shabd-logo

বাল্যবিবাহের দোষ

2 January 2024

0 Viewed 0

অষ্টমবর্ষীয় কন্যা দান করিলে পিতা মাতার গৌরীদানজ্য পুণ্যোদয় হয়, নবম- বর্ষীয়াকে দান করিলে পৃথ্বী দানের ফল লাভ হয়; দশমবর্ষীয়াকে পাত্রসাৎ করিলে পরত্র পবিত্রলোকপ্রাপ্তি হয়, ইত্যাদি স্মৃতিশাস্ত্রপ্রতিপাদিত কল্পিত ফলমৃগতৃষ্ণায় মুগ্ধ হইয়া পরিণাম বিবেচনা পরিশুল্ক চিত্তে অম্মদ্দেশীয় মনু্য মাত্রেই বাল্যকালে পাণি- পীড়নের প্রথা প্রচলিত করিয়াছেন।

ইহাতে এ পর্যন্ত যে কত দারুণ অনর্থ সঙ্ঘটন হইতেছে, তাহা কাহার না অনুভবগোচর আছে? শাস্তকারকেরা এই বাল্যবিবাহ সংস্থাপনা নিমিত্ত এবং তারুণ্যাবস্থায় বিবাহ নিষেধার্থ স্ব স্ব বুদ্ধি কৌশলে এমত কঠিনতর অধর্মভা।গতার বিভীষিকা দর্শাইয়াছেন, যদ্যতি কোন কন্যা কন্যাদশাতেই পিতৃগৃহে স্ত্রীধর্মিনী হয়, তবে সেই কন্যা পিতৃ মাতৃ উভয় কূলের কলঙ্কস্বরূপা হইয়া সপ্ত পুরুষ পর্যন্তকে নিরয়কগামী করে, এবং তাহার পিতামাতা যাবজ্জীবন অশৌচগ্রস্ত হইয়া সমস্ত লোকসমাজে অশ্রদ্বেয় ও অপাংক্তেয় হয়।

ইহাতে যদিও কোন সুবোধ ব্যক্তির অন্তঃকরণে উক্ত বিধির প্রতি বিদ্বেষবুদ্ধি জন্মে, তথাপি তিনি চিরাচরিত লৌকিক ব্যবহারের পরতন্ত্র হইয়া স্বাভীষ্ট সিদ্ধি করিতে সমর্থ হন না। তাঁহার আন্তরিক চিন্তা অন্তরে উদয় হইয়া ক্ষণপ্রভার ন্যায় ক্ষণমাত্রেই অন্তরে বিলীন হইয়া যায়।

এইরূপে লোকাচার ও শাস্ত্রব্যবহারপাশে বন্ধ হইয়া দুর্ভাগ্যবশতঃ আমরা চিরকাল বাল্য বিবাহনিবন্ধন অশেষ ক্লেশ ও দুরপনেয় দুর্দশা ভোগ করিতেছি। বাল্যকালে বিবাহ হওয়াতে বিবাহের সুমধুর ফল যে পরস্পর প্রণয়, তাহা দম্পতিরা কখন আস্বাদ করিতে পায় না, সুতরাং পরস্পরের সপ্রণয়ে সংসারযাত্রা নির্বাহ করণ বিষয়েও পদে পদে বিড়- স্বনা ঘটে, আর পরস্পরের অত্যন্ত অপ্রীতিকর সম্পর্কে যে সন্তানের উৎপত্তি হয়, তাহাও তদনুরূপ অপ্রশস্ত হইবার বিলক্ষণ সম্ভাবনা। আর নব-বিবাহিত বালক বালিকারা পরস্পরের চিত্তরঞ্জনার্থে রসালাপ, বিদগ্ধতা, বাক্চাতুরী, কামকলাকৌশল প্রভৃতির অভ্যাসকরণে ও প্রকাশকরণে সর্বদা সযত্ব থাকে, এবং তত্তদ্বিষয়ে প্রয়োজনীয় উপায়- পরিপাটী পরিচিস্তনেও তৎপর থাকে, সুতরাং তাহাদিগের বিজ্ঞালোচনার বিষম ব্যাঘাত জান্মবাতে সংসারের সারভূত বিদ্যাধনে বঞ্চিত হইয়া কেৰল মনুয্যের আকারমাত্রধারী, বস্তুতঃ প্রকৃতরূপে মনুস্থ্য গণনায় পরিগণিত হয় না। 

সকল সুখের মূল যে শারীরিক স্বাস্থ্য, তাহাও বাল্যপরিণয়প্রযুক্ত ক্ষয় পায়। ফলতঃ অন্যান্য জাতি অপেক্ষা অস্মদ্দেশীয় লোকেরা যে শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্যে নিতান্ত দরিদ্র হইয়াছে, কারণ অন্বেষণ করিলে পরিশেষে বাল্যবিবাহই ইহার মুখ্য কারণ নির্ধারিত হইবেক সন্দেহ নাই।

