shabd-logo

নেফ্রুদেৎ-এর সমাধি

12 November 2023

0 Viewed 0

ডিসেম্বর ৭

এইমাত্র আমার জার্মান বন্ধু ক্রোলের কাছ থেকে একটা টেলিগ্রাম পেলাম। কোল লিখছে—

সব কাজ ফেলে কায়রোতে চলে এসো। তুতানখামেনের সমাধির মতো আরেকটি সমাধি আবিষ্কৃত হতে চলেছে। সাকারার দু মাইল দক্ষিণে সমাধির অবস্থান। কায়রোতে কানাক হোটেলে তোমার জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে রাখছি।

উইলহেল্‌ম ক্রোল

প্রাচীন মিশরের কোনও রাজা বা উচ্চপদস্থ কর্মচারী মারা গেলে মাটির নীচে ঘর তৈরি করে কফিনে তাদের মমি রেখে তার সঙ্গে আরও বেশ কিছু জিনিসপত্র পুরে দেওয়া হত, এটা সকলেই জানে। মিশরীয়রা বিশ্বাস করত মৃত্যুতেও মানুষের জীবন শেষ হয় না, কাজেই দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসের প্রয়োজনও ফুরায় না। তাই খাবার জিনিস, খেলার জিনিস, প্রসাধনের জিনিস, গয়নাগাটি, আসবাবপত্র, জামাকাপড় সবই সমাধিতে স্থান পেত। এরমধ্যে অনেক জিনিসই থাকত যা অত্যন্ত মূল্যবান; যেমন সোনার উপর পাথর বসানো অলংকার। সোনার তৈরি সিংহাসন পর্যন্ত মিশরের সমাধিতে পাওয়া গেছে। তুতানখামেনের মমির উপরে যে রাজার প্রতিকৃতি সমেত আচ্ছাদন ছিল তার পুরোটাই নিরেট সোনার তৈরি। পৃথিবীতে একসঙ্গে এত সোনা আর কোথাও পাওয়া যায়নি।

এই সব মূল্যবান জিনিস থাকার দরুন সেই প্রাচীনকাল থেকেই ডাকাতরা সমাধি লুণ্ঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। বর্তমানকালে খুব কম সমাধিতেই মূল্যবান কিছু পাওয়া গেছে। এর ব্যতিক্রম হল তুতানখামেনের সমাধি। আশ্চর্যভাবে এই তরুণ সম্রাটের সমাধির উপর ডাকাতের হাত পড়েনি। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে হাওয়ার্ড কার্টার যখন এই সমাধি আবিষ্কার করেন, তখন সারা বিশ্বে সাড়া পড়ে গিয়েছিল এই কারণে যে, এই প্রথম একটি সমাধি পাওয়া গেল যার একটি জিনিসও খোয়া যায়নি।

ক্রোল যে সমাধিটার কথা লিখেছে সেটা সম্বন্ধে ইতিমধ্যে কাগজে পড়েছি। এটা হল আজ থেকে সাড়ে তিন হাজার বছর আগের এক পুরোহিত ও জাদুকর নেফ্রুদেৎ-এর সমাধি । ইংলন্ডের লর্ড ক্যাভেনডিশ মিশরসরকারের অনুমতি নিয়ে এই সমাধি খননের যাবতীয় খরচ বহন করছেন। ভিন দেশের লোক খননের কাজ চালালেও, খুঁড়ে যা পাওয়া যাবে তার একটা ভাগ মিশরসরকারকে দিতে হবে এই হল নিয়ম। এইভাবেই কায়রোর আশ্চর্য মিউজিয়ম গড়ে উঠেছে। খোঁড়ার কাজ চালাচ্ছেন তরুণ প্রত্নতাত্ত্বিক জোসেফ ব্যানিস্টার। সবেমাত্র একটা ঘর খুঁড়ে বার করার খবর কাগজে বেরিয়েছিল এবং তাতেই মনে হয়েছিল যে, এ সমাধিতে ডাকাতরা কোনও উপদ্রব করেনি। এ খবর তিনদিন আগে কাগজে পড়ি। এর মধ্যে কাজ নিশ্চয়ই আরও অগ্রসর হয়েছে, যদিও এ ধরনের কাজ অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ! আমার দিক দিয়ে এ এক সুবর্ণ সুযোগ। প্রত্নতাত্ত্বিক মহলে ক্রোলের যথেষ্ট খাতির আছে। সে যখন এই খোঁড়ার কাজে জড়িয়ে পড়েছে, তখন আমারও কোনও অসুবিধা হবার কথা নয় ।

এই লর্ড ক্যাভেনডিশ ভদ্রলোকটি যে মিশর সম্বন্ধে বিশেষ উৎসাহী, তা নন। তাঁর নানারকম শখ। ইনি ইংলন্ডে বিশাল সম্পত্তির অধিকারী। বিভিন্ন সময়ে নানান ব্যাপারে ইনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, তারমধ্যে ব্রেজিলে ও নিউগিনিতে দুটি অভিযানের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে ।

জোসেফ ব্যানিস্টার সম্বন্ধে আমি শুধু এইটুকুই জানি যে তার বয়স পঁয়ত্রিশ এবং সে মিশর সম্বন্ধে একজন বিশেষজ্ঞ।

আমি তিনদিনের মধ্যেই রওনা হচ্ছি। মিশর সম্বন্ধে আমার চিরকালের কৌতূহল। এই বৃদ্ধ বয়সে ছেলেমানুষের মতো উত্তেজিত বোধ করছি।

ডিসেম্বর ১২, কায়রো

এখন রাত সাড়ে এগারোটা। আমি কানার্ক হোটেলের ৩৫২ নম্বর ঘরে বসে আমার ডায়রি লিখছি। গতকাল সকালে আমি কায়রো পৌঁছেছি। ক্রোল গিয়েছিল এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্ট থেকে শহরে ফেরার পথেই এই তিন দিনের খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। এই সমাধিতে যে চোরের হাত পড়েনি তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে সমাধির প্রবেশপথটা কয়েকটা বড় পাথরের নীচে চাপা পড়েছিল। জোসেফ ব্যানিস্টার নেফ্রুদেৎ-এর কথা জানত এবং বিশ্বাস করত তার একটা সমাধি নিশ্চয়ই কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। সে অনেক খোঁজার পর প্রায় হাল ছেড়ে দেবার মুখে একটা শেষ চেষ্টা দেবার জন্য ওই পাথরগুলো সরাতে বলে। পাথর সরাতেই বোঝা যায় সেখানে একটা কিছু রয়েছে। একটু খোঁড়াখুঁড়ি করেই দেখা যায় যে সেটা একটা প্রবেশদ্বার। প্রবেশদ্বার মানেই যে সমাধির প্রবেশদ্বার, এ বিষয়ে ব্যানিস্টারের মনে কোনও সন্দেহ ছিল না, কারণ প্রবেশদ্বারের চৌকাঠের উপরে প্রাচীন মিশরীয় লিপিতে নেফ্রুদেৎ-এর নাম লেখা ছিল।

