shabd-logo

বিভিন্ন গ্রন্থের বিজ্ঞাপন

5 January 2024

0 Viewed 0

ঋজুপাঠ

প্রথম ভাগ

বিজ্ঞাপন

ঋজুপাঠের প্রথম ভাগ প্রচারিত হইল। ইহাতে পঞ্চতন্ত্রের কয়েকটা উপাখ্যান ও মহাভারতের কিয়দংশ উদ্ধৃত করা গিয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের রচনাপ্রণালী দৃষ্টে স্পষ্ট বোধ হইতেছে, ইহা অতি প্রাচীন গ্রন্থ। প্রাচীন বলিয়া ইহার রচনা অত্যন্ত সহজ। সংস্কৃত ভাষাতে এরূপ সহজ গ্রন্থ আর দৃষ্টিগোচর হয় না। এই নিমিত্ত, যাহারা প্রথম সংস্কৃত পড়িতে আরম্ভ করে পঞ্চতন্ত্র তাহাদিগের অতি উপযুক্ত পুস্তক। কিন্তু মধ্যে মধ্যে অনেক দীর্ঘ সমাস আছে; অনেক অসার ও অসম্বন্ধ কথা আছে; এবং কয়েকটী অতি অঙ্গীল উপাখ্যান আছে। অধুনাতন গ্রন্থের স্তায়, রচনার মাধুর্য্য নাই; কথাযোজনার চাতুর্য্য নাই। অধিকন্তু, লিপিকর প্রমাদ বশতঃ স্থানের স্থানের পাঠ এমত অপভ্রংশিত হইয়াছে যে অর্থবোধ ও তাৎপর্য্য গ্রহ হওয়া দুর্ঘট। এরূপ গ্রন্থ আন্তস্ত পাঠ করা অনাবশ্বক ও অবিধেয় বোধ হওয়াতে, কয়েকটা উপাখ্যান মাত্র পরিগৃহীত হইল। অল্পবয়স্ক বালক দিগের অধ্যয়নোপযোগি করিবার নিমিত্ত ঐ কয়েকটা উপাখ্যানেরও কোন কোন অংশ পরিবর্জিত ও কোন অংশ পরিবর্তিত হইল। মহাভারতেরও যে অংশ উদ্ধৃত হইয়াছে তাহারও কোন কোন ভাগ পরিত্যাগ ও কোন কোন স্থানে পরিবর্ত করা গিয়াছে।

কলিকাতা। সংস্কৃত কালেজ। সংবৎ ১৯০৮। ১লা অগ্রহায়ণ।


ঋজুপাঠ

দ্বিতীয় ভাগ

বিজ্ঞাপন

ঋজুপাঠের দ্বিতীয় ভাগ রামায়ণ হইতে সংগৃহীত হইল। রচনাপ্রণালী দৃষ্টে স্পষ্ট প্রতীতি জন্মে, রামায়ণ অতি প্রাচীন গ্রন্থ। এই প্রাচীন গ্রন্থ মহর্ষি বাল্মকিপ্রণীত বলিয়া প্রসিদ্ধি আছে। কোন কোন আলঙ্কারিকেরা রামায়ণকে মহাকাব্যমধ্যে গণনা করিয়া থাকেন। কিন্তু তাঁহারা তাদৃশ কাব্যের যে সকল লক্ষণ নির্দেশ করিয়াছেন, তৎসমুদায় কালিদাসাদিপ্রণীত রঘুবংশাদি অপেক্ষাকৃত নব্য কাব্যগ্রন্থসমূহে যেরূপ লক্ষিত হয়, প্রাচীন কাব্য রামায়ণে সেরূপ লক্ষিত হয় না। বাল্মীকিকাব্যে পৌনরুক্ত, প্রাসঙ্গিক বিষয়ের অতি বিশ্বত বর্ণনা প্রভৃতি কতিপয় গুরুতর দোষ আছে। যাহা হউক, অনা- য়াসে এই নির্দেশ করা যাইতে পারে, সংস্কৃত ভাষায় এরূপ প্রাঞ্জল ও প্রসাদগুণবিশিষ্ট পদ্ম গ্রন্থ আর নাই। বামায়ণের মধ্যে অযোধ্যাকাণ্ডের রচনা যেরূপ চমৎকারিণী ও চিত্তহা'রণী, অ্যান্ড্য কাণ্ডের রচনা সেরূপ নহে। এই নিমিত্ত ঋজুপাঠের দ্বিতীয় ভাগে অযোধ্যাকাণ্ডের কতিপয় উৎকৃষ্ট অংশ সঙ্কলিত হইল। সঙ্কলিত অংশ সকলের কোন কোন ভাগ অনাবশুক বোধে পরিত্যক্ত হইয়াছে।