হায়! জগদীশ্বর আমাদিগকে এ দুরবস্থা হইতে কত দিনে উদ্ধার করিবেন। এবং সেই শুভদিনই বা কতকালের পর উপস্থিত হইবে। যাহা হউক, অধুনা এতদ্বিষয় লইয়া যে আন্দোলন হইতেছে, ইহাও মঙ্গল। বোধ হয় কথন না কখন এতদ্দেশীয় লোকেরা সেই ভাবি শুভদিনের শুভাগমনে সুখের অবস্থা ভোগ করিতে সমর্থ হইবেক।

এইরূপে অম্মদ্দেশীয় অন্যান্য অসদ্ব্যবহার বিষয়ে যদ্যপি সর্বদাই লিখন পঠন ও পর্যালোচনা হয়, অবশ্যই তন্নিরাকরণের কোন সদুপায় স্থির হইবেক সন্দেহ নাই। অনবরত মৃত্তিকা খনন করিলে কতদিন বারি বিনির্গত না হইয়া রহিতে পারে? কাষ্ঠে কার্ডে অনবরত সঙ্ঘর্ষণ করিলে কতক্ষণ হুতাশন বিনিঃসৃত না হইয়া থাকিতে পারে? এবং অনবরত সত্যের অনুসন্ধান করিলে কতদিনই বা তাহা প্রকাশিত না হইয়া মিথ্যাজালে প্রচ্ছন্ন থাকিতে পারে?

আমরা অন্তঃকরণমধ্যে এইরূপ নানাপ্রকার চিন্তা করিয়া বাল্যবিবাহের বিষয়ে যথা- সাধ্য কিঞ্চিৎ পিখিতে প্রবৃত্ত হইলাম।

সৃষ্টিকর্তার এই বিশ্বরচনামধ্যে সর্বজীবেই স্ত্রী পুরুষ সৃষ্টি ও তদুভয়ের সংসৃষ্টি দৃষ্টিগোচর হইতেছে। ইহাতে স্পষ্টরূপে বিশ্বরূপের এই অভিপ্রায় প্রকাশ পায় যে, স্ত্রীপুংজাতি কোনরূপ অপ্রতিবন্ধ সম্বন্ধে পরস্পর আবদ্ধ থাকিয়া ইতরেতর রক্ষণাবেক্ষণপূর্বক স্বজাতীয় জীবোৎপত্তিনিমিত্ত নিত্য যত্নশীল হয়। বিশেষতঃ মনুষ্যজাতীয়ের। এক স্ত্রী, এক পুরুষ, উভয়ে মিলিত হইয়া, পরস্পরের উপরোধামুরোধ রক্ষা করত সপ্রণয়ে উত্তম নিয়মানুসারে সংসারের নিয়ম রক্ষা করে।

জগৎসৃষ্টির কত কাল পরে মনুষ্য জাতির এই বিবাহ সম্বন্ধের নিয়ম চলিত হইয়াছে, যদ্যপি তদ্বিশেষ নির্দেশ করা অতি দুরূহ, তথাপি এইমাত্র উল্লেখ করা যাইতে পারে, যখন মহামণ্ডলীতে বৈষযিক জ্ঞানের কিঞ্চিৎ নির্মলতা ও রাজনীতির কিঞ্চিৎ প্রবলতা হইতে আরস্ত হইল এবং যখন আত্মপর বিবেক, স্নেহ, দয়া, বাৎসল্য, মমতাভিমান ব্যতিরেকে সংসারযাত্রার হুনির্বাহ হয় না, বিবাহ সম্বন্ধই ঐ সকলের প্রধান কারণ, ইত্যাকার বোধ সকলের অন্তঃকরণে উদয় হইতে লাগিল, তখনি দাম্পত্য সম্বদ্ধ অর্থাৎ বিবাহের নিয়ম সংস্থাপিত হইয়াছিল সন্দেহ নাই। অনন্তর সর্বদেশে এই বিবাহের প্রথা পূর্বপূর্বাপেক্ষা উত্তরোত্তর উৎকৃষ্ট হইয়া আসি- তেছে। কিন্তু অন্মদ্দেশে উত্তরোত্তর উৎকৃষ্ট হওয়া দূরে থাকুক, বরং এমত নিকৃষ্ট হই- য়াছে যে, যথার্থ বিবেচনা করিলে স্পষ্ট বোধ হইবে, বর্তমান বিবাহুনিযমই অম্মদ্দেশের সর্বনাশের মূল কারণ।

