নবম পরিচ্ছেদ : দিগ্‌গজ সংবাদ

৯৯৭ বঙ্গাব্দের নিদাঘশেষে একদিন একজন অশ্বারোহী পুরুষ বিষ্ণুপুর হইতে মান্দারণের পথে একাকী গমন করিতেছিলেন। দিনমণি অস্তাচলগমনোদ্যোগী দেখিয়া অশ্বারোহী দ্রুতবেগে অশ্ব সঞ্চালন করিতে লাগিলেন। কেন না, সম্মুখে

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : আলাপ

প্রথমে যুবক নিজ কৌতূহল পরবশতা প্রকাশ করিলেন। বয়োজ্যেষ্ঠাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, “অনুভবে বুঝিতেছি, আপনারা ভাগ্যবানের পুরস্ত্রী, পরিচয় জিজ্ঞাসা করিতে সঙ্কোচ হইতেছে; কিন্তু আমার পরিচয় দেওয়ার পক্ষে

তৃতীয় পরিচ্ছেদ : মোগল পাঠান

নিশীথকালে জগৎসিহ শৈলেশ্বরের মন্দির হইতে যাত্রা করিলেন। আপাতত: তাঁহার অনুগমনে অথবা মন্দিরাধিষ্ঠাত্রী মনোমোহিনীর সংবাদ কথনে পাঠক মহাশয়দিগের কৌতূহল নিবারণ করিতে পারিলাম না। জগৎসিংহ রাজপুত, কি প্রয়োজনে

চতুর্থ পরিচ্ছেদ : নবীন সেনাপতি

শৈলেশ্বর-মন্দির হইতে যাত্রা করিয়া জগৎসিংহ পিতৃশিবিরে উপস্থিত হইলে পর, মহারাজ মানসিংহ পুত্রমুখাৎ অবগত হইলেন যে, প্রায় পঞ্চাশৎ সহস্র পাঠান সেনা ধরপুর গ্রামের নিকট শিবির সংস্থাপন করিয়া নিকটস্থ গ্রামসক

পঞ্চম পরিচ্ছেদ : গড় মান্দারণ

যে পথে বিষ্ণুপুর প্রদেশ হইতে জগৎসিংহ জাহানাবাদে প্রত্যাগমন করিয়াছিলেন, সেই পথের চিহ্ন অদ্যাপি বর্তমান আছে। তাহার কিঞ্চিৎ দক্ষিণে মান্দারণ গ্রাম। মান্দারণ এক্ষণে ক্ষুদ্র গ্রাম, কিন্তু তৎকালে ইহা সৌষ্ঠ

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ : অভিরাম স্বামীর মন্ত্রণা

তিলোত্তমা ও বিমলা শৈলেশ্বরের হইতে নির্বিঘ্নে দুর্গে প্রত্যাগমন করিলেন। প্রত্যাগমনের তিন চারি দিবস পরে বীরেন্দ্রসিংহ নিজ দেওয়ানখানায় মছনদেবসিয়া আছেন, এমন সময় অভিরাম স্বামী তথায় উপস্থিত হইলেন। বীরে

সপ্তম পরিচ্ছেদ : অসাবধানতা

দুর্গের যে ভাগে দুর্গমূল বিধৌত করিয়া আমোদর নদী কলকল রবে প্রবহণ করে, সেই অংশে এক কক্ষবাতায়নে বসিয়া তিলোত্তমা নদীজলাবর্ত নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। সায়াহ্নকাল উপস্থিত, পশ্চিমগগনে অস্তাচলগত দিনমণির ম্লান ক

অষ্টম পরিচ্ছেদ : বিমলার মন্ত্রণা

বিমলা অভিরাম স্বামীর কুটীরমধ্যে দণ্ডায়মান আছেন। অভিরাম স্বামী ভূমির উপর যোগাসনে বসিয়াছেন। জগৎসিংহের সহিত যে প্রকারে বিমলা ও তিলোত্তমার সাক্ষাৎ হইয়াছিল, বিমলা তাহা আদ্যোপান্ত অভিরাম স্বামীর নিকট বর্

