়েছে দেখে বমা হেমেনকে বলে, আর বুঝি টানতে পারছে না বেচারা।
হেমেন বলে, কী করে টানবে? এ তো জানা কথাই।
অনেকক্ষণ ইতস্তত করে সেদিন প্রথম রমা ছাদে যায়-স্নান করার আগে যায় নীচে নেমেই সাবান মেখে নেয়ে সব ছোঁয়াছুঁয়ি ধুয়ে ফেলবে।
রমা বলে, কী করে খরচ চালাচ্ছ?
লতা বলে, যা ছিল ফুরিয়ে এল, এবাব কিছু করতে হবে।
ী করবে?
দেখা যাক। একটা উপায় করতেই হবে।
রমা দারুণ অস্বস্তির সঙ্গে ভাবে কে জানে কী উপায়ের কথা ভাবছে লতা। নিরুপায় মেয়েমানুষ, ভেবে সে কী উপায় বার করবে।
কয়েক দিন পরে বাড়ির সকলে লক্ষ করে যে সকালে ঘরের রান্নাবান্না কাজকর্ম সেরে সাড়ে-দশটা এগারোটার সময় লতা বেরিয়ে যায়।
ফিরে আসে সন্ধ্যার সময়।
কী ব্যাপার?
রমাই তাকে জিজ্ঞাসা করে সকলের আগে।
লতা বলে, একটা কাজ পেয়েছি।
কী কাজ?
লতা একটু ইতস্তত করে বলে, একজনের বাড়িতে নার্সিংয়ের কাজ।
এরপর বেশি সে আর কিছু বলে না।
দিন যায়। একটা লেডিজ ব্যাগ হাতে লতা রোজ নিয়মমতো বেরিয়ে গিয়ে ফিরে আসে। হারাণের চিকিৎসা পুরো দমে চলে। ধীরে ধীরে তার শরীরে অস্বাস্থ্যের ক্লিষ্ট ছাপ কেটে গিয়ে স্বাস্থ্যের জ্যোতি ফিরে আসতে থাকে।
সকলে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে নার্সিংয়ের কাজ? জীবনে প্রথম বুণ স্বামীর সেবা আরম্ভ করেই কী এমন ট্রেইনড নার্স হয়ে গেল যে তাকে এত টাকা মাইনে দিয়ে লোকে রেখেছে, হাবাণের চিকিৎসার বিরাট খরচ যাতে চালানো যায়?
হেমেন রমাকে বলে, তুমিও যেমন, ওই কথা বিশ্বাস করলে। বয়স আছে, চেহাবাটা মন্দ নয় তাই কী? স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে নিজেকে এইভাবে বলি দিতে হয়েছে লতাকে?
রমা নিশ্বাস ফেলে।
শচীনও ভাবছিল, ব্যাপারটা কী?
লতার মুখে যখন দুশ্চিন্তার কালো ছাপ পড়েছিল, একদিন কয়েকখানা নোট পকেটে নিয়ে শচীন বিকেলের দিকে তার কাছে গিয়েছিল। হারাণ তখন বেড়াতে গেছে।
বলেছিল, দেখুন, আমিও এ রোগে মবতে বসেছিলাম। আমার কাছে টাকা নিলে কোনো দোষ
নেই।
লতা বলেছিল, আপনি অনেক করেছেন। আমি চিরজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। টাকার দরকার নেই। তবু শচীন নড়ে না দেখে লতা বলেছিল, টাকা দিয়ে কেনার মানুষ আমি নই শচীনবাবু। শচীনের রাগ হয়েছিল খুব। তাবপর আর কোনো খবর নেয়নি। পথে মুখোমুখি হলেও যেচে
কথা বলেনি।
কিন্তু সেদিন বিকালের দিকে এমনভাবেই তাকে মুখোমুখি হতে হল লতার যে বাগ নিয়ে পাশ কাটিযে যাওয়ার সাধ্য তার হল না।
জনাকীর্ণ রাজপথ। তাবই ধাবে ফুটপাতে কম্বল বিছিয়ে লতা বসে আছে। তাব পিছনে দেযালে হেলান দিয়ে রাখা মস্ত একটা বিজ্ঞাপন।
যক্ষ্মা নিবাবণী মহাকর্কট বটিকা।
এই বটিকায় আমার স্বামীব যক্ষ্মা সারিযাছে।
সপ্তাহে একটি বটিকা সেবনে যক্ষ্মার ভয় থাকে না।
প্রতি বটিকা-এক আনা।
কত পয়সা কতদিকে যায়-সপ্তাহে এক আনা খরচে মহাবোগ ঠেকান।
শচীন একদৃষ্টে চেয়ে থাকে। লতা একটু হাসে।
তখন আপিস ছুটি হয়েছে। বিক্রিব সময়। খানিক তফাতে শচীন অপেক্ষা করে দাড়িয়ে থাকে।
সন্ধ্যার খানিক আগে লতা উঠে বিজ্ঞাপনটি ভাঁজ করে, কম্বলটি তুলে গুটিয়ে নেয়, ব্যাগটি হাতে করে এগিয়ে ট্রামের অপেক্ষায় দাঁড়ায়।
শচীন কাছে গিয়ে বলে, এতে সত্যিসত্যি চলছে আপনার?
লতা বলে, চলছে বইকী। হাতে কিছু পয়সাও জমেছে। আশ্চর্য হচ্ছেন কেন? যে দেশে কাশি হলে ফাঁসির আতঙ্ক জাগে, সে দেশে এক আনা খরচ করে লোকে নিশ্চিন্ত হতে চাইবে না? শচীন বুঝতে পারে, লতা ফাঁসি বলতে টিবি-র কথাই বলছে।