এতদ্দেশে পিতা মাতারা পুত্রী সম্প্রদানের নিমিত্ত বা স্বয়ং বা অন্য দ্বারা পাত্র অন্বেষণ করিয়া, কেবল অসার কৌলীন্যমর্যাদার অনুরোধে পাত্র মূর্খ ও অপ্রাপ্তবিবাহকাল এবং অযোগ্য হইলেও তাহাকে কন্যা দান করিয়া আপনাকে কৃতার্থ ও ধন্য বোধ, করেন, উত্তরকালে কল্লার ভাবি সুখদুঃখের প্রতি একবারও নেত্রপাত করেননা। এই সংসারে দাম্পত্য নিবন্ধন সুখই সর্বাপেক্ষা প্রধান সুথ। এতাদৃশ অকৃত্রিম সুখে বিড়ম্বনা ঘটিলে দম্পতির চিরকাল বিষাদে কালহরণ করিতে হয়। হায়, কি দুঃখের বিষয়! যে পতির প্রণয়ের উপর প্রণয়িনীর সমুদায় সুখ নির্ভর করে, এবং যাহার সচ্চরিত্রে যাবজ্জীবন সুখী ও অসচ্চরিত্রে যাবজ্জীবন দুঃখী হইতে হইবেক, পরিণয়কালে তাদৃশ পরিণেতার আচার ব্যবহার ও চরিত্র বিষয়ে যদ্যপি কন্যাব কোন সম্মতির প্রয়োজন না হইল, তবে সেই দম্পতির সুখের আর কি সম্ভাবনা রহিল।

মনের ঐক্যই প্রণয়েব মূল। সেই ঐক্য বয়স, অবস্থা, রূপ, গুণ, চরিত্র, বাহু ভাব ও আন্তরিক ভাব ইত্যাদি নানা কারণের উপর নিভব করে। অম্মদ্দেশীয় বালদম্পতিরা পরস্পরের আশয় জানিতে পারিল না, অভিপ্রায়ে অবগাহন করিতে অবকাশ পাইল না, অবস্থার তত্ত্বানুসন্ধান পাইল না, আলাপ পরিচয় দ্বারা ইতরেতরের চরিত্রপরিচয়ের কথা দূরে থাকুক, এক বার অন্ত্যোন্ত নয়নসঙ্ঘঠনও হইল না, কেবল একজন উদাসীন বাচাল ঘটকের প্রবৃত্তিজনক বৃথাবচনে প্রত্যয় করিয়া পিতামাতার যেরূপ অভিরুচি হয়, কন্যাপুত্রের সেইবিধিই বিধিনিয়োগবৎ সুখদুঃখের অনুল্লঙ্ঘনীয় সীমা হইয়া রহিল। এই জন্যই অম্মদ্দেশে দাম্পত্যনিবন্ধন অকপট প্রণয় প্রায় দৃষ্ট হয় না, কেবল প্রণয়ী ভর্তাস্বরূপ এবং প্রণয়িনী গৃহপবিচারিকাস্বরূপ হইয়া সংসারযাত্রা নির্বাহ করে।

অপ্রমত্ত শরীরতত্ত্বাভিজ্ঞ বিজ্ঞ ভিষন্বর্গেরা কহিয়াছেন, অনতীত শৈশবজায়াপতিসম্পর্কে যে সন্তানের উৎপত্তি হয়, তাহার গর্ভবাসেই প্রায় বিপত্তি ঘটে, যদি প্রাণবিশিষ্ট হইয়া ভূমিষ্ঠ হয়, তাহাকে আর ধাত্রীর অঙ্কনশয্যাশায়ী হইতে না হইয়া অনতিবিলম্বেই ভূত- ধাত্রীর গর্ভশায়ী হইতে হয়। কথঞ্চিৎ যদি জনক জননীর ভাগ্যবলে সেই বালক লোক- সংখ্যার অঙ্ক বৃদ্ধি করিতে সমর্থ হয়, কিন্তু স্বভাবতঃ শরীরের দৌর্বল্য ও সর্বদা পীড়ার প্রাবল্যপ্রযুক্ত সংসারযাত্রার অকিঞ্চিৎকর পাত্র হইয়া অল্পকালমধ্যেই পরত্র প্রন্থিত হয়। সুতরাং যে সন্তানোৎপত্তিফলনিমিত্ত দাম্পত্য সম্বন্ধের নির্বন্ধ হইয়াছে, বাল্যপরিণয় দ্বারা সেই ফলের এই প্রকার বিড়ম্বনা সঙ্ঘটন হইয়া থাকে।

অশ্বব্দেীয়েরা ভূমণ্ডলস্থিত প্রায় সর্বজাতি অপেক্ষা ভীরু, ক্ষীণ, দুর্বলস্বভাব এবং অল্প বয়সেই স্থবিরদেশাপন্ন হইয়া অবসন্ন হয়, য্যপি এতদ্বিষয়ে অন্যান্য সামান্য কারণ অন্বেষণ করিলে প্রাপ্ত হওয়া যায় বটে, কিন্তু বিশেষ অনুসন্ধান করিলে ইহাই প্রতীতি হইবে যে, বাল্যবিবাহই এ সমুদায়ের মুখ্য কারণ হইয়াছে। পিতামাতা সবল ও দৃঢ়শরীর না হইলে সন্তানেরা কখন সবল হইতে পারে না যেহেতু ইহা সকলেই স্বীকার করিবেন যে, দুর্বল কারণ হইতে সবল কার্যের উৎপত্তি কদাপি সম্ভবে না। যেমন অনুর্বরা ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট বীজ বপন এবং উর্বরা ক্ষেত্রে হীনবীর্য বীজ রোপণ করিলে উৎকৃষ্ট ফলোদয় হয় না, সেইরূপ অকালবপনেও ইউসিদ্ধির অসঙ্গতি হয়।

