shabd-logo

রং নাম্বার

30 November 2023

6 Viewed 6

রাত একটা। তীর্থবাবুর ঘুম ভেঙে গেল। টেলিফোন বাজছে। মাঝরাতে টেলিফোন বাজলে কেন এত ভয় করে?

'হ্যালো। শুনুন.. হাসপাতাল থেকে বলছি.. আপনাদের পেশেন্ট এইমাত্র মারা গেলেন। হ্যালো।'

'আমাদের পেশেন্ট? হাসপাতালে আমাদের কোনো পেশেন্ট নেই।'

'আপানার নম্বর?'

'রং নম্বর! ছেড়ে দিন।'

'রং নাম্বারে ফোন করেন কেন? রং নাম্বারে?'

তীর্থবাবু ফোনটা নামিয়ে রাখেন। ভয় করে। ভীষণ ভয় করে।

'হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে কেন? কেন এত রং নাম্বার হয়?'

সবিতা জিজ্ঞেস করেন।

আজ অনেকদিন হয়ে গেল সবিতা বা তীর্থবাবু কেউ অনেক রাত অবধি ঘুমোন না। ঠিক বারোটায় তীর্থবাবু একটা ঘুমের বড়ি খেয়ে নেন। খেয়ে চোখ বুঝে শুয়ে মনটা চিন্তাশূন্য করে ফেলতে চেষ্টা করেন।

পারেন না। কিছুতে পারেন না তীর্থবাবু। তাঁর চেতনা আর অবচেতনা, প্রথম স্তরের চেতনা আর অতল স্তরের চেতনা, প্রত্যেকটির মাঝ দিয়ে খাড়া খাড়া দেওয়াল উঠে যায়। দেয়ালগুলোর গায়ে পোস্টার আটা থাকে।

দীপঙ্করের ছবি। শৈশবের দীপঙ্কর, মাথা ন্যাড়া, ন্যালাভোলা চেহারা। ম্যাট্রিক পাশ করা দীপঙ্কর। গ্রাজুয়েট দীপঙ্কর। লম্বা একহারা, ভাবুক আর শান্ত চেহারা।

দীপঙ্কর! তীর্থবাবুর একমাত্র ছেলে। সন্তান, সন্তান, মানুষ সন্তান কেন চায়? কেন ভালবাসে সন্তানকে? তীর্থবাবু রোজ এই প্রশ্নটা নিজেকে করেন।

তারপর ঘুম আসে। গাঢ়, অথচ অস্বস্তিতে আতঙ্কে বিপর্যন্ত ঘুম। সবিতা বোধ হয় তখনও ঘুমোন না। তাই তিনি জিগ্যেস করেন, 'কার ফোন?'

'রং নাম্বার।'

'কোত্থেকে?'

'হাসপাতাল থেকে।'

'হাসপাতাল থেকে? ওগো আমাদের ফোন যদি হয়?'

'পাগলামি কোরো না সবু। দীপু নীরেনের কাছে আছে তুমি তো জান। ওখান থেকে

নীরেন ওকে দিল্লিতে ভর্তি করে দিতে চেষ্টা করছে। সব জেনেও পাগলামি কর কেন?' 'নীরেনের কাছে যদি থাকবে, তবে দীপু চিঠি লেখে না কেন? নীরেন কেন চিঠি লেখে না আমায়? তোমরা কী ভেবেছ আমি কান্নাকাটি করব? ছুটে যাব নীরেনের কাছে?' 'সবু, অস্থির হয়ো না।'

'আমার যে মনে হয় দীপু নীরেনের কাছে নেই? নীরেন ইচ্ছে করে আমায় কিছু বলছে না?"

'চুপ করো সবু, কেঁদো না। সব ঠিক আছে। তুমি তো জান দীপুর পালিয়ে থাকবার কোনো কারণ নেই।'

'তবে ও আসে না কেন?'

