আমরা, ভারতবাসীরা আসলে কারা? আমরা কোথা থেকে এসেছি? আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি, আমাদের পূর্বসূরিরা এই দক্ষিণ এশিয়াতে ‘স্মরণাতীত কাল’ থেকেই বসবাস করছেন। কিন্তু, যা দেখা যাচ্ছে, সেই ‘স্মরণাতীত কাল’ খুব বেশি প্রাচীন নয়। আমাদের পূর্বসূরিদের ইতিহাস বলতে গিয়ে সাংবাদিক টনি যোসেফ ৬৫,০০০ বছর পিছিয়ে গেছেন – যখন আধুনিক মানুষ বা হোমো স্যাপিয়েন্সের একটি দল, সর্বপ্রথম আফ্রিকা থেকে ভারতীয় উপমহাদশে আসার রাস্তা খুঁজে নিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক ডিএনএ প্রমাণের ভিত্তিতে তিনি ভারতে আধুনিক মানুষের সংশ্লিষ্ট বড়সড় অভিবাসনগুলির সম্বন্ধে অনুসন্ধান চালিয়েছেন – তার মধ্যে ৭০০০ থেকে ৩০০০ খৃস্টপূর্বাব্দের মধ্যে আগত ইরানের কৃষিজীবীদের থেকে শুরু করে ২০০০ থেকে ১০০০ খৃস্টপূর্বাব্দের মধ্যে মধ্য এশীয় স্তেপভূমি থেকে আগত পশুপালক যাযাবর গোষ্ঠী সহ অন্যান্যরাও রয়েছে। জেনেটিক্স ও অন্যান্য গবেষণার সাহায্যে আমাদের প্রাচীন অতীতের পর্দা সরাতে গিয়ে যোসেফ বেশ কিছু চরম বিতর্কিত এবং অস্বস্তিকর প্রসঙ্গের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছেন – যেমন, কারা ছিল হরপ্পার অধিবাসী? ‘আর্যরা’ কি সত্যিই বাইরে থেকে ভারতে এসেছিল? উত্তর ভারতীয়রা কি জিনগত দিক থেকে দক্ষিণ ভারতীয়দের চেয়ে আলাদা? তফশিলি উপজাতিভুক্ত সম্প্রদায়ের মানুষেরা কি জিনগত দিক থেকে আমাদের জনসংখ্যার বাকি অংশের তুলনায় আলাদা? এই বইটি সাম্প্রতিক কালের যুগান্তকারী ডিএনএ গবেষণার উপরে অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। তবে এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ভাষাতাত্ত্বিক প্রমাণসমূহের উপরেও যথেষ্ট জোর দেওয়া হয়েছে – সবটাই এক চিত্তাকর্ষক এবং সুখপাঠ্য ভঙ্গিমায় উপস্থাপিত হয়েছে। আদি ভারতীয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ, যা আধুনিক ভারতবাসীর পূর্বসূরি সংক্রান্ত বাদবাকি সমস্ত কুৎসিত বিতর্ককে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এবং দায়িত্ব সহকারে মোকাবিলা করতে পেরেছে। আজকের আধুনিক ভারতীয় জনগোষ্ঠী কীভাবে গঠিত হয়েছে শুধু তাই নয়, উপরন্তু এই বইতে আমাদের প্রকৃত পরিচয় সংক্রান্ত এক অনস্বীকার্য এবং অসীম গুরত্বপূর্ণ সত্য উদ্ঘাটিত হয়েছেঃ আমরা সকলেই অভিবাসী। এবং আমরা সকলেই মিশ্রিত। Read more