ভারতবর্ষে নিতান্তই যে বীর্যবন্ত বীরপুরুষের অসম্ভাব ছিল, এমত নহে, যেহেতু পূর্বতন ক্ষত্রিয়সন্তানেরা এবং কোন কোন বিপ্রসন্তানেরা যুদ্ধবিগ্রহাদি কার্যে প্রবল পরাক্রম ও অসীম সাহস প্রকাশ করিয়া এই ভূমণ্ডলে অবিনশ্বর কীর্তি সংস্থাপন করিয়া গিয়া- ছেন, তাঁহাদিগের তত্তচ্চবিত্র পৌরাণিক ইতিবৃত্তে প্রথিত আছে, সেই সকল বীরপুরুষ প্রসব করাতে এই ভারতভূমিও বীরপ্রসবিনী বলিয়া বিখ্যাত ছিল। এবং এক্ষণেও পশ্চিমপ্রদেশে ভূরি ভূরি পরাক্রান্ত পুরুষেবা অনেকানেক বিষয়ে সাহস ও শৌর্যগুণের কার্য দর্শাইয়া পূর্বপুরুষীয় পরাক্রমের দৃষ্টান্ত বহুন কবিতেছে। এতদ্দেশীয় হিন্দুগণ সেই জাতি ও সেই বংশে উৎপন্ন হইয়া যে এতাদৃশ দুর্বলদশাগ্রস্ত হইয়াছে বাল্যপরিণয় কি ইহার মূখ্য কারণ নয়? কেন না, পূর্বকালে প্রায় সর্বজাতিমধ্যেই অধিক বয়ণে দার- ক্রিয়া নিষ্পন্ন হইত। যদ্বাপি তৎকালে অষ্টবিধ বিবাহক্রিয়ার শাস্ত্র পাওয়া যায়, তথাপি অধিকবয়োনিষ্পন্ন গান্ধর্ব, আসুর, রাক্ষস, পৈশাচ, এই বিবাহচতুষ্টয় অধিক প্রচলিত ছিল, ইহা ভিন্ন স্বয়ম্বব প্রথারও প্রচলন ছিল, এবং এই পমুদায়প্রকার বিবাহক্রিয়া বর- কল্লার অধিক বয়স ব্যতীত সম্ভবে না। আরো আমরা অনুসন্ধান দ্বারা পশ্চিমদেশীয় লোকমুখে জ্ঞাত আছি, তদ্দেশে অদ্যাপি প্রায় সর্বজাতিমধ্যে বরকন্যার অধিক বয়সে বিবাহকর্ম নির্বাহ হইয়া থাকে, সুতরাং তদ্দেশে জনকজননীসদৃশ অপত্যোৎপত্তির কোন অসঙ্গতি না থাকাতে তাহারা প্রায় সকলেই পরাক্রমী ও সাহসী হইয়া আসিতেছে। ইহার প্রমাণ, পশ্চিমদেশীয়েরা যখন অন্যবিধ জীবিকার উপায় না পায়, তখনি রাজকীয় দৈন্য শ্রেণীতে ও অন্যান্য ধনাঢ্য পোকের দৌবারিকতাদি কর্মে নিযুক্ত হইয়া অক্লেশে আজীবন নির্বাহ করে। এতদ্দেশীয়েরা অন্নাভাবে জঘন্য বৃত্তিও স্বীকার করে, তথাপি কোন সাহসের ও পরাক্রমের কার্যে প্রবৃত্ত হয় না। এই জন্যই রাজকীয় সৈলামধ্যে কখন বঙ্গদেশোৎপন্ন ব্যক্তিকে দেখা যায় নাই। উৎকলদেশীয়েরা আমাদিগের অপেক্ষাও ভীরু এবং দুর্বসস্বভাব, এ নিমিত্ত আমরাও তাহাদিগকে ভীত ও কাপুরুষ বলিয়া উপহাস করিয়া থাকি। জানা গিয়াছে, তাহাদিগের মধ্যেও এতদ্দেশের ন্যায় বাল্য- বিবাহ প্রচলিত আছে। অতএব পাশ্চাত্ত্য লোকের সহিত আমাদিগের ও উৎ- কলদিগের সাহস ও পরাক্রম বিষয়ে এতাদৃশ গুরুতর ইতরবিশেষ দেখিয়া কাহার না স্পষ্ট বোধ হইবে যে, বাল্যপরিণয়ই এতাদৃশ বৈলক্ষণের কারণ হইয়াছে, নতুবা কি হেতুক যে উভয় দেশে বাল্যবিবাহ প্রচলিত, তদ্দেশীয়েরাই দুর্বল ও সাহসবিহীন হয়, এবং যে প্রদেশে অধিক বয়সে বিবাহ হইতেছে, তদ্দেশীয়েরাই বা কেন সাহসী ও পরাক্রান্ত হইতেছে।