'সবু, অসুখে অসুখে তুমি অবুঝ হয়ে গেছ। দিনকাল খারাপ, এ অঞ্চলটাও ভালো নয় তাই ও আসে না।'

সবিতা এই সময় কাঁদতে শুরু করেন। আস্তে আস্তে, গুমরে গুমরে।

কাঁদতে কাঁদতে এক সময় সবিতা ঘুমিয়ে পড়েন। তীর্থবাবুর ঘুম আসতে দেরি হয়। কী হয়ে গেল দেশের অবস্থা। আচ্ছা, রুগী যদি মারা যায়, তবে টু-থ্রি এক্সচেঞ্জের নম্বর দিলে ফোর-সেভেনে ফোন করবি তোরা? রং নাম্বার। যাদের রুগী, তাদের মনের কী অবস্থা হয়?

কিংবা হয়ত কোনো অবস্থাই হয় না। আজকাল নাকি সবাই কুরুক্ষেত্রের অর্জুন, চূড়ান্ত নির্বেদে মৃত্যুকে গ্রহণ করে। লাশ নাকি বিছানাতেই পড়ে থাকে। খরচ বাঁচাবার জন্যে আত্মীয়রা চলে যায়, আর আসে না। নাকি পড়েই থাকে ঠাণ্ডা গুদামে। কেউ দেখতে আসে না পর্যন্ত।

তীর্থবাবুর ভয় করে, বালি বালি ভয় করে। এ একটা অন্য কলকাতায় বাস করছেন তিনি, অন্য পশ্চিমবঙ্গে। দেখতে মনে হয় সেই শহর। সেই গড়ের মাঠ- মনুমেন্ট- ভবানীপুর-আলিপুর-চড়কডাঙ্গার মোড়! সেই আষাঢ়ে রথের মেলা-চৈত্রে কালীঘাটে গাজন মাঘে বড়দিনের আলোকসজ্জা। সে শহর নয়। এ একটা ভুল শহর। রং সিটি। ভুল ট্রেনে চড়ে ভুল শহরে এসেছেন

তীর্থবাবু। নইলে, সবিতাকে বলা সবগুলো স্তোকের কথা ভুলে গিয়ে তীর্থবাবু ভাবেন, নইলে দীপঙ্কর চিঠি লেখে না কেন? কেন নীরেন খবর দেয় না দীপঙ্করের?

কেন, কেন সন্তান চায় মানুষ, কেন ভালবাসে আত্মজকে, আত্মজ্ঞাকে? মৃত্যুতে মুখাগ্নি করবে বলে? রং আন্সার। যতদিন জীবিত আছেন ততদিনই সন্তানকে চান তীর্থবাবু। কাছে থাক তুই, পাশে থাক। আমার জ্বালা যন্ত্রণা নে, ভাগ নে। আমার সঙ্গে এক হয়ে যেতে শেস্।

রং হোপ।

কোথায় একটা এক্সচেঞ্জ আছে যেন, এই শহরে কোথায় আছে একটা এক্সচেঞ্জ? কে

সেখানে বসে তীর্থবাবুকে শুধু বলছে রং নাম্বার। রং সিটি। রং হোল! কে সে? কোথায় সেই অদৃশ্য অপারেটর? অপারেটরদের দেখা যায় না কেন?

ভাবতে ভাবতে তীর্থবাবু টুপ করে ঘুমের ভেতর ডুবে যান। এই রকমই চলে দিন থেকে রাত, সোম থেকে রবি, সকাল থেকে সন্ধ্যা। রাতগুলোকে ভয় করে তীর্থবাবুর, কেননা ঘুমের মধ্যে শুধু সারি সারি দেওয়াল দেখতে পান তিনি। দেওয়ালে দীপঙ্করের মুখ আঁকা থাকে। ঘুমের মধ্যেই তীর্থবাবু ভাবতে থাকেন তবে কি মনোজের কাছে যাবেন? মনোজ ওর বন্ধু, মনের রোগের ডাক্তার। তীর্থবাবুর নিশ্চয়ই অসুখ হয়েছে। তোমার অসুখ হয়েছে তীর্থ।

মনোজ রায় দিল। তীর্থবাবুর শুকনো মুখ, কাতর চাহনি আর বারবার কপাল থেকে ঘাম মোছার চেষ্টা ও লক্ষ করছিল।

'কী অসুখ?'