নবম পরিচ্ছেদ : কুলতিলক

জগৎসিংহ পিতৃচরণ হইতে সসৈন্য বিদায় হইয়া যে যে কার্য করিলেন, তাহাতে পাঠান সৈন্যমধ্যে মহাভীতি প্রচার হইল। কুমার প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন, পঞ্চ সহস্র সেনা লইয়া তিনি কতলু খাঁর পঞ্চাশৎ সহস্রকে সুবর্ণরেখা পা

দশম পরিচ্ছেদ: মন্ত্রণার পর উদ্যোগ

মন্ত্রণার পর উদ্যোগয়ে দিবস অভিরাম স্বামী বিমলার প্রতি কৃরুদ্ধ হইয়া তাহাকে গৃহবহিষ্কৃত করিয়া দেন, তাহার পরদিন প্রদোষকালে বিমলা নিজ কক্ষে বসিয়া বেশভূষা করিতেছিলেন। পঞ্চত্রিংশৎ বর্ষীয়ার বেশভূষা? কেন

একাদশ পরিচ্ছেদ : আশমানির দৌত্য

এদিকে বিমলার ইঙ্গিতমত আশমানি গৃহের বাহিরে আসিয়া প্রতীক্ষা করিতেছিল। বিমলা আসিয়া তাহাকে কহিলেন, "আশমানি, তোমার সঙ্গে কোন বিশেষ গোপনীয় কথা আছে।" আশমানি কহিল, “বেশভূষা দেখিয়া আমিও ভাবিতেছিলাম, আজ কি

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ : আশমানির অভিসার

দিগ্‌গজ গজপতির মনোমোহিনী আশমানি কিরূপ রূপবতী, জানিতে পাঠক মহাশয়ের কৌতূহল জন্মিয়াছে সন্দেহ নাই। অতএব তাঁহার সাধ পুরাইব। কিন্তু স্ত্রীলোকের রূপবর্ণন-বিষয়ে গ্রন্থকারগণ যে পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া থাকেন,

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ : আশমানির প্রেম

দ্বার খুলিলে আশমানি গৃহে প্রবেশ করিবামাত্র দিগ্‌গজের হৃদ্বোধ হইল যে, প্রণয়িনী আসিয়াছেন, ইহার সরস অভ্যর্থনা করা চাই, অতএব হস্ত উত্তোলন করিয়া কহিলেন, "ওঁ আয়াহি বরদে দেবি!” আশমানি কহিল, এটি যে বড় স

চতুর্দশ পরিচ্ছেদ : দিগ্‌গজহরণ

এমন সময় বিমলা আসিয়া বাহির হইতে দ্বার নাড়িল। বিমলা দ্বারপার্শ্ব হইতে অলক্ষ্যে সকল দেখিতেছিল। দ্বারের শব্দ শুনিয়া দিগ্‌গজের মুখ শুকাইল। আশমানি বলিল, "কি সর্বনাশ, বিমলা আসিতেছে- লুকোও লুকোও | " দিগ্‌

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ : দিগ্‌গজের সাহস

বিমলা দ্রুতপাদবিক্ষেপে শীঘ্র মান্দারণ পশ্চাৎ করিলেন। নিশা অত্যন্ত অন্ধকার, নক্ষত্রালোকে সাবধানে চলিতে লাগিলেন। প্রান্তরপথে প্রবেশ করিয়া বিমলা কিঞ্চিৎ শঙ্কান্বিতা হইলেন; সমভিব্যাহারী নিঃশব্দে পশ্চাৎ প

ষোড়শ পরিচ্ছেদ : শৈলেশ্বর সাক্ষাৎ

বিমলা মন্দিমধ্যে প্রবেশ করিয়া প্রথমে বসিয়া একটু স্থির হইলেন। পরে নতভাবে শৈলেশ্বরকে প্রণাম করিয়া যুবরাজকে প্রণাম করিলেন। কিয়ৎক্ষণ উভয়েই নীরব হইয়া রহিলেন, কে কি বলিয়া আপন মনোগত ভাব ব্যক্ত করিবেন?

