সংক্ষিপ্ততম টেস্ট জয়ের পরই রেগে আগুন হয়ে গেলেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মাত্র দেড়দিনে কেপটাউনে টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে তথাকথিত পিচ বোদ্ধাদের তুমুল আক্রমণ করলেন । যে পিচ বোদ্ধারা ভারতের পিচে বল ঘুরতে দেখলেই রে-রে করে তেড়ে আসেন কিন্তু, কেপটাউনে দেড়দিনে ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও মুখে কোনও রা কাড়েননি। তাঁদের একেবারে কড়া ভাষায় আক্রমণ জানিয়ে রোহিত সোজাসাপটা বলে দেন, ভারতের পিচে প্রথমদিনে ধুলো উড়লেই হইহই শুরু হয়ে যায়। কেপটাউনে কী হল? ভারতীয় পিচ নিয়ে ওই বোদ্ধাদের একদম মুখ বন্ধ রাখারও পরামর্শ দেন রোহিত। শুধু তাই নয়, সরাসরি আইসিসিকেও নিশানা করেন। ম্যাচ রেফারিরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন না বলেও ঘুরিয়ে অভিযোগ করেন ভারতীয় অধিনায়ক।
রোহিত যে সেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন, তা কেপটাউনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় টেস্টের পরেই হয়েছে। যা বলের নিরিখে ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম টেস্ট। আর সেই ইতিহাস তৈরির ক্ষেত্রে যে পিচের একটা ভূমিকা ছিল, তা বুঝিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরও। পিচের সমালোচনাও করেছে। সেই পরিস্থিতিতে রোহিত বলেন, ‘আমি একটা জিনিস বলতে চাই যে এই ম্যাচে কী হয়েছে, সেটা আমরা দেখেছি। কীরকম আচরণ করেছে পিচ, সেইসব যাবতীয় জিনিস (আমরা দেখেছি)। সত্যি কথা বলতে যতক্ষণ ভারতে প্রত্যেকে মুখ বন্ধ রাখছেন এবং ভারতীয় পিচ নিয়ে বেশি বকবক করছেন, ততক্ষণ এই ধরনের পিচে খেলতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’
কারও নাম না করলেও রোহিতের নিশানায় যে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের একশ্রেণির পিচ বোদ্ধারা ছিলেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যাঁরা ভারতের পিচে বল ঘুরলেই কাঁদুনি গাইতে শুরু করেন। কিন্তু কেপটাউনের ক্ষেত্রে মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন। তাঁদেরই আক্রমণ শানিয়ে রোহিত বলেন, ‘নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে আপনি এখানে আসেন। হ্যাঁ, এটা বিপজ্জনক। এটা চ্যালেঞ্জিং। তই লোকজন যখন ভারতে (খেলতে আসে), তখন সেখানেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। দেখুন, যখন আপনি টেস্ট ক্রিকেট খেলতে এসেছেন, তখন আসল পুরস্কারের মতো বিষয় নিয়ে কথা বলেন। আমার মতে, আমরা যেন সেটার স্বপক্ষেই থাকি।’
পিচ বোদ্ধাদের আক্রমণ শানানোর পরে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসিকেও নিশানা করেন রোহিত। একদিনের বিশ্বকাপ ফাইনালের পিচকে কম রেটিং দেওয়ার রেশ ধরে রোহিত বলেন, ‘আমরা যেখানেই যাই না কেন, সর্বত্র আমাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। বিশেষত ম্যাচ রেফারিদের (নিরপেক্ষ থাকতে হবে)। কীভাবে পিচের রেটিং করবেন, সেটা নিয়ে এই ম্যাচ রেফারিদের কয়েকজনকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে বিশ্বকাপের ফাইনালের পিচকে গড়পড়তার থেকে নিম্নমানের রেটিং দেওয়া হয়েছিল। ফাইনালে ওই পিচে এক ব্যাটার শতরান করেছিল। সেটা কীভাবে বাজে পিচ হতে পারে?’
তবে শুধুমাত্র একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে আমদাবাদের পিচ নিয়ে নয়, গত বছর ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ইন্দোর টেস্টের পিচ নিয়েও সন্তোষপ্রকাশ করেনি আইসিসি। আর সেক্ষেত্রে ম্যাচ রেফারিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রোহিত। তিনি বলেন, ‘আইসিসি ও ম্যাচ রেফারিদের এইসব বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে। স্রেফ দেশের ভিত্তিতে (পিচের রেটিং না করে), কীসের ভিত্তিতে তারা পিচের রেটিং করছে, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমি যে কোনও পিচে খেলতে রাজি আছি। আমরা এই ধরনের (কেপটাউন) পিচেও নিজেদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চাই। এরকম পিচে খেলার জন্য নিজেদের নিয়ে গর্ববোধ করি আমরা। কিন্তু আমরা যেটা বলতে চাইছি, সেটা হল যে নিরপেক্ষ থাকুন।’