'নার্ভের।'

'নার্ভ তো আমার ভালোই মনোজ!'

'তোমার চিন্তাগুলো অলীক।'

'অলীক!'

'তুমি কী বলেছ তুমি নিজেই শোন।'

মনোজ টেপরেকর্ডার চালিয়ে দিল। মনোজ রোগীদের স্বীকারোক্তি টেপ করে নেয়। তারপর বিচার করে। রায় দেয়। তীর্থবাবু টেপরেকর্ডারটা দেখে মনে মনে টাকার অঙ্ক হিসেব করছিলেন। এখন হঠাৎ একটা ক্লান্ত, নিচুগলা শুনতে পেলেন।

'আমার মনে হয় বাড়িটা আমার নয়। কড়া নাড়লে কেউ দরজা খুলবে না-কেননা আমি রং অ্যাড্রেসে এসেছি। পথে ঘাটে চলতে চলতে আমার শুধু মনে হয় কলকাতা এখন কলকাতায় নেই। বাইরের বাড়ি-ঘর-দোর গড়ের মাঠ মনুমেন্ট সব অন্য একটা শহরকে ধরে দিয়ে কলকাতা উধাও হয়ে গেছে। মনে হয় ইট্স এ রং সিটি! কোনো প্রয়োজন নেই তবু এটা যে সেই কলকাতাই তা নিজেকে বিশ্বাস করাবার জন্যে সেদিন ক্যাওড়াতলা গিয়েছিলাম। দেওয়ালের লেখাগুলো পড়েই বুঝতে পারলাম আমি ভুল জায়গায় এসেছি। সেদিন আমি স্বপ্ন দেখেছি..."

টেপ রেকর্ডার থামিয়ে দিল মনোজ। তীর্থবাবুর দিকে চাইল। বলল-

'কী স্বপ্ন দেখেছ তীর্থ?'

'আমি বলতে পারব না।'

'কী স্বপ্ন'?'

'আমাকে জিজ্ঞেস কোরো না মনোজ, আমাকে জিজ্ঞেস কোরো না। স্বপ্নটা আমি মাঝে মাঝেই দেখি।'

'সেইজন্যেই আমার জানা দরকার।"

'না মনোজ।'

'তুমি অসুস্থ তীর্থ। স্বাভাবিক, অসুস্থ হওয়া স্বাভাবিক...'

'কেন? আমার পক্ষে অসুস্থ হওয়া স্বাভাবিক কেন?'

'তোমার ছেলে তো.....'

'আমার ছেলে কী?

'বাড়িতে নেই।' 'মনোজ, আমি জানি না কে তোমায় কী বলেছে। আমার ছেলে দীপঙ্কর। কাজিন নীরেনের কাছে আছে লক্ষ্ণৌতে। ওখান থেকে দিল্লিতে পড়বে দীপঙ্কর।'

'গড!'

মনোজ যেন যন্ত্রণায় আর দুঃখে কথাটা বলল। ভেতর থেকে দীর্ঘনিঃশ্বাস উঠে এল একটা। তীর্থ, ওদের সময়ের সবচেয়ে ঠাণ্ডা মাথার ভালো ছেলেটা এ রকম হয়ে গেল?

'গড!' মনোজ খসখস করে ওষুধের নাম লিখল। কাগজ ছিঁড়ে ফেলল, তারপর একটা ওষুধের শিশি দিল তীর্থবাবুকে।

বসল

'রাতে এটা খেয়ো তীর্থ। ঘুম হবে।'

"দাও।"

তীর্থবাবু ওষুধের শিশিটা নিলেন। বেরিয়ে এলেন। মনোজ দরজা পর্যন্ত এগিয়ে এল।

তারপর বলল-

'বোস তোমার কাছে আর যায়নি তো?'

