shabd-logo

নবীন ও প্রবীণ

22 December 2023

0 Viewed 0

বিশ্বমানবের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত করিতে ভারতবর্ষ যাহা নিবেদন করিয়াছে, তাহার এক বিশিষ্টতা দেখা যায় এই যে, উহা সকল সময়ে ক্ষুদ্র ছাড়িয়া বৃহতের সন্ধান করিয়াছে। অন্য দেশে জ্ঞানরাজ্য এত বিভিন্ন ভাবে বিভক্ত হইয়াছে যে, তথায় সমগ্রকে এক করিয়া জানিবার চেষ্টা লুপ্তপ্রায় হইয়াছে। ভারতবর্ষের চিন্তাপ্রণালী অন্যরূপ। তাই তাহার কাব্য, তাহার সাহিত্য, জ্ঞানের অন্তনিহিত এই মহান্ সত্য ব্যক্ত করিবার চেষ্টা করিয়াছে। জ্ঞানের অন্বেষণে আকাশে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা, বিশ্বের অগণিত জীব ও ব্রহ্মাণ্ডের কোটি সূর্য্যের মধ্যে সেই একতার সন্ধান করিয়াছে। তাই বোধ হয়, আপনারা জ্ঞান ও সাহিত্যকে একে অন্যের অঙ্গ মনে করিয়া দুই বৎসর পূর্ব্বে একজন বিজ্ঞানসেবীকে তাঁহার অজ্ঞাতে এই সাহিত্য-পরিষদের সভাপতিত্বে নিযুক্ত করেন।

বিজ্ঞান সম্বন্ধে যাহা বলিবার আছে তাহা অন্য দিন বলিব। তৎপূর্বে পরিষদের' ভবিষ্যৎং উন্নতিকল্পে কয়েকটি কথা আজ উত্থাপন করিব। যখন আপনারা আমাকে সভাপতিত্বে নিয়োগ করেন তখন এ সম্বন্ধে আমার আপক্তি জানাইয়াছিলাম। এক দিকে সময়াভাব ও ভগ্ন স্বাস্থ্য, অন্য দিকে পরিষদে কোন কার্য্য করা সম্ভব হইবে কি না, এ সম্বন্ধে আশঙ্কা ছিল। শুনিয়াছিলাম, এখানে দলাদলি এত প্রবল এবং আর্থিক অবস্থা এরূপ শোচনীয় যে, ইচ্ছা সত্ত্বেও কেহ কিছু করিয়া উঠিতে পারেন না। এ জন্য অস্বীকার করিয়া লিখি। তাহা সত্ত্বেও যখন আপনারা আমাকে মুক্তি দেন নাই তখন স্থির করিলাম, সাহিত্য-পরিষদের জন্য যথাসাধ্য কার্য করিব এবং ইহার পূর্ণশক্তি বিকাশের জন্য চেষ্টিত হইব। যে মুমূর্ষু সে-ই মৃত বস্তু লইয়া আগলাইয়া থাকে; যে জীবিত তাহার জীবনের উচ্ছ্বাস চতুদিকে ব্যাপ্ত হয়। আমি দেখিতে পাইয়াছি যে, বর্তমান যুগে সমস্ত ভারতের জীবন প্রবাহিত করিয়া একটা উচ্ছ্বাস ছুটিয়াছে, যাহা মৃত্যুঞ্জয়ী হইবে। আমাদের সাহিত্য কেবলমাত্র পুরাতন গ্রন্থ প্রকাশ লইয়া থাকিবে না; বর্তমান যুগের নব নব সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতিকে একত্র করিয়া একটি জীবন্ত সাহিত্য গঠিত করিয়া তুলিবে। ইহাই আমি সাহিত্য-পরিষদের সর্ব্বপ্রধান উদ্দেশ্য মনে করি। এই উদ্দেশ্যকে কার্য্যে পরিণত করিবার পথে যে বাধা, যে অন্তরায় আছে তাহা দূর করিতে হইবে। তাহার পর দেশের চিন্তাশীল মনীষীদিগের বিক্ষিপ্ত চেষ্টা যাহাতে একত্রীভূত করিতে পারা যায় তজ্জন্য যত্নবান হইতে হইবে।

আরও ভাবিবার বিষয় আছে। যে দলাদলি হইতে পরিষদের উন্নতি পঙ্গুপ্রায় হইয়া উঠিতেছে, সেই দলাদলি হইতে পরিষদকে কিরূপে রক্ষা করা যায় এবং এই সব বাধা দূরীভূত করিয়া পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য-সাহিত্যের সর্বাঙ্গীণ বিকাশ কিরূপে সাধিত হইতে পারে?