ব্যানিস্টার এটা দেখামাত্র ইংলন্ডে লর্ড ক্যাভেনডিশকে টেলিফোন করে। ক্যাভেনডিশ তাকে খননের কাজ চালিয়ে যেতে বলেন, এবং আশ্বাস দেন যে টাকার কোনও অভাব হবে না।

কাল দুপুরে ক্রোলের সঙ্গে আমি গিয়েছিলাম খোঁড়ার জায়গায়। ব্যানিস্টারের সঙ্গে আলাপ হল। বেশ চালাকচতুর, এবং খুব উৎসাহী। সে এখন চরম উত্তেজনা বোধ করছে। তার বিশ্বাস সে তুতানখামেনের মতোই এক সমাধি আবিষ্কার করতে চলেছে, যদিও তুতানখামেন ছিল সম্রাট আর নেফ্রুদেৎ পুরোহিত ও জাদুকর।

প্রথম যে ঘরটা খোলা হয়েছে তাতে বিস্তর জিনিস পাওয়া গেছে, তারমধ্যে আসবাব আর দেবদেবীর মূর্তিই বেশি। কারুকার্য অতি উঁচু দরের। এরমধ্যেই নানান দেশ থেকে সাংবাদিকরা আসতে শুরু করে দিয়েছে। তাদের অবশ্য সমাধিকক্ষের ভিতর ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, এবং হবেও না। তারা যা খবর নেবার বাইরে থেকেই নিচ্ছে।

ক্রোল একটা কাজের কাজ করেছে। তার সঙ্গে ব্যানিস্টারের পরিচয় বেশ কিছুদিন থেকেই। সে ব্যানিস্টারকে বলে অনুমতি জোগাড় করে নিয়েছে যাতে খোঁড়ার সময় আমি আর ক্রোল দুজনেই কক্ষের মধ্যে থাকতে পারি। প্রথম কক্ষের জিনিসপত্রে নম্বর লাগিয়ে,

তাদের ছবি তুলে অতি সন্তর্পণে তাদের পাঠানো হচ্ছে ল্যাবরেটরিতে পরিষ্কার করার জন্য । প্রথম কক্ষের পিছন দিকে একটা সিলমোহর দিয়ে বন্ধ করা দরজা রয়েছে। সেটা যে আরেকটা ঘর তাতে সন্দেহ নেই। তাতে আবার কী আশ্চর্য সম্ভার লুকিয়ে আছে কে জানে !

ডিসেম্বর ১৫

আজ দ্বিতীয় ঘরটা খোলা হল। ব্যানিস্টার প্রথমে একা কিছুক্ষণ টর্চ নিয়ে ঘরটা ঘুরে দেখল। আমরা দুজন বাইরে অপেক্ষা করলাম। কদিনের মধ্যেই এইসব ঘরে ইলেকট্রিক কানেকশন বসে যাবে, তখন আর সবসময় টর্চের দরকার হবে না। একটু পরেই আমাদের ডাক পড়ল। ব্যানিস্টার উত্তেজিত স্বরে বলল, 'এ ঘরেও প্রচুর জিনিস । কাস্কেটের সংখ্যাই এগারোটা--তারমধ্যে ছোট বড় সব রকমই আছে। আর কাস্কেট মানেই সেগুলো জিনিসে ভরা।

তুতানখামেনের সমাধির কাস্কেট বা বাক্স দেখেছি। কাঠ, হাতির দাঁত আর অ্যালাব্যাস্টারের তৈরি। বাক্সগুলোর বাইরে সর্বাঙ্গে অপূর্ব কারুকার্য। এগুলোও দেখলাম সেরকমই ব্যাপার। কিন্তু এ ছাড়াও কিছু জিনিস দেখা যাচ্ছে যেগুলো তুতানখামেনের সমাধিতে দেখা যায়নি। সেগুলো বেশির ভাগই কাঠ বা হাড়ের তৈরি। ক্রোল বলল, 'আমাদের ভুললে চলবে না যে আমরা কোনও সম্রাটের সমাধি দেখছি না। নেফ্রুদেৎ ছিলেন পুরোহিত ও জাদুকর। জাদুসংক্রান্ত অনেক কিছু জিনিসই এখানে পাবার কথা।

আমাদের দৃষ্টি গিয়েছিল একটা বড় বাক্সের দিকে, অ্যালাব্যাস্টারের তৈরি। ব্যানিস্টার বলল, 'এবার এটাকে খুলব, কিন্তু কাজটা অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে করতে হবে। দেখতেই পাচ্ছ, বাক্সটার চারপাশে হাতে আঁকা ছবি রয়েছে। তাড়াহুড়ো করলে সেগুলোর রং খসে আসতে পারে।'

এইবার ব্যানিস্টারের ধৈর্যের নমুনা দেখলাম। ছেলেটিকে যত দেখছি ততই ভাল লাগছে। আধ ঘন্টা ধরে পরিশ্রম করে একটিও নকশা স্থানচ্যুত না করে সে বাক্সের ডালাটা খুলল। তারপর তারমধ্যে টর্চ ফেলতেই দেখা গেল সেটা নানারকম গয়না, ভাঁজ করা কাপড়, ছোট মূর্তি ইত্যাদি জিনিসে ভর্তি ।

টর্চের আলোয় একটা ব্যাপার দেখে একটু অবাক হলাম। বাক্সের ভিতরে কী একটা জিনিস যেন অস্বাভাবিক রকম ঝলমল করছে। সেটা সোনা নয়; সেটা যে একটা পাথর তাতে কোনও সন্দেহ নেই, এবং সেটা একটা গয়নার মধ্যে বসানো।

আমি ব্যানিস্টারকে প্রশ্ন করলাম, 'ঝলমলে জিনিসটা কী বুঝতে পারছ?'

ব্যানিস্টার বলল, 'মিশরে প্রাচীনকালে গয়নায় সোনার সঙ্গে যে সব পাথর ব্যবহার হত সেগুলো সেমি প্রেশাস স্টোনস। অর্থাৎ সেগুলো মহামূল্য রত্ন নয়। কারনেলিয়ান, অ্যামেথিস্ট, অবসিডিয়ান — এইসব জাতীয় পাথর। তার থেকে তো এত দ্যুতি বেরোয়

না।

'তা হলে ?"

