shabd-logo

আর না কান্না

1 January 2024

2 Viewed 2

কান্না গল্পের সাত বছরের ছিচকাদুনে মেয়েটা মাইরি আমায় অবাক করেছে। যেমন মা-বাবা, তেমনই মেয়ে। শুধু কান্না আর কান্না।

যত চাও রুটি খাও শুনে কোথায় খুশিতে ডগমগ হবে, ভাববে থাকগে, আজকে পেটটা আমার ভরবেই ভরবে-তা নয়। একমুঠো ভাতের জন্য কান্না। রেশনের চালের ভাত বুটি এমনি চিবোলে মিঠে লাগে, একটু গুড় পেলে মাখিয়ে নিলে হয়ে যায় একেবারে পাটিসাপটা পিঠে। রুটি খেয়ে পেট ভরে জল খাও, তার কাছে নাকি ভাত খাওয়াস পেট ভরা ছিটেফোঁটা ডাল, এইটুকু তরকারি, তাহ দিয়ে ছিরি আছে নাকি ভাত খাওয়ার?

প্রাণটা ভাত চেয়ে চোঁ চোঁ করে, বইকী ভেতো মনিষ্যির। বড়োদের আরও বেশি কবে। কিন্তু ভাতের থালা সামনে নিয়ে বসলে প্রাণটা যে আবার লাগসই পরিমাণে ভালো তরকারি মাছ চায় মশাই। শুধু ডাল হোক, শুধু একটা তবকারি হোক, তাই দিয়ে এক দিন্তে বুটি মেবে দেওয়া যায় (যেন এক দিন্তে বুটি গরিবদের মেরে দিতে দিচ্ছে দুর্ভিক্ষ-পোষক সদাশয় কংগ্রেস সরকার।। বুটি স্রেফ ভুলিয়ে দেয় মাছের শোক। বাটিভরা ডাল নেই, ভাজা নেই (তেল লাগে) চচ্চড়ি, শুক্ত, মরিচ ঝোল, ডালনা-ফালনার যে কোনো একটা যদি থাকে তো দু-গেরাসের বেশি ভাত মাখার মতো নেই, নাকে একটু আঁশটে গন্ধ নেই, সারাদিন হাড়ভাঙা খাটনি খেটে রাত এগারোটায় হয় কাদার মতো গলা গলা আর নয়তো কড়কড়ে শক্ত ভাত খেতে পেয়ে কে যে সুখে একদম গদগদ

হয় বাংলায়?

ঠান্ডা বরফ ভাত! সেটা ভুললে চলবে না। রান্না হয় সন্ধ্যায়-গুদাম-পচা সরকারি চালের বেটিকা গন্ধেই বুঝি ন্যাকা মেয়ের ভাতের জন্য কান্না বাড়ে। কর্তাকে গরম গরম ভাত দিয়ে খুশি করতে যে গিন্নি রাত এগারোটা পর্যন্ত উনানে কয়লা পোড়াবে, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে যে কর্তাব্যক্তিটা সকাল আটটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত খেটে মরে সে মানুষটা গিন্নির সাথে কাব্যি করবে না, মারবে এক চাঁটি।

গা-ঘেঁষা ঘর। যতীনের একগন্ডা ছেলেমেয়ে আবদার তোলে শুনতে পাই, এ বেলা রুটি করো মা. রুটি করো। করো না রুটি? আটা কম তো কম করে করো না। ভাতের সঙ্গে একটা-দুটো করে খাব। বাবারে বাবা, কী রুটিই তোরা খেতে পারিস!

একটা করে দিয়ো?