'না, কেন?'

'আমি ওকে বারণ করেছি।'

'ও এলে আমি ঢুকতে দেব ভেবেছ বাড়িতে? সবিতাকে সব আজেবাজে কথা বলে চলে যায় শুধু!' তীর্থবাবু বেরিয়ে এলেন, এখন সন্ধ্যা হয়েছে।

না কি সকাল? রাস্তায় কাতারে কাতারে লোক। নাকি জনশূন্য পথ?

নির্জন পথ-মেঘাবৃত্তা রজনী... ঝড় ঝঞ্চা-জয়সিংহ ছুরিতে শাণ দিচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের

বইয়ের ঐ বর্ণনাটা তীর্থবাবুর খুব ভাল লাগত।

দীপঙ্করের পাঠ্য ছিল 'রাজর্ষি'।

তীর্থবাবু বুঝতে পারলেন তাঁর চোখ দিয়ে জল পড়ছে টপটপ করে।

সন্তানরা এখন ঘাতক, ঘাতক ওরা। পিতামাতাদের নিয়ত হত্যা করে থাকে। তীর্থবাবু ওষুধের শিশিটা যত্ন করে নিয়ে যেতে লাগলেন। যেন অলিম্পিকের পবিত্র অগ্নিশিখা নিয়ে যাচ্ছেন।

আজ রাতে শুয়ে শুয়ে তীর্থবাবু সেই স্বপ্নটা আবার দেখলেন। শুয়ে দেখলেন চৌবঙ্গী রোডটার দু'পাশে লক্ষ মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। তারা সবাই নিশ্চল। পথের দুপাশে বড়ো বড়ো শাদা উজ্জ্বল আলো। পথের মাঝখানটা রক্তাক্ত। সেখানে দাঁড়িয়ে একটি প্রৌঢ়া রমণী আলুলায়িত চুলে বুকে হাত চাপড়ে প্রবীর! প্রবীর! প্রবীর! বলে বিলাপ করছে। মেয়েটিকে দেখেই তীর্থবাবু বুঝতে পারলেন ও পুরাণের সেই জনা।

দূরে দূরে ভীষণ প্রান্তরে মরুভূমে-দূরন্ত শ্মশানে হেথা তোর নাহি স্থান।

দুর্গম কাম্ভারে, তুষার মাঝাবে, পর্বত-শিখরে চল। চল পাপ রাজা ত্যজি, পতি তোর পুত্রঘাতী অরাতির সখা,

চল পুত্র-শোকাতুরা-রমণীটি আকাশ ফাটিয়ে চেঁচাচ্ছে। এই সময়-ড্রন্স ফেলে দাও। ঘন্টা বাজাও! বলে কারা চেঁচিয়ে উঠল। কে বলল এটা মাহিস্মতীপুর নয়। চলে যাও।

তৎক্ষণাৎ তীর্থবাবু বলতে গেলেন শী ইজ্ ইন দি রং সিটি! কিন্তু ঘন্টা বাজতে শুরু করে দিল।

ঘন্টা বাজছে। ফোন বাজছে।

তীর্থবাবু উঠে বসলেন। টেলিফোন মানুষ রাখে কেন? ভাড়া দিতে জিভ বেরিয়ে যায়, নাভিশ্বাস উঠে যায় যখন?

তীর্থবাবু রিসিভার তুললেন।

'ফোর সেভেন....নাইন?'

ঠিক ঐ নাম্বারটাই তীর্থবাবুর সামনের টেলিফোনটার গায়ে লেখা আছে। তীর্থবাবু বললেন,

'নো'।

'এটা তীর্থঙ্কর চ্যাটার্জির বাড়ি নয়?'