'একটু ধৈর্য ধরতে হবে,' বলল ব্যানিস্টার। 'তোমরা বরং বাইরে অপেক্ষা করো। আমি এই বাক্সের জিনিসগুলো একে একে বার করি। আর, ভাল কথা, এই পাথর সম্বন্ধে যেন বাইরের কেউ না জানে। বিশেষ করে সাংবাদিকরা। '

আমরা দুজন বাইরে চলে এলাম। লাঞ্চের সময় হয়েছিল, কাজেই সে কাজটাও সেরে নেওয়া হল। সাংবাদিকরা আমাদের কাছ থেকে খবর বার করার বহু চেষ্টা করেছিল, আমরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে রইলাম। ব্যানিস্টার না বলা পর্যন্ত আমরা কোনও কথা ফাঁস করছি

না।

আজ মনে হয় আর কোনও ঘটনা ঘটবে না, কারণ কাস্কেটের জিনিস বার করতে ব্যানিস্টারের সময় লাগবে। এই সাবধানতার ব্যাপারটা এখানে না এলে বুঝতে পারতাম না। শুকনো বালির দেশ বলেই এসব জিনিস এখনও রয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোথাও হলে এতদিনে সব ধুলো হয়ে যেত।

মিশরসরকার থেকে ডাঃ আবদুল সিদ্দিকি বলে এক প্রত্নতাত্ত্বিকও আজ থেকে ব্যানিস্টারকে সাহায্য করছেন। লর্ড ক্যাভেনডিশ এখনও ইংলন্ডে ; তবে উনি বলেছেন খবর দিলেই চলে আসবেন ।

ডিসেম্বর ১৬

এর চেয়ে আশ্চর্য খবর আর হতে পারে না। কাল যে জিনিসটাকে কাস্কেটের মধ্যে চকচক করতে দেখেছিলাম, সেটা হল হিরে। হ্যাঁ, হিরে—যার সঙ্গে মিশরের সম্পর্ক ছিল না। কোনওদিন। ঈজিপ্টে হিরে পাওয়া আর আফ্রিকার জঙ্গলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার পাওয়া একই জিনিস। ইতিহাসের গোড়ার দিকে হিরে ছিল ভারতবর্ষের একচেটিয়া সম্পত্তি । বহুকাল থেকে ভারতবর্ষে হিরের খনিতে কাজ হয়ে আসছে। পশ্চিমে তখন যে হিরে গেছে, সবই ভারতবর্ষ থেকে। বহু পরে, অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে হিরে আবিষ্কার হয় দক্ষিণ আমেরিকায় আর দক্ষিণ আফ্রিকাতে। আজকাল ভারতবর্ষে হিরের উৎপাদন কমে গেলেও কোহিনূর থেকে আরম্ভ করে যে সব বিখ্যাত হিরের নাম ইতিহাসে পাওয়া যায়, তার অধিকাংশেরই উৎপত্তি স্থান ভারতবর্ষ ।

কিন্তু ঈজিপ্টে হিরে । এ যে তাক লাগানো ব্যাপার । কাস্কেটের গয়নার মধ্যে যে হিরে পাওয়া গেছে তার অধিকাংশই মটরদানার সাইজের, দু একটা একটু বড়। সেগুলো সবই প্রায় সোনার মধ্যে বসানো। ল্যাবরেটরিতে এই হিরে পরীক্ষা করে দেখা গেছে এতে কোনও খুঁত নেই। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ হিরের সঙ্গে এর তুলনা চলে। কাঠিন্যে আর উজ্জলো এ হিরে প্রথম শ্রেণীতে পড়ে।

বলা বাহুল্য খবরটা দাবানলের মতো চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। মিশরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যে এমন তাজ্জব ঘটনা আর কখনও ঘটেনি। কোত্থেকে এ হিরে এল, কী করে এল, সেটা কেউই অনুমান করতে পারছে না। ভারতবর্ষের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথাও উঠেছে, কিন্তু সাড়ে তিন হাজার বছর আগে ভারতবর্ষে সোনা ছিল, এমন কোনও নজির ইতিহাসে নেই ।

লর্ড ক্যাভেনডিশ খবর পাওয়ামাত্র কায়রোতে চলে এসেছেন। আজ আমাদের সঙ্গে আলাপ হল। বছর পঞ্চাশ বয়সের সুপুরুষ ভদ্রলোক, এখন মহা ফুর্তিতে আছেন। এসেই আজ রাত্রেই একটা বড় পার্টি দিলেন কানকি হোটেলে এই যুগান্তকারী ঘটনা সেলিব্রেট করার জন্য। মিশরে এখন টুরিস্ট সিজন, তাই লোক হয়েছিল অনেক।

এখন পর্যন্ত হিরে সমেত সাতটা গলার হার আর তিন জোড়া কানের গয়না পাওয়া গেছে। আরও অনেক কিছু পাওয়া যাবে বলে আমার ধারণা। এখনও আসল সমাধি কক্ষ—যাতে নেফ্রুদেৎ-এর মমি থাকার কথা— সেটাই খোলা হয়নি। আমি পার্টিতে ব্যানিস্টারের সঙ্গে এই ঘটনা নিয়ে কথা বললাম। সে একেবারে হতভম্ব। এই হিরে আবিষ্কারের ফলে মিশর সম্পর্কে এমন একটা নতুন দিক খুলে গেছে, যেটা সম্পর্কে আগে কেউ ভাবতেও পারেনি। অথচ ব্যাপারটা রহস্যময়। ব্যানিস্টার বলল, 'ঈজিপ্টের সঙ্গে কার্বনের কোনও সম্পর্ক ইতিহাসে পাওয়া যায়নি। কয়লা এদেশে কোনওদিন ছিল না । অথচ হিরের মূলে হল কার্বন। আমি এর কোনও কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছি না।

আগামী কাল একটা নতুন ঘর খোলা হবে। আশা করছি এটাই হবে প্রধান সমাধিকক্ষ——এবং নেফ্রুদেৎ-এর কফিনও এখানেই পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে হিরের খবরটা অবিশ্যি পৃথিবীর সব কাগজেরই প্রথম পাতায় বেরিয়ে গেছে। খোঁড়ার জায়গায় ভিজিটরের সংখ্যাও ভয়াবহ রকম বেড়ে গেছে। তবে হিরে পাওয়ার পর থেকেই মিশর সরকার খোঁড়ার জায়গায় পুলিশের সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন কেবল লর্ড ক্যাভেনডিশ, তাঁর কয়েকজন অন্তরঙ্গ বন্ধু আর আমাদের দুজনকে ছাড়া বাইরের লোক আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ডিসেম্বর ১৭

আজ সকালে একটা ঘটনার কথা শুনলাম যার সঙ্গে এই প্রত্নতাত্ত্বিক খননের কোনও সম্পর্ক না থাকলেও, এটাও হিরে সংক্রান্ত।

তিন মাস আগে হোটেল কার্নাকে লর্ড ও লেডি এইন্‌সওয়র্থ নামে ইংলন্ডের বিশেষ সম্রান্ত পরিবারের এক দম্পতি এসেছিলেন কিছুদিনের জন্য। লেডি এইন্‌সওয়র্থের একটি বহুমূল্য হিরের হার ছিল, যার প্রধান হিরেটি একটি আঙুরের মতো বড়। এই হোটেল থেকেই সেই হারটি চুরি যায়, এবং সেইসঙ্গে লর্ড এইন্‌সওয়র্থের ভৃত্য ফ্রানসিসকেও আর পাওয়া যায়।