দাঁড়া দেখি হিসেব করে।

হিসাব ছাড়া পথ নেই। সব বিষয়ে সব কিছুর গোনা-গাঁথা ওজন করা হিসাব দিয়ে কোনোমতে দিন গুজরান। আটার পরিমাণ দেখে অবলা তার জীর্ণ পুরানো সেলাই করা ব্লাউজটা গা থেকে খুলে ফেলে দিতে দিতে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

না, এ বেলা রুটি হবে না।

শুধু এ বেলা নয়, এ হপ্তার বাকি ক-টা দিন আর রুটি পাবে না কেউ, ভাতের সঙ্গে দুখানা একখানাও নয়। সকাল আটটায় বেরিয়ে রাত এগারোটায় ফিববে যে মানুষটা, ক-দিন তার বাইরে খাবার জন্য রুটি করে দিতেই এ আটাটুকু লেগে যাবে। বাইরে কিনে খেতে বড্ড খরচ। 

তবু আবদারের কলরব ওঠে ছোটো দুজনের। তারা এখনও ভাব-জগতের মায়া একেবারে কাটিয়ে উঠে বাস্তব জগতের কঠোরতা সম্পূর্ণ মানতে পারেনি, এখনও বুকে আশা নিয়েই আবদার করে। তবে এক ধমকে তারা থেমে যায়।

সাত বছরের মেজোমেয়েটা ফোঁস করে ওঠে, তুমি সব বাবার জন্যে রেখে দেবে। আমরা ভেসে এসেছি? বাবা বলে কত কিছু কিনে খায়-তার গালে একটা চড় পড়ে সশব্দে।

চড়চাপড় এই মেয়েটাই খায়। ওর স্বাস্থ্যটাই ভালো, খিদেও বেশি-ওই বেশি খাইখাই করে। অন্য তিনজনেই রোগা দুর্বল-দশ বছরের বড়োমেয়েটা তো প্যাকাটির মতো দেখতে। ওদের গায়ে হাত তুলতে ভরসা হয় না-হয়তো মরেই যাবে, খিদ্যে কাতর বাপের চড় খেয়ে চাষির যে ছেলেটার মরে যাবার খবর খবরের কাগজে বেরিয়েছে, তার মতো।

অন্য তিনজনকে বশে আনতে অনেক সময় শাসন জোটে একা ওই সাত বছরের মেজোমেয়েটার। রোগা ক্ষীণজীবী বড়োমেয়েটা দু-চারখানা বাসন মাজে, ঘটিতে করে জল তোলে, ঘর ঝাঁট দেয়, দোকানে যায়। পুতুল খেলা ফেলে মেজোবোন দিদির সাথে হাত লাগায়। পুতুল খেলার চেয়ে তার ভালো লাগে টুকটাক সংসারের কাজ করাব খেলা।

সে দিদির কাজ করে, মা-র কাজ নয়। মা-ব সঙ্গে তার বিবাদ। সে মিনতি করে বলে, দিদি,

আমায় দে না বাটিটা মাজি।

মা বাটিটা এগিয়ে দিতে বললে সে শুনতে পায় না। ধমক দিয়ে হুকুম করলে অনিচ্ছার সঙ্গে ওঠে, পুতুলকে বলে যায়, বোস বাছা একটু, পরে খেতে দেব। রাক্ষুসি ডাকছে।

আটটা বাজবার আগেই ঝিমিয়ে নেতিয়ে আসে চারজন। সেটাও মেজাজ বিগড়ে দেয় অবলার, কিন্তু বেচারিরা করবে কী? খাদ্যে মেটে ক্ষয়ের পূরণ আর পুষ্টির প্রয়োজন ঘুম তাই ঘনিয়ে আসে আরও বেশি ক্ষয় ঠেকাতে। এ বিষয়ে প্রকৃতি ছেড়ে কথা কষ না কাউকে। ওই তেতলা বাড়ির ভুঁড়িওলা মালিক ঘনশ্যামবাবু সাতজন ভাড়াটের কাছে লোকটা মাসে বাড়িভাড়াই পায় চারশো টাকার মতো-অনিদ্রা রোগ খুব বেশি বেড়ে গেলে মাঝে মাঝে তাকেও মাছ মাংস মিঠাই মন্ডা একেবারে বাদ দিয়ে উপোস করতে হয়। অতিপুষ্ট শরীরটা তার যথারীতি পুষ্টি না পেয়ে আপসে একটু ঘুম এনে দিয়ে নিদ্রাহীনতার অসহ্য কষ্টে তাকে পাগল হতে দের না।

চারজনে একসঙ্গে খেতে বসে। তার মানে চারজনকেই একসলো বসানো হয়, একসঙ্গে চুকিয়ে দিলেই হাঙ্গামা ঢুকে যায়।

অবলারও সহার সীমা আছে তো। আমি আলু পাইনি মা! আমায় ডাঁটা দিলে না যে? এট্টুখানি ডাল দাও মা, শুধু এট্টুখানি! পেট ভুরেনি!