'নো।'

'তীর্থবাবু, আমি! বোস। হ্যাঁ সেদিন যা বলেছিলাম।... দূরে রেল লাইনের পাশের বডিটা, হ্যাঁ দীপঙ্করের। ডায়েড অফ ইনজিওরিস। আপনি তো এলেন না। বড়ি হ্যাজ বীন ক্রিমেটেড। হ্যালো। শুনতে পাচ্ছেন?'

'না।'

'এটা তীর্থঙ্কর চ্যাটার্জির বাড়ি নয়!'

না।'

'এটা ফোর সেডেন... নাইন নয়?

'না, রং নাম্বার।'

তীর্থবাবু ফোন নামিয়ে রাখলেন। কী ভেবে রিসিভারটাই নামিয়ে রাখলেন। তারপর বিছানায় ফিরে গেলেন। স্বপ্নটা আবার দেখতে হবে। যেমন করে হোক আরেকবার দেখতে হবে। স্বপ্ন দেখে তবে তীর্থবাবু জানতে পারবেন কেমন করে উন্মাদিনী জনা রং সিটি থেকে পালিয়ে গেল। স্বপ্ন ছাড়া তীর্থবাবুর হাতে আর কিছুই নেই আজ। জেগে জেগে কলকাতার পথ ঘুরলে একটাও বেরোবার পথ দেখতে পান না তীর্থবাবু। এখন তাঁকে জনার পেছন পেছন যেতে হবে। প্রবীরের মৃত্যুর পর প্রবীরের বাপ থেকে সবাই যখন ঘাতকদের নিয়ে বিজয়োৎসব করছিল, একা জন্য পালিয়ে গিয়েছিল।

তীর্থবাবু ঘুমিয়ে পড়লেন।

10
Articles
মহাশ্বেতা দেবীর ছোট গল্প সংকলন
0.0
"মহাশ্বেতা দেবীর ছোটগল্পের সংগ্রহ" হল গল্পের একটি সংকলন যা ভারতে সামাজিক সংগ্রাম এবং মানবিক স্থিতিস্থাপকতাকে স্পষ্টভাবে চিত্রিত করে। গল্পগুলি বর্ণ বৈষম্য, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার বিষয়বস্তু অন্বেষণ করে । মহাশ্বেতা দেবীর আখ্যানগুলি পদ্ধতিগত অন্যায়ের একটি শক্তিশালী সমালোচনা প্রদান করে এবং যারা সামাজিক অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাদের আওয়াজ দেয়। সমসাময়িক ভারতের রূঢ় বাস্তবতাকে সহানুভূতি ও অন্তর্দৃষ্টির সঙ্গে তুলে ধরার লেখকের ক্ষমতার প্রমাণ হিসেবে সংগ্রহটি দাঁড়িয়েছে।
1

ভূমিকা

28 November 2023
0
0
0

1984 সালে প্রকাশিত তাঁর 'শ্রেষ্ঠ গল্প'-এর ভূমিকায় মহাশ্বেতা দেবী লিখেছিলেন, 'সাহিত্যকে শুধু ভাষা, শৈলী, আঙ্গিক নিরিখে বিচার করার মানদণ্ডটি ভুল। সাহিত্য বিচার ইতিহাস প্রেক্ষিতে হওয়া দরকার। লেখকের লেখার

2

বান

28 November 2023
0
0
0

ডাদ্রমাসে রান্নাপূজার দিন এসেছে, এ সময়ে গৃহস্থমাত্রেই মনসাগাছ খোঁজে। রূপসী বাগদিনীর ছেলে চিনিবাস মনসাগাছ খুঁজতে গেল। মনসাগাছ নিয়ে পূর্বস্থলীর গৃহস্থরা উঠোনে পৌঁতে। মনসা বাস্তু। মনসা ক্ষেতে ধান, গাইয়ের