না।

পুলিশ অনুমান করে এটা বিখ্যাত গ্রিক হিরে চোর ডিমিট্রি ম্যাক্রোপুলসের কীর্তি। তাকে নাকি এই ঘটনার তিনদিন আগে কায়রোতে দেখা গিয়েছিল। ম্যাক্রোপুলস দুবার জেল খেটেছে। কিন্তু তাতেও তার সংস্কার হয়নি। ম্যাক্রোপুলস এইন্‌সওয়র্থের চাকর ফ্রানসিসকে মোটা ঘুষ দিয়ে হিরের হারটি আদায় করে। তার ফলে ফ্রানসিসকেও পালাতে হয়। এখন হিরেই হচ্ছে একমাত্র আলোচ্য বস্তু। তাই আমাদের হোটেলে এক ফরাসি ভদ্রলোক আমাদের এই কাহিনীটা শোনালেন। মনে মনে বললাম, ভাগ্যিস নেফ্রুদেৎ-এর সমাধিতে ডাকাত পড়েনি, তা হলে তারা দাঁও মারত ভালই ।

আজ দুপুরে দুটোর সময় তৃতীয় ঘরের দরজার সিল ভাঙা হল। যা অনুমান করা হয়েছিল, তাই। এটাই হল প্রধান কক্ষ, আর এখানেই রয়েছে নেফ্রুদেৎ-এর শবাধার। শবাধারটি বিশাল। তার চার পাশে নানারকম ছোটখাটো কাঠের আসবাব ইত্যাদি জমে

ছিল ; প্রথমে সেগুলোকে ঘর থেকে বার করা হল । এতে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই নেই । স্থির হল কাল সকালে নেফ্রুদেৎ-এর শবাধার খোলা হবে। সচরাচর এই কফিনগুলোতে প্রথমে থাকে একটা বাইরের কাঠের আবরণ। সেটাকে খুললে পরে বেরোয় কারুকার্য করা মামির আবরণ, যেটার উপরের দিকে থাকে মৃত ব্যক্তির প্রতিকৃতি। তার নীচে থাকে বুকের উপর জড়ো করা হাত, আর তার নীচে শরীরের নীচের অংশ আর পা। এই মূর্তির সর্বাঙ্গে থাকে কারুকার্য এবং এতে সোনার অংশ থাকার সম্ভাবনাও বেশি।

কাল দুপুরের মধ্যে নেফ্রুদেৎ-এর কফিন খোলা হয়ে যাবে বলে আমার ধারণা।

ডিসেম্বর ১৮

আজ আরেক চমক ।

নেফ্রুদেৎ-এর মামির আবরণে তার প্রতিকৃতির গলায় একটি হার পাওয়া গেছে যাতে একটি অসামান্য দ্যুতিসম্পন্ন হিরে রয়েছে। ব্যানিস্টার আমাদের প্রায় ঘণ্টাখানেক আগেই ঢুকেছিল এই কক্ষে। তারপর সে ডাকায় প্রথম গেলেন লর্ড ক্যাভেনডিশ ও তাঁর দুই বন্ধু, তারপর আমরা দুজন। ক্যাভেনডিশ একটি মন্তব্য করলেন যেটা আমার মোটেই ভাল লাগল না। তিনি কিছুক্ষণ কফিনের গলার হিরেটার দিকে চেয়ে বললেন, 'আই মাস্ট সে ইট লুক্‌স এগজ্যাক্টলি লাইক লেডি এইন্‌সওয়র্থস ডায়ামন্ড।

এটা বলার অবিশ্যি একটা কারণ আছে। মিশরীয়রা সেই যুগেই হিরেতে পল কাটতে শিখেছিল—যেটা ভারতবর্ষ কোনওদিনও রপ্ত করতে পারেনি। এই হিরেটাও তাই দেখে আজকালকার হিরে বলেই মনে হয়। ক্রোল আমার কানের কাছে মুখ এনে বলল, 'ম্যাজিক, ম্যাজিক—এ সবই ম্যাজিক। ম্যাজিক, ভোজবাজি ইত্যাদিতে বিশ্বাসী ক্রোলের মতো ইউরোপে আর দ্বিতীয় কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না। এই হিরে তৈরির ব্যাপারে জাদুর যে একটা ভূমিকা আছে, সে বিষয় ক্রোল নিঃসন্দেহ। শুধু রাসায়নিক ব্যাপারে এটা সম্ভব হয়েছে সেটা ক্রোল মানতে চায় না ।

মোটকথা এই সাড়ে তিন হাজার বছর আগের হিরে আমাকে যে চমক দিয়েছে, তেমন

আর কিছু দিয়েছে বলে মনে পড়ে না।

ডিসেম্বর ১৯

আজ তুমুল কাও। এরকম যে হবে তা ভাবতে পারিনি ।

নেফ্রুদেৎ-এর কণ্ঠহারের হিরে দেখে কায়রো পুলিশ বলেছে সেটা নাকি লেডি এইসওয়র্থের নেকলেসের হিরে। এই হিরের একটা ছবি তুলে তৎক্ষণাৎ নাকি লেডি এইসওয়র্থের কাছে পাঠানো হয়েছিল, এবং তিনিও সেটাকে তাঁর নিজের হিরে বলে চিনতে পেরেছেন। সাড়ে তিন হাজার বছর আগে মিশরে হিরে তৈরির ব্যাপারটা নাকি সম্পূর্ণ ধাপ্পা।

সমস্ত ব্যাপারটা কী করে সম্ভব হয় সেটারও একটা বিবৃতি পুলিশ দিয়েছে। যেদিন লেডি এইসওয়র্থের গলার হার চুরি হয় সেদিন নাকি ম্যাক্রোপুলস কায়রোতে ছিলই না। সে ছিল অ্যাথেনসে। এ ব্যাপারে তার অকাট্য অ্যালিবাই রয়েছে। অর্থাৎ এই বিশেষ হিরে চুরির সঙ্গে তার কোনও সম্পর্কই নেই। পুলিশ তাই একটা নতুন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। চুরির সময় ব্যানিস্টার কায়রোতে ছিল এবং কানার্ক হোটেলেই ছিল। সে-ই এইন্‌সওয়র্থের চাকরকে ঘুষ দিয়ে নেকলেসটা চুরি করে তাই দিয়ে ঈজিপসিয়ান ধাঁচের গয়না বানিয়ে নেফ্রুদেৎ-এর সমাধিতে পুরেছে। উদ্দেশ্য হল একটা বিশ্বব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করা। হাওয়ার্ড কার্টার খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তুতানখামেনের সমাধি খুঁড়ে বার করে। ব্যানিস্টার চেয়েছিল