দলাদলি

জীবনের বহু বাধাবিপত্তির সহিত সংগ্রাম করিয়া ও নানা দেশ পরিভ্রমণের ফলে জানিতে পারিয়াছি, সফলতা কোথা হইতে আসে এবং বিফলতা কেনই বা হয়। আমি দেখিয়াছি, যে অনুষ্ঠানে কর্তৃত্ব শুধু ব্যক্তিবিশেষের উপর ন্যস্ত হয়, যেখানে অপর সকলে নিজেদের দায়িত্ব ঝাড়িয়া ফেলিয়া দর্শকরূপে হয় শুধু করতালি দেন, না হয় কেবল নিন্দাবাদ করেন, সেখানে কৰ্ম্ম শুধু কর্তার ইচ্ছাতেই চলিতে থাকে। দেশের কল্যাণের জন্য যে শক্তি সাধারণে তাঁহার উপর অর্পণ করিয়াছিল, এমন এক দিন আসে, যখন সেই শক্তি সাধারণকে দলন করিবার জন্য ব্যবহৃত হয়। তখন দেশ বহু দূরে সরিয়া যায় এবং ব্যক্তিগত শক্তি উদ্দামভাবে চলিতে থাকে। ইহাতে দলাদলির যে ভীষণ বহ্নি উদ্ভূত হয় তাহা 'অনুষ্ঠানটিকে পর্য্যন্ত গ্রাস করিতে আসে। দলপতি যদি তাঁহার সহকারীদিগকে কেবল যন্ত্রের অংশ মনে না করিয়া প্রত্যেকের অন্তর্নিহিত মনুষ্যত্বকে জাগরূক করিয়া তুলিতে চেষ্টা করেন তাহা হইলেই দেশের প্রকৃত কল্যাণ সাধিত হয়। এই কারণে সাহিত্য-পরিষদে ব্যক্তিগত প্রধান্যের পরিবর্ত্তে সাধারণের মিলিত চেষ্টা যাহাতে বলবতী হয় সেজন্য বিবিধ চেষ্টা করিয়াছি। প্রতিষ্ঠিত কোন সাহিত্য-সমিতিকে খর্ব্ব করিয়া নিজেরা বড় হইবার প্রয়াস আমি একান্ত হেয় মনে করি বলিয়া প্রত্যেক সমিতির আনুকূল্য ও শুভ ইচ্ছা আদান-প্রদানের জন্য চেষ্টিত হইয়াছি। সাধারণ সদস্যদিগের উদ্যমের উপর পরিষদের ভাবী মঙ্গল যে বহুল পরিমাণে নির্ভর করে, এ কথা স্মরণ করাইয়া তাঁহাদিগকে লিখিয়াছিলাম- “পরিষদের সভাপতি, সম্পাদক ও কার্য্যনির্বাহক সভা সাহিত্য-পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য সাধনের উপলক্ষ্য মাত্র!” আরও লিখিয়াছিলাম যে, "সদস্যগণ যদি নিজেদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়া নিঃস্বার্থ ও কর্তব্যশীল সভ্য নির্বাচিত করেন তাহা হইলেই পরিষদের উত্তরোত্তর মঙ্গল সাধিত হইবে। এ সম্বন্ধে তাঁহাদের শৈথিল্যই ভবিষ্যৎ দুর্গতির কারণ হইবে।" এই সহজ পথ অপেক্ষা রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে অবলম্বিত উপায় কি শ্রেয় হইবে? তথায় প্রতিযোগিতারই পূর্ণ প্রকাশ। সহযোগিতা কি আমাদের সাধনা নয়? রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে পক্ষ ও বিপক্ষের ভেদ প্রবল হইয়া উঠে। এক পক্ষ অন্য পক্ষের ছিদ্র অন্বেষণ করে ও কুৎসা রটায়, অন্য পক্ষও জবাবে এক কাঠি উপরে উঠেন। ইহার শেষ কোথায়? 