আমারও ভরেনি!

খা। খা। খা। আমার হাড়মাস চিবিয়ে খা তোরা।

রোগা বড়োমেয়েটা চুপচাপ খায়। এবার সে তার ক্ষীণকণ্ঠে যতদুর পারে চড়িয়ে বলে, তুমি যেন কেমন করো মা। রুটি দিলে না একখানা, আরেক হাতা করে ভাত দাও না আমাদের? খিদের চোটে রাতে ওরা কাঁদলে ফের মারবে তো?

ঘরে বসে মেয়েটাকে যেন চোখের সামনে দেখতে পায়। একটু বাকা মেরুদন্ডটা সে সোজা করেছে। শীর্ণ মুখে যেটুকু ক্ষোভের স্ফুরণ হয়েছে, খাঁটি দরদির চোখ ছাড়া নজরেই পড়বে না। ছোটো ছোটো চোখ, সে চোখে ভর্ৎসনার ঝিলিক দেখে কালো হরিণ চোখের কথা ভুলে গিয়ে কবীন্দ্র রবীন্দ্রনাথ নতুন প্রতিবাদের কবিতা লিখতেন।

তোমরা সব চেটেপুটে খাবে, আমরা উপোস দেব? দ্যাখ তো হাঁড়িতে ভাত আছে কতটুকু? তোদের জন্যে দুবেলা হাঁড়ি ঠেলছি, আমি খাব না? সারাদিন হাড়ভাঙা খাটছে, সে মানুষটা খাবে না?

মা-কে কৈফিয়ত দিতে হয় ছেলেমেয়ের কাছে, প্রচার করতে হয় যে মা হওয়া কী মুখের কথা। বাপ হওয়া কী সহজ কাজ। মায়ের কত ত্যাগ, বাপের কত ত্যাগ, তাতেই মুগ্ধ সন্তুষ্ট থাকা উচিত সন্তানের।

মেজোমেয়েটা খ্যাঁচোড়। সভ্যতা-ভব্যতা-ভদ্রতা কিছু শেখেনি সাত বছর বয়সে। সে ফ্যাস করে ওঠে, ইস! তোমরা খাবে না-খাবে আমাদের কী? আরও ভাত রাঁধনি কেন? তোমরা খাও না যত খুশি, আমরা না করেছি? আমাদের খালি মারবে, আমাদের খালি পেট ভরে খেতে দেবে না।

হে রাত আটটার তারায়-ভরা আকাশ, একবার বিদীর্ণ হও। কোটি বজ্রের গর্জনে ফেটে চৌচির হয়ে যাও। আমার বাংলার ছেলেমেয়েরা আজ খিদেয় কাতর হয়ে একখানা বুটিব জন্য, একমুঠো ভাতের জন্য সংগ্রাম শুরু করেছে নিরুপায় মায়ের সঙ্গে।

রাত সাড়ে-দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরে জামাকাপড় ছেড়ে যতীন দুদণ্ডের জন্য আমার ঘরে বসে। আড্ডা দিতে নয়-সারাদিন যা করেছে তার একেবারে বিপরীত কাজ আহার এবং নিদ্রার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে। যে খাটে সে জানে যে খাটুনি শেষ করেই খিদের চোটে দিশেহারা হয়ে খেতে নেই।

তাতে অসুখ হয়। শোষণের স্তর থেকে একেবারে পোষণের স্তরে আছাড় খেয়ে পড়লে সামঞ্জস্য ঠুনকো কাঁচের মতো ভেঙে চৌচির হয়ে যায়।