সপ্তদশ পরিচ্ছেদ : বীর পঞ্চমী

উভয়ে শৈলেশ্বর প্রণাম করিয়া, সশঙ্কচিত্তে গড় মান্দারণ অভিমুখে যাত্রা করিলেন। কিঞ্চিৎ নীরবে গেলেন। কিছু দূর গিয়া রাজকুমার প্রথমে কথা কহিলেন, "বিমলে, আমার এক বিষয়ে কৌতূহল আছে। তুমি শুনিয়া কি বলিবে ব

অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ : চতুরে চতুরে

বিমলা আসিয়া নিজ কক্ষে পালঙ্কের উপর বসিলেন। বিমলার মুখ অতি হর্ষপ্রফুল্ল তিনি গতিকে মনোরথ সিদ্ধ করিয়াছেন। কক্ষমধ্যে প্রদীপ জ্বলিতেছে; সম্মুখে মুকুর; বেশভূষা যেরূপ প্রদোষকালে ছিল, সেইরূপই রহিয়াছে; বিম

ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ : প্রেমিকে প্রেমিকে

বিমলা যখন দেখিলেন যে, চতুর ওসমান অন্যত্র গেলেন, তখন তিনি ভরসা পাইলেন যে কৌশলে মুক্তি পাইতে পারিবেন। শীঘ্র তাহার উপায় চেষ্টা করিতে লাগিলেন। প্রহরী কিয়ৎক্ষণ দণ্ডায়মান থাকিলে বিমলা তাহার সহিত কথোপকথন

বিংশ পরিচ্ছেদ : প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে

বিমুক্তি লাভ করিয়া বিমলার প্রথম কার্য বীরেন্দ্রসিংহকে সংবাদ দান। ঊর্ধ্বশ্বাসে বীরেন্দ্রের শয়নকক্ষাভিমুখে ধাবমানা হইলেন। অর্ধপথ যাইতে না যাইতেই “আল্লা – ল্লা- হো" পাঠান সেনার চীৎকারধ্বনি তাঁহার - কর্

একবিংশ পরিচ্ছেদ : খড়ো খড়ো

বিমলাকে দেখিয়া জগৎসিংহ জিজ্ঞাসা করিলেন, "কিসের কোলাহল?” বিমলা কহিলেন, “পাঠানের জয়ধ্বনি। শীঘ্র উপায় করুন; শত্রু আর তিলার্ধ মাত্রে এ ঘরের মধ্যে আসিবে।" জগৎসিংহ ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া কহিলেন, "বীরেন্

দ্বিতীয় খণ্ড প্রথম পরিচ্ছেদ : আয়েষা

আয়েষা, জগৎসিংহ যখন চক্ষুরুন্মীলন করিলেন, তখন দেখিলেন যে, তিনি সুরমা হৰ্মামধ্যে পর্যঙ্কে শয়ন করিয়া আছেন। যে ঘরে তিনি শয়ন করিয়া আছেন, তথায় যে আর কখন আসিয়াছিলেন, এমত বোধ হইল না; কক্ষটি অতি প্রশস্ত

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ : কুসুমের মধ্যে পাষাণ

কুসুমের মধ্যে পাষাণসেই দিবস অনেক রাত্রি পর্যন্ত আয়েষা ও ওসমান জগৎসিংহের নিকট বসিয়া রহিলেন। জগৎসিংহের কখন চেতনা হইতেছে, কখন মূর্ছা হইতেছে; হকিম অনেকবার আসিয়া দেখিয়া গেলেন। আয়েষা অবিশ্রান্তা হইয়া

তৃতীয় পরিচ্ছেদ : তুমি না তিলোত্তমা

পরদিন প্রদোষকালে জগৎসিংহের অবস্থান-কক্ষে আয়েষা, ওসমান আর চিকিৎসক পূর্ববৎ নিঃশব্দে বসিয়া আছেন; আয়েষা পালঙ্কে বসিয়া স্বহস্তে ব্যজনাদি করিতেছেন; চিকিৎসক ঘন ঘন জগৎসিংহের নাড়ী দেখিতেছেন; জগৎসিংহ অচেতন

চতুর্থ পরিচ্ছেদ : অবগুণ্ঠনবতী

দুর্গজয়ের দুই দিবস পরে, বেলা প্রহরেকের সময়ে কতলু খাঁ নিজ দুর্গমধ্যে দরবারে বসিয়াছেন। দুই দিকে শ্রেণীবদ্ধ হইয়া পারিষদগুণ দণ্ডায়মান আছে। সম্মুখস্থ ভূমিখণ্ডে বহু সহস্র লোক নিঃশব্দে রহিয়াছে। অদ্য বী