কার্টারকেও টেক্কা দিতে । এদিকে আরেকটা ব্যাপার হয়েছে। আমেরিকার ডি বিয়ারস কোম্পানি সারা বিশ্বের হিরে বেচাকেনা কনট্রোল করে। সেই কোম্পানি থেকে লোক এসেছে ব্যাপারটা সম্বন্ধে অনুসন্ধান করার জন্য। কৃত্রিম উপায়ে সহজে হিরে তৈরি করতে পারলে হিরের ব্যবসা লাটে উঠত । অবিশ্যি তারা যখন শুনল নেফ্রুদেৎ-এর হিরে আসলে লেডি এইন্‌সওয়র্থের হিরে, তখন তারা আশ্বস্ত হল ।

ব্যানিস্টারকে পুলিশ প্রচণ্ডভাবে জেরা করছে। কায়রো পুলিশ নাকি এ ব্যাপারে একেবারে নির্মম। লর্ড ক্যাভেনডিশ একদম ভেঙে পড়েছেন। তাঁর মন বিশ্বাস অবিশ্বাসের মধ্যে দোলায়িত হচ্ছে। তিনি আমাকে বললেন যে, ব্যানিস্টার নাকি ভীষণ উচ্চাভিলাষী ছিল, যদিও কাজের দিক দিয়ে তার ওপর কোনও সন্দেহ করা চলতে পারে না। আমি আর ক্রোল দুজনেই বিশ্বাস করি যে ব্যানিস্টার নির্দোষ, কিন্তু সেটা আমরা প্রমাণ করছি কী করে ? সে যদি সত্যিই লেডি এইন্‌সওয়র্থের হিরে চুরি করে থাকে এবং তাই দিয়ে ঈজিসিয়ান ধাঁচের গয়না তৈরি করে থাকে, তা হলে সেগুলো কাস্কেট ইত্যাদির মধ্যে রাখবার সুযোগ তার ছিল, কারণ রোজই সে প্রথমে একাই সমাধিকক্ষে প্রবেশ করেছে। তারপর আমরা দুজন গেছি। পরিস্থিতি খুব অস্বস্তিকর। এ অবস্থায় কী করা উচিত তা ভেবে স্থির করা খুব মুশকিল ।

এদিক খোঁড়ার কাজ তো বন্ধ রাখা যায় না, তাই সে কাজটা এখন চলছে ডাঃ সিদ্দিকির তত্ত্বাবধানে। লর্ড ক্যাভেনডিশও এ ব্যাপারে রাজি হয়ে গেছেন। সিদ্দিকির সঙ্গে আমাদের যথেষ্ট পরিচয় হয়ে গিয়েছিল, কাজেই আমাদের পথ খোলাই আছে। এখন কথা হচ্ছে—আরও হিরে যদি বেরোয়, তা হলে সেটা কার বলে প্রতিপন্ন হবে ? তখন কি ব্যানিস্টারকে একটি পাকা হিরে চোর হিসেবে দাঁড় করানো হবে ?

কিন্তু আমার মন বলছে আর হিরে বেরোবে না। সেখানেই মুশকিল। এ কদিনে গয়না যা বেরিয়েছে তার পরিমাণ কিছু কম নয়। এদিকে আর হিরে না বেরোলে ব্যানিস্টারকে বাঁচানো আমাদের পক্ষে সত্যিই মুশকিল হবে।

ডিসেম্বর ২০

আজ আর ডায়রি লিখতেও মন চাইছে না। পুলিশের নির্মম জেরায় ব্যানিস্টার তার অপরাধ মেনে নিয়েছে। এবারে তার যা শাস্তি হবার তা হবে। আমার আর এখানে এক দিনও থাকতে ইচ্ছে করছে না। ক্রোলেরও প্রায় একই অবস্থা, তবে আজ একটা চতুর্থ ঘর—এটা ছোট — খোলা হয়েছে, তাতে ম্যাজিক সংক্রান্ত অনেক রকম জিনিস রয়েছে। ক্রোল বলছে, সে ঘরটা একবার দেখেই চলে যাবে। আমিও তার প্রস্তাবে রাজি হয়েছি।

ডিসেম্বর ২২

আমাদের এই ঘটনার পরিসমাপ্তি যে এইভাবে হবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। আগেই বলেছি যে চতুর্থ ঘরে ম্যাজিক সংক্রান্ত জিনিসই ছিল বেশি, তার মধ্যে প্রধান হল মড়ার মাথার খুলি আর জন্তুজানোয়ারের হাড়। সে সমস্ত বাইরে পাঠিয়ে দেবার পর ঘর যখন অপেক্ষাকৃত খালি হয়ে এল, তখন আমাদের তিন জনেরই চোখে পড়ল একটা মাঝারি সাইজের অ্যালাব্যাস্টারের কাস্কেট।

যথারীতি সন্তর্পণে কাস্কেটটা খুলে সিদ্দিকি বললেন, 'এতে একটা প্যাপাইরাসের স্ক্রোল দেখছি।'

প্যাপাইরাস গাছের পাতা শুকিয়ে প্রাচীন মিশরীয়রা সেটাকে কাগজের মতো করে ব্যবহার করত। প্যাপাইরাস থেকেই ইংরিজিতে পেপার কথাটা এসেছে। এই প্যাপাইরাস পর পর জুড়ে তা দিয়ে একটা লম্বা কাগজের মতো তৈরি করে তাতে কলম দিয়ে লিখে সেটাকে পাকিয়ে রাখা হত। সেইরকম পাকানো কাগজকেই বলে স্ক্রোল। এই স্ক্রোল অতি সাবধানে খুলে টেবিলের উপর পেতে তার উপর একটা কাচের শিট চাপা দিয়ে প্যাপাইরাসের লেখা পড়া হত। বলা বাহুল্য এই লেখা হল সেই প্রাচীন মিশরীয় লিপি হিয়েরোগ্লিফিক্স। এই ভাষা সিদ্দিকি, ক্রোল এবং আমি তিনজনেই পড়তে পারি ।

তিন ঘণ্টা লাগল এই প্যাপাইরাসকে সমান করে বিছোতে। তারপর তিনজনে মিলে ধীরে ধীরে তার লেখা পড়লাম ।

পড়তে পড়তে উত্তেজনায় আমাদের দম বন্ধ হয়ে আসছিল। শেষ যখন হল, তখন আমাদের সকলেরই কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম, আর হৃৎস্পন্দন বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ । প্যাপাইরাসের নীচে নাম রয়েছে নেফ্রুদেৎ-এর। অর্থাৎ তিনিই এটার লেখক ।

লেখার বিষয় হল হিরে প্রস্তুত করার উপায়।

ছত্রিশ রকম উপাদান লাগে হিরে তৈরি করতে, এবং তার সব কটিই এই আধুনিক কায়রো শহরেই পাওয়া যায় ।

আমরা তিনজনে পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলাম। সিদ্দিকি বললেন, 'তার মানে ব্যানিস্টার নির্দোষ ?

আমি বললাম, 'সেকথা এখনও বলা চলে না; কারণ এটাও তো জাল হতে পারে।

'তা হলে ?'

' তা হলে একটাই রাস্তা আছে। '

'কী?'