কলিকাতা। সংস্কৃত কালেজ। ২২এ ফাল্গুন। সংবৎ ১৯০৮

ষষ্ঠ সংস্করণের বিজ্ঞাপন

এই সংস্করণে শিক্ষাকার্য্যের সৌকর্য্যার্থে অপেক্ষাকৃত দুরূহ অংশসমূহের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিম্ন দেশে সন্নিবেশিত, এবং গ্রন্থকলেবরের অতিবিষ্কৃতিদোষপরীহারার্থে মূলের শেষ কিয়দংশ পরিত্যক্ত হইল।

কলিকাতা

১লা চৈত্র। সংবৎ ১৯২১।

শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শম্মা


ঋজুপাঠ বিজ্ঞাপন

তৃতীয় ভাগ

ঋজুপাঠের তৃতীয় ভাগ হিতোপদেশ, বিষ্ণুপুরাণ, মহাভারত, ভট্টিকাব্য, ঋতুসংহার ও বেণীসংহার এই কয়েক গ্রন্থ হইতে সংগৃহীত হইল। এই সকল গ্রন্থের যে যে স্থান উদ্ধৃত হইয়াছে, উহাদের কোন কোন ভাগ এক বারেই পরিত্যক্ত ও কোন কোন ভাগ কিয়দংশে পরিবর্তিত হইয়াছে।

হিতোপদেশকর্তা গ্রন্থারম্ভে প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, পঞ্চতন্ত্র ও অন্ধ্র এক গ্রন্থ হইতে আপন গ্রন্থ সংগ্রহ করিলেন। বাস্তবিক, হিতোপদেশ পঞ্চতন্ত্রের প্রতিরূপ-স্বরূপ। পঞ্চতন্ত্রের গুণ ও দোষের অধিকাংশই হিতোপদেশে লক্ষিত হয়। বিশেষ এই, পঞ্চতন্ত্র অপেক্ষা হিতোপদেশের রচনা কিঞ্চিৎ গাঢ় এবং প্রস্তুত বিষয়ের বৈশ্য অথবা দৃঢ়ীকরণ বাসনায়, নানা প্রামাণিক গ্রন্থ হইতে প্রমাণ, দৃষ্টান্ত ও উদাহরণ-স্বরূপ উত্তম উত্তম শ্লোক উদ্ধৃত হইয়াছে। কিন্তু গ্রন্থকর্তার সম্যক্ সহৃদয়তার অসম্ভাবপ্রযুক্ত, অনেক স্থলেই উদ্ধৃত শ্লোক সকল অসংলগ্ন হইয়া উঠিয়াছে। তত্তৎ স্থলে প্রকৃত বিষয়ের সহিত ঐ সকল শ্লোকের কোন সম্বন্ধ দেখিতে পাওয়া যায় না। হিতোপদেশকর্ড। বালক- দিগের নীতিশিক্ষার্থে এই পুস্তক রচনা করিয়াছেন (১)। কিন্তু মধ্যে মধ্যে এক একটি আদিরসঘটিত অতি অম্লীল উপাখ্যান আছে। অতএব, আশ্চর্য্য বোধ হইতেছে যে বালকদিগের নিমিত্ত নীতিপুস্তক লিখিতে আরম্ভ করিয়া, কি প্রকারে গ্রন্থকর্তার ঐরূপ অম্লীল উপাখ্যান সঙ্কলন করিতে প্রবৃত্তি হইল। কোন ব্যক্তি হিতোপদেশ রচনা করিয়াছেন, আমরা তাহা অবগত নহি। অনেকে বিষ্ণুশর্ম্মাকে হিতোপদেশকর্তা বলিয়া থাকেন; কিন্তু তাহার কোন প্রমাণ নাই। হিতোপদেশ চারি অংশে বিভক্ত; মিত্রলাভ, স্বহৃদ্ভেদ, বিগ্রহ, সন্ধি। তন্মধ্যে মিত্রলাভপ্রকরণমাত্র এই পুস্তকে পরিগৃহীত হইয়াছে।