পঞ্চম পরিচ্ছেদ : বিধবা

তিলোত্তমা কোথায়? পিতৃহীনা, অনাথিনী বালিকা কোথায়? বিমলাই বা কোথায়? কোথা হইতে বিমলা স্বামীর বধ্যভূমিতে আসিয়া দর্শন দিয়াছিলেন? তাহার পরই আবার কোথায় গেলেন? কেন বীরেন্দ্রসিংহ মৃত্যুকালে প্রিয়তমা কন

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ : বিমলার পত্র

“যুবরাজ! আমি প্রতিশ্রুত ছিলাম যে, একদিন আপনার পরিচয় দিব। এখন তাহার সময় উপস্থিত হইয়াছে। ভরসা করিয়াছিলাম, আমার তিলোত্তমা অম্বরের সিংহাসনরূঢ়া হইলে পরিচয় দিব। সে সকল আশাভরসা নির্মূল হইয়াছে। বোধ কর

সপ্তম পরিচ্ছেদ : বিমলার পত্র সমাপ্ত

“আমি পূর্বেই বলিয়াছি যে, গড় মান্দারণের কোন দরিদ্রা রমণী আমার পিতার ঔরসে গর্ভবতী হয়েন। আমার মাতার যেরূপ অদৃষ্টলিপির ফল, ইঁহারও তদ্রুপ ঘটিয়াছিল। ইঁহার গর্ভেও একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করে, এবং কন্যার মাত

অষ্টম পরিচ্ছেদ : আরোগ্য

দিন যায়। তুমি যাহা ইচ্ছা তাহা কর, দিন যাবে, রবে না। যে অবস্থায় ইচ্ছা, সে অবস্থায় থাক, দিন যাবে, রবে না। পথিক! বড় দারুণ ঝটিকা বৃষ্টিতে পতিত হইয়াছ? উচ্চরবে শিরোপরি ঘনগর্জন হইতেছে? বৃষ্টিতে প্লাবিত

নবম পরিচ্ছেদ : দিগ্‌গজ সংবাদ

ভৃত্যসঙ্গে গজপতি বিদ্যাদিগ্নযজ্ঞ কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিলে রাজকুমার জিজ্ঞাসিলেন, “আপনি ব্রাহ্মণ?" দিগ্গপজ হস্তভঙ্গী সহিত কহিলেন, "যাবৎ মেরৌ স্থিতা দেবা যাবদ্ গঙ্গা মহীতলে, অসারে খলু সংসারে সারং শ্বশুরমন

দশম পরিচ্ছেদ : প্রতিমা বিসর্জন

বলা বাহুল্য যে, জগৎসিংহের সে রাত্রে নিদ্রা আসিল না। শয্যা অগ্নিবিকীর্ণবৎ, হৃদয়মধ্যে অগ্নি জ্বলিতেছে। যে তিলোত্তমা মরিলে জগৎসিংহ পৃথিবীশূন্য দেখিতেন, এখন সে তিলোত্তমা প্রাণত্যাগ করিল না কেন, ইহাই পরিত

একাদশ পরিচ্ছেদ : গৃহান্তর

অপরাহে কথামত ওসমান রাজপুত্র সমক্ষে উপস্থিত হইয়া কহিলেন, "যুবরাজ! প্রত্যুত্তর পাঠাইবার অভিপ্রায় হইয়াছে কি?" যুবরাজ প্রত্যুত্তর লিখিয়া রাখিয়াছিলেন, পত্র হস্তে লইয়া ওসমানকে দিলেন। ওসমান লিপি হতে ল

দ্বাদশ পরিচ্ছেদ : অলৌকিক আভরণ

মহোৎসব উপস্থিত। অদ্য কত খাঁর জন্মদিন। দিবসে রঙ্গ, নৃত্য, দান, আহার, পান ইত্যাদিতে সকলেই ব্যাপৃত ছিল। রাত্রিতে ততোধিক। এইমাত্র সায়াহ্নকাল উত্তীর্ণ হইয়াছে: দুর্গমধ্যে আলোকময়; সৈনিক, সিপাহী, ওমরাহ, ভৃ

ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ : অঙ্গুরীয় প্রদর্শন

বিমলা গমন করিলে পর একাকিনী কক্ষমধ্যে বসিয়া তিলোত্তমা যে সকল চিন্তা করিতে ছিলেন, তাহা সুখদুঃখ উভয়েরই কারণ। পাপাত্মার পিঞ্জর হইতে যে আশু মুক্তি পাইবার সম্ভাবনা হইয়াছে, এ কথা মুহূর্মুহু: মনে পড়িতে লা