যে চিত্তবৃত্তির মহৎ উচ্ছ্বাসে সাহিত্য বিকশিত হয় তাহা কি এইরূপ পঙ্কে নিমজ্জিত হইবে?

নবীন ও প্রবীণের মধ্যে একটা বৈষম্য আছে। তবে তাহাই বিসম্বাদের প্রধান কারণ নহে। ব্যক্তিবিশেষের আত্মম্ভরিতাই প্রকৃত দলাদলির কারণ; ইহা প্রবীণ বা নবীন কাহারও নিজস্ব নহে। প্রবীণ অতি সাবধানে চলিতে চাহেন, কিন্তু পৃথিবীর গতি অতি দ্রুত। যদিও বার্দ্ধক্য তাহার শরীরে জড়তা আনয়ন করে, মন ত তাহার অনেক উপরে, সে ত চিরনবীন! মন কেন সাহস হারাইবে? অন্য দিকে নবীন, অভিজ্ঞতা অভাবে হয়ত অতি দ্রুত চলিতে চাহেন এবং বাধার কথা ভাবিয়া দেখেন না। যাঁহারা বহুকাল ধরিয়া কোন অনুষ্ঠানকে স্থাপিত করিয়াছেন, তাঁহাদের সেই প্রয়াসের ইতিহাস ভুলিয়া যান। হয়ত কখনও প্রবীণের বহু কষ্টে অজ্জিত ধন নবীন বিনা দ্বিধায় নিজস্ব করিতে চাহেন। প্রবীণ ইহাতে অকৃতজ্ঞতার ছায়া দেখিতে পান। সে যাহা হউক, ধরিত্রী প্রবীণকেও চায়, নবীনকেও চায়। প্রবীণ ভবিষ্যতের অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তনে যেন উদ্বিগ্ন না হন, আর নবীনও যেন প্রবীণের এত- দিনের নিষ্ঠা শ্রদ্ধার ৩ক্ষে দেখেন'। যে দেশে আমাদের সামাজিক জীবনে নবীন ও প্রবীণের কার্য্যকলাপের মধ্যে সামঞ্জস্য সাধিত হইয়াছে, সে স্থানেও কি একথা আমাকে বুঝাইয়া দিতে হইবে? 

পরিষদের কার্য্য সাধারণ সদস্যগণের নির্বাচিত কার্য্য- নির্বাহক সমিতি দ্বারা পরিচালিত হয়। তাঁহারাই সাধারণের প্রতিভূ হইয়া আসেন; তাঁহাদের অধিকাংশের মতের দ্বারাই প্রতি বিষয় নির্দ্ধারিত হইয়া থাকে। ইহা ব্যতীত, কার্য্য সম্পাদনের অন্য উপায় নাই। যদি ইহাতে ব্যক্তিবিশেষের মত গৃহীত না হয় এবং তজ্জন্য যদি কেহ পরিষদের সকল কৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইতে চাহেন তবে উহাকে ছেলেদের আব্দার ছাড়া কি বলা যাইতে পারে? আর একটা কথা-অতীতের ত্রুটি সম্পূর্ণ মুছিয়া না ফেলিলে কোন নূতন প্রচেষ্টা একেবারেই অসম্ভব।

যে সব ত্রুটির কথা বলিলাম তাহা একান্ত সাময়িক। বাদানুবাদের অনেক কথা শুনিয়াছিলাম। অনুসন্ধান করিয়া জানিলাম, তাহার অনেকটা তিলকে তাল করিবার অভ্যাস হইতে। আমি উভয় পক্ষকেই, তাঁহাদের মধ্যে কি কি বিষয় লইয়া বিসম্বাদ তাহা আমাকে জানাইতে অনুরোধ করিয়াছিলাম; পরে তাঁহাদের সহিত এ বিষয়ে আলোচনা করিয়াছি। দেখা গেল, বিবাদের প্রকৃত কারণ কিছু নাই বলিলেই হয়।