আমার দেওয়া বিড়িটা ধরায়। টানতে গিয়ে কাশে। গায়ে বাতাস লাগায়। হাঁফ ছাড়ে। দেহ মনের টান করা তন্ত্রী আর স্কুগুলি ঢিল করে দেয়। আমার চোখের সামনে দুদণ্ডে জীবস্তু মানুষটা ঝিমিয়ে নেতিয়ে আসে! এও বাঁচার লড়ায়ের কৌশল। সকাল থেকে চলেছে সক্রিয় লড়াই- এখনকার লড়াই নিষ্ক্রিয় বিরামের। চিন্তা ভয় ক্ষোভ দুঃখ স্নেহ-মমতা আনন্দ উদ্দীপনা ন্যাকামি কোনো অজুহাতেই আর একবিন্দু বাড়তি শক্তিক্ষয় করা নয়।

খেতে বসেই টের পায় নিজের ভাগ কমিয়ে অমলা তার পাতে ভাত বেশি দিয়েছে। দুটো রসগোল্লা নয়, পেটে খিদে নিয়ে পেট ভরবে না জেনে দুমুঠো ভাত বেশি দেওয়া। এ ত্যাগের আগের দিনের মূল্য দেবার সাধটা মনের কোণে একবার উকি দিয়ে যায় বইকী, দরদ দেখিয়ে বলতে ইচ্ছে হয় বইকী যে তুমি আমায় রাক্ষস বানাবে!

কিন্তু সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে নিছক আগের দিনের জের টানার জন্যেই ন্যাকামি করা কি পোষায় মানুষের?

খেতে শুরু করে খাঁটি দরদ দেখিয়ে বলে, তুমিও বসে যাও? মিছে রাত করবে কেন? হাঁ, আমিও বসি।

ফাঁকা অঁদের আর মিছে চোখে জল আসার চেয়ে কত মনোরম এই বোঝাপড়া। ভোরে উঠে উনান ধরাতে হবে অবলাকে, রাতের আবছা-আঁধার বজায় থাকা ভোরে। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিয়ে তাকে বিশ্রাম করতে বলাটাই সব চেয়ে সুমিষ্ট আদর।

অবশ্য অবস্থাটা এ রকম বলে।

তারা শোয়। তাদের চোখে গাঢ় ঘুম ঘনিয়ে আসে। ঘুমোতে কেন, শ্বাস উঠে মরতেও দু-চার মিনিট সময় লাগে মানুষের। সেই ফাঁকে মেজোমেয়েটা উঠে চলে যায় রান্নাঘরে। 

খিদের আগুনে পুড়ে গিয়েছে তার ঘুম। অন্ধকারে কোথায় গেল, কী করতে গেল মেয়েটা? অবলাই ওঠে গায়ের জোরে। বলে, মাগো, আর তো পারি নে!

বুটি পায়নি মেজোমেয়েটা। অন্ধকারে আটা নিয়ে সে জলে গুলে খাচ্ছে। খানিক ছড়িয়েছে মেঝেতে।

এঁটো হাতাটা তুলে নিয়ে অবলা প্রাণপণে বসিয়ে দেয় তার পিঠে। আর্তকান্নায় চিরে যায় রাত্রির অন্ধকার।

হট্টগোলে চমকে জেগে কেঁদে উঠেই কান্না থামায় ক্ষীণজীবী রোগা বড়োমেয়েটা।

রান্নাঘরে গিয়ে দ্যাখে কী, বোনটি তার আকাশ-চেরা গলায় চেঁচাতে চেঁচাতে আটার হাঁড়িটা কাত করে ফেলে হাত-পা ছুঁড়ে তছনছ করে উড়িয়ে দিচ্ছে আটাগুলি, বাবা তার দাঁড়িয়ে আছে পুতুলের মতো, মা হাতাটা উঁচু করেছে মেয়েকে আরেক ঘা বসিয়ে দেবার জন্য।

রোগা মেয়েটা দুহাতে হাতাটা চেপে ধরে কেড়ে ছিনিয়ে নেয়। যাকে মাববার জন্য হাতা উঁচু করা, হাতা-ধরা হাত দুটো তারই মায়ের, তাই রোগা কাঠি মেয়েটার ক্ষীণ শক্তিটুকুই হাতাটা কেড়ে নেবার পক্ষে যথেষ্ট হয়। সপ্তমে তোলা তীক্ষ্ণ বাঁশির আওয়াজে বলে, পেতলের হাতা দিয়ে মারলে

যে মরে যাবে মা?