চতুর্দশ পরিচ্ছেদ : মোহ

মোহজগৎসিংহ আনত হইয়া দেখিলেন, তিলোত্তমার স্পন্দ নাই। নিজ বস্ত্র দ্বারা ব্যজন করিতে লাগিলেন, তথাপি তাঁহার কোন সংজ্ঞাচিহ্ন না দেখিয়া প্রহরীকে ডাকিলেন। তিলোত্তমার সঙ্গী তাঁহার নিকটে আসিল। জগৎসিংহ তাঁহা

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ : মুক্ত কণ্ঠ

তিলোত্তমা ও দাসী কক্ষমধ্য হইতে গমন করিলে আয়েষা শয্যার উপর আসিয়া বসিলেন; তথায় আর বসিবার আসন ছিল না; জগৎসিংহ নিকটে দাঁড়াইলেন। আয়েষা কবরী হইতে একটি গোলার খসাইয়া তাহার দলগুলি নখে ছিঁড়িতে ছিঁড়িতে ক

ষোড়শ পরিচ্ছেদ দাসী চরণে

সেই রজনীতে কতলু খাঁর বিলাস-গৃহমধ্যে নৃত্য চলিতেছিল। তথায় অপরা নর্তকী কেহ ছিল না-বা অপর শ্রোতা কেহ ছিল না। জন্মদিনোপলক্ষে মোগল সম্রাটেরা যেরূপ পারিষদমণ্ডলী মধ্যে আমোদ-পরায়ণ থাকিতেন, কতলু খাঁর সেরূপ ছ

সপ্তদশ পরিচ্ছেদ : অন্তিম কাল

বিমলার পলায়নের ক্ষণমাত্র পরেই একজন কর্মচারী অতিব্যস্তে জগৎসিংহের কারাগারমধ্যে আসিয়া কহিল, "খুবরাজ! নবাব সাহেবের মৃত্যুকাল উপস্থিত, তিনি আপনাকে স্মরণ করিয়াছেন।" যুবরাজ চমৎকৃত হইয়া কহিলেন, “সে কি!"

অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ : প্রতিযোগিতা

জগৎসিংহ কারামুক্ত হইয়া পিতৃশিবিরে গমনান্তর নিজ স্বীকারানুযায়ী যোগল পাঠানে সন্ধিসম্বন্ধ করাইলেন। পাঠানেরা দিল্লীশ্বরের অধীনতা স্বীকার করিয়াও উৎকলাধিকারী হইয়া রহিলেন। সন্ধির বিস্তারিত বিবরণ ইতিবৃত্ত

ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ : আয়েষার পত্র

আয়েষা লেখনী হস্তে পত্র লিখিতে বসিয়াছেন। মুখকান্তি গম্ভীর, স্থির; জগৎসিংহকে পত্র লিখিতেছেন। একখানা কাগজ লইয়া পত্র আরম্ভ করিলেন। প্রথমে লিখিলেন, "প্রাণাধিক," তখনই প্রাণাধিক শব্দ কাটিয়া দিয়া লিখিলেন

বিংশ পরিচ্ছেদ : দীপ নির্বাণোন্মুখ

যে পর্যন্ত তিলোত্তমা আশমানির সঙ্গে আয়েষার নিকট হইতে বিদায় লইয়া আসিয়াছিলেন, সেই পর্যন্ত আর কেহ তাঁহার কোন সংবাদ পায় নাই। তিলোত্তমা, বিমলা, আশমানি, অভিরাম স্বামী, কাহারও কোন উদ্দেশ পাওয়া যায় নাই।

একবিংশ পরিচ্ছেদ : সফলে নিষ্ফল স্বপ্ন

পিতৃহীনা অনাথিনী, রুগ্না শয্যায়; -জগৎসিংহ তাঁহার শয্যাপার্শ্বে। দিন যায়, রাত্রি যায়, আর বার দিন আসে; আর বার দিন যায়, রাত্রি আসে। রাজপুত-কুল-গৌরব তাহার ভগ্ন পালঙ্কের পাশে বসিয়া শুশ্রূষা করিতেছেন;

দ্বাবিংশতিতম পরিচ্ছেদ : সমাপ্তি