পরিষদ-গৃহে বক্তৃতা '

যে সব বিষয়ের কথা উত্থাপন করিলাম তাহা কার্য্য করিবার উপলক্ষ্য মাত্র। সাহিত্যের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি এই পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এতদর্থে প্রতিভাশালী মনীষীদের চিন্তার ফল সাধারণের নিকট উপস্থিত করিবার জন্য ধারাবাহিক বক্তৃতার ব্যবস্থা করিতে সমর্থ হইয়াছি।

কিছুদিন পূর্বের কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন এস্থান পরিদর্শন করিতে আসেন। সেই কমিশনের বিদেশীয় সভ্যগণ ইহার কার্য্য লক্ষ্য করিয়া ইহাকে জাতীয় জীবন পরিস্ফুটনের এক প্রধান অঙ্গ বলিয়া মনে করিয়াছেন। ভারতবর্ষের অন্য প্রদেশে ভ্রমণকালেও দেখিলাম, আমাদের এই সাহিত্য-পরিষদকে আদর্শ করিয়া তথায় অন্য পরিষদ গঠনের চেষ্টা হইতেছে। এ সবই ত আশার কথা-আশা ব্যতীত আর কি আমাদের সম্বল আছে? সম্মুখে যে ভয়ঙ্কর দুদ্দিন আসিতেছে তাহাতে আমাদের জাতীয় জীবন পর্য্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। দুদ্দিনের মধ্যে কি আশা লইয়া তবে থাকিব? যে দুই একটি আশার কথা আছে, তাহার মধ্যে সাহিত্য-পরিষদ অন্যতম। আমাদের অবহেলায় এই ক্ষীণ প্রদীপটি কি নিবিয়া যাইবে?

সাহিত্য-পরিষদে সভাপতির অভিভাষণ।

20
Articles
অব্যক্ত
0.0
শ্রী জগদীশচন্দ্র বসুর লেখা কিছু ছোট ছোট অবিস্মরণীয় কাহিনী নিয়ে রচিত একটি অব্যক্ত জীবন প্রসারিত কাহিনী সমগ্র।
1

যুক্তকর

20 December 2023
0
0
0

পুরাতন লইয়াই বর্তমান গঠিত, অতীতের ইতিহাস না জানিলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অজ্ঞেয়ই রহিবে। পুরাতন ইতিহাস উদ্ধার করিতে হইলে সেকালে সর্ব্বসাধারণের দৈনন্দিন জীবন কিরূপে অতিবাহিত হইত, তাহা জানা আবশ্যক। লোক- পরম্

2

আকাশ-স্পন্দন ও আকাশ-সম্ভব জগৎ

20 December 2023
0
0
0

দৃশ্য জগৎ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম লইয়া গঠিত,। রূপক অর্থে এ কথা লইতে পারা যায়। এ জগতে অসংখ্য ঘটনাবলীর মূলে তিনটি কারণ বিদ্যমান। প্রথম পদার্থ, দ্বিতীয় শক্তি, তৃতীয় ব্যোম অথবা আকাশ। পদার্থ ত্রিবিধ

3

গাছের কথা

20 December 2023
0
0
0

গাছেরা কি কিছু বলে? অনেকে বলিবেন, এ আবার কেমন প্রশ্ন? গাছ কি কোনও দিন কথা কহিয়া থাকে? মানুষেই কি সব কথা ফুটিয়া বলে? আর যাহা ফুটিয়া বলে না, তাহা কি কথা নয়? আমাদের একটি খোকা আছে, সে সব কথা ফুটিয়া বলিতে

4

উদ্ভিদের জন্ম ও মৃত্যু

20 December 2023
0
0
0

মৃত্তিকার নীচে অনেক দিন বীজ লুকাইয়া থাকে। মাসের পর মাস এইরূপে কাটিয়া গেল। শীতের পর বসন্ত আসিল। তারপর বর্ষার আরম্ভে দুই-এক দিন বৃষ্টি হইল। এখন আর লুকাইয়া থাকিবার প্রয়োজন নাই। বাহির হইতে কে যেন শিশুকে ড