‘এইসব উপাদান সংগ্রহ করে নির্দেশ অনুযায়ী আপনাদের গবেষণাগারে হিরে তৈরি করা।

*আপনি ঠিক বলেছেন ।

গবেষণাগারে উনিশ ঘণ্টা কাজ করে যে হিরেটি তৈরি হল, তার আয়তন প্রথম অবস্থায় কোহিনূরের সমান। পল কাটার সময় হল না যদিও, কিন্তু সব রকম পরীক্ষাতেই এ হিরে সসম্মানে উত্তীর্ণ হল। পুলিশ দেখল সে হিরে, লর্ড ক্যাভেনডিশ দেখলেন, এবং সব শেষে দেখল ব্যানিস্টার। তার আনন্দাশ্রু দেখে আমারও চোখে জল এসে গিয়েছিল ।

ব্যানিস্টার মুক্তি পেল, পুলিশ আবার লর্ড এইন্‌সওয়র্থের চাকর ফ্রানসিসের খোঁজ করতে শুরু করল।

এই সবের পর আমি আনুষ্ঠানিকভাবে নেফ্রুদেৎ-এর প্যাপাইরাসটা নিয়ে সেটাকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে নীলনদের জলে ফেলে দিলাম ।

এই ফরমুলা আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না, কারণ এটা জানি শুধু আমরা তিনজন, এবং আমরা তিনজনেই জানি যে হিরের দুষ্প্রাপ্যতাই তার মূল্যের ও তার অসামান্য কদরের কারণ। কোনও কোনও ব্যাপারে এই দুষ্প্রাপ্যতা বজায় রাখা ভাল এবং দরকার। হিরে যে তার মধ্যে একটি, তাতে কোনও সন্দেহ নেই ।


38
Articles
শঙ্কু সমগ্র
0.0
একটি প্রফেসর এর জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু মহাজাগতিক ঘটনার সম্মিলিত রূপ
1

ব্যোমযাত্রীর ডায়রি

30 October 2023
1
0
0

প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কুর ডায়রিটা আমি পাই তারক চাটুজ্যের কাছ থেকে । একদিন দুপুরের দিকে আপিসে বসে পুজো সংখ্যার জন্য একটা লেখার প্রুফ দেখছি, এমন সময় তারকবাবু এসে একটা লাল খাতা আমার সামনে ফেলে দিয়ে

2

প্রোফেসর শঙ্কু ও ঈজিপ্সীয় আতঙ্ক

30 October 2023
1
0
0

পোর্ট সেইডের ইম্পিরিয়াল হোটেলের ৫ নং ঘরে বসে আমার ডায়রি লিখছি ! এখন রাত সাড়ে এগারোটা। এখানে বোধ হয় অনেক রাত অবধি লোকজন জেগে থাকে, রাস্তায় চলাফেরা করে, হইহল্লা করে। আমার পূর্বদিকের খোলা জানালাটা দ

3

প্রোফেসর শঙ্কু ও হাড়

30 October 2023
1
0
0

(বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রোফেসর ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু বেশ কয়েক বছর যাবৎ নিখোঁজ । তাঁর একটি ডায়রি কিছুদিন আগে আকস্মিকভাবে আমাদের হাতে আসে। 'ব্যোমযাত্রীর ডায়রি' নাম দিয়ে আমরা সন্দেশে ছাপিয়েছি। ইতিমধ্যে আম

4

প্রোফেসর শঙ্কু ও ম্যাকাও

30 October 2023
1
0
0

৭ই জুন বেশ কিছুদিন থেকেই আমার মন মেজাজ ভাল যাচ্ছিল না। আজ সকালে একটা আশ্চর্য ঘটনার ফলে আবার বেশ উৎফুল্ল বোধ করছি। আগে মেজাজ খারাপ হবার কারণটা বলি। প্রোফেসর গজানন তরফদার বলে এক বৈজ্ঞানিক কিছুদিন আগে

5

প্রোফেসর শঙ্কু ও আশ্চর্য পুতুল

30 October 2023
2
0
0

আজ আমার জীবনে একটা স্মরণীয় দিন! সুইডিস অ্যাকাডেমি অফ সায়ান্স আজ আমাকে ডক্টর উপাধি দান করে আমার গত পাঁচ বছরের পরিশ্রম সার্থক করল। এক ফলের বীজের সঙ্গে আর এক ফলের বীজ মিশিয়ে এমন আশ্চর্য সুন্দর, সুগন্ধ

6

প্রোফেসর শঙ্কু ও গোলক-রহস্য

31 October 2023
1
0
0

৭ই এপ্রিলঅবিনাশবাবু আজ সকালে এসেছিলেন। আমাকে বৈঠকখানায় খবরের কাগজ হাতে বসে থাকতে দেখে বললেন, 'ব্যাপার কী ? শরীর খারাপ নাকি ? সকালবেলা এইভাবে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে দেখেছি বলে তো মনে পড়ে না।'আমি বল

7

প্রোফেসর শঙ্কু ও চী-চিং:

31 October 2023
1
0
0

১৮ই অক্টোবরআজ সকালে সবে ঘুম থেকে উঠে মুখটুখ ধুয়ে ল্যাবরেটরিতে যাব, এমন সময় আমার চাকর প্রহ্লাদ এসে বলল, 'বৈঠকখানায় একটি বাবু দেখা করতে এয়েছেন। আমি বললাম, 'নাম জিজ্ঞেস করেছিস ?"প্রহ্লাদ বলল, 'আজ্ঞে

8

প্রোফেসর শঙ্কু ও খোকা

31 October 2023
1
0
0

৭ই সেপ্টেম্বরআজ এক মজার ব্যাপার হল। আমি কাল সকালে আমার ল্যাবরেটরিতে কাজ করছি, এমন সময় চাকর প্রহ্লাদ এসে খবর দিল যে একটি লোক আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। কে লোক জিজ্ঞেস করতে প্রহ্লাদ মাথা চুলকে বলল 'আজ

9

প্রোফেসর শঙ্কু ও ভূত

31 October 2023
1
0
0

১০ই এপ্রিলভূতপ্রেত প্ল্যানচেট টেলিপ্যাথি ক্লেয়ারভয়েন্স—এ সবই যে একদিন না একদিন বিজ্ঞানের আওতায় এসে পড়বে, এ বিশ্বাস আমার অনেকদিন থেকেই আছে। বহুকাল ধরে বহু বিশ্বস্ত লোকের ব্যক্তিগত ভৌতিক অভিজ্ঞতার ক

10

প্রোফেসর শঙ্কু ও রোবু

2 November 2023
1
0
0

১৬ই এপ্রিল আজ জার্মানি থেকে আমার চিঠির উত্তরে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রোফেসর পমারের চিঠি পেয়েছি। পমার লিখছেন— প্রিয় প্রোফেসর শঙ্কু, তোমার তৈরি রোবো (Robot) বা যান্ত্রিক মানুষ সম্বন্ধে তুমি যা লিখেছ,