বিষ্ণুপুরাণ অতি প্রাঞ্জল ও পরিষ্কৃত গ্রন্থ, পাঠমাত্রেই অর্থপ্রতীতি হয়। পুরাণের যে পাঁচ লক্ষণ নির্দিষ্ট আছে (২), বিষ্ণুপুরাণ সেই পঞ্চলক্ষণাক্রান্ত। এই পুরাণ অন্তান্ত যাবতীয় পুরাণ অপেক্ষা সর্বাংশে উৎকৃষ্ট। অন্ত্যান্ত পুরাণের ক্বায়, ইহাতে অপ্রাকরণিক কথা নাই। সকল পুরাণ অপেক্ষা বিষ্ণুপুরাণের রচনা প্রাচীন বোধ হয়। যাবতীয় পুরাণ বেদব্যাসপ্রণীত বলিয়া প্রসিদ্ধি আছে। কিন্তু পুরাণ সকলের রচনা পরস্পর এত বিভিন্ন যে এক ব্যক্তির রচিত বলিযা বোধ হয় না। বিষ্ণুপুরাণ, ভাগবত ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ পাঠ করিলে, এই তিন গ্রন্থ এক লেখনীর মুখ হইতে বিনির্গত বলিয়া প্রতীতি হওয়া দুস্কর। বিষ্ণুপুরাণ সর্ব্বাংশে উৎকৃষ্ট বটে; কিন্তু ইহাতে বালকদিগের পাঠোপ- যোগী বিষয় অধিক নাই। যে কয়েক স্থান প্রকৃত বিষয়ের উপযোগী বোধ হইয়াছিল, তাহা পরিগৃহীত হইয়াছে।

মহাভারত বেদব্যাসবিরচিত বলিয়া কিংবদন্তী আছে, কিন্তু বিষ্ণুপুরাণ প্রভৃতির সহিত মহাভারতের রচনার এত বিভিন্নতা যে তিনি বিষ্ণুপুরাণ, কিংবা ভাগবত, অথবা ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণ রচনা করিযাছেন, তাঁহার রচিত বোধ হয় না। মহাভারত পুরাণমধ্যে পরিগণিত নহে। ইহাকে ইতিহাস কহে। ইহাতে পাণ্ডবদিগের বৃত্তান্ত সবিস্তর বর্ণিত হইয়াছে। পুরাণে সৃষ্টি, প্রলয, মন্বন্তর, নানা রাজবংশ এবং নানাবংশীষ নরপতিগণের চরিত কীর্তন থাকে। মহাভারতে এক নির্দিষ্ট রাজবংশের চবিত বিশেষ রূপে বর্ণিত আছে। কিন্তু ইহাতে, আনুষঙ্গিক, নানা পৌরাণিক বিষয়ও সঙ্কলিত হইযাছে। বিষ্ণু- পুরাণের রচনা যেরূপ প্রাঞ্জল ও পরিষ্কৃত, মহাভারতের সেরূপ নয়। আবৃত্তিমাত্র সকল স্থলের অর্থ বুঝিতে পাবা যায় না। অনেক স্থল এরূপ দুরূহ অথবা অস্পষ্ট যে কোন ক্রমেই অর্থপ্রতীতি হয় না। মহাভাবতেব নীতিগর্ভ ও হিতোপদেশঘটিত প্রস্তাব অনেক আছে। তন্মধ্যে আদি ও বন পর্ব্ব হইতে কয়েকটি পরিগৃহীত হইয়াছে। তথ্যতিরিক্ত ইহাতে এত উৎক্রষ্ট প্রস্তাব আছে যে সমস্ত উদ্ধৃত করিলে, একখানি বৃহৎ পুস্তক প্রস্তুত হইতে পারে।