এতদ্দেশে যদ্যপি স্ত্রীজাতির বিস্তাশিক্ষার প্রথা প্রচলিত থাকিত, তবে অম্মদেশীয় বালক বালিকারা মাতৃসন্নিধান হইতেও সদুপদেশ পাইয়া অল্প বয়সেই কৃতবিদ্য হইতে পারিত। সন্তানেরা শৈশব কালে যেরূপ স্ব স্ব প্রস্থতির অনুগত থাকে, পিতা বা অন্য গুরুজনের নিকটে তাদৃশ অনুগত হয় না। শিশুগণের নিকটে সস্নেহ মধুর বচন যাদৃশ্য অনুকূল- রূপে অনুভূয়মান হয়, উপদেশকের হিতবচন তাদৃশ প্রীতিজনক নহে। এই নিমিত্তে বালকেরা স্ত্রীসমাজে অবস্থিতি করিয়া যাদৃশ সুখী হয়, পুরুষসমাজে থাকিয়া তাদৃশ সুখী ও সন্তুষ্ট হয় না। অতএব স্তনপান পরিত্যাগ করিয়াই যদি বালকেরা মাতৃ-মুখ- চন্দ্রমণ্ডল হইতে সরস উপদেশ সুধা স্বাদ করিতে পায়, তবে বাল্যকালেই বিঘার প্রতি দৃঢতর অনুরাগী হইয়া অনায়াসে কৃতবিদ্ধ হইতে পারে। কারণ, সন্তানের হৃদয়ে জন- নীর উপদেশ যেমন দৃঢ়রূপে সংসক্ত হয় ও তদ্বারা যতশীঘ্র উপকার দর্শে, অন্ত্য শিক্ষ- কের দ্বারা তাহার শতাংশেরও সম্ভাবনা নাই, জননীর উপদেশকতাশক্তি থাকাতেই ইউরোপীয়েরা অল্প বয়সেই বিচক্ষণ ও সভ্যলক্ষণসম্পন্ন হয়। অতএব যাবৎ অম্মদেশ হইতে বাল্যবিবাহের নিয়ম দূরীকৃত না হইবে, তাবৎ উক্তরূপ উপকার কদাচ ঘটিবে না। আমরা অবগত আছি, কোন কোন ভদ্র সন্তানেল্লাস্ব স্ব কল্লাসন্তানদিগকেও পুত্র- বৎ শিক্ষা প্রদান করিয়া থাকেন, কিন্তু সেই কন্ঠাদিগের বর্ণপরিচয় হইতে না হইতেই উদ্বাহের দিন উপস্থিত হয়। সুতরাং তাহার পাঠের প্রস্তাব সেই দিনেই অস্তগত হইয়া যায়। পরে পরগৃহবাসিনী হইয়া তাহাকে পরের অধীনে স্বক্র শ্বশুর প্রভৃতি গুরুজনের ইচ্ছানুসারে গৃহসম্মার্জন, শয্যাসজ্জন, রন্ধন, পরিবেষণ ও অভ্যান্ত পরিচর্যার পরিপাটী শিক্ষা করিতে হয়। পিতৃগৃহে যে কয়েকটি বর্ণের সহিত পরিচয় হইয়াছিল, তৎসমুদায়ই স্থালী, কটাহ, দব্বী প্রভৃতির সহিত নিয়ত সদালাপ হওয়াতে একেবারেই লোপ পাইয়া যায়। ফগতঃ, সেই কঞ্চাদিগের পিতা মাতা যঞ্চপি এতদ্দেশীয় বিবাহনিয়মের বাধ্য হইয়া শিক্ষার উপক্রমেই কন্তাদিগে পাত্রসাৎ না করেন, তবে আর কিছুকাল শিক্ষা করিলেই তাঁহাদিগের সেই দুহিতৃগণ ভাবী সম্ভানগণের উপদেশক্ষম হইয়া পিতা মাতার অশেষ অভিলাষ সফল করিতে পারেন। অতএব অধুনাতন সভ্য সুশিক্ষিত ব্যক্তিদিগকে আমরা অনুরোধ করি, তাঁহারা স্ত্রীজাতির শিক্ষা দান বিষয়ে যেরূপ উদ্যোগ করিবেন, তদ্রূপ বাল্যবিবাহ প্রথার উচ্ছেদ করণেও য়ত্বশালী হউন, নচেৎ কদাচ অভীষ্টসিদ্ধি করিতে পারিবেন না।