11

প্রোফেসর শঙ্কু ও রক্তমৎস্য রহস্য

2 November 2023
1
0
0

১৩ই জানুয়ারি গত ক'দিনে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি, তাই আর ডায়রি লিখিনি। আজ একটা স্মরণীয় দিন, কারণ আজ আমার লিঙ্গুয়াগ্রাফ যন্ত্রটা তৈরি করা শেষ হয়েছে। এ যন্ত্রে যে কোনও ভাষার কথা রেকর্ড হয়ে গিয়ে তিন

12

প্রোফেসর শঙ্কু ও কোচাবাম্বার গুহা

2 November 2023
1
0
0

৭ই আগস্ট আজ আমার পুরনো বন্ধু হনলুলুর প্রোফেসর ডাম্বার্টনের একটা চিঠি পেয়েছি। তিনি লিখছেন— প্রিয় শ্যাঙ্কস, খামের উপর ডাকটিকিট দেখেই বুঝতে পারবে যে বোলিভিয়া থেকে লিখছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও যে

13

প্রোফেসর শঙ্কু ও গোরিলা

2 November 2023
1
0
0

১২ই অক্টোবর আজ সকালে উশ্রীর ধার থেকে বেড়িয়ে ফিরছি, এমন সময় পথে আমার প্রতিবেশী অবিনাশবাবুর সঙ্গে দেখা। ভদ্রলোকের হাতে বাজারের থলি। বললেন, 'আপনাকে সবাই একঘরে করবে, জানেন তো। আপনি যে একটি আস্ত শকুনির

14

প্রোফেসর শঙ্কু ও বাগ্দাদের বাক্স

2 November 2023
1
0
0

১৯শে নভেম্বর গোল্ডস্টাইন এইমাত্র পোস্টআপিসে গেল কী একটা জরুরি চিঠি ডাকে দিতে। এই ফাঁকে ডায়রিটা লিখে রাখি। ও থাকলেই এত বকবক করে যে তখন ওর কথা শোনা ছাড়া আর কোনও কাজ করা যায় না। অবিশ্যি প্রোফেসর পেত্

15

স্বপ্নদ্বীপ

2 November 2023
1
0
0

২২শে মার্চ অনেকে বলেন যে, স্বপ্নে নাকি আমরা সাদা আর কালো ছাড়া অন্য কোনও রং দেখি না। আমার বিশ্বাস আসল ব্যাপারটা এই যে, বেশিরভাগ সময় স্বপ্নের ঘটনাটাই কেবল আমাদের মনে থাকে; রং দেখেছি কি না দেখেছি, সেট

16

আশ্চর্য প্রাণী

3 November 2023
1
0
0

১০ই মার্চ গবেষণা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আমার জীবনে এর আগে এ রকম কখনও হয়নি। একমাত্র সান্ত্বনা যে এটা আমার একার গবেষণা নয়, এটার সঙ্গে আরও একজন জড়িত আছেন । হামবোল্টও বেশ মুষড়ে পড়েছে। তবে এত সহজে নিরুদ্যম

17

মরুরহস্য

3 November 2023
2
0
0

১০ই জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম মাসেই একটা দুঃসংবাদ। ডিমেট্রিয়াস উধাও! প্রোফেসর হেক্টর ডিমেট্রিয়াস, বিখ্যাত জীবতত্ত্ববিদ। ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত ক্রীট দ্বীপের রাজধানী ইরাক্লিয়ন শহরের অধিবাসী ছিলেন ডিম

18

কভার্স

3 November 2023
1
0
0

১৫ই আগস্ট পাখি সম্পর্কে কৌতূহলটা আমার অনেক দিনের। ছেলেবেলায় আমাদের বাড়িতে একটা পোষা ময়না ছিল, সেটাকে আমি একশোর উপর বাংলা শব্দ পরিষ্কারভাবে উচ্চারণ করতে শিখিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিল, পাখি কথা বললেও

19

একশৃঙ্গ অভিযান

4 November 2023
3
0
0

১লা জুলাই আশ্চর্য খবর। তিব্বত পর্যটক চার্লস উইলার্ডের একটা ডায়রি পাওয়া গেছে। মাত্র এক বছর আগে এই ইংরাজ পর্যটক তিব্বত থেকে ফেরার পথে সেখানকার কোনও অঞ্চলে যাম্‌পা শ্রেণীর এক দস্যুদলের হাতে পড়ে। দস্য

20

ডক্টর শেরিং-এর স্মরণশক্তি

4 November 2023
1
0
0

২রা জানুয়ারি আজ সকালটা বড় সুন্দর। চারিদিকে ঝলমলে রোদ, নীল আকাশে সাদা সাদা হৃষ্টপুষ্ট মেঘ, দেখে মনে হয় যেন ভুল করে শরৎ এসে পড়েছে। সদ্য পাড়া মুরগির ডিম হাতে নিলে যেমন মনটা একটা নির্মল অবাক আনন্দে

21

হিপনোজেন

5 November 2023
1
0
0

৭ই মে আমার এই ছেষট্টি বছরের জীবনে পৃথিবীর অনেক জায়গা থেকে অনেকবার অনেক রকম নেমন্তন্ন পেয়েছি; কিন্তু এবারেরটা একেবারে অভিনব। নরওয়ের এক নাম-না-জানা গণ্ডগ্রাম থেকে এক এক্সপ্রেস টেলিগ্রাম; টেলিগ্র

22

শঙ্কুর শনির দশা

5 November 2023
2
0
0

৭ই জুন আমাকে দেশ বিদেশে অনেকে অনেক সময় জিজ্ঞাসা করেছে আমি জ্যোতিষে বিশ্বাস করি। কি না। প্রতিবারই আমি প্রশ্নটার একই উত্তর দিয়েছি—আমি এখনও এমন কোনও জ্যোতিষীর সাক্ষাৎ পাইনি যাঁর কথায় বা কাজে আমার জ্য

23

শঙ্কুর সুবর্ণ সুযোগ

6 November 2023
2
0
0

২৪শে জুনইংলন্ডের সল্সবেরি প্লেনে আজ থেকে চার হাজার বছর আগে তৈরি বিখ্যাত স্টোনহেঞ্জের ধারে বসে আমার ডায়রি লিখছি। আজ মিড-সামার ডে, অর্থাৎ কর্কটক্রান্তি । যে সময় স্টোনহেঞ্জ তৈরি হয়, তখন এ দেশে প্রস্তর

24

মানরো দ্বীপের রহস্য

6 November 2023
1
0
0

মানরো দ্বীপ, ১২ই মার্চএই দ্বীপে পৌঁছানোর আগে গত তিন সপ্তাহের ঘটনা সবই আমার ডায়রিতে বিক্ষিপ্তভাবে লেখা আছে। হাতে যখন সময় পেয়েছি তখন সেগুলোকেই একটু গুছিয়ে লিখে রাখছি। আমি যে আবার এক অভিযানের দলে ভিড