ভট্টিকাব্যে রামের চরিত বর্ণিত হইয়াছে। এই কাব্য দ্বাবিংশতি সর্গে বিভক্ত। গ্রন্থকর্তা স্বরচিত কাব্যের শেষে আপনার একপ্রকার পরিচয় দিয়াছেন, কিন্তু নাম- নির্দেশ করেন নাই। প্রামাণিক টীকাকার জয়মঙ্গল কহেন, এই কাব্য বলভী- নগরনিবাসী ভট্টিনামক কবির রচিত। এবং ভট্টিকাব্য নাম দ্বারাও, ইহাই সম্যক্ প্রতিপন্ন হয়। কিন্তু অধুনাতন টীকাকার ভরতমল্লিক, আপন মতের প্রতিপোষক প্রমাণপ্রদর্শন ব্যতিরেকেই, ভট্টিকাব্যকে ভর্তৃহরি প্রণীত বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। ভর্তৃহরি, ও এই কাব্যের রচয়িতা, উভয়েই অদ্বিতীয় বৈয়াকরণ ছিলেন, বোধ হয় এই সাদৃপ্ত দর্শনেই ভরতমল্লিকের এই ভ্রান্তি জন্মিয়াছিল। কিন্তু তাঁহার ইহা বিবেচনা করা উচিত ছিল যে যেরূপ জনশ্রুতি আছে, তদনুসারে ভর্তৃহরি স্বয়ং রাজা ছিলেন। যে ব্যক্তি স্বয়ং রাজা হন তিনি, অমুক রাজার রাজধানীতে থাকিয়া আমি এই গ্রন্থ করিলাম, আপন গ্রন্থে কদাচ এরূপ নির্দেশ করেন না (৩)। ভাট্টিকাব্যের রচনা স্থানে স্থানে অতি সুন্দর; বিশেষতঃ, দ্বিতীয় সর্গের প্রারম্ভে যে শরস্বর্ণনা আছে, তাহা এমন মনোহর যে তদ্বারা গ্রন্থকর্তার অসামান্য কবিত্বশক্তির বিলক্ষণ প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে। কিন্তু ব্যাকরণের উদাহরণপ্রদর্শন গ্রন্থকর্তার যেরূপ উদ্দেশ্য, কবিত্বশক্তি প্রদর্শন করা তাদৃশ উদ্দেশ্য ছিল না। এই নিমিত্ত ভট্টিকাব্যের অধিকাংশই অত্যন্ত নীরস ও অত্যন্ত কর্কশ। ফলতঃ, ভট্টিকাব্য কোন মতেই উৎকৃষ্ট কাব্যমধ্যে পরিগণিত হইতে পারে না। এই কাব্যের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্গমাত্র পরিগৃহীত হইয়াছে।

