ডাক্তারি পড়াশোনার পর্যাপ্ত সুযোগ না পেয়ে ভারতের অনেক পড়ুয়াই বিদেশে পাড়ি দেন । ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সেই বিষয়টি আরও বেশি করে নজরে এসেছে সবার। এই আবহে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজের ডায়মন্ড জুবলি উদযাপনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেই সময়ই তিনি ঘোষণা করেন, দেশের প্রতিটি জেলাকে 'আয়ুষ্মান জেলায় পরিণত করতে সব জেলাতেই একটি করে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।'
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বলেছিলেন 'এখন যে প্রতিষ্ঠানে আমি দাঁড়িয়ে আছি তা সম্মানীয় মহাত্মা গান্ধীর নামের সঙ্গে জড়িত। বাপুর মূল্যবোধ এবং ভাবধারার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে এক নয়া শিক্ষা নীতি উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই আবহে সরকার 'এক জেলা এক মেডিক্যাল কলেজ' নীতিতে কাজ করা শুরু করেছে। দেশের প্রতিটি জেলাকে আয়ুষ্মান জেলায় পরিণত করতে সব জেলাতেই একটি করে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।'
এর আগে গতবছরই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আরও ৫০টি মেডিক্যাল কলেজ খোলার অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্য়ে ৩০টি সরকারি ও ২০টি বেসরকারি কলেজ ছিল। এই নতুন কলেজগুলির ফলে দেশে এমবিবিএস-এর আসন সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। নতুন অনুমোদপ্রাপ্ত কলেজগুলির মধ্যে ১৩টি তেলাঙ্গানায় অনুমোদন পায়, ৫টি অনুমোদিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও রাজস্থানের জন্য। ৪টি মেডিক্যাল কলেজের অনুমতি দেওয়া হয় মহারাষ্ট্রে। অসম, গুজরাট, হরিয়ানা, কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর জন্য অনুমোদন দেওয়া হয় ৩টি করে মেডিক্যাল কলেজের। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ, মধ্য়প্রদেশ, নাগাল্যান্ডের জন্য ২টি করে মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্র। এই ৫০টি অনুমোদিত মেডিক্যাল কলেজ মিলিয়ে দেশের মোট মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা দাঁড়িয়ে ৭০২-তে। এই আবহে ভারতে এমবিবিএস আসন সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ১,০৭,৬৫৮-এ। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দেশে মোট এমবিবিএস আসন সংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার। গত ৯ বছরে তা দ্বিগুণ হয়েছে।
দিকে রবিবার ভোপাল এইমস-এর বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মনসুখ মাণ্ডব্য। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশ জুড়ে স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে ছিল ১৯০টি ওষুধ প্রস্তুতকারক ইন্ডাস্ট্রি, ৫৫টি WHO-GMP উৎপাদন ইউনিট এবং ১৬৩টি রক্ত কেন্দ্র। সেদিন মনসুখ মাণ্ডব্য সিডিএসসিও-র সাবজোনার অফিসেও যান। সেখানে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'সাবজোনাল অফিসের মাধ্যমে ওষুধের গুণগত মান পরীক্ষা করার ফলে এটা নিশ্চিত হবে যে সব মানুষ ভালো মানের ওষুধ পাচ্ছেন।'