5

মন্ত্রের সাধন

20 December 2023
0
0
0

প্রশান্ত মহাসাগরে অনেকগুলি দ্বীপ দেখা যায়। এই দ্বীপগুলি অতি ক্ষুদ্র প্রবাল-কীটের দেহপঞ্জরে নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। বহু সহস্র বৎসরে অগণ্য কীট নিজ নিজ দেহ দ্বারা এই দ্বীপগুলি নির্মাণ করিয়াছে। আজকাল বিজ্ঞানের

6

অদৃশ্য আলোক

20 December 2023
0
0
0

সেতারের তার অঙ্গুলিতাড়নে ঝঙ্কার দিয়া উঠে। দেখা যায়, তার কাঁপিতেছে। সেই কম্পনে বায়ুরাশিতে অদৃশ্য ঢেউ উৎপন্ন হয় এবং তাহার আঘাতে কর্ণেন্দ্রিয়ে সুর উপলব্ধি হয়। এইরূপে তিনের সাহায্যে এক স্থান হইতে অন্য স্

7

পলাতক তুফান (বৈজ্ঞানিক রহস্য)

21 December 2023
0
0
0

প্রথম পরিচ্ছেদ কয়েক বৎসর পূর্ব্বে এক অত্যাশ্চর্য্য ভৌতিক কাণ্ড ঘটিয়াছিল। তাহা লইয়া অনেক আন্দোলন হইয়া গিয়াছে এবং এ বিষয়ে ইউরোপ এবং আমেরিকার বিবিধ বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় অনেক লেখালেখি চলিয়াছে। কিন্তু এ পর্

8

অগ্নি পরীক্ষা

21 December 2023
0
0
0

১৮১৪ খৃঃ অব্দে ইংরেজ গভর্ণমেন্ট নেপাল রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। জেনারেল মার্ণি কাটামুণ্ডু আক্রমণের জন্য প্রেরিত হইলেন। জেনারেল উড গোরক্ষপুরে ছাউনি করিয়া তরাই প্রদেশ আক্রমণ করিলেন। জেনারেল অক্

9

ভাগীরথীর উৎস-সন্ধানে

21 December 2023
0
0
0

আমাদের বাড়ীর নিয়েই গঙ্গা প্রবাহিত। বাল্যকাল হইতেই নদীর সহিত আমার সখ্য জন্মিয়াছিল; বৎসরের এক সময়ে কূল প্লাবন করিয়া জলস্রোত বহুদূর পর্য্যন্ত বিস্তৃত হইত; আবার হেমন্তের শেষে ক্ষীণ কলেবর ধারণ করিত। প্রতিদ

10

বিজ্ঞানে সাহিত্য

21 December 2023
0
0
0

জড় জগতে কেন্দ্র আশ্রয় করিয়া বহুবিধ গতি দেখিতে পাওয়া যায়। গ্রহগণ সূর্য্যের আকর্ষণ এড়াইতে পারে না। উচ্ছৃঙ্খল ধূমকেতুকেও একদিন সূর্য্যের দিকে ছুটিতে হয়। জড় জগৎ ছাড়িয়া জঙ্গম জগতে দৃষ্টিপাত করিলে তাহাদের

11

নির্ব্বাক জীবন

22 December 2023
0
0
0

ঘর হইতে বাহির হইলেই চারিদিক ব্যাপিয়া জীবনের উচ্ছ্বাস দেখিতে পাই। সেই জীবন একেবারে নিঃশব্দ। শীত ও গ্রীষ্ম, মলয় সমীর ও ঝটিকা, বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি, আলো ও আঁধার এই নির্ব্বাক জীবন লইয়া ক্রীড়া করিতেছে। কত বি

12

নবীন ও প্রবীণ

22 December 2023
0
0
0

বিশ্বমানবের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত করিতে ভারতবর্ষ যাহা নিবেদন করিয়াছে, তাহার এক বিশিষ্টতা দেখা যায় এই যে, উহা সকল সময়ে ক্ষুদ্র ছাড়িয়া বৃহতের সন্ধান করিয়াছে। অন্য দেশে জ্ঞানরাজ্য এত বিভিন্ন ভাবে বিভক্