ঋতুসংহার অদ্বিতীয় কবি কালিদাসের রসময়ী লেখনীর মুখ হইতে বহির্গত। এই উৎকৃষ্ট কাব্য ছয় সর্গে বিভক্ত। এক এক সর্গে যথাক্রমে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হিম, শিশির, বসন্ত ছয় ঋতু বর্ণিত হইয়াছে। যে স্বভাবোক্তি কাব্যের প্রধান অলঙ্কার, ঋতুসংহার প্রায় আদ্যোপান্ত তাহাতে অলঙ্কত। কিন্তু রূপক, উৎপ্রেক্ষা প্রভৃতি কতিপয় অলঙ্কার এতদ্দেশীয় লোকের অধিক প্রিয়, স্বভাবোক্তির চমৎকারিত্ব তাঁহাদের তাদৃশ মনোরম বোধ হয় না। এই নিমিত্ত, অনেকেই ঋতুসংহারকে উৎকৃষ্ট কাব্য বলেন না। কেহ কেহু এই উৎকৃষ্ট কাব্যকে রঘুবংশ, কুমারসম্ভব, মেঘদূত, অভিজ্ঞানশকুন্তল, বিক্রমোর্বশী এই সকল সর্ব্বোৎকৃষ্ট কাব্যের রচয়িতা কালিদাসের প্রণীত বলিয়া অঙ্গীকার করিতে সম্মত নহেন। ঋতুসংহার, রঘুবংশাদি হইতে অনেক অংশে ন্যূন বটে। কিন্তু যে সমস্ত গুণ থাকাতে রঘুবংশাদির এত আদর ও এত গৌরব, কুসংস্কারবিবর্জিত ও সহৃদয়পদবীতে অধিরূঢ় হইয়া অভিনিবেশপূর্ব্বক পাঠ করিলে, ঋতুসংহারে সেই সমস্ত গুণের সমুদয় লক্ষণ সুস্পষ্ট লক্ষিত হয়। ঋতুসংহারে যেমন অনেক অসাধারণ গুণ আছে, তেমনই এক অসাধারণ দোষও আছে। ঋতুসংহারের অধিকাংশই আদিরসঘটিত। বিশেষতঃ, হিম, শিশির, বসস্তবর্ণনা আদিরসে এত পরিপূর্ণ, যে এই তিন সর্গ কোনক্রমেই বালক- দিগের পাঠযোগ্য নহে। এই নিমিত্ত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ বর্ণনা মাত্র এই পুস্তকে পরি- গৃহীত হইল। এই তিন সর্গেরও আদিরসঘটিত শ্লোক সকল পরিত্যক্ত হইয়াছে। বেণীসংহারনাটক ভট্টনারায়ণবিরচিত। এরূপ কিংবদন্তী আছে, আদিশূর রাজা কান্ত-

কুজ হইতে গৌড়দেশে যে পঞ্চব্রাহ্মণ আনয়ন করেন ভট্টনারায়ণ তাঁহাদের একজন।

এই নাটক নাটকের সমুদয় লক্ষণাক্রান্ত। সাহিত্যদর্পণে নাটকপরিচ্ছেদে নাটকসংক্রান্ত বিষয়ের উদাহরণ প্রদর্শনার্থে বেণীসংহার হুইতে যত উদ্ধৃত হইয়াছে, অন্ত কোন নাটক হইতে তত নহে। কিন্তু এই নাটকের রচনা প্রাচীন কষিদিগের রচনার ফ্লায় চমৎ কারিণী ও মনোহারিণী নহে। ভট্টনারায়ণ নাটকের নিয়ম যত প্রতিপালন করিয়াছেন, কবিত্বশক্তি তত প্রদর্শন করিতে পারেন নাই। বেণীসংহার, নাটকের সমুদয়লক্ষণাক্রান্ত হইয়াও, কাব্যাংশে শকুন্তলা, রত্নাবলী, উত্তরচরিত প্রভৃতি অপেক্ষা অনেক ন্যূন। নাটকের সংস্কৃত ভিন্ন প্রাকৃত, পৈশাচী, রাক্ষসী প্রভৃতি অনেক ভাষা থাকে। সংস্কৃত ভাষায় প্রবেশ না হইলে, সে সকল ভাষা অনায়াসে বুঝিতে পারা যায় না। এই নিমিত্ত, বেণীসংহারের যে অংশে ঐ সকল ভাষার সংস্রব নাই, তাহাই ঋজুণাঠের তৃতীয় ভাগে উদ্ধৃত করা গিয়াছে।

কলিকাতা। সংস্কৃত কালেজ। ১৬ই পৌষ; সংবৎ ১৯০৮।

শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা

চতুর্থ সংস্করণের বিজ্ঞাপন

এই সংস্করণে, শিক্ষাকা্যেব সৌকর্য্যার্থে অপেক্ষাকৃত দুরূহ অংশসমূহের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিম্নদেশে সন্নিবেশিত, এবং গ্রন্থকলেবরের অতিবিস্তৃত দোষ পরীহারার্থে, মূলের শেষ কিয়দংশ পবিত্যক্ত হইল।

কলিকাতা।

১লা বৈশাখ। সংবৎ ১৯২২।

শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্ম্মা


THE

BYTAL-PACHEESEE

Or

The Twenty-Five Tales of the Demon

PREFACE

The Bytal Pacheesee is a collection of Legendary Stories relating to that celebrated character in Hindu Annals Rájá Vikramaditya. The work contains no traces of art or genius in its composition; but on the contrary exhibits those clumsy attempts at the wonderful, sometimes bordering on childishness, which are so general in the Legends of a dark age. It is, however, very popular among the great mass of the people of this country and expresses accurately their ideas and feelings on many subjects. This fact, and the circumstance of the Hindee version being highly idiomatic and correct in its style, render this work an excellent Text book for students of the Hindee Language.