ও! বড়ো যে দরদি আমার।

বলে রোগা মেয়েটার গালে চড় কষিয়ে দেবার জন্য অবলা হাত তুলেছে, যতীন তার হাতটা চেপে ধরে।

কী করছ?

অবলা ঠান্ডা হয়ে বলে, আর সয় না, এবার আমি মরব!

মেয়ে বলে, মরবে তো নিজে নিজে মরো না? আমাদের মারছ কেন?

12
Articles
ফেরিওয়ালা
0.0
"ফেরিওয়ালা" একটি উপন্যাস যা একজন ফেরিম্যানের জীবনকে ঘিরে আবর্তিত হয়, এই পেশায় ব্যক্তিদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জ এবং অভিজ্ঞতাগুলিকে তুলে ধরে। উপন্যাসটি তৎকালীন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার সূচনা করে, বাংলার নদী সংস্কৃতির একটি প্রাণবন্ত চিত্র উপস্থাপন করে। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের গল্প বলা তার গভীরতা এবং মানুষের আবেগের চিত্রায়নের জন্য পরিচিত, এবং "ফেরিওয়ালা" ব্যতিক্রম নয়। উপন্যাসটি দারিদ্র্য, শ্রেণী সংগ্রাম এবং ব্যক্তির উপর সামাজিক নিয়মের প্রভাবের মতো বিষয়গুলিকে সম্বোধন করে। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের লেখা প্রায়শই মানুষের মনোবিজ্ঞানের গভীর উপলব্ধি এবং সামাজিক পরিস্থিতির গভীর পর্যবেক্ষণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। "ফেরিওয়ালা" তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয় এবং একটি গ্রামীণ পরিবেশে সাধারণ মানুষের সংগ্রামের চিত্রায়নের জন্য প্রশংসিত হয়।
1

ফেরিওলা

28 December 2023
1
0
0

বর্ষাকালটা ফেরিওলাদের অভিশাপ। পুলিশ জ্বালায় বারোমাস। দুমাসে বর্ষা হয়রানির একশেষ করে। পথে ঘুরে ঘুরে যাদের জীবিকা কুড়িয়ে বেড়ানো তাদের প্রায় পথে বসিয়ে দেয়। না ঘুরলে পয়সা নেই ফেরিওলার। তাব মানেই কোনোমতে

2

সংঘাত

28 December 2023
1
0
0

বিন্দের মা তার খড়ের ঘবের সামনের সবু বারালটুকুর ঘেবা দিকে তাদের আশ্রয় দিয়েছিল। ঘরে ঢুকবার দরজা বাবান্দার মাঝামাঝি, তার এদিকের অংশটা ঘেবা, ওদিকটা ফাঁকা। চালাটা বারান্দার উপরে নেমে এসেছে, কোমর বাঁকিয়ে ন

3

সতী

29 December 2023
1
0
0

বাস্তার ধারে একটা লোক মরে পড়ে আছে। আগের দিন পাড়ায় কেউ তাকে মরাব আযোজন করতে দ্যাখেনি। তীর্থগামিনী পিসিকে হাওড়া স্টেশনে গাড়িতে তুলে দিয়ে প্রায় বাত এগারোটার সময় নরেশ বোধ হয় শেষ বাসেই রাস্তায় প্রায় ওখানট

4

লেভেল ক্রসিং

29 December 2023
1
0
0

দুর্ঘটনায় গাড়িটা জখম হয়। অল্পের জন্য বেঁচে যায় ভূপেন, তার মেয়ে ললনা এবং ড্রাইভার কেশব। খানিকক্ষণ কেউ কথা বলতে পারে না। ললনা থরথর করে কাঁপে। রুমালে চশমা মুছে, মুখ মুছে ভূপেন জিজ্ঞাসা করে, এটা কীরকম ব

