shabd-logo

ভূমিকা

9 December 2023

1 Viewed 1

এই বইয়ে সংকলিত গল্পগুলি অনেক আগে লেখা। "নৈখতে মেঘ" বইয়ে "রুন্দালি", "দৌলতি" বইয়ে "গোহুমনি" আছে। "টুংকুড়" আমার অনেক গল্পের মত আজও কোন সংকলনে প্রকাশিত হয়নি। নিজের লেখার বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগী থাকতে পারি না, তাই অনেক লেখাই পুস্তকাকারে বেরোয় নি।

"রুদালি" ও "গোহুমনি", আমার লেখার এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে পালামৌ পর্বে লিখিত। বিহারের দরিদ্রতম জেলা পালামৌয়ের পটভূমিতে আমি পর পর অনেকগুলি ডারতীয় গল্প ও উপন্যাস লিখি। কিছুকাল ধরে আবার সেখানে ফিরে আসার জন্য মনের প্রস্তুতি পর্ব শেষ হয়ে এল। পালামৌয়ের আধারে আমি ভারতবর্ষের ভূমিব্যবস্থা ও শ্রেণী বিভাজিত সমাজের অন্ধকার সামন্ত স্বরূপকেই উদ্‌ঘাটন করেছি বারবার। শোষক যে শ্রেণী চরিত্রে সমন্তিক, সে কথা জানানো দরকার ছিল। শোষণের জন্যই দেখা দেয় সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তা। এ সংগ্রাম সর্বদা রাজনীতিক দলীয় নেতৃত্বের সংগ্রাম নয়। ব্রাত্যসমাজে বাঁচার জন্য সংগ্রামই চলে, পন্থাটা অন্য, এই যা। তিনটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তিনটি মেয়ে এবং তারা তাদের সমাজকে সঙ্গে রেখে বাঁচার তাগিদেই লড়ে। জয়ী হয়। বেঁচে থাকে। জীবনের দাবীই তো সর্বাগ্রগণ্য।

আমি এই নগ্ন দারিদ্র, নির্লজ্জ শোষণ দেখেছি। এখনো দেখি। নতুন বঙ্গাব্দ এল। নতুন খ্রীষ্টাব্দও এসে পড়ল বলা যায়। দারিদ্র্যে, ক্ষুধায়, শ্রেণীশোষণে, পুঁজিবাদী দুনিয়ার শোষণে, ভারত আজ বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে এক হয়ে যাবে না কি, শঙ্কা হয়।

"গোহুমনি" গল্পটি সম্বন্ধে আমার দুর্বলতা আছে। পালামৌ ভেলায় ভারতের বহু জায়গার মত ভূমিদাস বা বনডেড লেবার প্রথা খুবই প্রচলিত। ১৯৭৬ সালে প্রথাটি নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু আজও তা চালু আছে। ১৯৭৯/৮০ সালে পালামৌ জেলায় সংগঠন গড়ে বনডেড লেবাররা, ভারতে প্রথম। এরা আন্দোলনও করে "গোহুমনি" সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে লেখা। ওদের সঙ্গে আমিও ছিলাম তো!

বড়লোকের বাড়ি মানুষ মরলে আজও ভাড়াটে কাঁদুনী কাঁদে, ধান কাটার পর আক্তও মানুষ টুং কুড়ায়, ভূমিদাস প্রথা আজও বহাল আছে, তাই এই গল্পগুলি আজও প্রাসঙ্গিক রয়ে গেল। এটা ঘটনা। অন্নক্ষুধা নিয়ে রোমান্টিক