The Original of these tales is to be found in the Kathasaritságara, an ancient and voluminous collection of Tales and Legends in Sanskrit verse, by Somadeva Bhatta, under the title of Betálapanchavinsatiká. There exist also, under the same title, a Sanskrit prose version.

In the reign of Muhammad Shaha, Súrat Kabishwar, by order of Rájá Jye Singh, translated the work from Sanskrit into Braj Bhákhá This version was translated, by direction of Dr. Gilchrist, in the time of Marquis Wellesley, into Hindoostanee by Muzhar Ali Khan, whose poetical name was Vilá, aided by Lallu Lál Kab, the elegant writer of Premságar, both Moonshees of the College of Fort William. This translation, of which the present is a new edition, was printed in 1805, having been revised, according to the instructions of Captain James Mouat, by Tárineecharan Mitra, the learned Head Moonshee of the above Institution.

A Bengali version of this translation was made by the Editor of the present edition, in the year 1847, by directions of Major G. T. Marshall, Secretary to the College of Fort William, and was adopted, under the title of Betál panchabinshati, as a Text book for the Students of that College. A poetical version in Bengali also exists and seems to have been taken from the Original Sanskrit.

In bringing out the edition now presented to the public, the Original Text of 1805 and the Agra Edition of 1843, have been carefully collated. The former has been generally adhered to; but the latter, though sometimes inferior in accuracy, has been occasionally followed in instances where in appeared judiciously modernised in its style of expression and orthography. The correct Sanskrit forms of the proper names, as far as they can be traced, have been inserted in the places where they occur, at the foot of the page. Some do not admit of Sanskrit equivalents; and it is evident that the Translators were not particular in this point, and adopted popular epithets at their own pleasure.

Calcutta,

15th

January, 1852

ΑΝ ΕΡΙΟ ΡΟEM by KALIDASA

RAGHUVANSA EDITED ESHWAR CHANDRA VIDYASAGAR Principal of the Sanskrit College, Calcutta PRINTED AT THE SANSKRIT PRESS 1853

By

বিজ্ঞাপন

কিছু দিবস হইল সংস্কৃত বিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীযুত গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্ব মল্লিনাথ প্রণীত সঞ্জীবনীনামক সর্ব্বপ্রধান টীকা সমেত রঘুবংশ মুদ্রিত করিয়াছেন। এই মহাকাব্য যেরূপে মুদ্রিত হওয়া আবশ্যক বিদ্যারত্ব ভট্টাচার্য্যের প্রযত্নে ও পরিশ্রমে তাহাই হইয়াছে; তথাপি পুনর্মুদ্রিত করিতে উদ্যত হইবার তাৎপর্য্য এই যে সটীক মুদ্রিত গ্রন্থ যে মূল্যে বিক্রীত হইতেছে সেই মূল্যে ক্রয় করিয়া অধ্যয়ন করিতে পারে সংস্কৃতবিজ্ঞালয়ের ছাত্রদিগের অনেকেরই এরূপ অবস্থা নহে। এই নিমিত্ত মূল মাত্র মুদ্রিত হইল। আর যদিও এই সংস্কৃত ভাষার সর্ব্বপ্রধান মহাকাব্যের আদি অবধি অন্ত পর্য্যন্ত সর্ব্বাংশই সর্ব্বাঙ্গসুন্দর তথাপি কোন কোন অংশ ও কোন কোন শ্লোক এরূপ আছে যে ছাত্রদিগের অধ্যয়নযোগ্য নহে। এই নিমিত্ত সেই সমস্ত বর্জনীয় অংশ ও বর্জনীয় শ্লোক পরিত্যক্ত হইয়াছে। রঘুবংশ যে প্রণালীতে মুদ্রিত হইল কুমারসম্ভব, কিরাতাল্গুনীয়, শিশুপালবধ, নৈষধচরিত প্রভৃতিও সেই প্রণালীতে মুদ্রিত হইবেক।

সংস্কৃতকালেজ ২৩এ জ্যৈষ্ঠ; ১৯১০ সংবৎ।

শ্রীঈশ্বরচন্দ্র শর্মা


BIBLIOTHECA INDICA

Published under the patronage of the

Hon. Court of Directors of the East India Company.