5

ধাত

29 December 2023
1
0
0

একটা নতুন বাড়ি উঠছে শহরতলিতে। খাস শহরে স্থানাভাব হলেও আনাচে-কানাচে এবং শহরের আশেপাশে বাড়ি তো উঠছে কতই। কাঠা তিনেক জমিতে ছোটোখাটো এই দোতলা বাড়িটা কিন্তু উঠছে আমাদের গল্পের জন্য। বাড়িটা উঠছে তরুণী অমলা

6

ঠাঁই নাই ঠাঁই চাই

30 December 2023
0
0
0

দেবানন্দ প্রথমে তাদের দায়িত্ব ঘাড়ে নিতে কিছুতেই রাজি হতে চায়নি। তার নিজের ঘাড়ের বোঝাটাই কম নয়। রোগা দুর্বল স্ত্রী, একটি বিবাহিত ও একটি কুমারী মেয়ে, দুটি অল্পবয়সি ছেলে এবং একটি শিশু নাতি। যে অবস্থায় য

7

চুরি চামারি

30 December 2023
0
0
0

লোকেশ মাইনে পেল চাব তারিখে। রাত্রে তার ঘবে চুবি হয়ে গেল। সেদিনও আপিস থেকে বাড়ি ফিবতে লোকেশের বাত ন টা বেজে গিয়েছে। কোথাও আড্ডা দিতে সিনেমা দেখতে বা নিজেব জবুনি কাজ সারতে গিয়ে নস, সোজা আপিস থেকে বাড়ি

8

দায়িক

30 December 2023
1
0
0

অলুক্ষুনে সন্তান? নইলে প্রায় এগারোটি মাস মায়ের পেট দখল করে থেকে এমন অসময়ে ভূমিষ্ঠ হয়, অসময়েব এই বাদল! আর হাড়-কাঁপানি শীত শুরু হবার পর? মেয়েটাকে মারবার জন্যই কি দেবতাদের ইঙ্গিতে প্রকৃতির এই নিষমভাঙা

9

মহাকর্কট বটিকা

1 January 2024
1
0
0

ঘুষঘুষে স্বব ছিল। পুত্তমুক বাশি। তার ওপর গলা দিয়ে উঠন দুফোটা বত্ত। আবও টা লমণ দরব'র হস ব্যাপার বুঝতে এব পরেও এই মনুষ খানিকটা হয়তো মেশানো আশাও করতে পাবে যে ধ্রুব কাশি জ্ঞার বক্ত ওঠাটা সে রকম এয়ানর কি

10

আর না কান্না

1 January 2024
1
0
0

কান্না গল্পের সাত বছরের ছিচকাদুনে মেয়েটা মাইরি আমায় অবাক করেছে। যেমন মা-বাবা, তেমনই মেয়ে। শুধু কান্না আর কান্না। যত চাও রুটি খাও শুনে কোথায় খুশিতে ডগমগ হবে, ভাববে থাকগে, আজকে পেটটা আমার ভরবেই ভরবে-তা

11

মরব না সস্তায়

1 January 2024
1
0
0

বলে কিনা, চুলোয় যাক তোমার ঘরসংসার! আমি এত খেটে খেটে মরতে পারব না। দুজনেই বলে, যখন-তখন-যে যাকে যখন বলার একটা সুযোগ বা অজুহাত পায়। পরস্পরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চুলোয় পাঠাবার জন্যই যেন এতকাল ধরে গায়ের রক্

12

এক বাড়িতে

2 January 2024
1
0
0

বিলাসময়ের স্ত্রী সুরবালা শুনে বলে, না, আত্মীয়বন্ধুর সলো দেনা পাওনার সম্পর্ক করতে নেই। বড়ো মুশকিল হয়। বাইরের লোকের সঙ্গে সোজাসুজি কারবার, যা বলবার স্পষ্ট বলতে পারবে। আত্মীয় বন্ধুর কাছে চক্ষুলজ্জায় মুখ

---