25

কম্পু

8 November 2023
0
0
0

১২ই মার্চ, ওসাকা আজ সারা পৃথিবী থেকে আসা তিনশোর উপর বৈজ্ঞানিক ও শ'খানেক সাংবাদিকের সামনে কম্পুর ডিমনস্ট্রেশন হয়ে গেল। ওসাকার নামুরা টেকনলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের হলঘরের একপ্রান্তে মঞ্চের উপর একটা তিন ফু

26

মহাকাশের দূত

8 November 2023
0
0
0

২২শে অক্টোবরপ্রিয় শঙ্কু,ব্রেন্টউড, ১৫ই অক্টোবরমনে হচ্ছে আমার বারো বছরের পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফল পেতে চলেছি। খবরটা এখনও প্রচার করার সময় আসেনি, শুধু তোমাকেই জানাচ্ছি।কাল রাত একটা সাঁইত্রিশে এপসাইলন ই

27

নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো

9 November 2023
0
0
0

১৩ই জুনআজ সকালের ঘটনাটা আমার কাজের রুটিন একেবারে তছনছ করে দিল। কাজটা অবিশ্যি আর কিছুই না : আমার যাবতীয় আবিষ্কার বা ইনভেশনগুলো সম্বন্ধে একটা প্রবন্ধ লিখছিলাম সুইডেনের বিখ্যাত 'কসমস' পত্রিকার জন্য। এ ক

28

শঙ্কুর কঙ্গো অভিযান

9 November 2023
0
0
0

প্রিয় শঙ্কু,আমার দলের একটি লোকের কালাজ্বর হয়েছে তাই তাকে নাইরোবি পাঠিয়ে দিচ্ছি। তার হাতেই চিঠি যাচ্ছে, সে ডাকে ফেলে দেবার ব্যবস্থা করবে। এই চিঠি কেন লিখছি সেটা পড়েই বুঝতে পারবে। খবরটা তোমাকে না দি

29

প্রোফেসর শঙ্কু ও ইউ.এফ.ও.

11 November 2023
0
0
0

১২ই সেপ্টেম্বরইউ. এফ.ও. অর্থাৎ আনআইডেনটিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট অর্থাৎ অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু। এই ইউ.এফ.ও. নিয়ে যে কী মাতামাতি চলছে গত বিশ-পঁচিশ বছর ধরে। সারা বিশ্বে বহু সমিতি গড়ে উঠেছে, যাদের কাজই হল এই ই

30

আশ্চর্জন্তু

11 November 2023
0
0
0

আগস্ট ৭আজ এক আশ্চর্য দিন।সকালে প্রহ্লাদ যখন বাজার থেকে ফিরল, তখন দেখি ওর হাতে একটার জায়গায় দুটো থলি। জিজ্ঞেস করাতে বলল, 'দাঁড়ান বাবু, আগে বাজারের থলিটা রেখে আসি। আপনার জন্য একটা জিনিস আছে, দেখে চমক

31

প্রোফেসর রন্ডির টাইম মেশিন

11 November 2023
0
0
0

নভেম্বর ৭পৃথিবীর তিনটি বিভিন্ন অংশে তিনজন বৈজ্ঞানিক একই সময় একই যন্ত্র নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে, এরকম সচরাচর ঘটে না। কিন্তু সম্প্রতি এটাই ঘটেছে। এই তিনজনের মধ্যে একজন অবিশ্যি আমি, আর যন্ত্রটা হল টাইম মে

32

শঙ্কু ও আদিম মানুষ

12 November 2023
0
0
0

এপ্রিল ৭ নৃতত্ত্ববিদ ডা. ক্লাইনের আশ্চর্য কীর্তি সম্বন্ধে কাগজে আগেই বেরিয়েছে। ইনি দক্ষিণ আমেরিকায় আমাজনের জঙ্গলে ভ্রমণকালে এক উপজাতির সন্ধান পান, যারা নাকি ত্রিশ লক্ষ বছর আগে মানুষ যে অবস্থায় ছিল

33

নেফ্রুদেৎ-এর সমাধি

12 November 2023
0
0
0

ডিসেম্বর ৭ এইমাত্র আমার জার্মান বন্ধু ক্রোলের কাছ থেকে একটা টেলিগ্রাম পেলাম। কোল লিখছে— সব কাজ ফেলে কায়রোতে চলে এসো। তুতানখামেনের সমাধির মতো আরেকটি সমাধি আবিষ্কৃত হতে চলেছে। সাকারার দু মাইল দক্ষিণে

34

শঙ্কুর পরলোকচর্চা

12 November 2023
0
0
0

সেপ্টেম্বর ১২ আজ বড় আনন্দের দিন। দেড় বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর আজ আমাদের যন্ত্র তৈরির কাজ শেষ হল। 'আমাদের' বলছি এই কারণে যে, যদিও যন্ত্রের পরিকল্পনাটা আমার, এটা তৈরি করা আমার একার পক্ষে সম্ভব ছিল ন

35

শঙ্কু ও ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন

12 November 2023
0
0
0

৭ মে কাল জার্মানি থেকে আমার ইংরেজ বন্ধু জেরেমি সন্ডার্সের একটা চিঠি পেয়েছি। তাতে একটা আশ্চর্য খবর রয়েছে। চিঠিটা এখানে তুলে দিচ্ছি। প্রিয় শঙ্কু, জার্মানিতে আউগ্‌গ্সবুর্গে এসেছি ক্রোলের সঙ্গে ছুটি

36

ডাঃ দানিয়েলির আবিষ্কার

12 November 2023
0
0
0

১৫ এপ্রিল, রোম কাল এক আশ্চর্য ঘটনা। এখানে আমি এসেছি একটা বিজ্ঞানী সম্মেলনে। কাল স্থানীয় বায়োকেমিস্ট ডাঃ দানিয়েলির বক্তৃতা ছিল। তিনি তাঁর ভাষণে সকলকে চমৎকৃত করে দিয়েছেন। অবিশ্যি আমি যে অন্যদের মতো

37

ডন ক্রিস্টোবাল্ডির ভবিষ্যদ্বাণী

13 November 2023
0
0
0

সেপ্টেম্বর ৬ আজ আমার বন্ধু জেরেমি সন্ডার্সের কাছ থেকে একটা আশ্চর্য চিঠি পেয়েছি। সেটা হল এই— প্রিয় শঙ্কু, তোমাকে একটা অদ্ভুত খবর দেবার জন্য এই চিঠির অবতারণা। আমাদের দেশের কাগজে খবরটা বেরিয়ে

38

স্বর্ণপর্ণী

13 November 2023
0
0
0

১৬ জুনআজ আমার জন্মদিন । হাতে বিশেষ কাজ নেই, সকাল থেকে টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে, আমি বৈঠকখানায় আমার প্রিয় আরামকেদারাটায় বসে কড়িকাঠের দিকে চেয়ে আকাশপাতাল ভাবছি। বৃদ্ধ নিউটন আমার পায়ের পাশে কুণ্ডলী

---