Nos, 63 and 142

Collection of Oriental Works. And the Superientendence of the Asiatic Society of Bengal. SARVADARSANA SANGRAHA Epitome of the different systems of Indian Philosophy Edited by PANDITA ISWARA CHANDRA VIDYASAGARA

OR AN

by

MADHAVÁCHÁRYA

The sarvadarsanasangraha is a work by Mádhavácharya, the well- known scholiast of the Vedas. It contains short notices of all the systems of Indian Philosophy, and as such is very valuable, It is natural to suppose that every Indian Sanskrit Scholar would have possessed a copy of a treatire of so much importance. But it is somewhat singular that manuscripts of the work are very rare, and that the great majority of the learned of this country are probably not even aware of its existence. If not printed now, the Sarvadarsanasangraha would, in all probability, share the common fate of many other valuable relics of Sanskrit learning. To prescrve the work from destruction I proposed to the Asiatic Society of Bengal to edit the work for them if they would undertake to print it. My offer was kindly accepted, and the work under their auspices, is printed and published. When I first undertook to edit the work, I was under the impression that the task would be an easy one. There were two

manuscripts in Calcutta, one in the Library of the Sanskrit College, and the other in that of the Asiatic Society. On first reading the book I thought that the former manuscript was sufficiently correct. But scrutinizing it with the care necessary for publication, I collated it with the copy in the Society's Library and found that without the aid of more manuscripts, the readings in several passages in which the two manuscripts differ, could not be reconciled. No other manuscripts were however procurable in Bengal; but by good fortune I procured three manuscripts from Benares. These were essential service to me, and it was only after carefully collating them with the Texts in Calcutta that I have been able to edit the work.

I feel it my duty here to express my great obligations to Mr. Edward Hall, late of the Benares College, through whose kind exertions the Benares Manuscripts were received. Without his timely aid it would have been impossible for me to execute the task I had undertaken with the accuracy requisite. My obligations are also due to Professors Jayanáráyana Tarkapan- chánana and Tára na tha Tarkava'chaspati of the Sanskrit College for the material assistance that they afforded to me in the undertaking.

Sanskrit College, The 20th January, 1858.




10
Articles
বিদ্যাসাগর রচনাবলী
0.0
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১) এমন একটি বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব, যা আজকের দিনে প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হয়। ওনার লেখা একাধিক কিছু রচনা সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এই রচনাবলি বইটি।
1

ভূমিকা

27 December 2023
0
0
0

ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ এমন কয়েকটি বিদ্যুৎ-গর্ভ ব্যক্তিকে সৃষ্টি করেছিল যাদের আশীর্বাদের পুণ্যফল এখনও আমরা ভোগ করছি। প্রাগাধুনিক যুগের গৌড়বঙ্গে বিচিত্র প্রতিভাধর ব্যক্তির যে আবির্ভাব হয় নি, তা নয়। কি

2

বেতাল পঞ্চবিংশতি

27 December 2023
0
0
0

উপক্রমণিকা উজ্জয়িনী নগরে গন্ধর্বসেন নামে রাজা ছিলেন। তাঁহার চারি মহিষী। তাঁহাদের গর্ভে রাজার ছয় পুত্র জন্মে। রাজকুমারের সকলেই সুপণ্ডিত ও সর্ব বিষয়ে বিচক্ষণ ছিলেন। কালক্রমে, নৃপতির লোকান্তরপ্রাপ্তি হই

3

বাঙ্গালার ইতিহাস [দ্বিতীয় ভাগ]