বাল্যকালে বিবাহ করিয়া আমরা সর্বতোভাবে বিব্রত ও ব্যতিব্যস্ত হই। কারণ, প্রথমতঃ বিবাহঘটিত আমোদপ্রমোদ ও কেলিকৌতুকে বিস্তাশিক্ষার মুখ্য কাল যেবাল্য- কাল, তাহা বৃথা বায় হইয়া যায়। অনন্তর উপার্জনক্ষমতার জন্ম না হইতেই সন্তানের জন্মদাতা হই। সুতরাং তখন নিত্যপ্রযোজনীয অর্থের নিমিত্তে অত্যন্ত ব্যাকুল হইতে হয়। কারণ, গৃহস্থ ব্যক্তির হস্তে ক্ষণেক অর্থ না থাকিলে চতুর্দশ ভুবন শৃক্তময় প্রতীত হইতে থাকে। তৎকালে যদি অসৎ কর্ম করিয়াও অর্থলাভ সম্পন্ন হয়, তাহাতেও নিতান্ত পরাম্মুখতা না হইয়া, বরং বার বার প্রবৃত্তি জন্মিতে থাকে। অনেক স্থলে এমতও দৃষ্ট হইয়াছে যে, বাস্তবিক সংস্বভাবাপন্ন ব্যক্তিরাও কতকগুলি অপোগণ্ড পরিবারে পরিবৃত হইয়া অগত্যা ছক্রিয়াকরণে সম্মত হইয়াছেন। আব ঐরূপ দুবাবস্থাকালে পরম প্রীতির পাত্র পুত্রকলত্রাদি পরিবারবর্গ উপসর্গবৎ বোধ হয়। তখন কাজে কাজেই পিতৃ- সত্বে তাঁহার অধীন, কখন বা সহোদবদিগের অনুগ্রহোপজীবী, কখন বা আত্মীয়বর্গের ভারস্বরূপ হইয়া স্বকীয় স্বাধীনতাসুখে বঞ্চিত ও জনপদে পদে পদে অপমানিত হইযা অতি কষ্টে মনোদুঃখে জীবন ক্ষয কবিতে হয়। অতএব যে বাল্যবিবাহ দ্বারা আমাদি- গের এতাদৃশী দুর্দশা ঘটিযা থাকে, সমূলে তাহাব উচ্ছেদ করা কি সর্বতোভাবে শ্রেষ- স্বর নহে?

য্যপি কোন ব্যক্তি এমত আপত্তি উপস্থিত করেন যে, অম্মদ্দেশে বাল্যপরিণয়প্রথা না থাকিলে বালক বালিকাদের দুষ্কর্মাসক্ত হইবাব সম্ভাবনা। এ কথায আমরা একান্ত ঔদাস্য করিতে পারি না; কিন্তু ইহা অবশ্যই বলিতে পারি, যদি বাল্যকালাবধি বিদ্যার অনুশীলনে সর্বদা মন নিবিষ্ট থাকে, তাহা হইলে কদাপি দুষ্ক্রিয়াপ্রবৃত্তির উপস্থিতিই হয় না। কাবণ, বিদ্যা দ্বারা ধর্মাধর্মে ও সদসৎ কর্মে প্রবৃত্তি নিবৃত্তি বিচার জন্মে এবং বিবেকশক্তির প্রাথর্য বৃদ্ধি হয়। তাহা হইলে অসদিচ্ছাব উদয় হইবার অবসর কোথায়? অতএব অপক্ষপাতী হইয়া বিবেচনা করিলে এতাদৃশ পূর্বপক্ষই উপস্থিত হইতে পারে না।