গল্প লেখা যায় নি। পাঠক ক্ষমা করবেন।

4
Articles
রুদালী
0.0
মহাশ্বেতা দেবীর "রুদালি" একটি মর্মস্পর্শী ছোট গল্প যা গ্রামীণ ভারতের প্রান্তিক সম্প্রদায়ের একজন মহিলা সানিচারীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। সানিচারী, একজন দরিদ্র মহিলা, তার জীবনের কষ্টগুলি মোকাবেলা করার জন্য একজন পেশাদার শোক বা রুদালি হয়ে ওঠে। তিনি রুদালিদের একটি দলে যোগদান করেন যারা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় শোক প্রকাশ করতে এবং মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশ করার জন্য ভাড়া করা হয়। সানিচারীর জীবন দারিদ্র্য, ক্ষতি এবং সামাজিক নিপীড়নের দ্বারা চিহ্নিত। আখ্যানটি শোষণ ও বৈষম্যের মুখোমুখি হওয়া নিম্নবর্ণের মহিলার সংগ্রামের বর্ণনা দেয়। রুদালিরা ভারতের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক সংগ্রামকে মূর্ত করে। শনিচারীর আবেগ শোকের মুখোশের নীচে চাপা পড়ে, ব্যক্তি পরিচয়ের দমনকে প্রতিফলিত করে। গল্পটি সামাজিক অবিচার, লিঙ্গ ভূমিকা এবং দারিদ্র্যের অমানবিক প্রভাবের থিমগুলি অন্বেষণ করে। উচ্চ বর্ণের ব্যক্তিদের সাথে সানিচারীর মিথস্ক্রিয়া ভারতীয় সমাজে প্রচলিত গভীর-মূল কুসংস্কারগুলিকে তুলে ধরে। বর্ণনাটি দারিদ্র্য এবং শোষণের চক্রকে স্থায়ী করে এমন পদ্ধতিগত সমস্যাগুলির সমালোচনা হিসাবে কাজ করে। "রুদালি" হল প্রতিকূলতার মুখে মানুষের স্থিতিস্থাপকতার একটি শক্তিশালী অন্বেষণ এবং ভারতীয় সমাজে বর্ণ, শ্রেণী এবং লিঙ্গের জটিল ইন্টারপ্লে।
1

ভূমিকা

9 December 2023
0
0
0

এই বইয়ে সংকলিত গল্পগুলি অনেক আগে লেখা। "নৈখতে মেঘ" বইয়ে "রুন্দালি", "দৌলতি" বইয়ে "গোহুমনি" আছে। "টুংকুড়" আমার অনেক গল্পের মত আজও কোন সংকলনে প্রকাশিত হয়নি। নিজের লেখার বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগী থাকতে পারি ন

2

রুদালী

11 December 2023
1
0
0

টাহাড গ্রামটিতে গঞ্জ ও দুসাদবা সংখ্যাগুরু। শনিচরী জাতে গঞ্জ। গ্রামের আব সকলের মত শনিচরীর জীবনও কেটেছে অসুমার দারিদ্র্যে। শনিবারে জন্মেছিল বলে ওর কপালে এত দুঃখ, একথা এতদিন ওব শাশুড়ি বলত। যতদিন বলত, তখন

3

টুং-কুড়

13 December 2023
1
0
0

ধানকাটা হয়ে গেছে। "ক্ষেতে মাঠে পড়ে আছে খড়” এখন কবিতার লাইনমাত্র। কেন না মণ্ডল ধানের ভাগের সঙ্গে খড়ের ভাগও নেয়। সবই নেয় সে। এদিক ওদিক পড়ে থাকা ধানের শিষ শুধু আলতাদাসী নেয়। আজও নিল। আলতাদাসী ধানের শিষ

4

গোহুমনি

13 December 2023
1
0
0

গোহুমন হল গোখরো সাপ। তা বিশাস ভূঁইয়ার বিধবাঁকে সবাই গোহুমনি বলে। নাম একটা ওর ছিল, ঝালো। তা কতকাল ধরেই তো ওর নাম ছিল সোনা দাসীর মা। ছেলে আর মেয়ে হলে কে আর কাকে “ঝালো" বলবে তাই বলো? বলাটা ঠিকও নয়। কেচকি

---