29 December 2023
0
0
0

প্রথম অধ্যায় ১৭৫৬ খৃষ্টীয় অব্দের ১০ই এপ্রিল, সিরাজউদ্দৌলা বাঙ্গালা ও বিহারের সিংহাসনে অধিরূঢ় হইলেন। তৎকালে, দিল্লীর অধীশ্বর এমন দুরবস্থায় পড়িয়াছিলেন যে, নূতন নবাব তাঁহার নিকট সনন্দ প্রার্থনা করা আবঞ্

4

জীবন চরিত

31 December 2023
0
0
0

জীবনচরিতপাঠে দ্বিবিধ মহোপকার লাভ হয়। প্রথমতঃ, কোন কোন মহাত্মারা অভিপ্রেতার্থসম্পাদনে কৃতকার্য্য হইবার নিমিত্ত যেরূপ অক্লিষ্ট পরিশ্রম, অবিচলিত উৎসাহ, মহীয়সী সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তর অধ্যবসায় প্রদর্শন করিয়াছেন

5

বাল্যবিবাহের দোষ

2 January 2024
0
0
0

অষ্টমবর্ষীয় কন্যা দান করিলে পিতা মাতার গৌরীদানজ্য পুণ্যোদয় হয়, নবম- বর্ষীয়াকে দান করিলে পৃথ্বী দানের ফল লাভ হয়; দশমবর্ষীয়াকে পাত্রসাৎ করিলে পরত্র পবিত্রলোকপ্রাপ্তি হয়, ইত্যাদি স্মৃতিশাস্ত্রপ্রতিপাদিত

6

বোধোদয়

2 January 2024
0
0
0

পদার্থ আমরা ইতস্ততঃ যে সকল বস্তু দেখিতে পাই, সে সমৃদয়কে পদার্থ বলে। পদার্থ দ্বিবিধ; সজীব ও নির্জীব। যে সকল বস্তুর জীবন আছে, অর্থাৎ যাহাদের জন্ম, বৃদ্ধি ও মৃত্যু আছে, উহারা সঞ্জীব পদার্থ; যেমন মনু্য,

7

সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা

4 January 2024
0
0
0

বর্ণমালা ১। অইউ, কখগ ইত্যাদি এক একটিকে বর্ণ ও অক্ষর বলে। বর্ণ' সমুদায়ে পঞ্চাশটি। তন্মধ্যে ষোলটি স্বর, চৌত্রিশটি হল্। এই পঞ্চাশটি অক্ষরকে বর্ণমালা বলে। স্বরবর্ণ ২। অআইঈউউত্তপ্ত ৯৪ এ ঐ ও ঔ অং অঃ। এই

8

বিভিন্ন গ্রন্থের বিজ্ঞাপন

5 January 2024
0
0
0

ঋজুপাঠ প্রথম ভাগ বিজ্ঞাপন ঋজুপাঠের প্রথম ভাগ প্রচারিত হইল। ইহাতে পঞ্চতন্ত্রের কয়েকটা উপাখ্যান ও মহাভারতের কিয়দংশ উদ্ধৃত করা গিয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের রচনাপ্রণালী দৃষ্টে স্পষ্ট বোধ হইতেছে, ইহা অতি প্রাচী

9

ঘটনাপঞ্জী

5 January 2024
0
0
0

ঘটনাপঞ্জী ১৮২০ খৃঃ অব্দ, ২৬শে সেপ্টেম্বর, সন ১২২৭, শকাব্দ ১৭৪২, ১২ই আশ্বিন মঙ্গলবার দিবা দ্বিপ্রহরে, মেদিনীপুর অন্তর্গত বীরসিংহ গ্রামে পিতামাতার প্রথম সন্তান ঈশ্বরচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-ঠাকুরদাস

10

গ্রন্থপঞ্জী

6 January 2024
0
0
0

অমূল্যত্বক ঘোষ-বিদ্যাসাগর অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়-উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ ও বাংলা সাহিত্য ইন্দ্র মিত্র-সাজঘর কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য-পুরাতন প্রসঙ্গ গোপিকামোহন ভট্টাচার্য-History of Sanskrit College

---