কত বয়সে মনুয়্যদিগের মৃত্যু ঘটনার অধিক সম্ভাবনা, যদি আমরা এই বিষয়ের আলো- চনা করি, তবে অবশ্বই প্রতীতি হইবে, মস্তয্যের জন্মকাল অবধি বিংশতি বর্ষ বয়স পর্যন্ত মৃতুর অধিক সম্ভাবনা। অতএব বিংশতি বর্ষ অতীত হইলে য্যপি উদ্বাহকর্ম নির্বাহু হয়, তবে বিধবার সংখ্যাও অধিক হইতে পারে না। এবং পিতামাতাদিগের তন্নিমিত্ত আশঙ্কার লাঘবও হইতে পারে। যেহেতু অস্মদ্দেশে বিধবাবেদনের বিধি দৃঢ়তররূপ প্রতিষিদ্ধ হওয়াতে শাস্ত্রানুসারে বিধবাগণের যেরূপ কঠোর ব্রতান্তষ্ঠান ও তজ্জন্ত যে প্রকার দুঃসহ দুঃখ সহন করিতে হয়, তাহা কাহার না অনুভবগোচর আছে? বিধবার জীবন কেবল দুঃখের ভার। এবং এই বিচিত্র সংসার তাহার পক্ষে জনশূন্য অরণ্যাকার। পতির সঙ্গে সঙ্গেই তাহার সমস্ত সুখ সাঙ্গ হইয়া যায়। এবং পতিবিয়োগদুঃখের সহ সকল দুঃসহ দুঃখের সমাগম হয়। উপবাস দিবসে পিপাসা নিবন্ধে কিংবা স্নাংঘাতিক রোগামুবন্ধে যদি তাহার প্রাণাপচয় হইয়া যায়, তথাপি নির্দয় বিধি তাহার নিঃশেষ নীরস রসনাগ্রে গণ্ডষমাত্র বারি বা ঔষধ দানেরও অনুমতি দেন না। অতএব যদি কোন বালিকা অনাথা হইয়া এইরূপ দারুন দুরবস্থায় পতিতা হয়, যাহা বাল্যবিবাহে নিয়তই ঘটিতে পারে, তবে বিবেচনা কর, তাহার সমান দুঃখিনী ও যাতনাভাগিনী আর কে আছে? যে কঠোর ব্রহ্মচর্য ব্রতাচরণ পরিণত শরীর দ্বারাও নির্বাহকরণ দুস্কর হয়, সেই দুশ্চর ব্রতে কোমলাঙ্গী বালিকাকে বাল্যাবধি ব্রতী হইতে হইলে তাহার সেই দুঃখদগ্ধ জীবন যে কত দুঃখেতে যাপিত হয়, বর্ণনা দ্বারা তাহার কি জানা- ইব। আমরা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করিতেছি, এইরূপ কত শত হতভাগা কুমারী উপবাসশর্ব- রীতে ক্ষুৎপিপাসায় ক্ষামোদরী শুষ্কতালু স্নানমুখ হইয়া মৃতপ্রায় হইয়া যায়, তথাপি কোন কারুণিক ব্যক্তি তাহার তাদৃশ শোচনীয়াবস্থাতে করুণা দর্শাইয়া নিষ্ঠুর শাস্ত্রবিধি ও লোকাচার উল্লঙ্ঘনে সাহস করিতে চাহেন না। আর ঐ অভাগিনীগণেরও এমত সংস্কারের দৃঢ়তা জন্মে যে, যদি প্রাণবায়ুর প্রয়াণ হইয়া যায়, তাহাও স্বীকার, তথাপি জলবিন্দুমাত্র গলাধঃকরণ কবিতে চায় না। অতএব যে সময়ে লালন পালন শরীর সংস্কারাদি দ্বারা পিতা মাতার সন্তানদিগকে পরিরক্ষণ করা উচিত, তৎকালে পরিণয় দ্বারা পরগৃহে বিসর্জন দিয়া এতাদৃশ অসীম দুঃখসাগরে নিক্ষেপ করা নিতান্ত অন্যায্য কর্ম। আর ভদ্রকুলে বিধবা স্ত্রী থাকিলে যে কত প্রকার পাপের আশঙ্কা আছে, বিবে- চনা করিলে তাহা সকলেই বুঝিতে পারেন। বিধবা নারী অজ্ঞানবশতঃ কখন কখন সতীত্ব ধর্মকেও বিশ্বত হইয়া বিপথগামিনী হইতে পাবে, এবং লোকাপবাদভয়ে ভ্রূণ- হত্যা প্রভৃতি অতি বিগর্হিত পাপ কার্য সম্পাদনেও প্রবৃত্ত হইতে পারে। অতএব অল্প বয়সে যে বৈধব্য দশা উপস্থিত হয়, বাল্যবিবাহই তাহার মুখ্য কারণ। সুতরাং বাল্য- কালে বিবাহ দেওয়া অতিশয় নির্দয় ও নৃশংসের কর্ম। অতএব আমর। বিনয়বচনে স্বদেশীয় ভদ্র মহাশয়দিগের সন্নিধানে নিবেদন করিতেছি, যাহাতে এই বাল্যপরিণয়রূপ দুর্নয় অন্মদ্দেশ হইতে অপনীত হয়, সকলে একমত হইয়া সতত এমত যত্নবান হউন। বাল্যবিবাহ বিষয়ে আমরা অদ্যকার পত্রিকায় যাহা লিখিলাম, ইহা কেবল উপক্রম মাত্র।

এতদ্বিষয়ক হেতু, যুক্তি ও দৃষ্টান্ত আমাদিগের মনে মনে অনেক পরিশিষ্ট রহিয়া গেল। ক্রমে ক্রমে তাহা প্রকাশ করিতে ত্রুটি করিব না।



10
Articles
বিদ্যাসাগর রচনাবলী
0.0
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১) এমন একটি বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব, যা আজকের দিনে প্রায় অবিশ্বাস্য মনে হয়। ওনার লেখা একাধিক কিছু রচনা সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এই রচনাবলি বইটি।
1

ভূমিকা

27 December 2023
0
0
0

ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ এমন কয়েকটি বিদ্যুৎ-গর্ভ ব্যক্তিকে সৃষ্টি করেছিল যাদের আশীর্বাদের পুণ্যফল এখনও আমরা ভোগ করছি। প্রাগাধুনিক যুগের গৌড়বঙ্গে বিচিত্র প্রতিভাধর ব্যক্তির যে আবির্ভাব হয় নি, তা নয়। কি