3

বিছন

28 November 2023
0
0
0

কুরুডা ও হেসাডি গ্রামের উত্তরে জমি ঢেউখেলানো, একেবারে শুকনো রোদে জ্বলা। বৃষ্টির পরও এখানে ঘাস জন্মায় না। মাঝে মাঝে ফণীমনসার জমল ফণা তুলে থাকে, কয়েকটি নিমগাছ। এই দগ্ধ ও আন্দোলিত প্রান্তর, যেখানে মোষ চর

4

দ্রৌপদী

29 November 2023
1
0
0

নাম দোদি মেঝেন, বয়স সাতাশ, স্বামী দুলন মাছি (নিহত), নিবাস চেরাখান, খানা বাঁকড়াঝাড়, কাঁধে ক্ষতচিহ্ন (দোদি গুলি খেয়েছিল), জীবিত বা মৃত সন্ধান দিতে পারলে এবং জীবিত হলে গ্রেপ্তারে সহায়তায় একশত টাকা.....

5

রং নাম্বার

30 November 2023
0
0
0

রাত একটা। তীর্থবাবুর ঘুম ভেঙে গেল। টেলিফোন বাজছে। মাঝরাতে টেলিফোন বাজলে কেন এত ভয় করে? 'হ্যালো। শুনুন.. হাসপাতাল থেকে বলছি.. আপনাদের পেশেন্ট এইমাত্র মারা গেলেন। হ্যালো।' 'আমাদের পেশেন্ট? হাসপাতালে আ

6

শিকার

1 December 2023
1
0
0

জায়গাটি গোমো-ডালটনগঞ্জ লাইনে পড়ে। স্টেশনটিতে একদা ট্রেন দাঁড়াত। সম্ভবত ট্রেন দাঁড়াবার খরচ পোষায় না। তাই স্টেশন ঘর, থাকার কোয়ার্টার ও কুলী বস্তির ঘরে দেখা যায় গরু ও ছাগল মাঝে মাঝে। 'কুরুডা আউটস্টেশন, অ

7

সাঁঝ-সকালের মা

6 December 2023
0
0
0

বৈশাখের তাতে মাঠের ছাতি ফাটে, সাধন কান্দোরীর মা জটি ঠাকুরনী মরে গেল। মরে যাবার আগে ত্রুটি ঠাকুরনীর পেট গলা ফুলে ঢাক হয়েছিল। বাঁশের দোলা বেঁধে সাধন কান্দোরীর মা-কে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল। 'মোকে আঁসপা

8

বাঁয়েন

7 December 2023
0
0
0

ডগীরথ যখন খুব ছোট তখনি ওর মা চণ্ডীকে বাঁয়েনে ধরেছিল। বাঁয়েনে ধরবার পরে চণ্ডীকে সবাই গাঁ-ছাড়া করে দিল। বাঁয়েনকে মারতে নেই, বাঁয়েন মরলে গাঁয়ের ছেলে-পিলে বাঁচে না। ডাইনে ধরলে পুড়িয়ে মারে, বাঁয়েনে ধরলে তা

9

বেহুলা

7 December 2023
0
0
0

নদীটির নাম বেহুলা, গ্রামটির নাম বেহুলা, ব্লক ইরফানপুর, ব্লক আপিস-হেল্থ সেন্টার কৃষি সমবায় আপিস, সবই ইরফানপুরে; বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে আড়াই ঘণ্টা ট্রেনে গেলে ইরফানপুর স্টেশন। সেখানে নেমে স্রেফ হেঁটে যেতে

10

মৌল অধিকার ও ভিখারী দুসাদ

8 December 2023
0
0
0

জায়গাটি নওয়াগড়ের সীমানায় ও বাস-পথের ওপরে। নওয়াগড় ছিল এক ছোটখাট স্টেট বা বড় জমিদারি। জমিদারের "রাক্সা" খেতাব মিলেছিল। স্বাধীনতার বছরে রাজা সাহেবের বয়েস ছিল এক। তা সত্ত্বেও এখন সে রাজা সাহেব নামেই পরিচি

---