13

বোধন

22 December 2023
0
0
0

শতাধিক বৎসর পূর্ব্বে আমাদের বংশের জননী প্রপিতামহী দেবী তরুণ যৌবনে বৈধব্য প্রাপ্ত হইয়া একমাত্র শিশুসন্তান লইয়া ভ্রাতৃগৃহে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। পুত্রের লালন পালন ও শিক্ষার ভার লইয়া প্রপিতামহী দেবী যখ

14

মনন ও করণ

22 December 2023
0
0
0

পূর্ব্বে বাঙ্গলা মাসিকপত্রে উদ্ভিদ-জীবন লইয়া যে একটি প্রবন্ধ লিখিয়াছিলাম, তাহাতে বলিয়াছিলাম যে, উদ্ভিদ-জীবন মানব-জীবনেরই ছায়া মাত্র। সেই প্রবন্ধটি লিখিতে এক ঘণ্টারও অধিক সময় লাগে নাই। কিন্তু সেই বিষয়ট

15

রাণী-সন্দর্শন

22 December 2023
0
0
0

একদিন সম্মুখের গলির মোড়ে দেখিলাম, এক ভিক্ষুক বিকট অঙ্গ-ভঙ্গী করিয়া পথ-যাত্রীর করুণা উদ্রেক করিবার চেষ্টা করিতেছে। লোকটা একেবারেই ভণ্ড; প্রতারণা করিয়া সকলকে ঠকাইতেছে বলিয়া আমার রাগ হইল। এই সময় সেখান দি

16

নিবেদন

22 December 2023
0
0
0

বাইশ বৎসর পূর্ব্বে যে স্মরণীয় ঘটনা ঘটিয়াছিল তাহাতে সেদিন দেবতার করুণা জীবনে বিশেষরূপে অনুভব করিয়া- ছিলাম। সেদিন যে মানস করিয়াছিলাম তাহা এতদিন পরে দেবচরণে নিবেদন করিতেছি। আজ যাহা প্রতিষ্ঠা করিলাম তাহা

17

দীক্ষা

23 December 2023
0
0
0

আমরা সকলেই শিক্ষার্থী, কার্য্যক্ষেত্রে প্রত্যহই শিখিতেছি, দিন দিন অগ্রসর হইতেছি এবং বাড়িতেছি। জীবন সম্বন্ধে একটি মহাসত্য এই যে, যেদিন হইতে আমাদের বাড়িবার ইচ্ছা স্থগিত হয় সেই দিন হইতেই জীবনের উপর মৃত্

18

আহত উদ্ভিদ

23 December 2023
0
0
0

পশ্চিমে কয় বৎসর যাবৎ আকাশ ধূমে আচ্ছন্ন ছিল। সেই অন্ধকার ভেদ করিয়া দৃষ্টি পৌঁছিত না। অপরিস্ফুট আর্তনাদ কামানের গর্জনে পরাহত। কিন্তু যেদিন হইতে শিখ ও পাঠান, গুরখা ও বাঙ্গালী সেই মহারণে জীবন আহুতি দিতে গ

19

স্নায়ুসূত্রে উত্তেজনা-প্রবাহ

23 December 2023
0
0
0

বাহিরের সংবাদ ভিতরে কি করিয়া পৌঁছায়? আমাদের বাহ্যেদ্রিয় চতুদ্দিকে প্রসারিত। বিবিধ ধাক্কা অথবা আঘাত তাহাদের উপর পতিত হইতেছে এবং সংবাদ ভিতরে প্রেরিত হইতেছে। আকাশের ঢেউ দ্বারা আহত হইয়া চক্ষু যে বার্ত্তা

20

হাজির!

23 December 2023
0
0
0

হঠাৎ চীৎকার করিয়া কেহ উত্তর দিল-"হাজির"। কাহাকেও ডাকিতে শুনি নাই, তথাপি অতি করুণ ও ভক্তি উচ্ছ্বসিত স্বরে উত্তর শুনিলাম-“কি আজ্ঞা প্রভু?” কে তোমার প্রভু, কাহার হুকুমে এরূপ উদ্দীপ্ত হইলে? কি আশ্চর্য্য!

---