2

বেতাল পঞ্চবিংশতি

27 December 2023
0
0
0

উপক্রমণিকা উজ্জয়িনী নগরে গন্ধর্বসেন নামে রাজা ছিলেন। তাঁহার চারি মহিষী। তাঁহাদের গর্ভে রাজার ছয় পুত্র জন্মে। রাজকুমারের সকলেই সুপণ্ডিত ও সর্ব বিষয়ে বিচক্ষণ ছিলেন। কালক্রমে, নৃপতির লোকান্তরপ্রাপ্তি হই

3

বাঙ্গালার ইতিহাস [দ্বিতীয় ভাগ]

29 December 2023
0
0
0

প্রথম অধ্যায় ১৭৫৬ খৃষ্টীয় অব্দের ১০ই এপ্রিল, সিরাজউদ্দৌলা বাঙ্গালা ও বিহারের সিংহাসনে অধিরূঢ় হইলেন। তৎকালে, দিল্লীর অধীশ্বর এমন দুরবস্থায় পড়িয়াছিলেন যে, নূতন নবাব তাঁহার নিকট সনন্দ প্রার্থনা করা আবঞ্

4

জীবন চরিত

31 December 2023
0
0
0

জীবনচরিতপাঠে দ্বিবিধ মহোপকার লাভ হয়। প্রথমতঃ, কোন কোন মহাত্মারা অভিপ্রেতার্থসম্পাদনে কৃতকার্য্য হইবার নিমিত্ত যেরূপ অক্লিষ্ট পরিশ্রম, অবিচলিত উৎসাহ, মহীয়সী সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তর অধ্যবসায় প্রদর্শন করিয়াছেন

5

বাল্যবিবাহের দোষ

2 January 2024
0
0
0

অষ্টমবর্ষীয় কন্যা দান করিলে পিতা মাতার গৌরীদানজ্য পুণ্যোদয় হয়, নবম- বর্ষীয়াকে দান করিলে পৃথ্বী দানের ফল লাভ হয়; দশমবর্ষীয়াকে পাত্রসাৎ করিলে পরত্র পবিত্রলোকপ্রাপ্তি হয়, ইত্যাদি স্মৃতিশাস্ত্রপ্রতিপাদিত

6

বোধোদয়

2 January 2024
0
0
0

পদার্থ আমরা ইতস্ততঃ যে সকল বস্তু দেখিতে পাই, সে সমৃদয়কে পদার্থ বলে। পদার্থ দ্বিবিধ; সজীব ও নির্জীব। যে সকল বস্তুর জীবন আছে, অর্থাৎ যাহাদের জন্ম, বৃদ্ধি ও মৃত্যু আছে, উহারা সঞ্জীব পদার্থ; যেমন মনু্য,

7

সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা

4 January 2024
0
0
0

বর্ণমালা ১। অইউ, কখগ ইত্যাদি এক একটিকে বর্ণ ও অক্ষর বলে। বর্ণ' সমুদায়ে পঞ্চাশটি। তন্মধ্যে ষোলটি স্বর, চৌত্রিশটি হল্। এই পঞ্চাশটি অক্ষরকে বর্ণমালা বলে। স্বরবর্ণ ২। অআইঈউউত্তপ্ত ৯৪ এ ঐ ও ঔ অং অঃ। এই

8

বিভিন্ন গ্রন্থের বিজ্ঞাপন

5 January 2024
0
0
0

ঋজুপাঠ প্রথম ভাগ বিজ্ঞাপন ঋজুপাঠের প্রথম ভাগ প্রচারিত হইল। ইহাতে পঞ্চতন্ত্রের কয়েকটা উপাখ্যান ও মহাভারতের কিয়দংশ উদ্ধৃত করা গিয়াছে। পঞ্চতন্ত্রের রচনাপ্রণালী দৃষ্টে স্পষ্ট বোধ হইতেছে, ইহা অতি প্রাচী

9

ঘটনাপঞ্জী

5 January 2024
0
0
0

ঘটনাপঞ্জী ১৮২০ খৃঃ অব্দ, ২৬শে সেপ্টেম্বর, সন ১২২৭, শকাব্দ ১৭৪২, ১২ই আশ্বিন মঙ্গলবার দিবা দ্বিপ্রহরে, মেদিনীপুর অন্তর্গত বীরসিংহ গ্রামে পিতামাতার প্রথম সন্তান ঈশ্বরচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-ঠাকুরদাস

10

গ্রন্থপঞ্জী

6 January 2024
0
0
0

অমূল্যত্বক ঘোষ-বিদ্যাসাগর অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়-উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ ও বাংলা সাহিত্য ইন্দ্র মিত্র-সাজঘর কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য-পুরাতন প্রসঙ্গ গোপিকামোহন ভট্টাচার্য-History of Sanskrit College

---